Psycho is Back

Psycho is Back ! Season- 2 ! Part- 26

কঁপালে দু আঙ্গুল ঠেকিয়ে, পায়ের উপর পা তুলে সোফার উপর বসে আছে বারিশ। তার সামনেই চেয়ারের সাথে বাঁধা জেনি, আর ফুপি।তাদের মুখে ভয়ের ছাপ।বারিশ ছোট একটা শ্বাস নিয়ে বলে উঠে,
—-যার বাসার খাবার খেলি তার ক্ষতি করতে একটু দ্বিধা হলো না?
জেনি ন্যাকা কান্না করে বলল,
—-বিশ্বাস কর বারিশ আমি কিছু করি নাই। যা করেছে এই বুড়ি করেছে।আমি তোমাকে অনেক লাভ করি। আমি কি এসব করতে পারি বল..!তুমি তোমার জেনিকে তো চিনো তাই না..!!
—–ভালবাসা না পাছা দিয়ে ঠেলে দেব তোর ভালবাসা।ন্যাকামি বন্ধ কর। একদম বন্ধ।
তখনি ফুঁপি পাশ থেকে খিস্তি দিয়ে বলল,
—-হারামজাদী! তুই তো বড় শেয়ানারে! মিথ্যা বলে আরিশ বাবার কাছে আমাকে খারাপ বানাতে চাইচ্ছিস! এটা কখনো হবে না…।
তারপর বারিশের দিক তাকিয়ে হেজকি তুলে কান্না করে বলল,
—-বাবা, তুমি বিশ্বাস করতো তোমার ফুপিকে? এই ফুপি তোমাকে ছোট বেলায় এই হাতে কত ভাত খাওয়াইছি..!
বারিশ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
—–বাহ্ এত দিন শুনেছি মানুষ নাকি গিরগিটীর মতো রং বদলায়। আজ দেখা হয়ে গেল।আলাদ দেখাও, না। তা যে হাত দিয়ে বারিশকে ভাত খাইয়ে দিয়েছো, সেই হাত কাঁপে নাই একবারও বারিশকে খুন করার সময়?
এই কথা শুনার পর হকচকিয়ে যায় ফুপি।সাথে সাথে কঁপালে বিন্দু বিন্দু জমা হতে লাগলো ঘাম।আমতা আমতা করে বলে,,
—-তুমিই তো বারিশ। আমার আব্বা বারিশ। আমি আবার তোমাকে মারবো অত সাহস এই বুড়ির আছে নাকি বল বাবা। তুমি মসকরা করছো তাই না। শেষের কথা টুকু হালকা হাসার চেষ্টা করে বলল।
তখনি জেনি বলল,
—-আরিশ এই বুড়ি ধাম্রীর কথায় কান দিবে না। এই খাইশটা মহিলা নিজের হাতে শ্বাস আটকিয়ে মেরেছে।
ফুপি সাথে সাথে চিল্লিয়ে বলল,
—–মাগি তুই আমারে ফাসেয়তে চাইতেসোস..!
বারিশ এবার সটান হয়ে দাঁড়াল। তারপর তাদের সামনে এসে একজন গার্ডকে ইশারা করল। তারপর ফুঁপি আর জেনিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
—–তোরা কতটা নিচ তা আমার জানা হয়ে গেছে। তোদের এ বাসায় যেদিন থেকে পা ফেলেছি সেদিস থেকেই অসহ্য লেগেছে। কেন লেগেছে? কারণটা আজ ধরতে পারলাম।শয়তানদের দেখলে আর কেউ না হোক মনটা ভাল করে বুঝতে পারে রে হারামির দল।
তারপর ফুপির পাশে গিয়ে বলল,
—-দাদু তো আপনাকে নিজের মেয়ের জায়গায় বসিয়ে ছিল। আর আপনি? আপনি তার শেষ বয়সের সম্বল তার চোখের মনি আরিশকে মেরে দিলেন? কেমন মা আপনি? কারো সন্তানকে মারতে হাত কাঁপলো না? আপনাকে চৌরাস্তার মোরে দাড় করিয়ে কংকর মারা উচিত।
এবার জেনির সামনে গিয়ে ঠাসস করে থাপর মেরে দিল। তারপর বলল,
—–তোরে তো আমার এই মুহুর্তে দুই পা টান দিয়ে চিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে। তুই কেমন মেয়ে হে? তোর থেকে ব্যশ্যা পাড়ার মেয়েরাও শত গুনে ভাল।তোদের মতো মেয়েদের জন্য পুরো মেয়ে জাতীর নাম বদনাম।
কিছুক্ষণ পর গার্ড আমলো তার সাথে লেডি পুলিশ। পুলিশ দেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পরলো দুজন।আর বলতে লাগলো মাফ করে দিতে। পুলিশদের মদ্য একজন অফিসার আসতেই তার হাতে দুটো পেইনড্রাইভ এগিয়ে দিয়ে বলল,
—-মেম একটিতে বারিশকে মারার ভিডিও আর একটিতে আজকে দাদুকে মারতে ট্রাই করেছিল তার ভিডিও।
পুলিশ বলল,
—- আমি যথা সম্বভ চেষ্টা করবো তাদের কঠিন শাস্তি হোক।বলে চলে গেলেন।
সবাই যেতেই সোফার উপর বসে পরে বারিশ। এ চাপ্টার শেষ হলেও মাথায় এখন চলছে অন্য চিন্তা সেদিন কুহুর সাথে কথা বলার পর থেকে কুহুকে ফোনে আর পাচ্ছে না।টিনার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছে কুহুকে তার মামা টেনে হিচরে নিয়ে গিয়েছে। এখন তার লক্ষ কুহু। বারিশ জানে না কুহু কেমন আছে? ওর মা ওকে কিছু করেনি তো আবার? নাহ আর সময় নষ্ট করা যাবে না। এখনি বের হতে হবে তাকে। এই ভেবে উঠে দাড়ালো বারিশ আর চলে গেল তার গাড়ির উদ্দেশে।
————————————>>>
কুহুর বড় মামা আর আশিক মুখোমুখি বসে আছে স্টাডি রুমে। তখন কুহুর বড় মামা বলে উঠে,
—–তো তুমি কুহুকে বিয়ে করতে চাও!
আশিক মুচকি হেসে বলল,
—–যে কোনো মূল্য আঙ্কেল।
মামা কিছুক্ষণ চিন্তা করলেন। তারপর বললেন,
—-ঠিক আছে। কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে?
—-আমি যে কোনো শর্তে রাজি আঙ্কেল।
—-আগে শুনেতো নেও..?
—-বললামতো আমি রাজি।
—-ঠিক আছে। বলে একটি কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললেন,
—-এখানে সাইন কর!
আশিক হালকা ভ্রু কুচকে বলল,
—-এটা কিসের পেপার আঙ্কেল।
—–প্রপার্টির পেপার।
—-ঠিক বুঝলাম না।
—-বলছি। এখানে লিখা আছে, যে বিয়ের পর কুহুর সহায়সম্পদের উপর তোমার কোনো ইচ্ছে নেই।তুমি সেচ্ছায় তা আমার নামে করে দিচ্ছো।
এ কথায় মুচকি হেসে সাইন করে বলে উঠে আশিক,,
—–এ সবে আমার এমনিতেও কোনো ইন্টারেস্ট নেই।আমি শুধু কুহুকে চাই। আল্লাহর রহমতে আমার কম তো কিছু নেই।
এবার যেন মামা শান্তি নিশ্বাস নিলেন।
তখন আশিক বলল,
—-বিয়েটা আমি আজ আর এই মুহুর্তে করতে চাই। আর তার আগে ওর সাথে দেখা করতে চাই।
মামা হাসি হাসি মুখে বলল,
—-কুহু তোমার যা ইচ্ছে কর।আমার কোনো বাঁধা নেই।
আশিক বের হয়ে গেল রুম থেকে। তখনি রুমে ঢুকলেন মামি।আর বলতে লাগেন,,
—–এসব কি করছো তুমি?
মামা গম্ভীর কন্ঠে বলল,
—-যেটাতে আমার ভাল।
—-আমি এসব কিছু হতে দিব না। কুহু বিবাহিত।
—-তো?
—-তো মানে? ওর সাথে তুমি এটা কিভাবে করতে পারো? ওকে আমরা ামাদের মেয়ের মত মানুষ করেছি? ওকে তো ছেড়ে দেও। নয়তো?
ভ্রু কঁচকে বললেন মামা,
—–নয়তো কি?
চোখ মুখ শক্ত করে বললেন মামি,
—-আমি সবাইকে সব বলে দিব?
বলেই মামি বাহিরে পা বাড়াতেই। মামা পিছন থেকে মামিকে ফুলের টব দিয়ে বাড়ি মারে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পরে তিনি। মাথার পিছন থেকে রক্ত পরে ভেসে যাচ্ছে ফ্লোর। তখন মামা বাঁকা হেসে মামির কাছে বসে। মামি এখনো আধ আধ চোখ খোলা।মামা সে হাসি ধরে বলতে লাগে,
—-আমার পথে যে কাঁটা হবে তাকে আমি ছাড়ি না। সে আমার মা, ভাই, ভাইয়ের বউ, আর তার ছেলে হোক না কেন। টাকা আমার সব। টাকা থাকলে বাগের চোখও পাওয়া যায়। আর তোমাকে মারতাম না তুমি সব সময় কানের কাছে পেক পেক কর তাই তোমাকে মেরে দিলাম।
এবার শান্তি।তোমারো আমারো। মামি ততক্ষনে চোক বন্ধ করে ফেলেছেন।
———————————->>>
কুহু খাটের মাঝে হাটুতে মাথা গুঁজে কান্না করছে। তখনি আশিক রুমে ঢুকলো। দরজার আওয়াজে চোখ মেলে তাকায় কুহু। আশিককে দেখে মাথায় রাগ চেপে বসে তার। সাথে সাথে উঠে কলার চেপে ধরে বলে কুহু,
—–তুই আমার বাসায় কেন? বের হো। তোর মুখ দেখতে চাইনা আমি। তুই একটা শয়তান।
আশিক মুচকি হেসে। তার কলার থেকে হাত নামিয়ে তার হাতে মুঠে আবদ্ধ করে বলে উঠে,,
—-আমার এ মুখ যেন তুমি প্রতিটি সময় দেখতে পারো তার ব্যবস্থা করতেই এসেছি।
কুহু ভ্রু কুঁচকে বলল,
—–মানে?
আশিক আলতো করে কুহুর গালে স্পর্শ করে বলে উঠে,
—–মানে তুমি আর কিছুক্ষণের আমার অর্ধাঙ্গিনী হতে চলেছো।
আশিকের কথায় চোখ বড় বড় করে তাকায় কুহু। আশিক এখনো মুচকি হাসচ্ছে। এ হাসি যে পুরো শরীর জালিয়ে দিচ্ছে তার।সাথে কষে চর মারলো আশিককে। আর বলতে লাগলো,
—–তোর মত প্রতারককে করবো আমি বিয়ে কখনো না। বের হও আমার রুম থেকে এখনি।
থাপর খেয়ে মাথা রক্ত উঠে যায় আশিকের। সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে। কুহুকেও মারলো চর।তারপর দু বাহু চেপে ধরে বলল,
—–আজ এ দুঃসাহস করেছিস তো করেছিস এর পর এমন করলে জানে মেরে ফেলবো তোকে।
কুহু যেন থাপর খেয়ে তবদা হয়ে গেছে। কি করবে এই মুহুর্তে কি বলবে মাথা আসচ্ছে না।তখনি আশিক কাউকে বলল,
—-ভিতরে আসুন।
সাথে সাথে দুটো মেয়ে এসে হাজির।
—-ওকে রেডি করিয়ে দিন ৩০ মিনিট সময়। বলে বের হয়ে গেল আশিক।
মেয়ে গুলো কুহুকে অনেক ট্রাইক করলো কিন্তু ব্যর্থ
। এই মেয়ের মাঝে একটি বলল,
—-স্যার কে ডেকে আন।
মেয়েটি চলে গেল। তখন কুহু ওই মেয়েটিকে বলল,
ওয়াশরুম থেকে তাকে তয়লা এনে দিতে।
মেয়েটি যেতেই বাহির দিক দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল কুহু। আর আশিকের দিয়া বিয়ের শাড়ি বলকনির স্টিলের সাথে বেঁধে তা দিয়ে নিচে নেমে দিল ভৌ দৌড়।
দৌড়াতে দৌড়াতে মেন রোডে এসে পরে কুহু। সেখানের আশেপাশে তাকাতেই চোখে পরে বারিশকে যে ফোন বের করে কি জানি দেখাচ্ছিল দোকানদারকে।কুহু শইতে না পেরে বারিশ বলে জোরে ডাক দেয়। বারিশ সেদিকে তাকাতেই স্তব্ধ হয়ে যায়। মুখে ফুঁটে উঠে মৃদু হাসির ঝলক।সাথে সাথে দৌড়ে চলে আসে কুহুর কাছে। যখনি কুহুকে জড়িয়ে ধরবে নিজের বাহু ডোরে তখনি…ঠাসসসস…!!!!
চলবে,