Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 95

রোয়েন কে দেখে রেহান এগিয়ে যায় ভাইয়ের কাছে।
-ভাইয়া কই ছিলেন আপনি?জিজ্ঞেস করে উঠে রেহান।
-এইতো এখানেই ছিলাম।বলে উঠে রোয়েন।
-তখন দেখলাম না যে?ভ্রু কুঁচকিয়ে প্রশ্ন করে রেহান।
-প্রনয় খানের সামনে আসতে চাইনি আমি।কারন ওনি রুহীকে চায়।যদি আমাকে দেখতো তাহলে জানতো রুহী এখানে।আর রুহী আর মা এখন বাসায় একা।কিছুটা রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
-চায় মানে?কিছুটা অবাক হয় রেহান।
-রুহীর ওপর নাকি ওনার আগের থেকেই নজর।ওনি রুহী কে একরাত,,,,বলতে পারেনা রোয়েন আর।চোখ বুজে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে।
-রেহানের ভীষন রাগ হয়।নিজের মেয়ের বয়সী কারোর ওপর একজনের এতো বাজে নজর কি করে থাকতে পারে।ভেবে পায়না রেহান।
বাবার হাতে হাত রেখে শুয়ে আছে রুপন্তী।ওর চোখের কোনা বেয়ে অনবরত অশ্রু ঝড়ে যাচ্ছে।মেয়েটা এতোই দূর্বল কথা ও বলতে পারছেনা।শুধু কেঁদে যাচ্ছে।
তবে জ্বর টা একটু কমে এসেছে।
আজিজ রায়হান মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,
-কেন চলে গিয়েছিলি মা?
-রুপন্তী কাঁদছে।আমি খুব জলদি ফিরে আসবো বাবা।ফিসফিসিয়ে বলে রুপন্তী।
-তুই আর যাবিনা। আমি এটাই জানি।শক্ত গলায় বলেন আজিজ রায়হান।
-বাবা আমাকে যেতে হবে।ফিসফিস করে বলে রুপন্তী।
-চুপ থাক।খুব বড় হয়ে গেছিস?রেগে গেলেন আজিজ রায়হান।
-রুপন্তী আর কিছু বলতে পারেনা।
কিছুক্ষন পর একজন বয় এসে ভাত আর তরকারি দিয়ে গেলো রুপন্তীকে।
আজিজ রায়হান নিজ হাতে মেয়েকে খাইয়ে দিলেন।খাওয়ার সময় রুপন্তী বারবার বাহিরে তাকাচ্ছিলো সেটা নজর এড়ায় না আজিজ রায়হানের।
রুপন্তীকে খাইয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ান আজিজ রায়হান।
তারপর শার্টের হাতা ঠিক করে বলেন
– আমাকে একটু কাজে যেতে হবে।রেহান কে পাঠাচ্ছি।
-রুপন্তী মাথা উপর নিচে দুলায়।
আজিজ রায়হান বেরিয়ে গিয়ে রেহানকে ভিতরে যেতে বলেন।
রোয়েন আর সাইফ রাহমান বাসায় চলে যান।কারন রুহী আর রায়না রাহমান বাসায় একা।প্রনয় খানের ওপর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করা যায়না।কখন কি করে বসে।
রেহান রুমে প্রবেশ করে।
রুপন্তী মুচকি হাসে ওর দিকে তাকিয়ে।রেহান রুপন্তীর পাশে দাঁড়িয়ে কিছু না বলে ওকে বুকে জড়িয়ে নেয়।
কেউ কিছুই বলছেনা।ওদের অশ্রুই যেন সব বলে দিচ্ছিলো।একে অপরকে হারানোর ভয়টা যে খুব বেশি অনুভব করছিলো ওরা।কিছুক্ষন বাদে সরে আসে রেহান।
রুপন্তীর পাশে বসে ওর হাত দুটো নিজের হাতজোড়ার ভাজে নেয়।
-কেমন লাগছে এখন?জিজ্ঞেস করে রেহান।
-ভালো।বলে উঠে রুপন্তী।
-রেহান মুখ এগিয়ে রুপন্তীর গালে ঠোঁট রাখে।তার সেখানে আলতো করে চুমু দেয়।
রুপন্তী রেহানকে জড়িয়ে ধরেছে আলতো করে।
রেহান রুপন্তীর গাল থেকে সরে এসে ওর রসালো ঠোঁটে ঠোঁট ডুবায়।
রোয়েন রুমে আসতেই রুহী খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।
-রুপন্তীর কি খবর?কেমন আছে ও?
রোয়েন রুহী কে ধরে এনে খাটে বসায়।তারপর বলে উঠে,
-ও একটু ভালো আছে।জ্বর এখন নেই।তুমি খেয়েছো?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-মাথা ঝাঁকায় রুহী মা খাইয়ে দিয়েছে।
-তোমার একটা চেকআপ করানোর দরকার।বলে উঠে রোয়েন।
-আসার সময়ই তো করিয়েছিলাম।মনে নেই?বলে উঠে রুহী।
-মনে আছে।আমি নিশ্চিন্ত থাকতে চাই আমার সোনা বাচ্চাটাকে নিয়ে।ওরা ভালো আছে কিনা?বলে রুহীর কপালে চুমু দেয় রোয়েন।
রুহী রোয়েনের বুকে মাথা রেখে,
-সেটা তো আমি ও চাই।তবে নেক্সট উইক করাই চেকআপটা।
-ঠিক আছে।রুহীর পিঠে হাত রেখে বলে রোয়েন।
পাঁচদিন হাসপাতালে থাকার পর রুপন্তীকে রিলিজ দেয় হাসপাতাল থেকে।মেয়ে যেন প্রনয় খানের কাছে চলে না যায় সেজন্য সকালেই মেয়ের কাছে আসেন আজিজ রায়হান।
রুপন্তী খানিকটা চিন্তায় পড়ে যায় কি করে যাবেও ঐ বাসায়?ওর যে সেখানে থাকা অনেক বেশি দরকার।
রুপন্তী কাপড় চোপড় প্যাকিং করে নিয়েছে।আর ভাবছে কোন উপায় আছে নাকি প্রনয় খানের বাসায় ফিরে যাওয়ার।
ঠিক সেই সময় আজিজ রায়হান বলে উঠেন,
-আমি বিল পে করে আসছি।তুই এখানে বস কোথা ও যাবিনা।
-রুপন্তী নিশ্চুপ।
♦♦♦♦
মেয়েকে চুপ থাকতে দেখে আজিজ রায়হান আবারো বলেন,
-যদি চলে যাস তুই ভীষন কষ্ট পাবো আমি খুব রাগ করবো।
রুপন্তীর ভীষন কষ্ট হচ্ছে।কোন মতে মাথা ঝাঁকায় যে ও থাকবে।
আজিজ রায়হান বেরিয়ে পড়েন।
রুপন্তী একটা কাগজে কিছু লিখে গোপনে বেরিয়ে পড়লো হাসপাতাল থেকে।
ফর্মালিটিস পালন করে রুপন্তীর কেবিনে এসে হতভম্ব হয়ে যান আজিজ রায়হান।পুরো রুমের কোথাও খুঁজে পাননা রুপন্তীকে।
মাথায় হাত রেখে খাটে বসে পড়েন ওনি।হঠাৎ হালকা বাতাসে একটা কাগজ আজিজ রায়হানের পায়ের সামনে এসে পড়ে।
আজিজ রায়হান নিচু হয়ে কাগজটা হাতে নেন।সেটার ভাজ খুলে পড়তে লাগলেন,
বাবা আমি তোমার কথা রাখতে পারলাম না।মাফ করে দিও।আমি বাধ্য ছিলাম সেখানে ফিরে যেতে।না গেলে তোমার আমার এই পরিবারটার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেতো।
তাই আমাকে যেতে হচ্ছে।সেখানে আমাকে ওরা কষ্ট দেয়না কিন্তু আমি নিজের রাগ অভিমানের কারনেই না খেয়ে ছিলাম।ওনারা নিজেদের নিয়ে ব্যাস্ত থাকে।তাই আমার কোন ক্ষতি হবেনা।নিশ্চিন্ত থেকো বাবা।আপির খেয়াল রেখো।নিজের ও খেয়াল রাখবে।ওনারা বের হলেই তোমার সাথে যোগাযোগ করবো আমি।ভালো থেকো বাবা।আর তোমার রুপন্তীকে মাফ করে দিও।আই লাভ ইউ বাবা।
আজিজ রায়হান চিঠিটা বুকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করেন।মেয়েটা খুব বুঝের।কিন্তু ওনার যে ভয় হয় মেয়েটাকে হারানোর ভয়।
রুপন্তী প্রনয় খানের ঘরে পৌছুতেই প্রনয় খান ওর কাছে এসে দাঁড়ায়।
-হোয়াট এ সারপ্রাইজ মাই ডটার!!!তুমি ফিরে এসেছো?আনবিলিভেবল।
-ফিরে তো আসতে হতোই।শত হলে ও আপনারা আমার বায়োলজিকাল প্যারেন্টস।আপনাদের ও অধিকার আছে আমার ওপর।বলে উঠে রুপন্তী।
-বাহ অদ্ভুত পরিবর্তন।কোন প্ল্যান আছে কি মামনি?জিজ্ঞেস করেন প্রনয় খান।
-তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় রুপন্তী।নাহ নেই।আর আমার মস্তিস্ক আপনাদের মতো এতো জটিল কিছু ভাবতে পারেনা।আমি একটু রেস্ট নিতে চাই,এক্সকিউজমি। বলে প্রনয় খানকে পার করে উপরে চলে যায় রুপন্তী।
প্রনয় খান মেয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
রায়না রাহমান নিজের ডেইলি চেকআপ করাতে হাসপাতালে এসেছেন।
চেকআপ করিয়ে রোয়েনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
ছেলেটা বলছিলো আসবে মাকে নিতে।
হঠাৎ কালো একটা গাড়ি দেখে সেদিকে এগোয় রায়না রাহমান।গাড়ির কাছে এগোতেই কেউ ওনার হাত ধরে ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়।চিৎকার করতে পারেননা রায়না রাহমান।
ভিতরে সাজিদ রায়হান বসে আছেন।রায়না রাহমান কিছু বলতে যাবে তখনই ওনার রিংটোন বেজে উঠে।
সাজিদ ড্রাইভিং করছে।রায়না রাহমান ফোন চেক করে দেখেন রোয়েন কল করছে।রায়না ফোন রিসিভ করে কানে না দিয়ে সাজিদ রায়হানকে বললেন,
-সাজিদ তুমি?কই নিয়ে যাও আমাকে?
-আমার বাসায়।তোমাকে আজ আমার সাথে নিয়ে যাবো।তুমি থাকবে আমার সাথে।
-কখনোনা গাড়ি থামাও আমি নামবো।
রোয়েন ফোন কেঁটে সাজিদের বাসার জন্য রওনা হয়।
সাজিদ রায়নাকে নিয়ে আসেন টানতে টানতে।
রায়না রাহমানকে উপরের মাস্টার বেডে নিয়ে আসেন।
রায়না রাহমানকে বসান নিজের ইজি চেয়ারে।
-তুমি এ চেয়ারটাকে মনে করতে পারছো?বিয়ের পরে তুমি পছন্দ করে কিনেছিলে।বলে উঠেন সাজিদ রায়হান।
-দেখো আমি এখন আরেকজনের স্ত্রী।তোমার আর আমার মাঝে কিছু নেই।প্লিজ ছেড়ে দাও।
-আমি জানি।কিন্তু আমি ও তোমার স্বামী।তালাক হয়নি আমাদের।বলেন সাজিদ রায়হান।
-আমি কিছু শুনতে চাইনা।প্লিজ যেতে দাও আমাকে।বলে উঠেন রায়না রাহমান।আমার গল্প সবার আগে পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
-আমি তোমাকে আমার ছেলেদেরকে চাই।প্লিজ ফিরে এসো।বলে উঠেন সাজিদ রায়হান।
রোয়েন সাজিদ রায়হানের ঘরের দরজা খুব জোরে শব্দ করে খুলে চিৎকার করে ডাকতে থাকে,
-মিঃ সাজিদ রায়হান কই আপনি?মিঃ সাজিদ রায়হান!!!!
কারোর চিৎকারে ভ্রু কুঁচকান সাজিদ রায়হান।তারপর হঠাৎ রোয়েন ওনার রুমে ঢুকে দরজা জোরে শব্দ করে খুলে।
পাশ ফিরে তাকান রায়না তারপর বলে উঠেন রোয়েন!!
রায়নার মুখে রোয়েন শুনে সাজিদ রায়হান,,,,,,,,,
চলবে