Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 51

রোয়েনের অবহেলায় রুহীর একাকী সময় গুলো কেঁটে যেতে থাকে কোন রকমে।কখনো ফোন দিতো আবার কখনো দিতো ও না।রুহী মানিয়ে নিচ্ছিলো রোয়েনের অবহেলা গুলো।
এ্যাংগেজমেন্টের আংটিটাকে ঘুরাতে থাকে রুহী।চোখের কোনা বেয়ে অঝোরে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
কেন এমন হচ্ছে?এমন টা তো হবার ছিলো না।রোয়েন এমন করছো কেন?বুঝতে পারছিনা।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে চোখজোড়া বুজে নিলো রুহী।বন্ধ চোখ জোড়া বেয়ে কয়েকফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।হঠাৎ মাথায় কারোর ছোঁয়া পেয়ে চোখ খুলে রুহী।মুখ লুকিয়ে অশ্রু মুছে মাথা তুলে তাকায়।
কিরে মা একা বসে আছিস কেন?কিছু হয়েছে?মন খারাপ?এক নাগাড়ে জিজ্ঞেস করে গেলেন আজিজ রায়হান।
না বাবা,ঠিক আছি।সামনে টেস্ট এক্সাম।তাই টেনশনে আছি।হালকা হাসার চেষ্টা করলো রুহী।
জানিনা আমার বয়স বেড়েছে নাকি আমার মেয়ে পাল্টে গেছে।কিছু একটা হারিয়ে গেছে তোর চেহারা থেকে সেটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি বেশ কয়েকদিন ধরে।
রুহীর মাথায় হাত রেখে বলল আজিজ রায়হান।
না বাবা তেমন কিছুনা।রাত জাগা হয় তাই হয়ত।আবার ও হাসার চেষ্টা করলো রুহী।
রোয়েনের সাথে একটু ঘুরে আসতে পারিস তো।অনেক দিন তো হলো কোথা ও যাস না তোরা।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
না বাবা আমার পরীক্ষা তাই ওকে মানা করে দিয়েছি কোথাও বের হতে পারবোনা।
হুম।সেটাও ঠিক। একটা কাজ কর পরীক্ষা শেষ করে কোথা ও ঘুরে আসিস তোরা।হেসে বললেন আজিজ রায়হান।
জি বাবা।কান্না দমিয়ে বলল রুহী।
রুহীর কপালে চুমু খেয়ে বেরিয়ে গেলেন আজিজ রায়হান।
বাবা চলে যেতেই দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠে রুহী।বেশ কিছুক্ষন কাঁদার পর হাত মুখ ধুয়ে কলেজে যাওয়ার জন্য রওনা হলো।
বান্ধবীদের সাথে ও আজ তেমন একটা কথা হয় না রুহীর।সবসময় একা বসে থাকে কোনার একটা বেঞ্চে চুপচাপ বসে থাকে।ক্যান্টিনে এসে কিছুক্ষন বসে থেকে চলে যায়।
দেখতে দেখতে টেস্ট পরীক্ষা চলে আসে রুহীর।পরীক্ষা গুলো দিতে থাকে যেমন তেমন করে।এভাবে একমাস কেঁটে যায়। রুহী লাস্ট এক্সাম দিয়ে রোয়েনের ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে।
আজ নিজ হাতে বিরিয়ানী রান্না করেছে রোয়েনের জন্য।
রোয়েনের ভার্সিটির গেইটে ঢুকে সামনে আগাতেই রোয়েনকে দেখতে পায় রুহী।মুখে একচিলতে হাসি ফু্টে উঠে রুহীর।সাদা এপ্রোনে রোয়েনকে একদম ডাক্তার লাগছে।
রোয়েন ঐতো ভাবি!!!রোয়েনের এক বন্ধু রুহীকে দেখিয়ে বলল।
রোয়েন রুহীকে দেখে চুপচাপ ওর কাছে এসে দাঁড়ায়।
কি হলো এখানে কেন?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
আমি বিরিয়ানী রান্না করে এনেছি।তোমার তো খুব পছন্দ তাইনা?হেসে বলল রুহী।
রুহীর হাত চেপে ধরে একটা গাছের নিচে নিয়ে এলো রোয়েন।এমনিতেই খুব টেনশনে আছি।আর টেনশন দিওনা।চলে যাও।ধমক দিলো রোয়েন।
রুহীর চোখ জোড়া ভরে এলো।কিছু না বলে ভার্সিটির গেইট দিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুহী।রোয়েনের গাড়িতে খাবার রেখে ঘরে চলে যায় রুহী।ঘরে এসে দৌড়ে রুমে ঢুকে যায় রুহী।দরজা বন্ধ করে চিৎকার করে কেঁদে উঠে মায়াবতী।
ক্লাশ শেষে বেরিয়ে আসে রোয়েন।ভালো লাগছেনা কোন কিছু।জীবনটা দোযখের মতো লাগছে।গাড়ির কাছে আসতেই ড্রাইভার রোয়েনের হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিলো।
ম্যাম দিয়া গেছে।বলে উঠলো ড্রাইভার।
রোয়েনের বুক কেমন হুহু করে উঠে।এভাবে ধমক দিলো কি করে?ফোন বের করে রুহীকে কল করে রোয়েন।কিন্তু ফোন ধরেনি রুহী।গাড়িতে বসে বিরিয়ানী টুকু খেতে শুরু করে রোয়েন।
এতো অসাধারন বিরিয়ানী আগে কখনো খাওয়া হয়নি।বিরিয়ানী চেটেপুটে খেয়ে পানি পান করে নিলো রোয়েন।
রুহীর রুমের দরজা বেশ কিছুক্ষন নক করার পর ও খুললনা।রুপন্তী এবার সবাইকে ডাকতে লাগলো।সাইফ রহমান জোরে ধাক্কা দিলেন দরজায়।কিছু হলোনা।জোরে ডাকছে রুহীকে। কিন্তু অপর পাশ থেকে জবাব পাচ্ছেনা ওরা।
শেষমেষ তালা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
রেহান তালা ভাঙ্গলো।
ভিতরে ঢুকতেই চমকে উঠলো সবাই।রুহী নিচে পড়ে আছে।ওর মুখ থেকে সাদা ফেনা জাতীয় কিছু বেরিয়ে আসছে।
রুহী!!!চিৎকার করে ডাকলেন আজিজ রায়হান।
রুহীকে খাটে শুইয়ে দিলো ওরা।ডাক্তার ডাকা হলো।
অনেক গুলো মেডিসিন খেয়েছে ও।সেজন্য এমন হলো।একটু খেয়াল রাখবেন।কিছু মেডিসিন লিখে দিলাম।সময়মতো দিয়ে দিবেন।বলে উঠলো ডাক্তার।
আজিজ রায়হান রুহীর পাশে বসে ওর মাথার চুল হাতাচ্ছেন।
রেহান ডাক্তারকে বিদায় দিতে গেলো।রুহী চোখ খুলে তাকালো।
মা এমন করলি কেন তুই?কিসের এতো কষ্ট তোর বল?এতোদিন তোকে দেখছি এভাবে মন মরা হয়ে থাকতে।আর আজ আত্মহত্যা করতে গেলি তুই।কেন মা?বলতে লাগলেন আজিজ রায়হান।
দাঁড়া রোয়েনকে কল করছি।ও আসুক।ওর থেকেই সব জানবো।বলে রোয়েনকে কল দিলেন আজিজ রায়হান।রোয়েনের ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে।কিরে মা রোয়েনের নম্বর তো বন্ধ।বলে উঠলেন আজিজ।
বাবা ওকে কল দিওনা।মনে হয় ফোনে চার্জ নেই।এসব না জানানোই ভালো।শুধু টেনশন দিয়ে লাভ নেই।
অসুস্থ গলায় বলে চোখ বুজে নিলো রুহী।
চলবে