Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 3

বুকের মাঝে কেমন যেন একটা ঝড় বয়ে গেলো রোয়েনের।রোয়েন আরো জোরে জড়িয়ে নিলো রুহীকে নিজের বুকের মাঝে।আজিজ রায়হান দৌড়ে এলেন রোয়েনের কাছে।ওর কি হয়েছে? মেয়েকে রোয়েনের বুকের মাঝে চুপ থাকতে দেখে প্রশ্ন করে উঠলেন আজিজ রায়হান।সেন্সলেস হয়ে গেছে।চলুন ওকে বাসায় নিয়ে যাই।গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলো রোয়েন।হুম চলো।আজিজ রায়হান রোয়েনের সাথে বেরিয়ে এলেন ক্লাব থেকে।রুহীকে পিছনের সিটে বসিয়ে দিলো রোয়েন আজিজ রায়হানের পাশে।মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বসে আছেন আজিজ রায়হান।রোয়েন ড্রাইভ করছে।ওর চোখ জোড়া অবচেতন রুহীকে দেখে যাচ্ছে।কি হচ্ছে ওর?কেন এ মেয়েকে এভাবে নিজের কাছে টানছে ও?কেন ওর মায়াজালে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে রোয়েন?যতক্ষন বুকে জড়িয়ে রেখেছিলো ততক্ষন কেমন একটা অদ্ভুত প্রশান্তি পাচ্ছিলো ও।বড় একটা নিশ্বাস নিয়ে গাড়ি চালানোয় মন দেয় রোয়েন।
রুহীকে নিজের ঘরে নিয়ে আসে রোয়েন।সোফার ওপর শুইয়ে দেয়া হয়েছে ওকে।আজিজ রায়হান অনেক আগেই আনিলা বেগমকে রোয়েনের বাসায় আসতে বলেছিলেন।
আনিলা বেগম ঘরে ঢুকেই মেয়ের কাছে বসে পড়লেন।রুহী!!! মা আমার কথা বল!!মা আসছি!!!চোখ খুল মা!!রুহী!!!!মেয়েকে ঝাঁকাতে লাগলেন আনিলা বেগম।রোয়েন দূর থেকে ওনাদের দেখে যাচ্ছে।মায়ের ভালবাসাকে প্রচন্ড ভাবে অনূভব করছে।মা কি জিনিস জানা ছিলো না ওর।কিন্তু আনিলা বেগমকে দেখে বুঝে গেছে মায়ের ভালোবাসা কি?
চোখ জোড়া ভরে আসে রোয়েনের।
রুহী!!! মা উঠ বাসায় চল।আজিজ রায়হান মেয়েকে ডাকতে লাগলেন।খানিকটা নড়ে উঠলো রুহী।মেয়েকে নড়ে উঠতে দেখে আনিলা বেগমের ঠোঁটের কোনায় হাসি ফুঁটে উঠলো।
রুহী!!!মা আসছি।চোখ খুল রুহী।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।মা!!!আস্তে করে ডেকে উঠলো রুহী।চোখ খুলতে পারছেনা ও।রুহী চোখ খুল মা।আজিজ রায়হান বলে উঠলেন।
পারছিনা।চোখ খুলতে পারছিনা।ভয়ে পেয়ে বলতে লাগলো রুহী।
রোয়েন এবার উঠে ওনাদের কাছে এসে দাঁড়ালো।আই থিংক লাইটের আলোয় চোখ খুলতে প্রবলেম হচ্ছে ওর।বেশ কিছুক্ষন যাবৎ অন্ধকারে ছিলো।রুহীর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।হুম হতে পারে।থ্যাংকস বাবা।তুমি জানোনা তুমি কি করেছো? একটা মায়ের বাচ্চাকে তার বুকে ফিরিয়ে দিয়েছো।আনিলা বেগম বলতে লাগলেন।
রোয়েন রুহীর দিকে তাকিয়ে থেকে হালকা হাসলো।আনিলা চলো ওকে নিয়ে বাসায় যাই।রুহীকে উঠাতে উঠাতে বললেন আজিজ রায়হান।রুহীকে নিয়ে যাওয়ার কথায় বুকখানি কেঁপে উঠলো রোয়েনের।ওকে কোথা ও নিবেননা।বলে উঠলো রোয়েন।
কি বলছো বাবা? কেন নিবোনা আমার মেয়েকে?কিছুটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন আনিলা বেগম।ও এখানে থাকবে আমার কাছে।রুহীকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল রোয়েন।
প্লিজ বাবা আমার মেয়ের সাথে এমন করোনা।ছোট মানুষ ও।বলে উঠলেন আনিলা বেগম।
দেখেন একদিন না একদিন ওকে আমার সাথেই বিয়ে দিতে হবে।বিয়ে পর্যন্ত এখানেই থাকবে ও।
বিয়ে!!!!!অবাক হয়ে গেলেন আজিজ রায়হান।
ইয়েস।ওকে পছন্দ হয়েছে আমার।আর স্করপিয়ন গ্রুপের নজর এখন ও ওর ওপরে আছে।আপনাদের সাথে পাঠালে রিস্ক বাড়বে।আমার কাছে সেফ থাকবে ও।
আর আমি বলছিনা যে আপনারা ওর সাথে একেবারেই দেখা করতে পারবেননা।যখন দেখা করতে চাইবেন আমাকে জানিয়ে দেবেন।কারন ভুলে যাবেননা আপনাদের আরেকটা মেয়ে আছে।একনাগাড়ে কথা গুলো বলে থামলো রোয়েন।
রোয়েনের কথায় যৌক্তিকতা খুঁজে পেলেন আনিলা বেগম।আচ্ছা,ঠিক আছে।ওকে দেখে রেখো বাবা।বেরিয়ে যেতে যেতে বললেন আনিলা বেগম।কিন্তু একমাত্র আজিজ রায়হান রাজি হলেন না।আমার মেয়েকে আমি রাখবো।জোর গলায় বলেন আজিজ রায়হান।দেখেন আমি চাইলে রুহী নিজের কাছে রেখে আপনাদের ফেলে দিতে পারি।আপনারা কিছু করতে পারবেননা।আর আপনার হাসবেন্ড আমার ক্ষমতা সম্পর্কে জানে।বাট কিছু করবোনা আমি্।কারন আপনারা ওর মা বাবা।ওর ওপর আপনাদের অধিকার আছে।আমি ছোটবেলা থেকে মা বাবা ছাড়া বড় হয়েছি।সো আমি জানি মা বাবা ছাড়া কেমন লাগে।বিয়ে পর্যন্ত এখানে থাকবে।ওর পড়াশুনা আর খরচাদির সব দায়িত্ব এখন আমার।আপনাদের যখন ইচ্ছা তখনই ওকে দেখতে আসবেন।এর বাহিরে আর কিছুনা।আজিজ রায়হানের দিকে দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো বলছিলো রোয়েন।আনিলা বেগম জোর করে স্বামী আজিজ রায়হানকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন।ওনারা চলে যেতেই রুহীকে কোলে তুলে নিলো রোয়েন।মেয়েটা ওর বুকে মাথা দিয়ে রেখেছে।রুহীকে নিয়ে রুমে চলে এলো রোয়েন।রুহীকে খাটে শুইয়ে দিলো।ঠান্ডা বাতাস এসে রুহীর মুখের ওপরের চুল গুলো সরিয়ে দিলো।রোয়েন নেশাভরা চোখে রুহীকে দেখে যাচ্ছে।রুহীর গালে হাতে মাইরের দাগে ভরে গেছে।রুহীর হাত টেনে দাগ গুলোয় ঠোঁট বুলিয়ে দিতে লাগলো রোয়েন।হাত থেকে ঠোঁট সরিয়ে রুহীর গালে ঠোঁট ছুঁয়ে দিতেই চোখ খুলল রুহী।রোয়েনকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো নিজের কাছ থেকে।কে আপনি?এখানে কেন এনেছেন আমাকে?আমার মা বাবা কই?ওনারা এসেছিলো।কই ওনারা?আশেপাশে তাকিয়ে মা বাবাকে খুঁজতে লাগলো রুহী।আমাকে নিয়ে চলুন ওনাদের কাছে।চিৎকার করতে লাগলো রুহী।
লিসেন তুমি এখানে থাকবা।তোমার যখন ইচ্ছা করবে তখন ওনারা এখানে আসবেন।বলে উঠলো রোয়েন।না আমি এখানে থাকবোনা।ভালো লোকনা আপনি।চোখের সামনে এতগুলো লোককে মেরে ফেললেন।আপনি একটা গুন্ডা।আর রুহী কখনো এমন লোকের সাথে থাকবেনা।চিৎকার করে বলল রুহী।শুনো আমি তোমাকে পছন্দ করি এবং আমার সাথে তোমার বিয়ে হবে।তোমার বিয়ের বয়স হলে তখনই তোমাকে বিয়ে করবো।তোমাকে এখানেই থাকতে হবে।সুতরাং এখান থেকে যাওয়ার জন্য জেদ করবানা।আর একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো অতিরিক্ত কথা পছন্দ করিনা।সো ডোন্ট টক টু মাচ।কথা গুলো এক নাগাড়ে বলে উঠে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
রুহী খাটের ওপর বসে আছে।কই চলে এলো ও?লোকটাকে ভীষন ভয় করে ওর।কিভাবে এতগুলো লোককে মেরে ফেললো? ভাবতেই গলা শুকিয়ে যাচ্ছে রুহীর।কথা গুলো ভাবছিলো রুহী।
কিছুক্ষন পর রোয়েন প্লেটে খাবার নিয়ে রুমে এসে রুহীর সামনে বসলো।রুহী পিছিয়ে যেতেই ওর হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো রোয়েন।ডোন্ট ডেয়ার!!!রুহীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে মোটা গলায় বলল রোয়েন।রুহী কেঁদে দিবে দিবে অবস্থা।
রোয়েন এক নজর রুহীর দিকে তাকিয়ে ভাত মাখিয়ে রুহীর দিকে ধরলো।
রুহী ভাতের দিকে একবার তাকিয়ে রোয়েনের দিকে ভয়ে ভয়ে তাকালো।খাও!!!!ধমক দিলো রোয়েন।রুহী খানিকটা কেঁপে উঠলো।আগত ধমক এড়াতেই রোয়েনের হাতে খাবারটুকু খেয়ে নিলো।
চলবে