Love Right

Love Right ! Part- 21+ 22

ইলারা বেগম:সেটা অবশ্য তুই ঠিকই বলেছিস😂।এই মেয়েদুটোকে যে ছেলে সামলাতে পারে তাকে আমি নিশ্চিন্তে মেয়ের জামাই করতে পারি।
ইশু:মা??
নীল:মাকে ডেকে কোন লাভ হবে না হিসুবেবির ইশুপাখি,বিয়ে তোর তানিম ভাইয়ের সাথেই হচ্ছে!
নিশু:অসভ্য একটা!
নীল:কেন হিসুবেবি?আমি খারাপ কি বললাম?
নিশুর হাতের চামচটা নীলের সামনে এগিয়ে নিয়ে বললো…আরেকবার হিসুবেবি হিসুবেবি করলে চামচ দিয়ে মুখ ভোতাঁ করে দেবো তোমার!
নীল:তাই নাকি?
নিশু:হ্যাঁ তাই!
নীল:ঠিক আছে একবার বলবো না।দুইবার তিনবার, চারবার তুমি যতবার চাও ততবার বলবো।এবার খুশি?
নিশু:😐
ইলারা বেগম নীল ধমক দিয়ে বললেন তুই আর ওর পেছনে লাগিস না তো!তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ কর।
নীল:আমি কেন ওর পেছনে লাগতে যাবো?ওইতো আমার সামনে, পেছনে,আশের পাশে সারাক্ষণ লেগে থাকে।
নিশু:ঢং!ভাবখানা এমন যেন আমাকে উনি ভালোবাসেনই না?
নীল:এখানে ভালোবাসা আসলো কোথা থেকে?
নিশু:কেন?তোমার হৃদয় থেকে!
নীল:পাগলের সুখ মনে মনে!
নিশু:কেন তুমি আমাকে ভালোবাসো না?
নীল ওকে রাগানোর জন্য অবাক হওয়ার ভান করে বললো..বাসি নাকি?
নিশু রাগে দাঁতমুখ খিঁচে বললো.. বাসো না মানে? একশবার বাসো।হাজার বার বাসো!
নীল মুখটিপে হাসি চেপে রেখেছে।ইলারা বেগমও মুখ টিপে হাসছেন।
নিশু:কি হলো তুমি হাসছো কেন?আমি কি হাসির কিছু বলেছি?
নীল ওর কথার জবাব না দিয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে গেলো,তারপর হাত ধুয়ে সোজা ওপরে চলে গেলো।ইলারা বেগমও বুয়াকে সব পরিষ্কার করতে বলে নিজের ঘরে দিকে পা বাড়ালেন।
নিশু অবাক হয়ে ইশুর দিকে তাকিয়ে বললো…অসভ্যটা আমাকে পাত্তাই দিলো না?
ইশু:😂তুই এমন প্রশ্ন করিস কেন যেটার উত্তর তুই নিজেই জানিস?
নিশু:কিসের প্রশ্ন কিসের উত্তর?
ইশু:এই যে তুই একটু আগে ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলি ও তোকে ভালোবাসে কি না?
নিশু:তো?
ইশু:তুই জানিস না ভাইয়া তোকে ভালোবাসে কি না?তাহলে জিজ্ঞেস করিস কেন?
নিশু মুখটা ছোট করে বললো…ওর মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শুনতে আমার ভীষণ ভালোলাগে।
তারপর মুখটা বাঁকা করে বললো..কিন্তু তোর যা ভাই!বোমা ফাটালেও মুখ দিয়ে কথা বেরোয় না!
ইশু:তবুও তো মেয়েদের লাইন লেগে থাকে আমার ভাইয়ের পেছনে।
নিশু:কিন্তু সব মেয়ে তো আর নিশিতা জামান না যে নীলাস হাসান তার প্রেমে হাবুডুবু খাবে ?
ইশু:ইশশস!
নীল:ইশু?
নীলের গলা শুনেই নিশু সামনে ঘাড় ঘুরালো।নীল ওর দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।
নীল:কি হলো?
ইশু হাসতে হাসতে বললো…নিশু বলছিলো তুই নাকি ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিস।ইশুর কথা শুনে নীল ঠোঁট উল্টিয়ে নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো…তাই নাকি?
নিশু চোখ গরম করে ইশুর দিকে তাকালো।অসভ্য মেয়েটা নীলকে এই কথাটা না বললে কি হতো?ইশু এখনো হাসছে।
নীল:কি হলো?চুপ করে আছো যে?
নিশু:ঠিকই তো বলেছি।
নীল:তাই নাকি?
নিশু:হ্যাঁ তাই!..আবার কেন এসেছো?
নীল হাতের পানির জগটা দেখিয়ে বললো…পানি নিতে!
নিশু:মিথ্যেবাদী!
নীল:মিথ্যেবাদী মানে?
নিশু:মানে তুমি মিথ্যে কথা বলছো।
নীল:😐ঠিক আছে তুমি বলো আমি কেন এসেছি?
নিশু:তুমি দেখতে এসেছো তোমার কথা শুনে আমি মন খারাপ করেছি নাকি?

নীল আসলে সেইজন্যেই এসেছিলো।রুশার সাথে ঝামেলার পর থেকে তো এইপর্যন্ত তো কম খারাপ ব্যাবহার করে নি নিশুর সাথে?যতবার দূরে সরাতে চেয়েছে নিশুর তার চেয়ে বেশি করে ওকে আঁকড়ে ধরেছে।নীলকে বাধ্য করেছে আরো বেশি করে ওর প্রেমে পড়তে।কিন্তু মুখে স্বীকার করলো না।কিন্তু নিশুও নাছোড়বান্দা।

নিশু:আমি কি এমনি এমনি বলেছি তুমি আমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো?
নীল:সারাদিন মাথায় এসব নিয়েই ঘোরো না?…দেখো নিশু…
নিশু:সারাক্ষণই তো দেখছি!
নীল:উফফ!
নিশু:কি হলো জান?
নীল বুঝে গেলো একে এভাবে সোজা করা যাবে না।ও নিশুর পেটের দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বললো…হবে তো তোমার জান!বিয়ের পরে।অবশ্য তোমার পারমিশন পেলে বিয়ের আগেই…
নিশু:লুচু ছেলে একটা!মেয়ে দেখলেই হুঁশ থাকে না।
নীল:😐এখন কেন?
নিশু একটু ভাব নিয়ে বললো…এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?কোনদিন মেয়ে দেখো নি?
নীল দাঁতেদাঁত চেপে বললো…দেখবো না কেন?আমি তো সারাদিন মেয়েদেরকেই দেখি!
নিশু:দেরীতে হলেও সত্যিটা স্বীকার করলে।

ইশু এগিয়ে এলো।এই দুইজন ঝগড়া শুরু করলে থামার কোন নামগন্ধও থাকে না।
ইশু:ভাইয়া তুই আমাকে কেন ডাকছিলি?
নীল:আমার মাথাটা ধরে আছে।তুই একটু আমার ঘরে আয় তো।
ইশু:ঠিক আছে তুই যা।আমি আসছি।

নীল ওপরে চলে গেলে নিশু ইশুকে বললো…এইজন্যই ওর চোখমুখ এমন দেখাচ্ছিলো।
ইশু হাসতে হাসতে বললো..যা!এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে ওপরে যা!
নিশু:আমি যাবো?
ইশু:তাহলে আমি যাই?
নিশু:😐বদ মেয়ে একটা!
ইশু:আমি না বললেও তো যেতি,তাহলে এত ভাব ধরছিলি কেন?
নিশু:ঠিক আছে আমি যাবো না তুই যা!
ইশু:সত্যি সত্যি চলে যাবো কিন্তু?
নিশু:তো যা না।

ইশু ড্রয়ার থেকে মলমটা নিয়ে নিশুর দিকে তাকিয়ে বললো….আমি যাচ্ছি তাহলে?
নিশু খপ করে ওর হাত থেকে মলমটা নিয়ে বললো…এত কাজ না দেখিয়ে,যা ঘুমোতে যা!
ইশু:😁
নিশু বিড়বিড় করে ওকে বকতে বকতে বেরিয়ে গেলো।

নীল চোখ বন্ধ করে লম্বা হয়ে খাটে শুয়ে আছে।নিশু নিঃশব্দে গিয়ে ওর মাথার পাশে বসলো।ও বসতেই নীল চোখ না খুলেই মিটিমিটি হাসছে।
নিশু:হাসছো যে?
নীল:এত রাতে পরপুরুষের ঘরে তোমার কি?
নিশু:মাথা ব্যথা নিয়েও অসভ্যতা।একদম চুপ করে থাকবে তুমি,কোন কথা বলবে না।(ধমক দিয়ে)

নিশু নীলকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে যত্ন করে ওর কপালে ওষুধ লাগিয়ে দিলো।আরাম পেয়ে নীল চুপ করে আছে।
নীল:অনেক রাত হয়েছে!যাও এবার ঘুমোতে যাও।
নিশু:তুমি ঘুমাচ্ছো না কেন?
নীল:তুমি লাইটটা অফ করে দিয়ে যাও।আমার ঘুম এসে যাবে।
নিশু উঠে গিয়ে লাইটটা অফ করে দিয়ে আবার নীলের কাছে এসে বসলো।
নীল:কি হলো?
নিশু:তুমি ঘুমাও আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
নীল:পাগলামি করো না নিশু।যাও শুয়ে পড়!
নিশু কিছু বলছে না।চুপ করে আছে।
নীল:কি হলো এখনো বসে আছো কেন?
নিশু:আমি যাবো না।
নীল:তো কি করবে?
নিশু:আমি তোমার পাশে বসে থাকবো।
নীল:এত রাতে আমার পাশে বসে থাকা লাগবে না।
নিশু:আমি কি তোমার পারমিশন নিচ্ছি নাকি?আমি থাকবো বলেছি মানে থাকবো!
নীল:আমার মাথাটা গরম করাবে না নিশু।যাও বলছি!(ধমক দিয়ে)
নিশু মুখটা কালো করে অভিযোগের সুরে বললো..তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না নীল।
নীল:কি করে বুঝলে?
নিশু:এই যে আমাকে বের করে দিচ্ছো?
নীল হাসি চেপে রেখে বললো…কেন আমার ঘরে থাকতে দিলেই বুঝি অনেক বেশি ভালোবাসা হয়ে যেত।
নিশু ওর কথার জবাব না দিয়ে বললো..থাকি না নীল?
নীল:(কেন বোঝোনা নিশু তুমি পাশে থাকলে নিজেকে সামলে রাখা যে কতটা কঠিন সেটা শুধু আমিই জানি!)
নিশু:থাকি?
নীল:না!
নিশু চাদর সরিয়ে বিছানা থেকে নেমে গেলো।আবছা আলোতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে নীল অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে আছে।নিশু বেরোতে গিয়ে আবার ফিরে এলো।
নীল:কি হলো?
নিশু ওর গায়ে চাদরটা মেলে দিয়ে তারপর বেরিয়ে গেলো।নীল ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
ও নিজেও চাইছিলো নিশুকে বুকে নিয়ে শান্তিতে একটা ঘুম দিতে কিন্তু এমন কিছু ও করতে পারবে না যাতে নিশুর কোন অসম্মান হয়।তাছাড়া বাসায় ইলারা বেগম,ইমতিয়াজ সাহেব আছেন।তারওপর কাজের বুয়াটাও আছে।হুট করে কেউ দেখে ফেললে খারাপ কিছু ভেবে বসতে পারেন।

নিশু ফিরতেই ইশু ওকে রাগানোর জন্য বললো…ভাইয়া বের করে দিয়েছে?…ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছে নাকি….
নিশু:খুব হাসি পাচ্ছে না?…যেমন ভাই তেমন বোন!…খুব খারাপ তোরা।
ইশু:আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু একটা কথা বলতো..তোর কি বুদ্ধিশুদ্ধি কোনদিন হবে না?
নিশু:মানে?
ইশু:তুই একটা অবিবাহিত মেয়ে।তোকে আর ভাইয়াকে একসাথে দেখলে কি সর্বনাশ হবে ভাবতে পারছিস?
নিশু:সর্বনাশের কথা বলছিস?নীল চাইলে শুধু রাতের বেলা কেন?যেকোন মুহূর্তেই আমি নিজেকে ওর কাছে সপেঁ দিতে রাজী আছি।
ইশু:নিশু!!!(অবাক হয়ে)
নিশু:হ্যাঁ!কারন আমি জানি আমার সকল ইন্দ্রিয় ভুল হলেও আমার নীল কখনো ভুল হতে পারে না।
ইশু:(ভাইয়া কেন তার নিশুর সব পাগলামি সহ্য করে তা আমি বুঝতে পেরেছি নিশু!কারন ভাইয়া জানে তোর মত কেউ ভালোবাসতে পারবে না!)..তাই??(মুগ্ধ হয়ে)
নিশু:হ্যাঁ!
ইশু:তাহলে বের করে দিয়েছে বলে রাগ করছিস কেন?
নিশু:তাই বলে আমাকে এভাবে ধমক দিয়ে বের করে দেবে?
ইশু:ভাইয়া ভালোভাবে বললে তুই কোনদিন শুনেছিস ওর কথা?
নিশু:থাক!তুই ভাইয়ের হয়ে সাফাই গাওয়া বন্ধ কর।
ইশু হাসতে হাসতে বললো…আচ্ছা বন্ধ করলাম। এবার শুতে আয়?
নিশু:আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।

সকাল বেলা নীলের ঘুম ভাঙতেই দেখলো সাড়ে সাতটা বাজে।ও উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলো।
একেবারে রেডি হয়ে সবে রুম থেকে বেরোবে ঠিক এমন সময় নিশু এসে হাজির।
নিশু:রোজ রোজ এত সেজেগুজে অফিসে যাও কেন?
নীল:সকাল হতে না হতেই তোমার পাগলামি শুরু হয়ে গেলো?
নিশু:সত্যি কথা বললে সবারই গায়ে লাগে।
নীল:সকাল সকাল কি শুরু করলে নিশু?
নিশু ওর দিকে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ওর কলার চেপে ধরে বললো…তুমি এই শার্ট পরে যাবে না।
নীল:কেন?
নিশু:তুমি কি ভেবেছো এত সেজেগুজে কারজন্য অফিসে যাও আমি বুঝি না?
নীল:উল্টোপাল্টা না বকে যাও,রেডি হও গিয়ে আমাদের বেরোতে হবে।
নিশু:না।আগে তুমি শার্টটা খুলবে তারপর আমি যাবো।
নীল:তুমি যাবে?(ধমক দিয়ে)
নিশু:না!
নীল:কি বললে?আবার বলতো দেখি?
নিশু:কেন তুমি শোনোনি?
নীল:ঠিক আছে যাওয়ার দরকার নেই।লাগবে তোমার অফিসে যাওয়া।
নীল ওকে পাশ কাটিয়েই বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।নিশুর কথা শুনেই পরক্ষনেই আবার থমকে দাঁড়িয়ে গেলো।
নিশু:নীল আমি কিন্তু আবার পেট দেখিয়ে শাড়ি পরে আসবো বলে দিলাম।
নীল:কি বললে?
নিশু:তুমি যেটা শুনেছো।
নীল:বেশি সাহস হয়ে গেছে না?
নিশু:তো তুমি কি ভেবেছো আমি তোমাকে ভয় পাই?
নীল দাঁতমুখ খিঁচে খাটের ওপর গিয়ে বসে বললো..ঠিক আছে আমি বসলাম দেখি তোমার কত সাহস? যাও পরে এসো?
নিশু:আমি কিন্তু সত্যি সত্যি পরবো বলে দিলাম?
নীল:এসো না পরে এসো?
নিশু রাগে আর কিছু বলতে পারলো না।ও মুখটা ভার করে বললো..থাক লাগবে না তোমার আমার কথা শোনা।যাও তুমি অফিসে যাও!
নীল:তোমাকে আমি দশমিনিট সময় দিলাম রেডি হয়ে আসার জন্য।জাস্ট টেন মিনিটস!…এরমধ্যে যদি তুমি রেডি হয়ে না এসেছো তো তোমার একদিন কি আমার একদিন।
নিশু:আমি যাবো না অফিসে।মানে যাবো না।
নীলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ও বেরিয়ে গেলো।

ও বেরিয়ে যেতেই নীল শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে বললো…আমাকে পাগল করে ছাড়বে এই মেয়ে!
আলমারি থেকে আরেকটা শার্ট বের করে পরে নিলো।

নীল নিচে নামতেই দেখলো নিশু নিচে নামে নি।
ইশুকে আসতে দেখেই বললো…..নিশু কোথায়?
ইশু:রেডি হচ্ছে।কি হলো মুখ ভার করে আছিস কেন?
নীল ওকে পুরো ঘটনা খুলে বলতেই ইশুও হেসে ফেললো।
ইশু:এসব আজগুবি কথা যে ওর মাথায় আসে কোথা থেকে আমি বুঝি না?
নীল:জানি না।দুটো সেকেন্ডে ওর শান্তি নেই।
সিঁড়ির দিকে চোখ পড়তেই দেখলো নিশু নিচে নামছে।ওকে দেখে নীল মুখ ফিরিয়ে নিলো।নিশু এসে একেবারে নীলের পাশের চেয়ারে গিয়ে বসলো।
নিশু ওর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে বললো…আমাকে এত ভালোবাসার কি আছে বলতো?লোকে তো তোমাকে বউ পাগল বলবে!
নীল:শুরু হয়ে গেছে না ড্রামা?
নিশু ওকে ধমক দিয়ে বললো…ড্রামাতো তুমি করেছ তখনই যদি বলতে শার্টটা চেইঞ্জ করে ফেলবে তাহলে তো আর কোন ঝামেলাই হত না।
নীল:তুমি থাকতে আর অন্য কোন ঝামেলা প্রয়োজন আছে নাকি?
নিশু:আমি ঝামেলা?
নীল:মহাঝামেলা!
নিশু:হ্যাঁ এখনতো আমি ঝামেলাই!
নীল:তুমি সবসময়ই ঝামেলা!
ব্রেকফাস্ট শেষ হতেই নীল টেবিলে ছেড়ে উঠে গেলো।নিশু বসে বসে চামচ দিয়ে প্লেটে টুংটাং আওয়াজ করছে।
ইশু:কি হলো তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট সেরে নে ভাইয়া নিশ্চই বাইরে ওয়েট করছে।
নিশু:করুক!
ইশু:মানে?…অফিস যাবি না তুই?
নিশু:না!…..আমাকে যখন সহ্যই করতে পারে না তখন অফিসে গিয়ে কি করবো?
ইশু:দেখা যাবে।

নীল অনেক্ষন ধরে গাড়িতে বসে আছে নিশুর আসার নামগন্ধও নেই।ও বিরক্ত হয়ে আবার বাসার ভেতরে ঢুকলো।
নীল:নিশু কই?…কতক্ষন ধরে বসে আছি। ও কি করছে এতক্ষণ?
ইশু:ওপরে।
নীল:ওপরে মানে?
ইশু:সেটা গেলেই দেখতে পারবি।
নীল:উফফফ!জ্বালিয়ে মারলো এই মেয়ে।
ইশু:রাগালি কেন ওকে?
নীল:রেগে আছে নাকি?
ইশু:ভীষণ!
নীল একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো…আমার বাচ্চাগুলো যদি ওর মত হয় না তাহলে ওদের আর ওদের মায়ের পাগলামি সহ্য করতে করতেই আমি পাগল যাবো।
ইশু হাসতে হাসতে বললো…ওপরে যা তাড়াতাড়ি!

নিশুর খাটের ওপর বসে পা দোলাচ্ছে।নীল দরজার কাছে এসে কোনরকমে হাসি চেপে রেখে বললো…কি হলো অফিসে যাবে না?
নিশু:……
নীল:মাথার সাথে সাথে কানটাও গেছে নাকি?…আগে তো জানতাম মাথায় একটু আধটু প্রবলেম আছে এখনতো দেখছি কানেও কালা তুমি।
নিশু:হ্যাঁ বলো না বলো আমার আর কি কি খুঁত আছে?
নীল ওর পাশে গিয়ে বসতেই ও অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।
নীল:আছে তো অনেক খুঁত আছে বলবো?
নিশু চুপ করে আছে।ওর চোখে পানি টলমল করছে।
নীল:বলবো?
নিশু রাগে উঠে বেরিয়ে যেতে নীল ওকে টেনে কোলের ওপর বসিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে ফিসফিস করে বললো…আমার নিশুপাখির সবচেয়ে বড় খুঁত হচ্ছে ও পুরোটাই নিখুঁত।একেবারে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি যার রূপের ঝলকে আমার প্রতিটা শিরায় শিরায় আগুন ধরে যায়।
নীলের আদুরে গলা শুনে নিশু অভিযোগের সুরে বললো…নিজে কষ্ট দিয়ে এখন ভালোবাসা দেখাতে এসেছে!
নীল:তোমাকে কে বললো আমি ভালোবাসা দেখাতে এসেছি?
নিশু:হ্যাঁ!ঠিকই তো কেন এসেছো?আমি তোমার কে যে আমার কাছে এসেছো?
নীল ওকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে বুকে টেনে নিয়ে বললো…আমি ভালোবাসা দেখাতে আসি নি নিশুপাখি, আমি ভালোবাসতে এসেছি।
নিশু ওর শার্টের বোতাম ঘোরাতে ঘোরাতে বললো…সত্যি তো?
নীল:কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?
নিশু:তাহলে দূরে সরিয়ে দাও কেন আমাকে?
নীল:ঐযে বললাম আগুন ধরে যায়?…মাঝে মাঝে দূরে না সরালে তো আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবো।
নিশু লজ্জায় ওর বুকে মুখ লুকিয়ে ফেললো।
নীল মুচকি হেসে ওকে আরেকটু নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরলো।

নীল নিশুর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর নিশু চুপচাপ ওর বুকে মুখ গুঁজে বসে আছে।
নীল:নিশুপাখি?
নিশু:হুঁ?
নীল:অফিসে যাবে না?
নিশু:উহুঁ।
নীল:আজকে জরুরী মিটিং আছে তো?
নিশু:কার সাথে?
ওর কথা শুনে নীল আবারও হেসে ফেললো।
নীল:কার সাথে আবার ক্লায়েন্টদের সাথে।
নিশু:ঠিক আছে চলো।
নীল:তারআগে আমাকে একটা কথা বলতো?আমার শার্টটাতে কি সমস্যা ছিলো?
নিশু:ওটাতে দাগ লেগে ছিলো তো।
নীল:তাই?(আদুরে গলায়)
নিশু:হুম!
নীল:আমাকে প্রথমে বলে দিলেই তো হতো?
নিশু:কেন বলবো?…আমি খুলতে বলেছি তুমি খুলবে ব্যস!
নীল:তাও ঠিক।রাগ হচ্ছে আমার ওপর?
নিশু:উহুঁ!
নীল:কেন বলতো?
নিশু ওর বুকে নাক ঘষতে ঘষতে বললো…ভালোবাসো যে তাই!

নিচে নামতেই ইশু এসে সামনে দাঁড়ালো।
ইশু:কি হলো নিশু তুই না অফিসে যাবি না বলেছিস?
নীল নিশুর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে বললো…যাবে না নিশু?
নিশু:হ্যাঁ আমি বাসায় বসে থাকি আর তুমি ঐ রুশার সাথে টাংকি মারো তাই না?
ইশু হাসতে হাসতে বললো….ভাইয়া তুই অফিসে বসে বসে টাংকি মারিস?
নীল:হ্যাঁ।তুই জানিস না?আমি তো একটা অসভ্য, মেয়ে দেখলেই হুঁশ থাকে না।..ঠিক বলেছি না নিশু?
ইশুও নীলকে নকল করে বললো…হতেই পারে না।নিশুর নীল ওকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসতেই পারে না।
নিশু:তোরা দুইভাইবোনই অসভ্য!
ও বিড়বিড় করে নীল আর ইশুকে বকতে বকতে বেরিয়ে গেলো।নীল আর ইশু হাসছে ওর কান্ড দেখে

#Love_Right❤💕❤
#অরিত্রিকা_আহানা
#Part_22

নীল চেম্বারে বসে কাজ করছিলো।আয়াত এসে ডাক দিতেই মাথা তুলে ওর দিকে তাকালো।
আয়াত:তুই এখনো বসে বসে কাজ করছিস?
নীল:তো অফিসে বসে কি মানুষ কি করে?
আয়াত:কাজ করে।কিন্তু আজকে যে তানিম ভাইয়ের পার্টিতে যাওয়ার কথা আছে সেটা ভুলে গেছিস?
নীল:ওহো!…আমি তো একদম ভুলে গেছি।..বিচ্ছুদুটোর কান্ড দেখেছিস যাওয়ার ভয়ে আমাকে একবার মনে পর্যন্ত করিয়ে দিলো না?
আয়াত হাসতে হাসতে বললো..তানিম ভাইযে কি করে এই দুই লেডি ডনকে এমন ভয়ে রাখতো আমি বুঝে পাই না।
নীল:কি করে আবার?…ফাঁকিবাজ দুটোকে কান ধরিয়ে দাঁড় করে রাখতেন।
আয়াত:যাই বলিস আমার মনে হয় না ইশু উনাকে বিয়ে করতে রাজী হবে?
নীল:তুই ইশুকে জানিস না?ইশু আমার বোন আমি ওকে ভালো করেই চিনি …তানিম ভাইয়ের ওপর রাগ করে এসব করছে।
আয়াত:তারমানে ইশু রাজী?
নীল:রাজী কি না জানি না তবে তানিম ভাইয়ের ভালোবাসা ও ফেরাতে পারবে না।
আয়াত:ঠিক আছে চল আমাদের দেরী হয়ে যাচ্ছে।
নীল:চল!

ওরা বেরিয়েই নিশুর কাছে গেলো।আয়াতকে দেখেই হাসিমুখে এগিয়ে এলো।
আয়াত:কেমন আছো সুন্দরী?
নিশু:ভালো!
আয়াত:ব্যস্ত মনে হচ্ছে?
নিশু:ব্যস্ত না থেকে উপায় আছে?
নিশু নীলের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিয়ে বললো…এমপ্লয়িরা সব ফাঁকিবাজের দল।আমি না থাকলে এদের সামলাবে কে?
নীল:তাই নাকি?
নিশু:হ্যাঁ তাই নয় তো কি?…এই যে তুমি কাজ ফেলে এখানে চলে এসেছো,কার পারমিশন নিয়ে এসেছো?
নীল:বস যদি এমন হট আর গ্ল্যামারাস হয় তাহলে আমার কি দোষ বলতো?
আয়াত মুখটিপে হাসছে নীলের কথা শুনে।নিশু সেদিকে একবার দেখে নীলকে ধমক দিয়ে বললো…অসভ্য একটা!লুচু একটা!
নীল:এখন সব দোষ আমার?
নিশু:তোমারই তো।
নীল:কি করবো বলো?…তুমি এত হট যে আমি নিজেকে সামলাতে পারি না!
নিশু:(ছি!ছি!ছি!আয়াতের সামনে আমার মান ইজ্জত পুরো শেষ করে দিলো এই অসভ্যটা!)
আয়াত:নীল তুই শুধু শুধু ওকে লজ্জা দিচ্ছিস কেন?
নীল:বেবি তুমি কি লজ্জা পাচ্ছো?
নিশু:অসভ্য একটা।
আয়াত:আচ্ছা ঠিক আছে তোরা থাম এবার।…এই নিশু তোমার এইসব ফাইলপত্রগুলো তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নাও তো।
নিশু:কেন?
আয়াত:আজকে তানিম ভাইয়ের ওখানে যেতে হবে না?
নিশু:আমি যাবো না।
নীল:ভয় পাচ্ছো নাকি হিসুবেবি?
নিশু:😐
আয়াত:তোরা আয় আমি আসছি।
আয়াত চলে যেতেই নিশু আবার কাজে মনযোগ দিলো।ইশু ওকে বারণ করে দিয়েছিলো কোন মতেই যাতে অফিস থেকে বের না হয়।
নীল:দুজনে প্ল্যান করে এসব করছো না?
নিশু:মোটেও না।কিসের প্ল্যান এর কথা বলছো তুমি আমি কিচ্ছু জানি না।
নীল:জানো না তুমি?
নিশু:উহুঁ!
নীল:একদম মিথ্যে বলবে না নিশু।তোমাকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি।তাড়াতাড়ি ফাইলপত্র গুছিয়ে নাও বলে দিচ্ছি।
নিশু:আমি যাবো না।
নীল ফাইলপত্র সরিয়ে হুট করেই নিশুকে কোলে নিয়ে হাঁটা ধরলো।নিশু নিচে নামার জন্য লাফালাফি করছে।
নীল:আমার কোলে উঠার খুব শখ তাই না?
নিশু:নীল প্লিজ নামাও আমাকে আমি যাবো না।
নীল:তাহলে রুশাকে নিয়ে যাই কি বলো?
নিশু:খুন করে ফেলবো!
নীল:থাকতে পারবে তো আমাকে ছেড়ে?
নিশু:থাকবো কেন?…তারপর নিজে মরবো!
নীল:ইশশস!খালি বাজে কথা!
কথা বলতে বলতেই নীল নিশুকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো।নিশুর খবরই নেই কখন নীল ওকে কোলে নিয়ে অফিসের বাইরে চলে এসেছে।ওকে গাড়িতে বসিয়েই নীল দুষ্টু হাসি দিচ্ছে।
নিশু:নীল তোমাকে আমি দেখে নেবো।
আয়াত:আর কত দেখবে নিশু?
নিশু:আয়াত তুমিও ওর সাথে যোগ দিলে?
আয়াত:সরি নিশু।আসলে তুমি না গেলে ইশুকেও ম্যানেজ করা যাবে না।আর ইশু না গেলে তানিম ভাইয়ের পুরো মুডটাই স্পয়েল হয়ে যাবে।
নিশু:কিন্তু ইশু তো উনাকে সহ্যই করতে পারে না?
নীল:আমি যখন তোমাকে সহ্য করতে পারছি তখন ইশুও পারবে।
নিশু:😐
আয়াত হাসছে ওদের দুজনের কান্ড দেখে।

বাসায় ঢুকতেই নিশুর চোখ কপালে উঠে গেলো।তানিম সোফায় বসে আছে।
নীল:তানিম ভাই!কখন এলে?আমরা তোমাদের ওখানেই যাচ্ছিলাম।
তানিম:কি করবো বলো?…তোমার বোন যা কান্ড করছে আমার সাথে।তাই ওকে নিতে আসলাম।
নীল:ইশু যাবে বলেছে?
তানিম:না গিয়ে উপায় আছে?
নীল নিশুর দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে তানিমকে বললো…তুমি কি করে এই দুই সুনামিকে শান্ত রাখো আমাকে একটু বলতো একে একটু সোজা করবো।সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারে!
তানিম:কিচ্ছু করার নেই ভাই।আগে ভার্সিটিতে ছিলো আমি একটা ধমক দিলে ভয়ে কেঁদে দিতো এখন আমি একটা ধমক দিলে ঘুরিয়ে তিনটা ধমক দেয় তোমার বোন!
নিশু:নীলের বোন যখন তখনতো এমন হবেই?
তানিম:নীল কি করেছে নিশু?
নিশু:কি করেনি সেটাই বলুন।ওর গুনের কথা বলে শেষ করা যাবে নাকি?
তানিম:বলতো শুনি দু একটা!
নিশু:(অফিসে আমাকে জ্বালিয়েছো না?এবার দেখো আমি কি করি?)এই যে যখন তখন এসে জড়িয়ে ধরবে।ভালোবাসি ভালোবাসি বলে সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারলো।একেবারে পাগল করে ফেললো আমাকে।
নীল সোফায় বসে পানি খাচ্ছিলো।নিশু কথা শুনে পানি খাওয়া বন্ধ করে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।কথা শেষ হতেই নিশু সোজা ওপরে চলে গেলো।তানিম আর আয়াত হাঁ করে নিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
নীল:দেখেছেন?
তানিম হাসতে হাসতে বললো…তোমার অবস্থা তো আমার চেয়েও খারাপ।
নীল:একে নিয়ে দু সেকেন্ড শান্তিতে থাকতে পারি না।
তানিম:কি করবে ভাই মেয়েদের জাতটাই এমন।পুরুষদের জ্বালানোর জন্যই এরা জন্মেছে।
আয়াত:আমি বহুত শান্তিতে আছি।
নীল:আমি কিন্তু অফিসের সব খবর রাখি নীল।লারার ডেস্কে কে বারবার যায় সে খবরও আমার কানে আসে!
আয়াত:আরে ধুর!ঐ মেয়ে পুরো পাগল।কিছু বললেই ছ্যাত!
তানিম:প্রেমে পড়লে সবাই প্রথম প্রথম এমন কথাই বলে ভাই!
নীল:তোমরা একটু ওয়েট করো আমি চেইঞ্জ করেই আসছি।

চেইঞ্জ করে নীল একেবারে ইশুদের রুমের দরজায় টোকা দিলো।
নীল:এই ইশু তোদের হলো?
ইশু:আমি রেডি!
নীল:কি ব্যাপার বলতো?আজকে তোর কিছু হয়েছে নাকি?এত সহজে রাজী হওয়ার মেয়েতো তুই না?
ইশু:হতাম না।কিন্তু উনি বাসায় চলে এসেছেন।না গেলে নিশ্চই ভালো দেখাবে না।তাছাড়া আংকেল আন্টির সাথে বাবা মায়ের রিলেশনটাও অযথা আমার জন্য খারাপ হবে।
নীল:হুম!বুঝলাম।
ইশু:কি বুঝলি?
নীল:বুঝলাম ইশু পাগলি অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।
ইশু:তারআগে বলতো আমাকে কেমন দেখাচ্ছে?
নীল ওর দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো…অন্যদিনের চাইতে আজকে একটু ভালো দেখাচ্ছে।
ইশু কপট রাগ দেখিয়ে নীলকে কয়েকটা কিল ঘুষি মেরে নিচে নেমে গেলো।নীল হাসতে হাসতেই ভেতরে উঁকি দিলো।কিন্তু ভেতরে উঁকি দিতেই ওর মুখটা কালো হয়ে গেলো।
নীল:তুমি এখনো রেডি হও নি?
নিশু:আমি রেডি!
নীল:আমরা পার্টিতে যাচ্ছি নিশু, কারো কুলখানিতে না?
নিশু:শাড়ি বুঝি মানুষ শুধু কুলখানিতে পরে?
নীল:অসভ্য মেয়ে!ইচ্ছে করে এমন করছো তাই না?..তুলে একটা আছাড় মারলে সব পাগলামি ঠিক হয়ে যাবে।…শাড়ি এভাবে পরেছো কেন?
নিশু:তাহলে কিভাবে পরবো?…ঢেকে পরলেও দোষ!
নিশু শাড়ি পরেছে ঠিকই কিন্তু সেটাকে ঠিক পরা বলা যাবে না।মনে হচ্ছে দলা পাকিয়ে জাস্ট প্যাঁচিয়ে নিয়েছে।ইশু বারবার বারণ করা সত্বেও খুলে নি।
নীল:তোমাকে আমি জাস্ট ফাইভ মিনিটস সময় দিলাম।আমরা সবাই গাড়িতে গিয়ে বসছি।তুমি রেডি হয়ে আসবে।
নীল বেরিয়ে যেতেই নিশু ওকে ভেঙ্গাচ্ছে….”তোমাকে আমি জাস্ট ফাইভ মিনিটস সময় দিলাম।তুমি রেডি হয়ে আসবে”..খবিশ একটা।কোন কুক্ষনে যে আমি এই অসভ্যটা প্রেমে পড়েছিলাম আল্লাহই জানে?
নীলকে বকতে বকতেই ও আলমারি থেকে একটা চকলেট কালারের একটা গাউন বের করে নিলো।কিন্তু সমস্যা হলো গাউনের পেছনের গলাটা যথেষ্ট বড়।ও ভেবেছিলো চুল ছেড়ে দিবে।কিন্তু ইশুর তাড়া শুনে আর চুল ঠিক করার টাইমও পায় নি।শাড়ির সাথে যেভাবে খোঁপা করেছিলো সেভাবেই রয়ে গেলো।যদিও দেখতে ভালোই লাগছে তবে নীল দেখলে রেগে যাবে কি না সেই ভয়েই আছে।

ও গাড়ির কাছে আসতেই দেখলো নীল গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোনের স্ক্রিনে কি যেন দেখছে।এ্যাস কালারের শার্টের সাথে কালো ব্লেজার অসম্ভব সুন্দর লাগছে ওকে।নিশু সেদিকেই অপলক চেয়ে আছে।উফফফ!এই মুহূর্তেই নীলকে জড়িয়ে ধরে খালি ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে।একটা মানুষ কি করে এতটা সুন্দর হতে পারে?
নিশুকে দেখেই আয়াত বেরিয়ে এসে দরজা খুলে দিলো।
আয়াত:ও মা গড নিশু?..তোমাকে তো একেবারে এঞ্জেলের মত লাগছে।নীলের ভাগ্য ভালো ও তোমাকে আগেই পটিয়ে ফেলেছে তা না হলে এইমুহূর্তেই আমি তোমাকে নিয়ে ভেগে যেতাম।
নিশু:ধ্যাত!
আয়াতের গলা শুনে নীল ফোনের স্ক্রিন থেকে মুখ তুলে নিশুর দিকে তাকালো।কিন্তু আর চোখ ফেরাতে পারলো না।মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিশুর দিকে চেয়ে আছে ও।ওকে এভাবে তাকাতে দেখে নিশু লজ্জায় মুখটা নিচু করে ফেললো।
আয়াত একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো…নিশু আমাদের দেরী হয়ে যাচ্ছে তো!
আয়াতের তাড়া শুনে নীলই আগে গাড়িতে উঠে গেলো।তারপর নিশু উঠলো।

কিন্তু গাড়ি থেকে নামতেই নীলের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।নিশুকে এই মুহূর্তে ওর তুলে আছাড় মারতে ইচ্ছে করছে।অসভ্য মেয়েটা ওর মেজাজটা দিলো খারাপ করে।
নীল:এই ইশু তোরা ভেতরে যা!আমি আসছি।
নিশুও ওদের সাথে যেতে নিলে নীল ওর হাত টেনে ধরে আটকে দিলো।নিশু ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিলো।
নীল:কি হলো তুমি কোথায় যাচ্ছো?
নিশু:আমি ভেতরে যাবো না?
নীল:তোমার সাহস কি করে হলো নিশু?
নিশু মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
নীল:কি হলো এখন কথা বলছো না কেন?(ধমক দিয়ে)
ধমক শুনে নিশুর চোখে পানি চলে এলো।
নীল:খবরদার কাঁদবে না বলছি।পরে আসার আগে মনে ছিলো না?
নিশু:আমি….
ওকে কথা শেষ করতে না দিয়েই নীল পাল্টা ধমক দিয়ে বললো..কি আমি কি?…কি বলো?
নিশু এবার কেঁদেই দিলো।কোন মতেই কান্না চেপে রাখতে পারছে না।
নীল রাগে ওর দুবাহু ঝাঁকিয়ে বললো…কি ভেবেছো তুমি?…খুব দেখাবার শখ হয়েছে না?…ঠিক আছে যাও!আমি কিচ্ছু বলবো না।দোষ আমারই আদর দিয়ে দিয়ে মাথায় উঠিয়ে ফেলেছি তোমায়।
নীল ওকে ছেড়ে দিয়ে গাড়ির দরজা খুলতেই নিশু পেছন থেকে ওকে জাঁপটে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।
নীল:ছাড়ো আমাকে নিশু!
নিশু:আমাকে এভাবে বলো না নীল।আমি সহ্য করতে পারবো না।আমি ভেবেছিলাম চুল ছেড়ে দিয়ে আসবো।কিন্তু সময় পাই নি।…সরি নীল।আমার এভাবে আসা উচিৎ হয় নি।তুমি আমাকে বাসায় নিয়ে যাও নীল।আমি থাকবো না এখানে।কিন্তু আমাকে ফেলে এভাবে চলে যেও না নীল।

কাঁদতে কাঁদতে ওর হেঁচকি উঠে গেছে।নীল ওর সামনের দিকে ফিরে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।নিশু ওকে জড়িয়ে ধরেই হুঁ হুঁ করে কেঁদে উঠলো।নীল আর বেশি কিছু বলতে পারলো না।ও চট করে নিশুর খোঁপার কাটাটা খুলে দিয়ে ওর চুল গুলো সব এলোমেলো করে দিয়ে বললো…চলো,ভেতরে চলো।
নিশু:উহুঁ।আমি যাবো না।
নীল:চুল ছেড়ে দিয়েছি এবার ঠিক আছে।
নিশু:না যাবো না।
নীল:জেদ করো না নিশু,চলো ভেতরে চলো।(শান্ত গলায়)
নিশু:না যাবো না।
নীল কিছুটা কড়া গলায় বললো..দেরী হয়ে যাচ্ছে।
নিশু বুঝতে পারলো নীল শান্ত হলেও রাগ এখনো পড়ে নি।
নিশু:হোক দেরী আমি ভেতরে যাবো না।
নীল:ঠিক আছে তুমি দাঁড়াও আমি ইশুকে ডেকে নিয়ে আসি।
নিশু:😮কেন?
নীল:কেন আবার?বাসায় যাবো তাই।
নিশু:😐(আল্লাহ তুমি কয়জনের রাগ এই অসভ্যটার মধ্যে দিয়েছিলে?)
নিশু কিছু বলতে চাইলো কিন্তু নীল ওর কথা শোনার আগেই ভেতরে চলে গেলো।
ও ইশুকে নিয়ে ফিরতেই দেখলো নিশু ভেতরে ঢুকে পড়েছে।
নীল:কি হলো?ভেতরে আসলে কেন?
নিশু:আমি এখন বাসায় যাবো না!
নীল ওর কথা কোন প্রতিউত্তর না করে ইশুকে ইশারা দিয়ে বললো..এই ইশু চল।
নীল ইশুর হাত ধরে টেনে বের করে নিয়ে যাচ্ছে।ইশু হাঁ করে নীলের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।নিশুও ওদের পেছন পেছন বেরোলো।নীল ইশুকে গাড়িতে বসিয়ে দিতেই নিশু ভয়ে ভয়ে এসে নীলের সামনে দাঁড়ালো।
নিশু:আমি যাবো কীভাবে?
নীল:সেটা আমি কি জানি?
নিশু ভয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।নীল হঠাৎ জোরে ধমক দিয়ে বললো..গাড়িতে ওঠো!(সাহস কত এখনো দাঁড়িয়ে আছে?)
নিশু চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসলো।নীলের পাশে বসার সাহস করলো না।ইশুর পাশে পেছনে গিয়েই বসলো।ইশু হাঁ করে ওদের দুজনের কান্ড দেখছে।যদিও ও মনে মনে বেশ খুশি হয়েছে!অসহ্য লাগছিলো।তানিমের কলিগরা সব ওর মাথা খারাপ করে দিচ্ছিলো “ভাবি, ভাবি “করে।আর
অসভ্যটাও মুখটিপে টিপে হাসছিলো।সেই সঙ্গে আয়াত ফাজিলটা তাল দিচ্ছিলো।কিন্তু নীলকে এভাবে রেগে যেতে দেখেই বুঝে গেলো নিশু আবার কোন ঝামেলা বাধিয়েছে।
ও নিশুর কানে কানে ফিসফিসিয়ে বললো…কি হয়েছে বলতো?ভাইয়া এমন রেগেছে কেন?
নিশু ফুঁপিয়ে কাদঁছিলো ইশুর গলা শুনেই কান্নার বেগ আরেকটু বেড়ে গেলো।ইশু আলতো করে নিশুকে জড়িয়ে ধরে বললো..কি হয়েছে নিশুপাখি?কাঁদছিস কেন?..আমাকে বল কি হয়েছে?
নীল চুপচাপ গাড়ি চালাচ্ছিলো।ইশুর গলা শুনে আড়চোখে একবার নিশুর দিকে তাকাতেই দেখলো কাঁদছে।ও তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলো কারন বেশিক্ষণ নিশুর কান্না ও সহ্য করতে পারবে না তাই।

বাসায় পৌঁছাতেই নীল গাড়ি পার্ক করে সোজা ভেতরে চলে গেলো।নিশু কাঁদতে কাঁদতে চোখমুখ প্রায় ফুলিয়ে ফেলেছে।ইশু কিছুতেই ওকে শান্ত করতে পারছে না।

ঘড়িতে রাত পৌনে দুটো বাজে।নীল রকিং চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে দুলছে।অসহ্য লাগছে ওর।।মাঝে মাঝে নিজের ওপরই রাগ হয় ওর।কেন যে রাগ উঠলে ও মেজাজটা কন্ট্রোলে রাখতে পারে না।ও নিজেই জানে না।নিশুকে আজকে অনেকগুলো কথা শুনিয়ে দিয়েছে ও।ও তো ভালো করেই জানে নিশুর যত পাগলামি সব ওকে ঘিরে তবুও কেন যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না সেই আফসোসই হচ্ছে বারবার।
অনেক্ষন ধরে নিজেকে বুঝিয়েও কিছুতেই শান্ত করতে না পেরে শেষে ইশুর রুমের দিকে পা বাড়ালো।একবার ডাক দিতেই ইশু ভেতর থেকে সাড়া দিলো।
নীল:এত রাত পর্যন্ত জেগে আছিস কেন?শরীর খারাপ করবে তো?
ইশু:আমি জানতাম তুই আসবি তাই জেগে ছিলাম।
নীল:কোথায় ও?
ইশু:কান্নাকাটি করে ক্লান্ত হয়ে এখন ঘুমিয়ে পড়েছে।
নীল:খেয়েছে?
ইশু:না।মা অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিলো কি হয়েছে?
নীল:তুই কি বলেছিস?
ইশু:বলেছি ওখান থেকে খেয়ে এসেছে।…তুই ওকে শুধু শুধু ওভাবে বকা দিলি ভাইয়া!
নীল:ওকে ওভাবে দেখে মাথা গরম হয়ে গিয়েছিলো।
ইশু:ওর যা অবস্থা দেখলাম তাতে মনে হলো আজকে আর শান্তিতে ঘুমোবে না সারারাত নড়াচড়া করবে আমি ঘুমাতে পারবো না।তারচেয়ে তুই তোর রুমে নিয়ে যা।ইশু ভালোকরেই জানে নীল কি চাইছে।তাই নীল কিছু বলার আগেই ও নিজের অসুবিধের কথা বলে ফেললো।

নীল ভেতরে ঢুকেই দেখলো নিশু চেইঞ্জ না করে যেভাবে এসেছিলো ঠিক সেভাবেই ঘুমিয়ে পড়েছে।কান্নার কারনে কাজল লেপ্টে গিয়ে গালে দাগ পড়ে গিয়েছে।
নীল ওকে সাবধানে কোলে নিয়ে ইশুর রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।যাওয়ার আগে ইশুকে ডাক দিয়ে বললো…এই ইশু?
ইশু:কি ভাইয়া?
নীল:একটু কাছে আয় তো!
ইশু কাছে আসতেই নীল ওর মাথাটা আলতো করে চেপে ধরে একটা চুমু দিয়েই নিশুকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।

নিশুকে খাটে শুইয়ে দিয়েই নীল ওর পাশে আধশোয়া হয়ে বসলো।নিশুর মুখটার দিকে তাকাতেই মনে হচ্ছে বুকে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো।মুখটা কেমন শুকনো লাগছে।ও নিশুর কপালে গভীরভাবে একটা চুমু খেয়ে আলতো করে নিশুর মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে বললো…সরি!(ফিসফিসিয়ে)
নিশু:নট এক্সেপ্টেড।
নীল:😮তুমি ঘুমাও নি?
নিশু:ঘুমিয়েছিলাম তো।তুমি চুমু দিতেই ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
নীল:আমি কখন তোমায় চুমু দিলাম?
নিশু:হ্যাঁ তাইতো?আমি মনে হয় ঘুমের ঘোরে হাঁটতে হাঁটটেই তোমার রুমে চলে এসেছি তাই না?(ভ্রু নাচিয়ে)
নীল ওর দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো…ইশু বললো তুমি নাকি রাতে বেশি নড়াচড়া করো ওর ঘুমোতে অসুবিধা হয়।আমি যেন তোমাকে নিয়ে যাই।
নিশু:হ্যাঁ!আমি তো সবার খালি অসুবিধেই করি।আমাকে কেউ ভালোবাসে না।
নীল:সরি!
নিশু:(ইশশস!কি ভেবেছো এত সহজে আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো?আমাকে বকা দেওয়ার শাস্তি তুমি পাবে নীল।তোমাকে যদি পাগল না করে ছেড়েছি আমার নামও নিশিতা জামান না!)
নীল:কি হলো?চুপ করে আছো যে?
নিশু:আমি কিছু বললেই তো দোষ!
নীল:বললাম তো সরি!কি করবো বলো তোমাকে ওভাবে দেখে আমারই মাথা ঠিক থাকে না বাকিরা কি করে সামলাবে বলতো।তাইজন্যই তো এত রাগ হয়।যার ওপর শুধু নীলাস হাসানের অধিকার সেই জিনিস সবাই দেখবে এটা আমি সহ্য করি কি করে?
নিশুর সমস্ত অভিমান,অভিযোগ নিমিষেই উধাও হয়ে গেলো।কিন্তু নীলের কাছ থেকে আরেকটু আদর পাওয়ার লোভে ওকে বুঝতে দিলো না।ও ঠিক জানে নীল যতই রাগ করুক না কেন তারচেয়ে বেশি ভালোবাসা দিয়ে সব ভুলিয়ে দিবে।
ও বাচ্চাদের মত অনুযোগের সুরে বললো..তুমি আমাকে অনেক বকা দিয়েছো নীল।
নীল একহাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে ওকে কাছে টেনে নিয়ে বললো…মাঝেমধ্যে একটু বকা খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
নিশু:তুমি অনেক বেশি বকা দিয়েছিলে!
নীল ওর সাথে সুর মিলিয়ে বললো…নীল তোমাকে অনেক বেশি বকাঝকা করে তাই না নিশু?
নিশু চুপ করে আছে।নীল বুঝতে পারলো অভিমান এখনো কমে নি।
নীল:কি হলো কথা বলবে না?(আদুরে গলায়)
নিশু এবার ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।
নীল ওকে আর কিছু বললো না।কেঁদে মনটা হালকা করুক। ও মুগ্ধ দৃষ্টিতে নিশুর দিকে চেয়ে আছে।কাঁদলেও একটা মানুষকে কি করে এত সুন্দর লাগতে পারে সেটাই ও বুঝতে পারে না।হয়ত নিশু বলেই কান্নাটাও এত সুন্দর!
নীলের দিকে তাকাতেই নিশুর মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।ও বসে বসে কাঁদছে আর নীল তামাসা দেখছে?অসভ্য ছেলে!
নিশু কান্না থামিয়ে আচমকা হাসা শুরু করে দিলো।নিশুর এমন আচরনে নীল কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছে।ও হাঁ করে নিশুর দিকে তাকিয়ে রইলো!
নীল:কি হলো নিশু?
নিশু দাঁতমুখ খিঁচে বললো…কি আবার হবে?হাসছি আমি!আমি তো পাগল তাই না?একবার হাসবো একবার কাঁদবো!আর তুমি বসে বসে তামাশা দেখবে!
নীল এতক্ষনে বুঝতে পারলো নিশু ভীষণ চটে আছে।ওর ভীষণ হাসি পাচ্ছে নিশুর কথা শুনে।কিন্তু এখন হাসা যাবে না।এইমুহূর্ত হাসা মানে নিশুকে আরো চটিয়ে দেওয়া।
নিশু:কি হলো বসে আছো কেন?(ধমক দিয়ে)
নীল:তো কি করবো?
নিশু রাগে কোলবালিশটা নীলের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো…এটাকে জড়িয়ে ধরে চুম্মা খাও!জলজ্যান্ত মানুষ তো তোমার চোখে পড়ে না।
নীল:উফফফ!
নিশু:কি?
নীল:অসহ্য!
নিশু:হ্যাঁ এখন তো আমি অসহ্য!…আমাকে এখন আর ভালোলাগে না।
নীল:আমাকে একটা কথা বলতো নিশু?
নিশু:কি?
নীল ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো..তুমি এত হট কেন?
নিশু আবারও অভিমানী গলায় বললো..তখন যে বললে অসহ্য?
নীল:অসহ্যই তো!এত রূপ সহ্য করা যায় নাকি?
নিশু চুপ হয়ে গেলো।ওকে চুপ করে থাকতে দেখে নীল মুচকি হাসি দিয়ে বললো…কি হলো?
নিশু:আমাকে আর বকবে না তো?
ওর কথা শুনেই নীল শক্ত করে ওর কোমর চেপে ধরে ওকে একেবারে নিজের কাছে নিয়ে এলো।নিশুর মনে হচ্ছে ও জমে বরফ হয়ে যাবে।তারপর নিশুর কপালে কপাল ঠেকিয়ে নীল ফিসফিসিয়ে বললো..উহুঁ!একদম না।আর কখনো যদি আমার জিনিস অন্য কাউকে দেখিয়েছো তাহলে বকবো না সোজা তুলে আছাড় মারবো!
বলেই নীল বিছানা ছেড়ে উঠে গেলো।নিশু বোকার মত ওর দিকে চেয়ে আছে।
নিশু:😐(আস্ত শয়তান একটা!)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *