Love Right

Love Right ! Part- 09+ 10

নিশু রুমে এসে ভাবছে নীলের বিয়ে পর্যন্ত এখানে থাকবে কি করে?…যত কষ্টই হোক ওকে থাকতে হবে।তা না হলে শয়তান টা ভাবছে ও সত্যি সত্যিই শয়তানটাকে ভালোবাসে!…জীবনেও না!ওর মত শয়তান ছেলেকে এ জীবনেও নিশু ভালোবাসবে না।

আয়াত ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো নীল ডাইনিং এ বসে একা একা হাসছে।
আয়াত:কি রে একা একা হাসছিস কেন?
নীল:আমার ইচ্ছে!
আয়াত:😐
ইলারা বেগম এসেছেন আয়াতকে নাশতা দিতে।
নীল:মা?
ইলারা বেগম:বল!
নীল:তোমরা নাকি আমার আর রুশার বিয়ে ঠিক করেছো?
ইলারা বেগম:তুই কার কাছ থেকে শুনলি?
নীল:সেটা তো বড় কথা নয়?
ইলারা বেগম:হ্যাঁ,তবে আমরা ওদের বলে দিয়েছি তোর মতের বাইরে আমরা কিছু করবো না!
নীল:ভালো করেছো!
আয়াত:নীল?….আমার কি মনে হয় জানিস?
নীল:কি?
আয়াত:রুশাকে বিয়ে করার চেয়ে তুই সারাজীবন চিরকুমার থেকে যা!
ইলারা বেগম আয়াতের দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে তাকিয়ে বললেন…তুই আর ওর মাথা খারাপ করিস না তো?
আয়াত:রুশার সাথে বিয়ে হলে এমনিতেই ও পাগল হয়ে যাবে!
নীল:তুই নাশতা কর আমি আসছি!

সন্ধ্যের দিকে ইলারা বেগম যাবেন উনার কোন বান্ধবির বাসায় দাওয়াতে।ইশু নিশু দুটোর একটাও রাজি হলো না উনার সাথে যেতে।শেষে গাড়ি নিয়ে উনি একাই গেলেন।বাসায় কেবল ওরা চারজন।উনি বেরিয়ে যাওয়ার একটু পরেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
ইশু:ভাইয়া আসবো?
নীল:আয়!
আয়াত:কি দরকার??
ইশু:😐তোমাকে কেন বলবো?
আয়াত:কারন তুমি যে আমার বউ!
ইশু:ভাইয়া ওকে থামতে বলবি?…না হলে কিন্তু আমি ওর মাথা ফাটিয়ে দিবো!
আয়াত:এগুলো বলে না জান!…তুমি না আমাকে ভালোবাসো?
ইশু:ভাইয়ায়ায়ায়া!(চিৎকার দিয়ে)
নীল আয়াতের দিকে তাকিয়ে বললো…তুই থামবি?
আয়াত:আচ্ছা ঠিক আছে যা আমি চুপ করলাম!
নীল ইশুর দিকে তাকিয়ে বললো…কিছু বলবি?
ইশু:ভাইয়া নিশু বাসায় নেই!
নীল:তো আমি কি করবো?
ইশু:আমি মজা করছি না ভাইয়া!….ও সত্যিই বাসায় নেই।
আয়াত:বাসায় নেই মানে?…বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে আর ও বাসায় নেই?
নীল:তুই ভালো করে খুঁজে দেখেছিস?
ইশু:হ্যাঁ!
নীল চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।এই বৃষ্টির মধ্যে নিশু যাবে কোথায়?….টেনশন হচ্ছে ওর।
নীল:আয়াত চল তো দেখি?

ওরা তিনজন মিলে আরেকবার পুরো বাড়ি খুঁজে দেখলো কিন্তু নিশুর কোন হাদিস নেই।
নীল:আশ্চর্য!
ইশু:আমার টেনশন হচ্ছে ভাইয়া!
আয়াত:আমরা কি বাইরে দেখবো নীল?
নীল:তাছাড়া তো আর উপায় নেই!
ইশু:ফোনটাও ফেলে রেখে গেছে!
নীল:এককাজ কর….তুই আর আয়াত মিলে বাগানের দিকে খুঁজে দেখ!আমি আসছি!
ইশু আর আয়াত বেরিয়ে গেলে নীল ছাদের দিকে পা বাড়ালো।যা ভেবেছিলো তাই।অন্ধকারে ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজছে।নীল একদৌড়ে আবার নেমে গেলো।ছাতা নিয়ে ফিরতেই দেখলো নিশু এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
নীলের ইচ্ছে করছে কষে একটা চড় বসিয়ে দিতে গালে!কিন্তু মেজাজ টা কন্ট্রোল করে ও নিশুর কাছে এগিয়ে গেলো।ওর কাছে গিয়ে আচমকা ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো।
নিশু:এটা কি হলো?
নীল:এত রাতে তুমি ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজছো আবার জিজ্ঞেস করছো এটা কি হলো?
নিশু:তাতে তোমার কি?
নীল:দেখো পরে ঠান্ডা লেগে যাবে!
নিশু:কিচ্ছু হবে না!…আমার অভ্যেস আছে।
নীল:দেখো নিশু ভালোয় ভালোয় বলছি!….আমার রাগ উঠিও না বলে দিলাম!
নিশু:কি আশ্চর্য?…আমি বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার সমস্যা কোথায়?
নীল বুঝতে পারলো একে এভাবে আনা যাবে না।
নীল:আমার সমস্যা হলো তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকলে আমি যে কোন মুহূর্তে তোমার গালে কষে একটা চুমু বসিয়ে দিতে পারি!(ভ্রু নাচিয়ে)
নিশু গালে হাত দিয়ে হাঁ হয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে!
ওকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নীল বললো…কি হলো নিচে নামবে নাকি আমি কষে তোমার গালে একটা চুমু খাবো?
নিশু:ছি!..ছি! এই শিখে এসেছো বিদেশ থেকে?
নিশু রাগে ওর হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে আবার ছাদের মাঝখানে চলে গেলো!
নীল:(সাহস বেশি এই মেয়ের!)
নীল ছাতাটা ফেলে দিয়ে রাগে।এমনিতেই সেদিন রাতে ভেজার কারনে জ্বর জ্বর লাগছিলো কিন্তু আর কোন উপায় না দেখে জ্বর নিয়েই নিশুর কাছে গেলো।এইসময় ওকে তো একা রেখে চলে আসতে পারে না।এই মেয়ের তো ডর ভয় কিচ্ছু নেই!…দিনের বেলা হলে এককথা ছিলো!

নিশু:কি হলো তুমি ভিজবে নাকি?
নীল:শুধু ভিজবো না সাথে চুমুও খাবো!(শান্ত গলায়)
নিশু:একদম উল্টাপাল্টা কথা বলবে না বলে দিলাম!
নীল ওকে জোরে একটা ধমক দিয়ে বললো…একদম কোন কথা বলবে না তুমি!…ফাজিল মেয়ে একটা!অসভ্য মেয়ে!তোমার জন্য আমাকে এই বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
নিশু:তো এসেছো কেন?
নীল:আমার যে খুব শখ চুমু খেতে খেতে বৃষ্টিতে ভিজবো বলে!
নিশু:আর একটা কথা যদি বলেছো তো আমি তোমার মুখ সেলাই করে দেবো!
নীল:তাই নাকি?…তুমি জানো আমি চাইলে এই মুহূর্তে তোমাকে একটা ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিতে পারি?
নিশু এবার ভয় পেয়ে গেলো।
নিশু:নাউজুবিল্লাহ!
নীল:কি হলো ভয় পেলে?
নিশু:…….
নীলের হাসি চলে এলো ওর চেহারা দেখে!
নীল:আরে বাবা ফেলে দিতে পারি বলেছি ফেলবো বলি নি!…তবে তুমি যা করেছো তার শাস্তি তোমাকে পেতে হবে!
নিশু:আমাকে শাস্তি দেওয়ার তুমি কে?
নীল ওর একেবারে কাছে ঘেঁষে বললো..কি বললে?
নিশু এবার দ্বিগুণ তেজ দেখিয়ে বললো….বলছি তুমি কিসের জন্য আমার ওপর এত অধিকার ফলাচ্ছো?
নীলের মাথা আবার গরম হয়ে যাচ্ছে।একবার ভাবলো চিৎকার করে বলবে…It’s #Love_Right❤💕❤।কিন্তু পরে অনেক কষ্টে মাথাটা ঠান্ডা করে বললো…আমি কোন অধিকার ফলাচ্ছি না।মা বাসায় নেই তাই তোমাকে দেখে রাখার দায়িত্ব আমাদের!
নিশু এবার নীলের কথা নকল করে বললো….দায়িত্ব তো মানুষ বউয়ের নেয়?(শয়তানি হাসি দিয়ে)
নীল:(ম্যাডাম তো দেখছি বেশ চালাক হয়ে গেছেন) তো?
নিশু:তো মানে?…তুমি আমার দায়িত্ব কেন নিতে চাচ্ছো?
নীল জোরে হেসে দিলো ওর কথা শুনে!
নীল:For ur kind information মিস নিশিতা জামান…আমি বলেছি তোমার দায়িত্ব আমাদের!আমাদের মানে বোঝো?..আমাদের মানে হলো আমি,ইশু আর আয়াতের।..আমার বলি নি!(শয়তানি হাসি দিয়ে)
নিশু ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলো ওর কথা শুনে…ছি!ছি!
নীল মিটিমিটি হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে!….বৃষ্টিতে ভেজার কারনে যে ওকে আরো বেশি মায়াবি লাগছে।এতক্ষন খেয়ালই করে নি ।নীলের মনে হচ্ছে
একেবারে ঘোর লেগে গেছে !মাথাটাও ঘুরছে!
নীল:নিশু??
নিশু:হুঁ?
নীল:May I?
নিশু:কি?
নীল:আমি এই মুহূর্তে তোমার গালে জাস্ট একটা ভালোবাসার পরশ দিতে চাই!
নিশু এতক্ষন নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু নীলের কথা শুনে চমকে উঠলো।নীলের দিকে তাকাতেই দেখলো ও একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।নিশু ওকে হুঁশে আনার জন্য জোরে ওর হাতে একটা চিমটি বসিয়ে দিলো।কিন্তু চিমটি দিতেই ওর হুশঁ হলো যে বৃষ্টিতে ভিজার পরও নীলের হাত পা গরম হয়ে আছে।চিমটি খেয়ে নীল ওর দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে।নিশু সেদিকে পাত্তা না দিয়ে বললো….রাগ পরে দেখাবে!…আগে ভেতরে চলো!
নীল এবার উল্টো রাগ দেখিয়ে বললো….উহুঁ!…আমি যাবো না!
নিশু:দেখো নীল!তোমার শরীর খারাপ মনে হচ্ছে এই অবস্থায় বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার শরীর আরো খারাপ হয়ে যাবে!
নীল:তাতে তোমার কি?
নিশু:আমার কিচ্ছু না!…কিন্তু তুমি এখন এখান থেকে যাবে!
নীল:না যাবো না!
নিশু:উফফফ!…আমি একা বেরিয়ে যাবো বলে দিলাম?
নীল:তো যাও না!
নিশু:(হুট করে এর কি হলো?…জ্বরে বেঁহুশ হয়ে গেছে নাকি?)
এভাবে হবে না।নিশু এবার গলার স্বর নরম করে ফেললো!
নিশু:নীইইইল??
নীল:হুঁ?
নিশু:চলো ভেতরে যাবে!
নীল:আমার কিচ্ছু হবে না।তোমাকে এত ভাবতে হবে না এই নিয়ে!
নিশু:(জ্বরের ঘোরেও তেজ দেখাচ্ছে শয়তান!)….তো এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজছো কোন দুঃখে?
নীল:আমার ইচ্ছে!
নিশুর এবার মেজাজ গরম হয়ে গেলো।অনেক হয়েছে আর না।ও নীলের শার্টের কলার ধরে টেনে ভেতরে নিয়ে এলো।
নিচে নামতেই দেখলো আয়াত আর ইশু কেউ নেই।কোথায় গেলো?..ও ভেবে পাচ্ছে না।এদিকে নীলকেও বেশি সুবিধের লাগছে না।বৃষ্টিতে ভিজে চোখদুটো পুরো লাল হয়ে আছে।যে কোন মুহূর্তে ফেইন্ট হয়ে যেতে পারে।নিশু তাড়াতাড়ি নীলের আলমারি থেকে জামা কাপড় বের করে ওকে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিলো চেইঞ্জ করে নেওয়ার জন্য।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েই ও লম্বা হয়ে খাটে শুয়ে পড়লো।নিশু কপালে হাত দিয়ে দেখলো টেম্পারেচার ভালোই আছে।কয়েকবার ডাকাডাকির পরও কোন সাড়া না পেয়ে নিশু তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেলো ফ্রেশ হতে।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েই নীলের মাথায় জলপট্টি আর পানি ঢালার ব্যাবস্থা করলো।এমন সময় আয়াত আর ইশুকে দেখলো মেইন দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকছে!….দুজনেরই সারা গায়ে কাদা!
নিশু:😮এ অবস্থা কেন তোদের?
ইশু:তোর জন্য!
আয়াত ইশুর দিকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়ে বললো…তোমার জন্য!

আয়াত আর ইশু বাগানের দিকে হাঁটছিলো। বৃষ্টির পানিতে সব ভিজে কাদা হয়ে গেছে।একে বৃষ্টি তারওপর অন্ধকার ইশু অসাবধানতা বসত হঠাৎ গর্তে পা দিয়ে ফেলে।ফলাফল গর্তে পড়ে কাদায় মাখামাখি।কিন্তু ঘটনাটা হচ্ছে পড়ার সময় ও একা পড়ে নি।আয়াতের কলার ধরে টেনে ওকে নিয়ে পড়েছে😂।
ইশু:😁সরি!
আয়াত বিড়বিড় করে ওকে বকতে বকতে চেইঞ্জ করতে চলে গেলো।
নিশু:তুই সব সময় ওকে এমন জ্বালাস কেন বলতো?
ইশু:বেশ হয়েছে শয়তানটা সবসময় আমার পিছনে লাগে!……তুই এতক্ষন কোথায় ছিলি বলতো?…তোকে খুঁজতে গিয়েই তো এমন বেহাল দশা!
নিশু:আমি তো ছাদে ভিজতে গিয়েছিলাম!
ইশু:সন্ধেবেলা ভিজার সময়?…আর গেলি যখন আমাকে বলে গেলি না কেন?
নিশু:আরে বাবা আমি জানি নাকি আমাকে না পেলে তোরা এমন খোঁজাখুঁজি করবি?
ইশু:হয়েছে থাক সর,আমি ফ্রেশ হবো!
নিশু:ঠিক আছে যা।তবে ফ্রেশ হয়ে একটু নীলের রুমে আয়!
ইশু:কেন?
নিশু:আগে ফ্রেশ হয়ে আয়!
ইশু:ঠিক আছে আসছি!

নিশু রুমে গিয়ে দেখলো নীল এখনো লম্বা হয়ে পড়ে আছে।নিশু কপালে হাত দিতেই মনে হলো হাত পুড়ে যাচ্ছে।ও কপালে হাত রাখতেই নীল চোখ মেলে তাকালো।চোখদুটো লাল হয়ে আছে সাথে জ্বরের তাপে পানিও পড়ছে!
নীল:কি হলো?…মিস হটি বিউটি?…তুমি আমার ঘরে কেন?(মুচকি হাসি দিয়ে)
নিশু:জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে তবুও বদমাশি থামছে না। দেখি সোজা হয়ে শোও!…তোমার মাথায় পানি ঢালতে হবে!
নীল অসহায় কন্ঠে বললো..শক্তি পাচ্ছি না তো।
নিশু:ঠিক আছে আমি হেল্প করছি।
নিশুকে যখন ওকে টেনে তুলতে গেলো ও ইচ্ছে করে উল্টো নিশুকে টান মেরে ফেলে দিলো।টাল সামলাতে না পেরে নিশু গিয়ে একেবারে ওর বুকের ওপর পড়লো।
নীল:আস্তে….আমার বুকের হাড়গোড় সব ভেঙে ফেলবে তো?
নিশু:😐তুমি আমাকে টান দিলে কেন?
নীল দুহাত দিয়ে ওকে আরো নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো….বুকে নিতে ইচ্ছে করছিলো যে?
নিশু:পাগল হয়ে গেছো নাকি?…কি করছো ছাড়ো প্লিজ!
নীল:উঁহু!
নিশু:(জ্বরের ঘোরে পাগল হয়ে গেছে এই ছেলে!…কেউ এসে পড়লে কি হবে?)
ও কিছু বলার আগেই আয়াত ভেতরে ঢুকে ওদের এ অবস্থায় দেখে হাঁ হয়ে আছে😮।ওর পেছন পেছন ইশুও ঢুকলো।
ওদের দেখে নিশু নীলের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু নীলের ছাড়ার কোন লক্ষণ নেই!

ইশু আয়াতের দিকে তাকিয়ে বললো…কি হচ্ছে?
আয়াত:বুঝতে পারছি না!
ইশু:ভাইয়া?
নীল:হু!
ইশু:কি করছিস??
নীল:ভালোবাসছি!
ইশু আয়াতের দিকে তাকিয়ে বললো…পাগল হয়ে গেছে নাকি?….এই জন্যই মনে হয় নিশু আমাকে আসতে বলেছিলো!
আয়াত:আমি কিছুই বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে!
নিশু:ও জ্বরের ঘোরে এমন করছে!
নীল:মোটেও না!
নিশু:😐
নীল হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে।আয়াত আর ইশু একজন আরেকজনের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে।
নীল নিশুর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসিফিসিয়ে বললো….আগে আমাকে আই লাভ ইউ বলো তারপর ছাড়বো!
নিশু:😮
ইশু:এই নিশু ও তোর কানেকানে কি বলছে?
নিশু:কিছু না!
নীল:মিথ্যে কথা!
নিশু:😐(আল্লাহ এই ছেলে আজকে আমার মানইজ্জত সব শেষ করে দিবে)
ইশু নীলের দিকে তাকিয়ে বললো..তুই ওকে ছাড় বলছি?
নীল:ওকে আগে আই লাভ ইউ বলতে বল??
এবার আয়াত আর ইশু দুজনে একসঙ্গে হাঁ!…নিশু লজ্জায় মরে যাচ্ছে!
ইশু:(নিশু ঠিকই বলেছে নিশচই ভাইয়ার কিছু হয়েছে নইলে এমন বেফাঁস কথা বলবে কেন?)
ও এগিয়ে গিয়ে নীলের কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে!
ইশু:জ্বরে তো গা পুড়ে যাচ্ছে!
আয়াত:সেজন্যই এমন বেফাঁস কথা বলছে!
নীল ওকে ধমক দিয়ে বললো…তুই একদম কোন কথা বলবি না!…বন্ধুর বউয়ের সাথে তোর কিসের এত মাখামাখি!
আয়াত হাসতে হাসতে বললো….কে তোর বউ বলতো?
নীল:কে আবার?…নিশু!
নিশু:😮
আয়াত নিশুর দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো..ওমা তাই?
নীল:হ্যাঁ তাই!
আয়াত এবার ইশুর দিকে তাকিয়ে বললো….দেখেছো কান্ড?হারামি মনে ভেতর এসব চেপে রেখে এতদিন ভাব নিচ্ছিলো?
ইশু:তাই তো মনে হয়!
নিশু:তোরা কি শুরু করেছিস বলতো?…জ্বরের ঘোরে ও কি বকছে ওর সেই খেয়াল আছে নাকি?
ইশু:হয়েছে থাক!….এবার তাড়াতাড়ি আই লাভ ইউ টা বলে দে তো।কতক্ষণ ধরে তোদের এসব দেখবো?….আমার ভীষণ লজ্জা লাগছে!
আয়াত:আমারও😁
নীল:কি হল বলো?(অস্থির হয়ে)
নিশু:পারবো না!
নীল:তাহলে আমিও ছাড়বো না!
আয়াত:আমার মনে হচ্ছে নিশুর ভালোই লাগছে নীলের বুকের ওপর…..
নীল:ঠিক বলেছিস!

নিশু বুঝতে পারলো নীল সত্যিই ছাড়বে না ওকে।ও নিজেও ছাড়াতে চাইছে না।কিন্তু আয়াত আর ইশুকে বুঝতে দেওয়া যাবে না।তাই ও নীলের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসিফিসিয়ে বললো…আমি জানি না ঘোর কেটে গেলে তোমার আজকে রাতের ঘটনা মনে থাকবে কি না!.তবে আমি ভালোবাসি!…অনেক বেশি ভালোবাসি নীল!নীল চুপ করে ওর কথা শুনছে।নীলকে ছাড়তে না দেখে নিশু ওর দিকে তাকিয়ে আদুরে গলায় বললো… এবার ছাড়ো?
নীল ওকে ছেড়ে দিতেই নেমে দাঁড়াল।
ইশু:ফিসিফিসিয়ে কি বললি?😁
নিশু:ফাজিল মেয়ে!…আমি যাচ্ছি…তোর লুচু ভাইয়ের মাথায় তুই পানি ঢাল!

আয়াত আর ইশু হাসছে ওদের কান্ড দেখে।
আয়াত:যাক বাবা রুশার হাত থেকে নীল মুক্তি পেলো!
ইশু নীলের মাথায় পানি ঢালতে ঢালতে বললো..তো কি হয়েছে তোমার গলায় ঝুলাবো!
আয়াত:ওকে বিয়ে করার চেয়ে সাধু সন্ন্যাসী হয়ে জীবন কাটানোও ভালো….এই মেয়েকে দেখলেই আমার ইরিটেশন হয়!

পানি ঢালা শেষ হলে ইশু মাথা মুছে দিয়ে নীলকে ওষুধ খাইয়ে বেরিয়ে গেলো।

রাত প্রায় দুটো নিশুর ঘুম আসছে না।নীলের জ্বর বেড়েছে কি না কে জানে!
ও চুপিচুপি উঠে নীলদের রুমে ঢুকলো।অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছে না।কোনরকমে আন্দাজ করে নীলের কপালে হাত দিতেই দেখলো টেম্পারেচার মোটামুটি নরমাল আছে।ও কপালে হাত রাখতেই ও নড়েচড়ে উঠলো!
নিশু ওর হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে সবে চুমু খাবে তার আগেই আয়াত হাত সরিয়ে নিয়ে বললো…দিতে হলে গালে দাও!(শয়তানি হাসি দিয়ে)
নিশু জিবে কামড় দিয়ে বসে আছে লজ্জায়।
আয়াত টেবিল ল্যাম্পটা অন করে বললো…দেখে নিবে তো সুন্দরি কাকে আদর দিচ্ছো?
নিশু:সরি!….তুমি ঘুমাও নি?
আয়াত:না নীলের জ্বর ছাড়ছিলো না দেখে টেনশন হচ্ছিলো।
নিশু:এখনো ছাড়ে নি?
আয়াত:একটু আগেই ছাড়লো!
নিশু:ঠিক আছে আমি যাই!
আয়াত:তুমি একটু ওর কাছে বসো আমি ডাইনিং থেকে পানি নিয়ে আসি!
নিশু:আমি এনে দিচ্ছি!
আয়াত:তুমি বসো আমিই আনছি!
আয়াত বেরিয়ে গেলে নিশু নীলের কপালে হাত দিয়ে দেখলো টেম্পারেচার এখন কেমন দেখার জন্য।নরমাল দেখে ও কিছুটা আশ্বস্ত হলো।নীল ঘুমোচ্ছে।ও নীলের চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে ওর কপালে একটা চুমু দিতেই আয়াত এসে হাজির!
আয়াত:হলো?
নিশু:তুমি নিচে যাও নি?
আয়াত:না!(মুচকি হেসে)
বিষয়টা বুঝতে পেরে নিশু ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলো।ওকে লজ্জা পেতে দেখে আয়াত দুষ্টমির হাসি দিয়ে বললো…তুমি তো দেখছি ভালোই ফেঁসেছো সুন্দরি!
নিশু:ধ্যাত!.আমি যাচ্ছি!….কোন দরকার হলে আমাকে ডাক দিও!
আয়াত:হ্যাঁ…যাও!যাও!এমনিতে তোমরা লাইলি মজনু মিলে আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছো!

#Love_Right❤💕❤
অরিত্রিকা আহানা
#Part_10

সকালবেলা নীলের ঘুম ভাংলো দেরীতে।মাথাটা ভার হয়ে আছে ওর।চোখ মেলে তাকাতেই দেখলো আয়াত ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে!
নীল:কি হলো হাসছিস কেন?
আয়াত ওর কথায় উত্তর না দিয়ে হেসেই যাচ্ছে।নীল কিছু বলতে যাবে এমন সময় নিশু এসে রুমে ঢুকলো।নিশুকে দেখে আয়াতের হাসি আরো বেড়ে গেলো।নীলও এবার মিটিমিটি হাসছে।
নিশু আয়াতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বললো…হাসছো কেন?
আয়াত:আমার হাসি পাচ্ছে তাই!
নীল:আমারও!(মুচকি হাসি দিয়ে)
নিশু নীলের খাবারটা টেবিলে রেখে ওকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিতে বললো।
নীল:কি ব্যাপার বলতো?…আজকে হঠাৎ আমার এত যত্ন করছো কেন?
নিশু:??
নীল:না মানে সারাক্ষণ তো আমার সাথে ঝগড়াই করো!
নিশু ওর কপালে হাত দিয়ে দেখলো জ্বর আছে কি না।নীল ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে?
নিশু হতাশ হয়ে বললো….উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও!…খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে!
ও বেরিয়ে যেতেই নীল আয়াতের দিকে তাকিয়ে বললো…কি হয়েছে বলতো?..আজকে ও এমন বিহেভ করছে কেন?
আয়াত:শালা!…কালকে রাতে এত কান্ড করার পর এখন বলছিস ও এমন করছে কেন?
নীল:???…..কি করেছি আমি?…ওর সাথে উল্টোপাল্টা কিছু করি নি তো?
আয়াত:তা নয় তো কি?…ওকে ঝাপটে ধরে ওকে দিয়ে আই লাভ ইউ বলয়েছিস জ্বরের ঘোরে!
নীল:😐দেখ আয়াত মজা করবি না একদম!..সত্যি করে বলতো কি হয়েছে?
আয়াত:তোর কি মনে হয় আমি মজা করছি?..বিশ্বাস না হলে ইশুকে জিজ্ঞেস করে দেখ!
নীল:ও আমাকে আই লাভ ইউ বলেছিলো?
আয়াত:জানি না।তবে তুই বলেছিলি ওটা না বললে ওকে ছাড়বি না।তারপর ও তোর কানে কানে কি যেন বললো।
নীল:তারপর?
আয়াত:তারপর আর কি তুই ওকে ছেড়ে দিলি!
নীল:ও মাই গড!…এত কিছু হয়ে গেছে তোরা আমাকে আটকালি না কেন?
আয়াত:ভাব কম নাও!….তোমার মনের সব কুচিন্তাধারা তুমি জ্বরের ঘোরে কালকে রাতে ফাঁস করে দিয়েছো!
নীল অধীর গলায় বললো…আর কি বলেছি আমি?
আয়াত এবার ওকে শুরু থেকে সব খুলে বললো।
নীল:হায় আল্লাহ!
আয়াত:কি হলো?
নীল:আমি নিশুর সাথে এগুলো কীভাবে করলাম?
আয়াত:কেন তুই ওকে ভালোবাসিস না?
নীল চুপ করে আছে আয়াতের কথা শুনে!যাই হোক ওর যে সবটা মনে আছে এটা কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবে না।

ইশু তানিমের রুমে বসে আছে। তানিম কফি খাচ্ছে।
ইশু:আমাকে কেন ডেকেছেন?
তানিম:তুমি সেদিন যে কথাগুলো বললে সেগুলো কি সত্যি?
ইশু:কোন কথা??
তানিম:ঐ তুমি আর আয়াত?
ইশু:হান্ড্রেড পার্সেন্ট সত্যি।
তানিম:দেখো ইশু আমি মজা করছি না।
ইশু:আমিও না।
তানিম:তবে আয়াত যে বললো তুমি মজা করে ওগুলো বলেছো?
ইশু:হুম।কিন্তু সত্যি বলেছি।
তানিম:তারমানে তুমি আয়াতকে ভালোবাসো?
ইশু:হুম।
তানিম:আয়াত যে বারবার করে আমাকে বোঝালো তুমি মজা করেছিলে?
ইশু:ও আমার সব কিছুকেই মজা ভাবে।তাই আমার ভালোবাসাটা বুঝতে পারে না।
তানিম কি করবে বুঝতে পারছে না।রাগে কফির মগটা মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলে দিলো।
তানিম:আমি তোমাকে ভালোবাসি ইশু!
ইশু:জানি।
তানিম:জানো?
ইশু:হুম।জানি….কিন্তু আমি আপনাকে ভালো বাসি না।
তানিম:তোমাকে আমি খুন করবো ইশু!(রাগে চিৎকার দিয়ে)
ইশু:আমি কি আপনাকে ছেড়ে দিবো নাকি?
তানিম:বেটার তুমি এখন আমার সামনে থেকে সরে যাও তা না হলে সত্যিই উল্টোপাল্টা কিছু ঘটে যেতে পারে।
ইশু:আমি আসছি আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।

সন্ধের দিকে ইশু কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে।এমন সময় আয়াত এসে রুমে ঢুকলো।ইশু কানের থেকে হেডফোনটা খুলে বললো….কিছু বলবে?
আয়াত:তুমি তানিম ভাইকে কি হাবিজাবি বলে এসেছো?
ইশু:তারমানে তোমাকে বলে দিয়েছে?
আয়াত:কেন বলেছো এসব?
ইশু:যা সত্যি তাই বলেছি জান!
আয়াত:মজা রাখো ইশু!
ইশু:আমি তো মজা করছি না?
আয়াত:উনি তোমাকে ভালোবাসে ইশু!
ইশু ও দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে প্রশ্ন করলো…আর তুমি?
হঠাৎ ওর এমন প্রশ্নে আয়াত থম মেরে গেছে।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না ইশু হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেন করলো?..ইশু ওর চোখের দিকে তাকিয়েই আছে।আয়াত নিজেকে স্বাভাবিক করে বললো…কি শুরু করলে তুমি?…উনি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসে।
ইশু:আমিও তো তোমাকে ভালোবাসি জান।
আয়াত:ধ্যাত!(এর সাথে কোন কথা বলে লাভ নেই)
ও বিরক্ত হয়ে উঠে চলে গেলো।ইশু আবার কানে হেডফোনটা লাগিয়ে বাইরের দিকে মনোযোগ দিলো।
এদিকে নীল আজকে সারাদিন থম মেরে বসে আছে।নিশু সকালের পর আর একবারও ওর সামনে আসে নি।

নিচে নামতেই দেখলো নিশু সোফার ওপর পা তুলে বসে বসে টিভি দেখছে।
নীল:পড়াশোনা নেই?
নিশু:……
নীল:তুমি কি আমার ওপর রাগ করে আছো?…আই এম সরি!…আসলে জ্বরের ঘোরে তোমার সাথে উল্টোপাল্টা বিহেভ করে ফেলেছি!
নিশু টিভির রিমোটটা হাত থেকে নামিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে।
নীল:কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
নিশু:(আই উইশ কালকে রাতের ঘটনাটা যদি প্রতিদিন ঘটতো?…কিন্তু তুমি যখন সেগুলোকে ভুল ভাবছো তখন আমি আর তোমাকে কিছু বলবো না!)
নীল:কি হলো?
নিশু:কালকে রাতে তেমন কিছুই হয় নি।এটা নিয়ে এত গিল্টি ফিল করার কিছু নেই!
নীল:মন থেকে বলছো?
নিশু:হুম!
নিশু আবার টিভির দিকে মনোযোগ দিলো।নীল উঠতে গিয়ে আবার বসে পড়লো।
নীল:বাই দা ওয়ে তুমি কি আমাকে আই লাভ ইউ বলেছিলে?
নিশু:না!(কঠিন গলায়)
নীল:ঠিক আছে আমি আসছি!
নীল চলে গেলে নিশু আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না!…কেন এমন হলো ওর সাথে?…কোনটা বিশ্বাস করবে কালকে রাতের ঘটনাটা নাকি আজকের ঘটনা?

রুশা এসে সোজা নীলের ঘরে ঢুকলো।নিশু নীল আয়াত ইশু সবাই ওখানে বসে ছিলো।রুশাকে দেখে নিশু বেরিয়ে গেলো।ওর দেখাদেখি আয়াত আর ইশুও বেরিয়ে গেলো।নীল খাটের ওপর শুয়ে আছে।
রুশা:শুনলাম তোমার নাকি জ্বর?
নীল:এখন ভালো আছি!
রুশা:আমি তোমার সাথে কিছু জরুরি কথা বলতে এসেছি!
নীল:বলো।
রুশা:তুমি কি নিশুকে ভালোবাসো?
নীল:বাসি!(মুচকি হেসে)
রুশা:ওকে বলেছো?
নীল:এখনো বলিনি!
রুশা:আমার মনে হয় তোমার বলে দেওয়া উচিৎ।
নীল:আমিও তাই ভাবছি।
রুশা:ও তোমাকে ভালোবাসে?
নীল:মনে হয়।
রুশা:তাহলে আমরা একটা প্ল্যান করতে পারি!
নীল:কি প্ল্যান?
রুশা:ধরো তুমি ওকে গিয়ে প্রথমে তোমার ভালবাসার কথা বলবে।তারপর তোমার আর আমার বিয়েতে যদি ও বাধা দেয় তাহলে বুঝবে ও তোমাকে সত্যি ভালোবাসে।
নীল:ভালো আইডিয়া।….তাহলে তো ফুপা ফুপিকে লাগবে।
রুশা:লাগবে না।তোমার বাসার সবাইকে বলে রাখলেই হবে।আর আমি তো আছিই!
নীল:থ্যাংক ইউ সো মাচ রুশা।
রুশা:মেনশন নট।

রুশার কথা শুনে নিশু হাঁ হয়ে আছে।এই মেয়ে এতটা স্বার্থপর কি করে হতে পারে?…এতবড় ধোঁকা দিচ্ছে!
রুশা:যদি তুমি হ্যাঁ বলো নিশু…তাহলে আই প্রমিস আই উইল কিল মাইসেল্ফ!…নীলকে আমি যে কোনকিছুর বিনিময়ে চাই!
নিশু:😭কিন্তু আমি নীলকে ভালোবাসি রুশা!
রুশা:আমিও তো ভালোবাসি?….আমি যা বলি তাই করি!….মাইন্ড ইট!আই উইল কিল মাইসেল্ফ!

পরেরদিন সন্ধ্যেবেলা নিশু ছাদে একা দাঁড়িয়ে আছে।আকাশ থমথমে সাথে ওর মনটাও।নীলকে কি করে ও দূরে সরিয়ে দিবে?…কিন্তু রুশা যদি সত্যিই উল্টোপাল্টা কিছু করে বসে?!ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এসব ভাবছিলো এমন সময় মনে হলো ওর ঘাড়ে কারো গরম নিশ্বাস পড়ছে।পেছনে ফিরতেই দেখলো নীল।
নিশু:তুমি?
নীল:কেন অন্য কাউকে আশা করছিলে নাকি?
নিশু:কাউকেই আশা করছিলাম না!
নীল:মিথ্যে কথা!…তুমি এতক্ষন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কথাই ভাবছিলে!….তাই না?(মুচকি হেসে)
নিশু:তোমার এমন মনে হওয়ার কারন?
নীল দুহাত দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে বললো…ভালোবাসি যে তাই!
নিশু মুখ দিয়ে কোন শব্দ বেরোচ্ছে না।তারমানে নীল সত্যিই ওকে ভালোবাসে?
নীল:হুম!
নিশু:কি?
নীল:আমি তোমাকে সত্যিই ভালোবাসি।
নিশু:কিন্তু আমি তোমাকে ভালোবাসি না।(অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে)
নীল ওর মুখটা নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো…আমার দিকে তাকিয়ে বলতো?
নিশু ঠোঁট চেপে কান্না আটকে রেখে বললো…বললাম তো!
নীল ওর গালদুটো দুহাত দিয়ে চেপে ধরে বললো…কি বললে?
নিশু নীলের হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে বললো…আমি তোমাকে ভালোবাসি না!(কঠিন গলায়)
নীল:দেখো নিশু ভালো হবে না বলে দিচ্ছি।আমি কিন্তু রুশাকে বিয়ে করে ফেলবো।
নিশু:তোমার যা ইচ্ছে করো।
নীল আবার ওর গালে দুহাত রেখে বললো..তুমি কি সেদিন রাতের জন্য আমার ওপর রেগে আছো?…আমি প্রথমে বুঝতে পারি নি নিশু।ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।কিন্তু আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো।
নিশু:না বাসি না।
নীল:তাহলে সেদিন কেন বলেছিলে….আমি হয়ত ভুলে যেতে পারি কিন্তু তুমি আমাকে ভালোবাসো?…রাতে আমার ঘরে কেন এসেছিলে?
নিশু:এতেই বিশ্বাস করে নিলে আমি তোমাকে ভালোবাসি?…আমি ভেবেছিলাম তুমি জ্বরের ঘোরে পাগলামি করছিলে তাই তোমাকে শান্ত করার জন্য বলেছিলাম।
নীল:কেন মিথ্যে বলছো বলতো?
নিশু:পাগলের সুখ মনে মনে।এত কিছুর পরও যদি তোমার মনে হয় আমি তোমাকে ভালোবাসি তাহলে আমার কিছু করার নেই?
নীল:আমি মুখফুটে ভালোবাসার কথা বলেছি বলে তুমি এত সাহস দেখাতে পারছো।You know what?…তোমার মত মেয়ে নীলাস হাসানের পাশে দাঁড়ানোরও যোগ্য না!আমারই ভুল।
ও রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।চোখ দুটো রক্তলাল হয়ে গেছে।নিশু ওর সাথে এমন কিছু করবে ও ভাবতেই পারে নি।ও বেরিয়ে গেলে নিশু ছাদের রেলিং ধরে বসে বসে কাঁদছে।নীল যে কতটা কষ্ট পেয়ে কথাগুলো বলছে তা ও বুঝতে পারছে।

সেদিন রাতের বেলা নীল,আয়াত,রুশা,ইশু ইলারা বেগম নিশু সবাই একসাথে বসেছে।
ইলারা বেগম রুশার দিকে তাকিয়ে বললেন…তোর মা বাবা চাচ্ছে ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান করে তোর আর নীলের বিয়েটা সেরে ফেলি?পরে উনারা দেশে ফিরলে বড় করে রিসেপ্সন পার্টি দেওয়া যাবে।তুই কি বলিস?
রুশা:আমি কি বলবো?…নীলের যদি কোন প্রবলেম না থাকে তাহলে আমি রাজি।
নীল নিশুর দিকে চেয়ে আছে।ওকে তাকাতে দেখে নিশু অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।শেষে উঠেই চলে গেলো।
নীল:আমি একটু আসছি।
নীল নিশুর পেছন পেছন গিয়ে ওকে আটকালো।
নিশু:কি সমস্যা?
নীল:তুমি উঠে এলে কেন?
নিশু:আমার মাথাব্যথা করছে!
নীল ওর দুবাহু জড়িয়ে ধরে বললো…দেখো নিশু আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো।প্লিজ কি হয়েছে আমাকে বলো?…কেন এমন করছো?…তখন আমার মাথা ঠিক ছিলো রাগে বেঁহুশ হয়ে গেছিলাম।
নিশু:আর কি করলে তোমার বিশ্বাস হবে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি না?….হ্যাঁ আমি ভালোবাসি কিন্তু তোমাকে না।
নীল:কাকে??
নিশু:আয়াতকে!
নীল:মিথ্যে কথা।
নিশু:তোমার যা ইচ্ছে তুমি ভাবতে পারো।
নীল আর মেজাজ কন্ট্রোল করতে পারলো না।রাগে নিশুর গালে কষে এক চড় বসিয়ে দিয়ে বললো…আই জাস্ট হেইট ইউ মিস নিশিতা জামান!
তারপর সবার সামনে গিয়ে বললো…কোন বিয়ে হবে না।আমি নেক্সট ফ্লাইটেই ঢাকা ছাড়ছি!
ইলারা বেগম:মানে?
নীল কোন কথা না বলে রেগে উপরে চলে গেলো।
রুশাসহ বাকি সবাই নীলের পেছন উপরে উঠলো।

দুবছর পর নিশু রাস্তায় টেক্সির জন্য দাঁড়িয়ে আছে।সাথে আয়াতও আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *