I AM YOUR VILLAIN LOVER

I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 18

মেঘের কথা শুনে রাগে বর্ষার চোখ মুখ লালবর্ণ ধারন করলো। বর্ষা হাতের ছুরিটাকে শক্ত করে ধরে উপড়ের দিকে তুলে ধরলো তারপর দুরে ছুড়ে ফেলে দিলো।

ছুরিটা ফেলে দিয়ে মেঘের সামনে মেঘের মতো করে হাটু গেরে বসলো বর্ষা। তারপর বললো

— ক্ষমা করতে পারি আমার কিছু শর্ত আছে। সেই শর্তগুলো পুরোন করলে তবেই তোকে আমি ক্ষমা করবো। বল মেঘ তুই রাজি তো?

বর্ষার কথা শুনে খুশিতে গদগদ হয়ে বললো মেঘ

— আমি রাজি বর্ষা, আমি তোর সব শর্তে রাজি আছি। তবুও তুই আমায় ক্ষমা করে দে প্লিজ।

— আরে আরে আগে শুনবি তো আমার শর্তগুলো কি কি?
আমার প্রথম শর্ত হলো, আজকে তোকে প্রমিজ করতে হবে আর কোনো দিন কখনো সঠিকটা না জেনে আমি বা অন্য কাউকে সন্দেহ করে কষ্ট দিবি না।

আমার দ্বিতীয় শর্ত, আমাকে সাতার শেখাতে হবে। আমি সাতার জানি না তাই।

আমার তৃতিয় শর্ত, প্রতিদিন বিকেলে ছাদে আমার সাথে বসে আমায় নিজে হাতে কফি করে খাওয়াতে হবে। সাথে গিটার বাজিয়ে গান শোনাতে হবে। আর সেই গানটা শুধুই আমার জন্যে গাইতে হবে।

আমার চতুর্থ শর্ত হলো, তুই আর আমি এখন যেমন আলাদা রুমে থাকি সব সময় এমনই থাকবো। তুই আমার কাছে আসতে পারবি না। বল রাজি?

বর্ষার মুখে দুষ্টুমির হাসি। মেঘ বেচারা মনে হচ্ছে এখন কান্না করে দিবে মুখটা এমন বানিয়ে আছে। বর্ষার শর্ত গুলো শুনে উঠে দাঁড়ালো মেঘ। মেঘের সাথে বর্ষাও উঠে দাঁড়ালো। মেঘ মুখটাকে ইনোসেন্ট বানিয়ে বললো

— সবই ঠিক আছে কিন্তু আমি চতুর্থ শর্তটা মানতে পারবো না। আমি তোকে জরিয়ে ধরে ঘুমাতে চাই। প্রতিটা রাত তোকে বুকে জরিয়ে স্বপ্নের ভেলায় ভাসতে চাই। আমার ছোট সোনাটার সাথে কথা বলতে চাই। প্লিজ বর্ষা এই শর্তটা বাদ দে। আমি আর তোকে ছাড়া আলাদা থাকতে পারবো না।

মেঘের কথা শুনে বর্ষা ভাব নিয়ে বললো

— ঠিকাছে ঠিকাছে, সে পরে দেখা যাবে এখন যা আমার জন্যে এক মগ কফি বানিয়ে নিয়ে আয়। আর হ্যা কফিটা যদি খেতে পঁচা হয়না তাহলে কিন্তু সব মাফ করা বাতিল করে দিবো।

বর্ষার কথা শুনে মেঘ অসহায় মুখ করে বললো

— কিন্তু আমি তো কফি বানাতে পারিনা রে সরিষা। তুই আমায় আজকে বানিয়ে শিখিয়ে দে কাল থেকে না হয় আমিই বানাবো।

— নাহ নাহ নাহ সেটা তো হবে না। ওকে ঠিক আছে তাহলে তুই হার মেনে নে আমি বরং তোকে আর ক্ষমা করবো না।

— এই না না প্লিজ এমন বলিস না। আচ্ছা আমি যাচ্ছি কফি যে করেই হোক বানিয়ে আনছি মহারানীর জন্যে। কিন্তু আমারও একটা শর্ত আছে। তুই এখন আমার রুমে গিয়ে আলমারিতে দেখবি একটা প্যাকেট রাখা আছে। প্যাকেটে যা আছে সেটা সুন্দর করে পড়ে হালকা সাজগোজ করে ছাদে আসবি। ততক্ষণে আমি কফি বানিয়ে নিবো।

— কফি বানাতে পাঁচ মিনিট সময় লাগে। এই এতটুকু সময়ে আমি কি করে সাজবো?

— তোকে কে বললো পাঁচ মিনিটে সাজতে। তোর যত টাইম লাগে নে। তবুও আমি তোকে আমার অপশরীর রুপে দেখতে চাই। এখন কথা না বলে যা তো।

কথাটা বলেই বর্ষাকে নিয়ে নিচে নেমে এলো মেঘ। বর্ষা মেঘের রুমে গিয়ে আলমারি খুলে প্যাকেটটা বের করে ওটা খুলে দেখলো। প্যাকেটটাতে অনেক সুন্দর একটা কালো রঙের জরজেট শাড়ি। সাথে ম্যাচিং করা সব জুয়েলারি। জিনিসগুলো দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠলো বর্ষার। বর্ষা আর দেরি না করে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।

ফ্রেশ হয়ে এসে শাড়িটা পড়ে নিলো বর্ষা, সাথে কালো রঙের কাঁচের চুরি, গলায় কালো ডায়মন্ডকাট পাথড়ের নেকলেস, কানে বড় বড় দুটা মেচিং ঝুমকা, চোখে গাড়ো করে কাজল,ঠোঁটে গাড়ো লাল লিপস্টিক। চুলগুলো কোমড় পর্যন্ত ছেরে দেওয়া। মুখে হালকা মেকআপ।

সম্পুর্ন রেডি হতে হতে রাত ৯ টা বেজে গেলো ঘড়িতে। বর্ষা আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। মেঘের সামনে কি করে যাবে ভাবতেই যেনো আরো বেশি লজ্জা লাগছে বর্ষার। তখনি ড্রেসিংটেবিলের ওপর থাকা মেঘের ফোনটাতে টুং করে একটা শব্দ হলো। শব্দটা পেতেই বর্ষা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো মেঘ অন্য ফোন থেকে ম্যাসেজ করেছে। ম্যাসেজে লেখা

— আর কতো ওয়েট করাবে সরিষা পেত্নী। এবার তো ছাদে আসো আমি তো ওয়েট করতে করতে বুড়ো হয়ে গেলাম।
তোমার কুম্ভভুত

ম্যাসেজটা পড়ে হাসলো বর্ষা। তারপর ফোনটা রেখে ছাদের দিকে পা বাড়ালো। ছাদে উঠেই চমকে গেলো বর্ষা। কারন এতটুকু সময়ের মাঝেই ছাদটাকে বেশ সুন্দর করে সাজিয়েছে মেঘ। বর্ষা যেখান দিয়ে হেটে যাবে সেই জায়গায় গোলাপ ফুলের পাপড়ি বিছিয়ে রাখা। বর্ষা মুচকি হেসে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলো মেঘ অন্যদিকে ঘুরে দাড়িয়ে আছে। বর্ষার উপস্থিতি টের পেতেই মেঘ বর্ষার দিকে ঘুরে তাকালো। বর্ষাকে দেখেই যেনো থমকে গেলে মেঘ। এই কালো শাড়িতে আর হালকা সাজই যেনো মেঘকে পাগল করার জন্যে যথেষ্ট। মেঘ তৃষ্ণার্ত চোখে তাকিয়ে আছে বর্ষার দিকে। আর বর্ষা লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচু করে আছে। আর আর চোখ বার বার মেঘকে দেখছে। কেননা মেঘকেও অসম্ভব সুন্দর লাগছে

মেঘ কালো রঙের পান্জাবী পড়েছে সাথে জিন্স প্যান্ট, হাতে দামি ঘড়ি, চোখ দুটো তৃষ্ণায় ভরা।

বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর মেঘ বর্ষার লজ্জামাখা মুখ দেখে কয়েক পা পিছিয়ে গিয়ে গিটার হাতে নিলো। তারপর বর্ষার দিকে তাকিয়ে গান ধরলো

Sun meri shehzaadi
Main hoon tera shehzada
Baahon mein leke tujhe
Main karta hoon vaada

Aye jan-e-tamanna meri
Main khake kasam teri
Yeh karta hoon ikaraar
Marr bhi gaya toh main tujhe
Karta rahunga pyar

Sapana samajhke bhul na jana
O dilwale saath nibhana
Saath nibhana dildaar
Saaton janam mein tere
Main saath rahunga yaar
Marr bhi gaya toh main tujhe
Karta rahunga pyar
Ehsaas nahi tujhko
Main pyar karu kitna
Kar dungi tujhe paagal
Chahungi sanam itana

(গানটা কালেক্ট করা যদিও পুরোটা নাই এখানে। বাট ভাল্লাগছে কথাগুলো😁)

গান গাওয়া শেষ করে বর্ষার সামনে এসে বর্ষার হাত ধরে কাছে টেনে নিলো মেঘ। তারপর বর্ষার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বললো

— এভাবে শাস্তি দেওয়ার চাইতে আমায় খুন করলেই ভালো করতিস জান। এখন তো মনে হচ্ছে তোর থেকে দুরে থাকার শর্ত পুরোন করতে গিয়ে আমি এমনিতেই হার্টফেল হয়ে মরে যাবো। এই শর্তটা কি না মানলেই নয়?

মেঘের কথা শুনে লজ্জা মাখা হাসি দিলো বর্ষা। তারপর বললো

— আমার কফি কোথায় মিস্টার কুম্ভভুত? আপনি কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার একটা শর্তও মানেননি?

বর্ষার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বর্ষাকে ছেড়ে মেঘ বললো

— যথা আগ্গা মেরি শাহজাদি, আপনি এখানে বসুন আমি আপনার কফি সাথে ডিনারেরও আওজন করেছি।

মেঘের কথা শুনে বর্ষা ছাদের মাঝখানে অনেক সুন্দর করে সাজানো টেবিল চেয়ার দেখতে পেলো। পুরো টেবিলের ওপর ফুলের পাপড়ি বিছানো। বর্ষা গিয়ে একটা চেয়ার টেনে বসে পরলো। বর্ষার সামনা সামনি মেঘ বসে দুজন মিলে নানা রকম গল্প করতে করতে ডিনার শেষ করলো।

তারপর দুজন রাত প্রায় ২ টা পর্যন্ত ছাদে চাঁদের আলোতে গল্প করে কাটিয়ে দিলো। আজ যেনো ওদের মাঝে নেই কোনো রাগ নেই কোনো ভুলবোঝা বুঝি। শুধু ভালবাসাটাই কাজ করছে আজ। দুজন পবিত্র ভালবাসার মানুষের আজ যেনো এক হওয়ার দিন।

বর্ষা ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললো

— আজকের চাঁদটা কতো সুন্দর তাইনা মেঘ?

বর্ষার কথার উত্তরে মেঘ এসে বর্ষাকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বর্ষার চুলে মুখ গুঁজে বললো

— আমার এই চাঁদের চাইতে সুন্দর নয় আকাশের ঐ চাঁদ।

মেঘের ছোঁয়ায় কেপে উঠলো বর্ষা। মেঘ বর্ষাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কোলে তুলে নিলো। তারপর বর্ষার গালে চুমো একে দিয়ে বললো

— ঘুম পায়নি আজ আমার এই চাঁদ টার? চল আমি তোকে আজ ঘুম পাড়িয়ে দিবো আমার সব ভালবাসা দিয়ে।

বর্ষা কিছু না বলে মেঘের বুকে মুখ লুকালো। মেঘ বর্ষাকে কোলে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো,,,,,

সকালে মেঘের আগে ঘুম ভাঙলো বর্ষার। বর্ষা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো ও মেঘের বুকে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে আছে। মেঘের ঘুমন্ত মুখটা কি মায়াবি লাগছে দেখতে। বর্ষার কি হলো বর্ষা টুপ করে একটা চুমো একে দিলো মেঘের গালে। মেঘ হালকা নরে উঠতেই বর্ষা তারাতারি উঠে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে।
,
,
,
৭ দিন পর
আজকে বর্ষার শশুড় মশাই দেশে ফিরবেন। সকাল থেকেই বর্ষা কাজে লেগে পড়েছে শশুড়কে আপ্যায়নের জন্যে। কিন্তু বর্ষা ঠিক মতো কাজই করতে পারছে না। কারন মেঘ ওকে বিরক্ত করে করে জ্বালিয়ে মারছে।

(যদি দেখো ভালবাসার মানুষটিকে তুমি কিছুতেই ক্ষমা করতে পারছো না। তাহলে ভেবে নিও তোমার মধ্যে কখনো তার জন্যে ভালবাসা ছিলই না। কারন ভালবাসার মানুষ যতই কষ্ট দিক না কেনো। তার ওপর রাগ করে থাকা যায় না। আর তাকে কষ্টও দেওয়া যায় না।
বিঃদ্রুঃ এই কথাডা কইলাম আমার নয় অন্য কারো😐)

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *