I AM YOUR VILLAIN LOVER

I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 10

নিলয়কে নিয়ে একটি কফিশপে গিয়ে বসলো মেঘ। কফিশপে বসতেই নিলয় কিছুটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো

— মেঘ তোর সাথে বর্ষা এতটা খারাপ আচরন করার পরেও তুই কেনো বিয়ে করলি ওকে? তুই কি এক বছর আগের সেই কথাগুলো ভুলে গেছিস?তোকে কি করে সবার সামনে ধর্ষক প্রমান করে মার খাইয়ে ছিলো বর্ষা?

নিলয়ের কথা শুনে রাগি গলায় মেঘ বললো

— ভুলিনি, কিছুই ভুলিনি আমি। সেদিনের কথা ভুলে যাইনি বলেই আমি বর্ষাকে বিয়ে করেছি। আমার ভালবাসার মুল্য ও আমায় যে ভাবে দিয়েছিলো তার প্রতিশোধ নিবো আমি ওর থেকে। তাই তো ওর বিয়ের দিন ওকে কিডন্যাপ করে ওর বিয়ে ভেঙে দিয়েছি আমি।

মেঘের কথা শুনে রাগের সাথে অবাক হয়ে নিলয় বললো

— কি বলছিস তুই মেঘ, সেদিন তুই বর্ষাকে কিডন্যাপ করেছিলি। ওর বিয়েটা ভেঙে দিতে? কিন্তু তুই কেনো এমন করলি মেঘ এতে তোর লাভটা হলো কি?

— আমি বর্ষাকে ভালবাসি সেটা আর কেউ না জানলেও তুই খুব ভালো করেই জানতি নিলয়। তবে বর্ষাকে আমি ভালবেসে বিয়ে করিনি। ওকে বিয়ের আসর থেকে তুলে এনে ওর গায়ে আমি কলঙ্কের কালি লাগিয়েছি। তারপর বিয়ে করেছি ওকে তিলে তিলে কষ্ট দিবো বলে। যে ভাবে এই একটি বছর বিনা দোষে ধর্ষক হওয়ার কষ্ট পেয়েছি আমি।ঠিক সে ভাবেই কষ্ট দিবো আমি ওকে। আমায় এমন কষ্টে রেখে ও অন্যের ঘরে সুখে সংসার করবে এটা আমি মেনে নিতে পারবো না। তাই ওকে বিয়ে করে কষ্ট দিতে চাই আমি।

মেঘের কথা শুনে রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে নিলয়ের। নিলয়ের এতদিনের ষড়যন্ত্র আর সব প্ল্যান মাটি করে দিয়েছে এই মেঘ। বর্ষার কাছ থেকে মেঘকে আলাদা করতে কি কি করেনি নিলয়। কিন্তু শেষে বর্ষা সেই মেঘেরই হলো।
,
,
,
এক বছর আগে বর্ষা যখন মেঘকে থাপ্পড় মেরে ঐ ক্লাস থেকে দৌড়ে বেরিয়ে কলেজ থেকে চলে যায়। তখন আরাল থেকে সব ফোনে ভিডিও রেকোর্ড করে নিলয়। আর সেই ভিডিও রেকোর্ডিং কলেজের স্যার ম্যাডাম আর ছাত্র ছাত্রীদের দেখিয়ে সবাইকে বলে মেঘ জোর করে বর্ষাকে ধর্ষন করতে চেয়েছিলো। আর এই রেকোর্ডিংটা বর্ষাই সবাইকে দেখাতে বলেছে।

নিলয়ের কথা শুনে ক্ষেপে যায় কলেজের সবাই। কারন কলেজে মেঘের নাম ডাক থাকলেও ওর পপুলিটির জন্যে শত্রুরও অভাব ছিলো না। আর সেই শত্রুগুলো এই সময়টাকেই কাজে লাগিয়েছিলো সেদিন। মেঘ বর্ষা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর নিজের ভুল বুঝতে পেরে মন খারাপ করে ক্লাস থেকে বের হতেই ওর ওপর ঝাঁপিয়ে পরে কলেজের সব ছাত্র ছাত্রীরা। আর ধর্ষক বলে গালি দিতে দিতে মারধর করতে থাকে মেঘকে। সেদিন শত চেষ্টা করেও কাউকে বোঝাতে পারেনি মেঘ যে ও বর্ষার সাথে এমন কিছুই করেনি। ঐ মুহুর্তে মেঘের চোখ শুধু বর্ষাকে খুজছিলো। মেঘ ভেবেছিলো বর্ষা ওকে বাচিয়ে সবার কাছে সত্যিটা বলবে। কিন্তু সেদিন বর্ষা আসেনি সেখানে।

সকলের গণপিটুনি খাওয়ার পর নিলয়ই মেঘের সামনে ভালো বন্ধু হওয়ার নাটক করে মেঘকে হসপিটালে নিয়ে যায়। পুরো একদিন হাসপাতালে থাকার পর মেঘ মনের মাঝে বর্ষার জন্যে রাগ পুষে নিয়ে পারি দেয় ভিনদেশে। সেদিন বর্ষা বা মেঘ কেউই জানতো না যে আসল কালপিট আসলে এই নিলয় নামের বন্ধুর আরালে শত্রু ছিলো।

তিনদিন পর যখন বর্ষা কলেজে আসে তখন বর্ষা জানতে পারে মেঘ ওর বাবার বিজনেসের কাজে দেশের বাইরে গেছে। কলেজের কেউই বর্ষাকে সেদিন বলেনি আসল কথা। এটাও ছিলো নিলয়ের একটি চাল। কারন নিলয় প্রথম দিন থেকেই বর্ষাকে পছন্দ করতো। তবে মেঘের ভয়ে কখনো তা প্রকাশ করেনি। তাই সেদিন সুজোগ বুঝে ওদের দুজনকে আলাদা করে দেয় নিলয়।

মেঘ বিদেশ চলে যাওয়ার ৩ মাস পর বর্ষার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠায় নিলয়। কিন্তু বর্ষা বিয়ের জন্যে না করে দেয়। বর্ষা বলে পড়াশোনা শেষ না করা পর্যন্ত ও বিয়ে করবে না। তাই বর্ষার কথা মতো বিয়ের ডেট পিছিয়ে ৮ মাস পর করা হয়। আর বিয়ের দিনই বর্ষাকে কিডন্যাপ করে মেঘ।
,
,
,
১ মাস পর
,
রাতে রান্না শেষ করে বেলকুনিতে দাড়িয়ে আছে বর্ষা। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে ওর। মা বাবাকে বড্ড দেখতে ইচ্ছা করছে বর্ষার। কিন্তু ও ভালো করেই জানে মেঘকে বলে কোনো লাভ হবে না। মেঘ নিয়ে যাবে না বাবার বাড়িতে। তাই বেলকুনিতে দাড়িয়ে চোখের জল ঝাড়াচ্ছে বর্ষা।

মেঘ বাসায় ফিরে বর্ষাকে কোথাও খুজে না পেয়ে বেলকুনিতে গিয়ে দেখে বর্ষা কান্না করছে আকাশের দিকে তাকিয়ে। মেঘের খুব ইচ্ছা হয় বর্ষার চোখের পানিটা নিজে হাতে মুছে দিতে। শত হলেও তো বর্ষাকে মেঘ ভালবাসে।কিন্তু না মেঘ সেটা করবে না। কারন মেঘতো বর্ষাকে বিয়েই করেছে ওকে কাঁদাবে বলে। বর্ষার পিছনে দাড়িয়ে মেঘ ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে ওঠে

— আমার খুব খুধা লেগেছে, তারাতারি আমার জন্যে টেবিলে খাবার রেডি কর। আর আমি যেনো এমন ন্যাকা কান্না কাঁদতে না দেখি।

মেঘের কথা শুনে কোনো উত্তর না দিয়ে চোখের জল মুছে নিচে চলে যায় বর্ষা। তারপর মেঘের জন্যে টেবিলে খাবার রেডি করে। একটু পর মেঘ নিচে এসে খাবার খেতে খেতে কি মনে করে জিগ্যেস করে

— তুই রাতের খাবার খেয়েছিস বর্ষা?

মেঘের কথা শুনে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে সেখান থেকে চলে যেতে নেয় বর্ষা। ওমনি বর্ষার হাত ধরে ফেলে মেঘ। তারপর রাগি কন্ঠে বলে

— আমি তোকে কিছু জিগ্যেস করেছি বর্ষা আমার কথার উত্তর না দিয়ে তুই চলে যাচ্ছিস কোন সাহসে?

মেঘের কথা শুনে মেঘের দিকে তাকিয়ে বর্ষা বলতে শুরু করে

— আমি খেলাম কি না খেলাম সেটা দেখার সময় তোর আছে মেঘ ভাইয়া? আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় দু মাস হতে চললো। এর মাঝে একবারও কখনো জানার চেষ্টা করেছিস আমি খেলাম কি না? আমার মন ভালো আছে কিনা। সব সময় কুকুর বিড়ালের মতো আচরন করেছিস তুই আমার সাথে।স্বামী স্ত্রী হওয়া সত্যেও আমার ঠাই হয়েছে ফ্লোরে তোর বিছানায় নয়। তাহলে আজ হঠাৎ কেনো জিগ্যেস করছিস মেঘ ভাইয়া। আমি উত্তর দিবো না তোকে।

কথাটা বলেই মেঘের সামনে থেকে চলে যেতে নেয় বর্ষা। সাথে সাথে মেঘ চেয়ার ছেরে উঠে বর্ষার হাত ধরে দাতে দাত চেপে বলে

— কিছুদিন হলো কিছু বলছিনা দেখে খুব সাহস বেরেছে তোর তাইনা বর্ষা। তোর সাহস হয় কি করে আমার মুখে মুখে কথা বলার?

কথাটা বলেই বর্ষাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ঠাস করে গালে একটা থাপ্পড় মারে মেঘ। মেঘের থাপ্পড় খেয়ে জ্ঞান হারিয়ে নিচে পরে যায় বর্ষা। বর্ষাকে জ্ঞান হারাতে দেখে যেনো হুশে ফিরে আসে মেঘ। মেঘ দৌড়ে গিয়ে বর্ষাকে কোলে তুলে নেয়। তারপর সোফায় শুইয়ে দিয়ে বলে

— এ আমি কি করলাম। আমি কি নিজের রাগের বসে বর্ষার সাথে সত্যিই খুব অন্যায় করে ফেলছি। কি হলো বর্ষার। বর্ষার কিছু হলে আমি বাচবো কি নিয়ে। বর্ষা এই বর্ষা কথা বলনা প্লিজ। এই বর্ষা কি হলো কথা বলনা আমার সাথে প্লিজ।

কোনো কিছুতেই বর্ষার জ্ঞান ফিরছে না দেখে বর্ষাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে চলে যায় মেঘ। পাগলের মতো ডাক্তারকে ডাকতে থাকে মেঘ। ডাক্তার এসে নার্সদের দিয়ে বর্ষাকে নিয়ে যায় একটি কেবিনে। বেশ কিছুক্ষণ চেকআপের পর ডাক্তার বর্ষার কেবিন থেকে বেরিয়ে মেঘকে বলে

— অভিনন্দন মিস্টার মেঘ চৌধুরী আপনি বাবা হতে চলেছেন। আপনার স্ত্রী দের মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তবে ওনার শরীর খুব দুর্বল হয়তো ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেননা। নিজের যত্নও নেন না। আপনাকে ওনার দিকে নজর রাখতে হবে ওনার যত্ন করতে হবে। নইলে বেবির ক্ষতি হওয়ার আশংকা আছে।

ডাক্তারের কথা শুনে যেনো আকাশ থেকে পরলো মেঘ। বর্ষা অন্তঃসত্ত্বা কি করে হতে পারে। ওদের তো কখনো স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক হয়নি। তাহলে বর্ষার পেটের এই বাচ্চাটা কার??

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *