The villain lover

The villain lover ।। পার্ট : ১৯

বিছানায় এলোমেলো ভাবে শুয়ে আছে ছোয়া, আর রুদ্র মাত্রই গোসল করে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আছড়াচ্ছে,
ছোয়ার ঘুম ভাঙতেই দেখলো রুদ্র গোসল করে বের হয়েছে পরনে শুধু একটা তোয়ালে, গোসল করে বের হবার পর রুদ্রের শরীরে হালকা,হালকা পানি থাকে বিষয়টা ছোয়ার ভালোই লাগে,
– কি হলো ওমন হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?
– দেখছি,
– কি???
– গোসলে পর আপনাকে কতো কিউট লাগে,
– তাই? আমিও দেখছি!
– কি???
– এই অবস্থায় তোমাকে কতো কিউট লাগে,
– মানে,( ছোয়া নিজের দিকে তাকাতেই দেখলো সে শুধু একটা বেড সিট জরানো,নিজেকে ভালো করে ঢেকে নেয় ছোয়া) আপনি এমন কেনো?
– কেমন আমি??( দুষ্টুমি হাসি দিয়ে)
– লজ্জা নেই সবসময় লুচু টাইপের কথা বলেন,
এবার রুদ্র ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে সরে এসে সরাসরি ছোয়ার খুব কাছে চলে এলো,
– আর ছোয়া, চোখ বন্ধ করে ফেলেছে,
রুদ্র ছোয়ার খুব কাছে এসে কানে,কানে বললো,
– আমি আমার বউয়ের কাছে লুচু টাইপেরই থাকতে চাই, আমার বউয়ের যা লজ্জা তাতে আমি এমন না হলে!!
ছোয়া বড়, বড় চোখ করে রুদ্রের দিকে তাকালো,
– আমাকে উঠতে দিন, অনেক বেলা হয়েছে,
– ওঠো আমিকি ধরে রেখেছি নাকি?
– আমাকে আমার জামা কাপড় গুলো দিন সেগুলো ছাড়া উঠবো কিভাবে( অসহায় ভাবে)
– কি দরকার এসবের? আমি ছাড়া তো এখাবে কেও নেই এভাবেই ওঠো।
– দোহাই লাগে আমি পারবো না( কাঁদো, কাঁদো হতে)
– এই আমার বউটা দেখি এখনি কেঁদে দিবে। আচ্ছা আমি সব এনে দিচ্ছি,
তারপর রুদ্র ছোয়ার সব জামাকাপড় এনে দিলো, আর ছোয়া জামাকাপড় পরে গোসকে ঢুকলো।
গোসল করে এসে,,
দেখলো রুদ্র আর দোহা বসে আছে, গল্প করছে,
– আপুনি, জানো ভাইয়া কি বলেছে?.
– কি বলেছে?
– বলেছে আমার খেলার জন্য একটা পুতুল এনে দিবে!
– ও তাই,
– জানো আপুনি সেই পুতুলটা খেলতে পারবে, কথা বলতে পারবে।
– বাহ কথা বলা পুতুল, তা এমন পুতুল কোথায় পাওয়া যায়?
– ভাইয়া যে বললো এমন পুতুল তুমি এনে দিবা!!!
– মানে( প্রশ্ন সূচক ভাবে ছোয়া রুদ্রের দিকে তাকালো)
পাশের ঘোর থেকে দোহাকে ডাকছে ছোয়ার নানু,
দোহা শেখানে চলে গেলো,
আর ছোয়া রুদ্রের কাছে এসে আবার জানতে চাইলো,
– কি বলেছেন আপনি ছোয়াকে?
রুদ্র আস্তে করে ছোয়াকে বিছানায় বসালো, ছোয়ার ঘাড়ের থেকে চুল সরিয়ে ঘাড়ে মুখ ডুবালো আর বলতে লাগলো,
– আমি আমাদের দুজনের মাঝে থাকা পুতুলের কথা বলেছি,
রুদ্রের হাত ছোয়ার পেটের দিকে নিয়ে বললো,
– এইযে এখানে যে ছোট্ট পুতুলটা আসবে আমি তার কথা বলেছি। দিবেনা আমাকে একটা পুতুল??
– ছোয়া লজ্জা কাহিল অবস্থা, আপনি দোহাকে এসব বলছিলেন?
– নাহ শুধু বলেছি একটা পুতুল দিবো!
– হুম চলুন, এখন নাস্তা করবে,
বলেই ছোয়া উঠতে যাবে রুদ্র আবার ছোয়াকে টেনে ধরলো,
– কি হলো বলোনা,দিবেনা?
– হুম দিবো, এখন চলুন।
তারপর রুদ্র ছোয়ার কপালে একটা চুমু দিলো, আর দুজনে একসাথে নাস্তা খেতে টেবিলে গেলো।
– রুদ্র বাবা, সব তো বুঝলাম এখন ছোয়া আর তুমি কোথায় থাকবে বা কি ভেবেছো? ছোয়া আর দোহার পেছনে যে অজানা শত্রুর কথা বললে এরপর তো ওদের নিরাপদ জায়গায় না রাখলে বড় কোনো বিপদ হতে পারে।( ছোয়ার মামা)
-হ্যা মামা, আর ছোয়াদের এই শত্রু খুব পুরাতন কেও, এতোবছর হয়তো চুপ ছিলো কারন ছোয়া আর দোহা দুজন ছোট ছিলো, কিন্তু এখন ওরা চুপ থাকবে না। ছোয়া আর দোহার বার,বার ক্ষতি করতে চাইবে!!
– বুবু তুই কি বলিস?( ছোয়ার মামা)
– আমি আর কি বলবো ভাই রুদ্র আর তুই যা ভালো মনে করিস তাই কর( ছোয়ার মা)
– মামা আমি ভাবছিলাম ছোয়া আমি আর দোহা আপাতত রাঙামাটি আমার এক বন্ধুর বাসায় থাকি, এখানে আমি লোক লাগিয়ে দিবো ছোয়াদের শত্রুদের খোজার জন্য।
– হ্যা বাবা, তুমি যা ভালো বোঝো।
তাহলে আমরা আজ বিকেলেই রওনা দিয়ে দেই,
– হ্যা বাবা তাই করো,যতো তাড়াতাড়ি ওদের সরানো যায়।
– মানে???(রুদ্র)
– মানে, এখান থেকে যতো তাড়াতাড়ি সরানো যায় আরকি।
– হুম মামা,
সারাদিন গোজগাজ করে নেয় ছোয়া,
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়, এখনি রওনা দিবে তারা,
– মা সাবধানে থাকিস, দোহার খেয়াল রাখিস।
– আচ্ছা আম্মু তুমিও সাবধানে থেকো।
– রুদ্র বাবা, তোমাকে অনেক ভুল বুঝেছি,আমাদের মাফ করে দিও।
– না আন্টি, আপনাদের কোনো দোষ ছিলোনা, সব দোষ আপনাদের সেই গোপন শত্রুর। ওকে আমি দেখে নিবো।
– হ,হয়েছে হয়েছে এখন দেরি না করে রওনা দাও তোমরা,
তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে ছোয়া, দোহা,আর রুদ্র রওনা দিলো ওরা। ২ ঘন্টা পর তারা একটা বাড়ির সামনে পৌছালো,,,
– একি আমরা রাঙামাটি যাচ্ছি না?
– না,,,,
– আপনি না তখন বললেন?
– হুম বলেছি,ছোয়া আমি তোমাকে সব বলবো। আমার ওপরে বিশ্বাস রাখো।
– আচ্ছা ঠিক আছে,
তারপর ছোয়া, দোহাকে নিয়ে রুদ্র বাড়ির ভেতরে গেলো।
– ভাবি,,
– হুট করে রোদেলা এসে ছোয়াকে জড়িয়ে ধরলো,
– দেখি সর আমার মেয়েটাকে আমাকেও একটু দেখতে দে,
ছোয়া তো অবাক রোদেলা, রুদ্রের মা, এসব কি হচ্ছে নিজেও বুঝতে পারছে না,
ছোয়া আগে রুদ্রের মাকে সালাম করে নিলো,
আর রুদ্রের মা ছোয়ার কপালে একটা চুমু দিলো,
– আগের থেকেও অনেক সুন্দর হয়েছে দেখতে আমার মেয়েটা।
– উফ মা ছাড়োতো ভাবির সাথে অনেক গল্প আছে,
– আরে আগে মেয়েটাকে ভেতরে আসতে দে।
বলেই ছোয়াকে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দেয় রুদ্রের মা,
– মা,তোমার মা কেমন আছে?
– ভালো আন্টি।
– এই আন্টি কিসের হ্যা? আমি কোথায় মেয়ে মেয়ে করছি আর মেয়েই আমাকে এখনো মা বলতে পারলো না,
– আপুনি তোমাকে মা বলবে কেনো তুমিতো রুদ্র ভাইয়ার আম্মু।
দোহার কথা শুনে সবাই হেসে দিলো,
– এই পাকা মেয়ে, রুদ্র ভাইয়ার মা তোমার ছোয়া আপুর ও মা বুঝলে।
এটাকে তো এতোক্ষন খেয়ালই করিনি, বলেই রোদেকা দোহাকে কোলে নিয়ে রুমে চলে গেলো।
– শোন মা, এখন থেকে আমাকে মা বলবি আন্টি বললে খুব বোকা দিবো।
– আচ্ছা মা, বলেই ছোয়া রুদ্রের মাকে জড়িয়ে ধরলো।
বাহ মেয়েকে পেয়ে তো আমাকে ভুলেই গেছো মনে হয় তাইনা,
– না রে বাবা, তোকে ভুলবো কেনো।
কতোদিন পরে তোকে দেখছি আয় আমার কাছে আয়।
রুদ্রও মায়ের পাশে বসে মাকে জড়িয়ে ধরলো।
– তোমাদের কথা অনেক মনে পরতো মা,
– জানি রে বাবা( কেঁদে দিয়ে)
আচ্ছা অনেক হয়েছে কান্নাকাটি যা তোরা ফ্রেস হয়ে নে,
অনেকটা পথ এসেছিস।
– সমস্যা নেই মা ঠিক আছে,( ছোয়া)
– না ঠিক নেই যা মা, ফ্রেস হয়ে নে। রুদ্র তুই ও যা।
মায়ের জোরাজোরিতে ছোয়া আর রুদ্র দুজনেই ফ্রেস হতে চলে গেলো।
– আপনি এখানে আসবেন আমাকে আগে বলেননি কেনো।
বললে কি হতো? আসতে না?
– তা হবে কেনো।
– কারন আছে তাই বলিনি, এখন কথা বলবা না আর আমি ক্লান্ত এখন বউয়ের কোলে শুয়ে একটু বিশ্রাম নিবো বলে বিছানায় শুয়ে ছোয়ার কোলে মাথা রেখে আর কোমর চেপে ধরে শুয়ে পরলো রুদ্র।
আর ছোয়া মাথায় হাত বুলাতে লাগলো,রুদ্রর।
-আপনাকে আমি মাঝে, মাঝে একদম বুঝিনা,
– কেনো।
– কেনো তা জানিনা,
– এতো কিছু জানতে হবেনা আমার বউটার,
– আচ্ছা,
– হুম বলো,
– অনেক বড় কোনো বিপদ আসবে না তোহ?
– আল্লাহ আছেন, আর আমি বেচে থাকতে তোমার আর দোহার কিছু হতে দিবোনা।
– হুম,
রাতে ঘুম ভাঙলো রুদ্রের পাশে ছোয়াকে না পেয়ে মায়ের রুমে গেলো রুদ্র।
ছোয়া রুদ্রের মায়ের কোলে মাথা রেখে গল্প শুনছে,
– কি এতো গল্প হচ্ছে এখানে?
– আরে তুই উঠে গেছিস? আয় বাবা এখানে আয়। এই তোর ছোট বেলার গল্প বলছিলাম।
– মা গল্প রাখো খিদে পেয়েছে, খেতে দাও।
রাতের খাবার খেয়ে সবাই কিছুক্ষন গল্প করলো, তারপর যে যার রুমে চলে গেলো।
ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে ছোয়া,
আনমনে দেখছে আকাশটাকে,
পেছন থেকে রুদ্র জড়িয়ে ধরলো ছোয়াকে,
– কি হয়েছে মন খারাপ?
– না খারাপ না, ঘুম আসছেনা।
– ছোয়া আমি জানি তুমি চিন্তায় আছো, দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আছিতো।
– আমি জানি আপনি আছেন,
রুদ্র ছোয়া তার দিকে ফিরিয়ে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলো,
দিনগুলো খুব ভালোভাবেই কাটছে তাদের, রোদেলার বাবা চাকরির জন্য অন্য জায়গায় থাকে তাই রুদ্র ওদের বাড়িতে ছোয়াকে নিয়ে থাকতে পারছে, কারন ছোয়ার সেফটি রুদ্রের জন্য অনেক প্রয়োজন।
খুনসুটি ভালোলাগা আর ভালোবাসার মাঝে দিনগুলো খুব ভালো লাগছে ছোয়ার কাছে,
আর রুদ্র তার কাজ করছে ছোয়াদের অজানা শত্রুকে খোজার আর নিজেকে প্রমান করার। কারন রুদকেও তার বাবার ভুল ভাঙাতে হবে।
২ মাস এভাবেই কেটে গেলো, ইদানীং ছোয়া খুব অসুস্থ থাকে, রুদ্রের কাজের চাপে ছোয়াকে সময় দিতে পারছেনা, তাই ছোয়ার খুব অভিমান রুদ্রের ওপরে।
আলমারি গোছাতে,গোছাতে ছোয়া মাথাটা ঘুরে যায়,
রুদ্র বেডের ওপরে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে,
রুদ্র খেয়াল করে ছোয়াকে,
চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *