হারিয়ে খুজবে আমায়

হারিয়ে খুজবে আমায় !! Part- 09

অনুর বাইরে যাওয়ার জন্য কাগজপত্র সম্পুর্ন রেডী শুধু ভিসা আসার অপেক্ষায় আছে। সেটাও 15-20 দিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তাই সে বাকি দিনগুলো তার বাবা মার সাথে কাটাচ্ছে। বাবার কাছে ছোট বাচ্চাদের মত চকলেটের আইসক্রিমের আবদার করে। মায়ের কাছে বিভিন্ন রান্নার আবদার করে। যদিও কিছু ভাল মত খেতে পারেনা। খাওয়ার সাথে সাথে গড়গড় করে বমি করে দেয়। কিন্তু অন্যদের মত অনুর প্রেগনেন্সিতে অত সমস্যা হয়না শুধু মাঝেমাঝেই বমি হয়। তেল দিয়ে দেয়া ঘুমানোর সময় বিলি কেটে দেয়া তার নিত্যদিনের আবদার। প্রতিদিন সকাল-বিকাল বাবার সাথে হাঁটতে যায় আর নানান বিষয় নিয়ে গল্প করে।মাঝামাঝে সাদাত ভাই সাদকে নিয়ে আসে। আড্ডা দেয় গল্প করে আর
বাচ্চাদের মত অনুকে এটা-সেটা বুঝায়। অনু ও অবুঝ বাচ্চার মত শুধু হুম হা করে মাথা নারে। আর তাদের এসব কান্ড দেখে অনুর বাবা মা মিটিমিটি হাসে।

অনুর মা মনে মনে ভাবে ইস যদি ছেলে মেয়ে দুটোকে একসাথে করে দেওয়া যেত সারা জীবনের জন্য তাহলে হয়তো তারা সবসময় এমন হাসিখুশি থাকতো। কিন্তু সে জানে অনু কখনোই তার কথা শুনবে না কারণ ছোটবেলা থেকেই অনু সাদাতকে বেস্ট ফ্রেন্ড এর মতো ভাবে আর সাদাত তো বিয়ে করবে না সে তার স্ত্রীকে এখনো ভালোবাসে ভাবতেই একটা চাপা নিশ্বাস ছাড়লো। হঠাৎ তার হাতে ফোনটি কেঁপে উঠলো স্ক্রিনে নম্বর দেখে রাবেয়া অবাক হয়ে গেল এটা অনুর শাশুড়ির নম্বর মাঝেমাঝেই কথা হতো তাদের মহিলা বেশি কথা বলতে চাইতেন না কিন্তু তার কথা শুনে বোঝা যেত সে অনুর যথেষ্ট খেয়াল রাখে। তিনি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর মিসেস রেহানা প্রায়ই তার খবর নিতেন।

ফোনটা বাজতে বাজতে বন্ধ হয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড পর আবার ফোনটা বেজে উঠল সে কাঁপা কাঁপা হাতে রিসিভ করল ফোনের ওপাশ থেকে ভেসে আসলো কিছু কথা।

রাহেলা: আসসালামুয়ালাইকুম আপা কেমন আছেন আপনার শরীরটা এখন কেমন?কথাগুলো বেশ মিনমিন করে বলল রাহেলা “কেমন আছেন” কথাটা জিজ্ঞেস করতেও কেমন যেন সংকোচ হচ্ছে তার। কিন্তু তার তোর অনুর সাথে কিছু কথা বলতে হবে। তার তো ফোন বন্ধ তাই তার মার কাছে ফোন করা। সে খবর পেয়েছে অনু তার মায়ের কাছেই আছে।

রাবেয়া সালামের উত্তর নিল,
রাবেয়া: ওয়ালাইকুম আসসালাম আপা। আপনার ছেলে আমাদের যেমন রেখেছেন ঠিক তার থেকেও ভালোই আছি। একটা মেয়ের এই অবস্থায় যখন তার স্বামী তাকে ছেড়ে দেয় তারপর তার বাবা-মা যতটুকু ভালো থাকার কথা তার থেকে অনেক ভালো আছি। আর কিছু শুনতে চান ?কি জন্য ফোন করেছেন কিছু বলার থাকলে বলতে পারেন।

রাহেলা: এই অবস্থায় বলতে কি হয়েছে অনুর কি কোন সমস্যা। আমাকে বলতে পারেন। আমি কালি ওদের ব্যাপারে জানলাম বিশ্বাস করুন আমি ওর সাথে যতই কঠোর হই না কেন আমি মন থেকে অনুকে খুব ভালোবাসি আমি জানি ও কতটা লক্ষীমেয়ে।কিন্তু আমার ছেলে যে হীরাকে কাজ ভেবে ফেলে দিবে তা আমি জানতাম না। আমি নিজেও ওর বাসা থেকে চলে এসেছি আমার নিজেরই ঘৃণা হচ্ছে ওর উপর। আমি আমার ছেলের সাফাই গাইতে ফোন দেইনি আমি অনুর সাথে কিছু কথা বলতে চাই। অনুকে কি ফোনটা কিছুক্ষণের জন্য দেওয়া যাবে আমি কিছু কথা বলেই রেখে দেবো।

রাবেয়া: দেখুন আমার মেয়েটা সবেমাত্র এইসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়েছে। নিজেকে তৈরি করার জন্য শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন আপনি যদি এই সময় কোন রকম কথা বলে পুরনো ঘা খুটিয়ে তোলেন তাহলে ও ভেঙে পড়বে। আমি চাইনা এমন কিছু হোক। তারপর রাবেয়া তাকে অনুর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে খুলে বলে। রাবেয়া কথাগুলো শুনে খুশি হয়।

রাহেলা: আপনি চিন্তা করবেন না আপা আমি এমন কিছুই বলবো না যা ওর ভবিষ্যতে নষ্ট করবে ।আমি এমন কিছু কথা বলব যাতে সে আরো শক্ত হয়ে উঠতে পারে।আমি অনুর আরেকটা মা হয়ে তার সাথে কথা বলবো আর মায়েরা কখনোই সন্তানের খারাপ চাইবেনা। আপনি আমার কথা বিশ্বাস করতে পারেন।
রাহেলার কথাগুলো রাবেয়ার ভালো লাগলো তাই সে ডাইনিং রুমে গিয়ে অনুকে ফোনটা দিয়ে বলল কথা বল।

অনু জিজ্ঞেস করল’ কে মা, রাবেয়া কিছু বললেন না। সেরুম ত্যাগ করল। অনু ফোন হাতে নিয়ে নিল,

অনু: আসসালামুআলাইকুম কে বলছেন? রাহেলার খুব আফসোস হলো।অনুর মত একটি মিষ্টি মেয়ে তার দরকার ছিল। তার বড় ছেলের বউ ও ভালো কিন্তু একটু কথা বেশি বলে মেয়েটা তার তুলনায় অনু বেশ শান্তশিষ্ট। কি মিষ্টিৎকরে কথা বলে মিষ্টি করে সালাম দেয়। আর মেয়েটার সাথে তার ছেলে এমন করল।সে নিজেও তো কম করেনি। যখন তখন মেয়েটাকে যাতা শুনিয়ে দিয়েছে।

রাহেলা: ওয়ালাইকুম আসসালাম, জিজ্ঞেস করব না কেমন আছিস শুধু এতোটুকুই বলব নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তোল যেন কেউ তোর দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে কথা বলতে না পারে। সবার কথা উচিত জবাব দিতে শেখ। অন্যের উপর এতই নির্ভরশীল হোসনা যে নিজেকেই ভুলে যাস। সবাইকে বুঝিয়ে দে কে কার কতটা যোগ্য। আর সব সময় মনে রাখবি তোর এই মা সব সময় তোর পাশে আছে।

কথাগুলো বলতে বলতেই রাহেলার গলা ধরে এল, অন্যদিকে অনু নিশব্দে চোখের জল বিসর্জন দিচ্ছে যে মহিলা তার সাথে ভালোভাবে কথা বলতো না উঠতে-বসতে কথা শোনাতো। সে তাকে তার ছেলের বিরুদ্ধে সাপোর্ট করছে।অনু সবসময় জানত তার শাশুড়ি মা সামনাসামনি যতই কঠোর হোক না কেন আড়ালে ঠিকই অনুকে ভালবাসতো। প্রতি বেলায় খাবার খেতে বসে খোঁজ নেয়া অনু খেয়েছে কিনা, বাইরে গেলে “সাবধানে থেকো” বলে যাওয়া। অনু অসুস্থ হলে কারণে-অকারণে রুমে যাওয়া।মাঝে মাঝে তাকে শাসন করা সব কিছুর মধ্যেই অনু ভালোবাসা দেখতে পেত তাইতো সে কখনো তার শ্বাশুড়ীর সাথে উঁচু বাক্যে কথা বলেননি। শায়লা আবার বলতে শুরু করল

শাহেলা: অনু মা আমার আমি তোর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। অনেক কথা শুনেছি কিন্তু বিশ্বাস কর একটাও মন থেকে বলিনি। তুই আমার মেয়ের মত যেকোন সিদ্ধান্ত আমাকে তুই পাশে পাবি। আজ থেকে তুই আমার মেয়ে আর তোর দুই দুটো মা। আর জার দুটো মা আছে তার আবার কিসের চিন্তা। অনু আমি জানি তুই কান্না করছিস।চুপ কর আর এক ফোটা জল যেন তোর চোখ থেকে না পড়ে ।যারা তোর এই কষ্টের জন্য দায়ী তাদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে তার জন্য তোকে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে হবে। আর পারলে ওইসব আচরণের জন্য তোর এই মাকে ক্ষমা করে দিস।

এবার অনু বলল,ছি ছি এসব কি বলছেন আমি কখনোই এগুলো মনে নেই আমি জানতাম আপনি আমাকে কতটুকু ভালোবাসেন। মেয়ে বলেছেন তাহলে আবার মেয়ের কাছে বারবার মাফ কেন চাইছেন। মায়েরা কি মেয়েদের শাসন করে না। মাফ চেয়ে আমাকে ছোট করবেন না মা দোয়া করবেন আমাদেরকে আমি আর আমার সন্তান যেন সবকিছু উপেক্ষা করে এগিয়ে চলতে পারি।

সন্তানের কথা শুনে রাহেলার মাথায় যেন বাজ পড়লো,
রাহেলা: সন্তান মানে কি অনু ?অনু তুই কি প্রেগনেন্ট? অনু প্রশ্নের উত্তর দেয় না। রাহেলা বলল শাফিন কি জানে এই খবর,

অনু: না জানানোর জন্যই তো গিয়েছিলাম তার আগেই এসব হয়ে গেল।

রাহেলা: তোমার জানানো উচিত ছিল ।তাহলে হয়তো শাফিনের মনটা ঘুরে যেত হয়তো ওই মেয়েকে ছেড়ে যেত তোমাদের ভবিষ্যতের সন্তানের কথা ভেবে।

অনু সামান্য হাসলো,
অনু: না মা এমনটা হতো না যেখানেই আমার ভালবাসার অস্বীকৃতি জানিয়েছে সেখানে বাচ্চাটাকে মানতো না আর বাচ্চাটার কথা ভেবে সংসার করলেও সেখানে ভালোবাসা থাকতো না। সেটা হতো দয়ার সংসার। আর আমি এতই ফেলনা হয়ে যায়নি যে আমাকে ওর মত দুশ্চরিত্রের সাথে সংসার করতে হবে। আর আমি আমার সন্তানের জন্য চরিত্রহীন বাবা চাইনা।

রাহেলা: ঠিক বলেছ অনু কিন্তু আমার মনে হয় শাফিনকে তার বাবা হওয়ার কথাটা বলা উচিত তাও তো অধিকার আছে। বাকিটা তোমার যা ভালো মনে হয়। আমি সব সময় তোমার সাথে আছি।আমার সাথে যোগাযোগ রেখো মাঝেমাঝেই এই মা টার খবর নিউ। আর কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাকে জানিয়ো। আজ তাহলে রাখি মাঝে মাঝে ফোন দিব।

শাশুড়ির সাথে কথা বলে অনু বারান্দায় গেলো।অনু জানত তার শাশুড়ি তাকে ভালোবাসে সে তার চোখে তার জন্য মায়া দেখেছে ভালোবাসা দেখেছে।এই মায়া ভালবাসা তো সে শাফিনের চোখেও দেখে ছিল তাহলে সেখানে বলল সে কেন বলল তাকে ভালোবাসে না। তাহলে কি অনু মানুষের চোখ পড়তে জানে না?

শাফিনকে পাওয়া গেল বার সাইডে একটা লোকের সাথে কথা বলছে। কথা বলছো বললে ভুল হবে কোন অনুরোধ করছে লোকটা তার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না। ইরা তাদের সামনে গেল সে শুনতে পেল শাফিন বলছে”প্লিজ ভাইয়া অন্তত তুই তো আমাকে বোঝো প্লিজ ভাই অন্তত সবাই আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে আমি কিভাবে থাকবো”লোকটি বলছে তোকে আমার নিজের ভাই বলতেও ঘৃণা হচ্ছে তোকে আমি ভালো জানতাম । মনে মনে সবসময় তোকে নিয়ে আমি গর্ব করতাম তুই এমন একটা কাজ করতে পারলি আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি,”এ মাধ্যেই ইরা সেখানে উপস্থিত হল।

ইরা: শাফিন কে লোকটা যার সাথে তুমি এভাবে কথা বলছ। আর উনি বা কেন তোমার সাথে এমন বিহেভ করছে?

শাফিন:ইরা ভালোভাবে কথা বল।উনি আমার বড় ভাই শাওন।

ইরাকে দেখে শাওনের মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠল তার সামনে একটি মেকাপের স্তুপ দাঁড়িয়ে আছে।এই মেয়েটির কারণে তার ভাই আজ বিপথে। এবার শাওন ইরাকে একবার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নিল।মেয়েটিকে দেখেই একটা জঘন্য ফিলিংস আসে। শাওন শাফিনর উদ্দেশ্যে বলল,

শাওন:হুহ এই তোর ইরা যার কথা এতক্ষণ বলছিলি। তুই একে অনুর সাথে তুলনা করছিস? শোন ভাই মানুষের চেহারা দেখলেই তার ক্যারেক্টার সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা করা যায়।আমার কাছে ভালো চোখের ডাক্তারের নম্বর আছে একবার ওনার সাথে কথা বলে নিস চোখটা ঠিকঠাক জায়গায় আছে কিনা।

পার্টিতে থাকার ইচ্ছাটাই মরে গেছে হুহ। বলেই শাওন হল রুম ত্যাগ করল সে তার বন্ধুর ছোট ভাইয়ের বার্থডের ইনভিটেশনে এসেছিল সেখানে তার শাহিনের সাথে দেখা ।মা তাকে শাফিন আর অনুর ব্যাপারে সব বলেছেন তিনি প্রচুর কান্নাকাটিও করেছেন। শাওন ও অনুকে নিজের বোনের মত ভাবতো খুব মিষ্টি ছিল মেয়েটা কিন্তু তার ভাইয়ের যে কি হলো কে জানে। চকচক করলেই সোনা হয় না তা তার অজানা নয়।

আর এইদিকে ইরা ফুঁসছে শাফিনের সামনেই তার ভাই তাকে অপমান করে গেল আর সে কিছু বলল না।

ইরা: তোমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার ভাই আমাকে এতগুলো কথা বলে গেল।যাতা কমেন্টস করে গেল আর তুমি কিছু বললে না।

শাফিন:প্লিজ ইরা সে আমার বড় ভাই।তাকে আমি কি বলতে পারব? আর তাছাড়া ওরা অনুকে খুব ভালোবাসতো তাই ওর সাপোর্ট করছে। তুমি চিন্তা করো না একবার আমাদের বিয়েটা হতে দাও তারপর দেখবে তোমাকে আপন করে নেবে। ভাইয়ার মনে অনেক ভালো। আর মাও তোমাকে মেনে নেবে মা এমনিতেও অনুকে বেশি পছন্দ করতেন না। আর অপমানের কথা বলছো তো? তোমার ফ্রেন্ড ওতো তোমার সামনে আমাকে অপমান করল তুমিওতো একটা কিছু বললে না।

ইরাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে, এসব কথা বাদ দাও প্লিজ রাগকরে থেকো না নিজেদের মধ্যে রাগ করলে বিষয়টি আরো জটিল হয়ে যাবে।তার থেকে ভালো সবার সাথে পরিচয় হওয়া যাক।

ইরাও শাফিনের কথায় সায় দিল রাগ করে সে এই সুন্দর মুহূর্তটাকে নষ্ট করতে চায় না তাই সে শাফিনকে তার বাবা-মায়ের কাছে পরিচয় করাতে নিয়ে গেল।

শাফিন সবার সাথে হাসিখুশি ভাবে কথা বলল।ইরার বাবা-মাও খুশি।ইরা তাদের একমাত্র মেয়ে সে যদি শাফিনের সাথে ভালো থাকে তাহলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। আর শাফিন ছেলেটাও তাদের কাছে ভালো মনে হচ্ছে। তারা দু সপ্তাহ পর ইরা আর শাফিনের এংগেজমেন্ট ঠিক করল আর কয়েক মাস পর বিয়ে।ইরা তার বাবা-মাকে শাফিনের প্রথম বিয়ের কথা বলল না এড়িয়ে গেল। তারপর কিছু ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।

বেশ হাসি আনন্দের মধ্যেই তাদের রাতটা কেটে গেল ইরা তার বাবা-মার সাথে চলে গেছে । সে আজকের রাতটা শাফিন সাথে কাটাতে চাইছিল কিন্তু শাফিন কৌশলে মানা করে দিয়েছে। শাফিন রাত আরাইটায় এসে বাসায় ঢুকলো কোনরকম কাপড় চেঞ্জ করে শুয়ে পড়লো শরীর ক্লান্ত থাকায় সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়ল।

অনু লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পড়ে হাঁটছে। সাথে হাতে হাত রেখে হাঁটছে শাফিন। পরনে তার সাদা পাঞ্জাবি। দুজনের মুখে হাসি। চারপাশে জবা ফুলের বাহার হঠাৎই কোত্থেকে যেন এক ঝাঁক প্রজাপতি সাথে কারো ডাক ভেসে উঠলো কেউ তাকে ডাকছে বাবা বাবা করে। পেছনে তাকিয়ে দেখে একটা মেয়ে দৌড়ে তার কাছে আসছে।সেই হাত বাড়ানোর আগেই অনু তাকে কোলে নিয়ে পেছনে যেতে লাগলো শাফিন ধরার জন্য হাত বাড়ালো তার পা নড়ছে না এক জায়গায় থেমে আছে অনু পিছিয়ে যাচ্ছে একটা অন্ধকারের দিকে বহুদূর।সে অনুকে চিৎকার করে ডাকছে কিন্তু অনু শুনছে না আস্তে আস্তে অনু বাচ্চাটাকে নিয়ে অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। শাফিন অনু বলে চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে উঠলো সারাগায়ে ঘামের জর্জরিত ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি চারটা বেজে 30 মিনিট আজান দিচ্ছে।

সে শুনেছে ভোরের স্বপ্ন সব সময় সত্যি হয়। তাহলে এই স্বপ্নের মানে কি।আর বাচ্চা মেয়েটাকে?আর অনু তাকে কেন নিয়ে যাচ্ছে। এই স্বপ্নের মানে কি সে খুব অস্থির হয়ে উঠল কিছু ভালো লাগছে না তার। তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।তারপর সে শাওয়ার নিয়ে মসজিদে গেল নামাজ পড়তে এতে যদি তার কষ্ট কিছু লাঘব হয়। বান্দার কষ্ট নাকি আল্লাহই ভাল বোঝেন।

চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *