সেলিব্রেটি স্বামী

সেলিব্রেটি স্বামী !! Part 05

ওয়াশরুমে নিয়েই দুম করে উনি আমায় নিজের কোল থেকে নিচে ছেড়ে দেয়। আমি নিচে পরে নিথর হয়ে আছি। শরীরটা যেন আর নড়ছে না। চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসছে আমার।ঝাপসা চোখে দেখছি উনি আমার সামনে হাঁটু গেড়ে বসেছেন।অস্পষ্ট ভাবে কিছু একটা কানে আসছে।মনে হয় উনি আমায় কিছু বলছেন।উনার হাত আমার চুলের ভাজে।অনুভব করছি উনি আমার চুল খুব শক্ত করে টেনে ধরে আছেন। তারপর আর কিছু বুঝতে পারি না।আমার চোখদুটো এখন পুরোপুরি বন্ধ।
চোখ মেলতেই দেখি রুমের মধ্যে ২০-৩০ জন মহিলা ডাক্তার।আমি বিছানায় শুয়ে আছি।কেউ আমার প্রেশার চেক করছেন। কেউ আমার হাতে স্যালাইন লাগাচ্ছেন।আবার কেউ কোনো কাজ না পেয়ে নিরবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।কিন্তু আমার চোখ দু’টো যেন অন্য কাউকে খুঁজছে। দূর থেকে দেখা যাচ্ছে জানালার কোণ ঘেঁষে গিরিল ছুয়ে বাইরের দিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছেন উনি।আমার শ্বাশুড়ি মা ঠিক উনার পাশেই। তাকে কিছু বলছেন।রুমটা এতো বড় যে উনাদের কথা এতো দূর থেকে আমার কানে আসছে না।কথা বলতে বলতে আমার শ্বাশুড়ি মা যখন ঘুরে তাকিয়ে আমার চোখ খোলা দেখতে পান তখন ছুটে আসেন।
-বৌমা ঠিক আছো তো তুমি? এখন কেমন লাগছে? ব্যাথা করছে শরীরে?
আমার শরীরে হাত বুলিয়ে জিজ্ঞাসা করছেন উনি।আমি উঠে বসার চেস্টা করছি কিন্তু পারছি না।উনি আমাকে ধরে বালিশে ঠেক দিয়ে উঠিয়ে বসান।সামনের ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় চোখ যেতে খেয়াল করি আমার শরীরে একটা লাল রংয়ের পাতলা বস্ত্র।শরীরের ভেতরের সবকিছু স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আমি লজ্জায় আস্তে করে কম্বলটা নিজের বুক পর্যন্ত টেনে নিয়।বস্তুটার হাতাও নেয়।আমি বুঝছি না এমন বস্ত্র আমার শরীরে কিভাবে এলো!
আমার শ্বাশুড়ি মা মুচকি হেসে আবার বললেন,
-কি হলো বৌ মা? এই পোশাকটাতে তোমার অস্বস্তিবোধ হচ্ছে?
আমি ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়ালাম। যার অর্থ বুঝালাম হ্যাঁ, খুব অস্বস্তি হচ্ছে আমার।উনি আমার এমন উত্তর বুঝতে পেরে উঠে আলমারির দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।আমার খুব ভয় করছে।আলমারিতে তো একটাও শাড়ি আর গহনা নেই।মা সব নিয়ে গিয়েছেন। ব্যাপারটা জানাজানি হলে এখন একটা বিশ্রি কান্ড ঘটবে।
-মা??? আমার একটুও অস্বস্তিবোধ হচ্ছে না বিশ্বাস করুন!!!
আমার কথায় ঘুরে দাড়ালেন শ্বাশুড়ি মা।আমার পাশে এসে বসে বললেন,
-এটাকে গাউন বলে বৌমা। তোমার যদি পড়ে থাকতে শরীরে অস্বস্তি লাগে তাহলে আহানকে বলবে, আহান তোমাকে চেঞ্জ করে দেবে।
কথাটা বলে রাগি দৃস্টিতে উনার দিকে তাকান শ্বাশুড়ি মা।তারপর ডাক্তারদেরকে চোখের ইশারায় বোঝায় রুমের বাইরে যেতে।সকলে চলে গেলে শ্বাশুড়ি মাও আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে যান।আমি খুঁজছি সেই প্যাকেটটা।যেটা সকালে আমার হাতে দিয়ে বলেছিলো উনি পরে নিতে।কিন্তু প্যাকেটটা এখন কোথাও পাচ্ছি না। চোখ উঠিয়ে দেখি উনি এসে আমার সামনে বসেছেন।ভয়ে আমার হার্টবিট বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।বিছানার চাদরে আমার হাতের আঙুল মোড়ামুড়ি করছি।আচমকা আমাকে টেনে উনি নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নেন।আমার বুকের ভেতরে ধুপ ধুপ করছে।আমি জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস ফেলছি।উনি আমার পিছনের চুল সরিয়ে দিয়ে আলতো হাত আমার পিঠে আর কোমড়ে রেখে আমাকে নিজের কাছে টেনে এনেছেন।উনার নাকটা একবার আমার গলাতে আর একবার বুকে আলতো পরস দিয়ে চলেছে।আমি উনার ট্রি শার্টটা দু’হাতের মুঠোয় খুব শক্ত করে খামচে ধরে আছি।আমার চোখদুটো বন্ধ করে আছি।বন্ধ দুচোখের কোণ ঘেঁষে পানি বেড়িয়ে আসছে।
-এসব জায়গায় কাল রাতে আপনি আমাকে খুব কামড়েছেন আহান! দেখুন না আপনার কামড়ের স্পষ্ট দাগ এখনো আছে।
কথাটা আমার মুখ থেকে বেড়িয়ে আসে।কিভাবে বলে ফেললাম নিজেও বুঝে উঠতে পারলাম না।সঙ্গে সঙ্গে যেন উনি আমাকে ছেড়ে দিলেন অনুভব হলো।আমি চোখ মেলে তাকাতেই ঠাসসসসস! করে আমার গালে উনার চর পরলো। আমার চুলের মুঠি টেনে ধরে মুখে কাছে নিজের মুখটা এনে দাঁত কটমট করে উনি বলল,
-আমার যা ইচ্ছা আমি তাই করবো।তুই শুধুই নিরবে আমার এই অত্যাচার ভোগ করবি।আমার যখন ইচ্ছা তোকে ইউস করবো।যখন ইচ্ছা তোকে মারবো, কাটবো।আবার কাটা স্থানে মলম লাগাবো তোকে সারিয়ে তোলার জন্য।যাতে সারা জীবন তোকে যন্ত্রণা দিয়ে বোঝাতে পারি সুপারস্টার আহান খান কি জিনিস।মুখের উপরে কখনো কথা বলতে আসবি তো জ্বিব টেনে ছিড়ে ফেলবো।বুঝতে পেরেছিস?
আমি উনার কথায় শুধু একটাই হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলাম মাথা ঝাকিয়ে।উনি সঙ্গে সঙ্গে আমাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাড়ালো।উনি চলে যাবেন আমি সাহস করে উনার হাতটা টেনে ধরলাম।উনি রাগি দৃস্টিতে হাত উঁচু করে আমার দিকে তেড়ে আসতে লাগলো।আমি এবার শব্দ করে কেঁদে উঠলাম।আর উনি থেমে গেলেন।হাত নামিয়ে আমার পাশে বসলেন।আমাকে ধমক দিলেন।শরীরে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে বললেন,
-তোর মনে কি একটুও ভয় নেই? আরে কি মাটি দিয়ে তৈরি তুই আমাকে বোঝা? আর তোর শরীরে কি গন্ডারের চামড়া? এতো মাইর খেয়েও আমার হাত ধরার সহস রাখিস।আরও মাইর খেতে চাস? দিবো নাকি আরও দু, চার ঘা?
আমি অসহায় দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে বলি,
-সেই প্যাকেটটা কোথায় আহান?
উনি থেমে যায়। নিজেকে শান্ত করে জোড়ে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন,
-কোন প্যাকেটের কথা বলছিস?
-যেই প্যাকেটটা আমাকে দিয়ে সকালে আপনি বলেছিলেন ড্রেসটা পরে নিতে।দেখুন এই ড্রেসটা কেমন যেন। আমার খুব অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। গায়ের সাথে কেমন যেন লেপ্টে আছে।শরীরের আকাশ পাতাল বোঝা যাচ্ছে।তার উপর হাটু পর্যন্ত খোলা।হাতা নাই।এমন ড্রেস আমি চোখে দেখিনি কখনো।ঢিলাঢালা সেলোয়ার-কামিজ পড়েছি সবসময়।তাই আম…
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়েই এক হাতে উনি আমার সামনের থেকে গাউনটার কলার টেনে ধরেন।আর অন্য হাতে আমার কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে বলেন,
-ডাফর! গাঁধি! এই ড্রেসটাই তোকে আমি দিয়েছিলাম সকালে। আর কি সব বলছিস গাইয়াদের মতোন ঢিলাঢালা সেলোয়ার কামিজের কথা?
কথাটা শেষ হতেই কষিয়ে একটা চর বসিয়ে দেন আমার গালে।আমি গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে বসে আছি মাথা নিচু করে।ভাবছি কথা বললেই কি চর খাওয়া লাগবে সারা জীবন? উনি আমাকে ঝাকিয়ে বলে ওঠেন,
-এই ড্রেশটার মূল্য ৭০ হাজার টাকা। মিডিয়ার সব মেয়েরাই এমন ড্রেস পরে। আর তুই কিনা সুপারস্টার আহান খানের ওয়াইফ হয়ে বলছিস এমন ড্রেস চোখে দেখিস নি কখনো?
দরজায় নক পরে।উনি আমাকে ছেড়ে দেয়। উঁচু গলায় বলে ওঠেন,
-কে?
-স্যার সার্ভেন্ট বলছি।ব্রেকফাস্ট দিতে এসেছিলাম।
উনি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।সার্ভেন্টকে ভেতরে আসতে বললেন।মেয়েটা এসে আমাদের সামনে ব্রেকফাস্ট রেখে চলে যেতে নিলে উনি পিছনের থেকে মেয়েটার হাত ধরে বসলেন।মেয়েটা ভয়ে ভয়ে কাঁপা কাঁপি শুরু করেছে।নিজের হাত ছাড়ানোর চেস্টা করতে পারছে না মনে হয়।আমি ব্যাপারটা লক্ষ্য করায় উনার কাঁধে হাত রেখে ঝাকিয়ে বললাম,
-এসব কি করছেন সার্ভেন্টের সাথে? ছাড়ুন মেয়েটার হাত!
উনি আমার দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকালেন।তাই দেখে আমি উনার কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে নিলাম।আর তারপর মেয়েটাকে উনি সজোরে একটা ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিলেন। মেয়েটার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,
-কয়টা বাজে এখন? সকাল এগারোটায় ব্রেকফাস্ট দিতে আসছিস?
মেয়েটা চোখের পানি মুছতে মুছতে বলে,
-ছরি স্যার আর হবে না! রুমে এতো ডাক্তার ছিলো। তাই ভেবেছিলাম আপনি ম্যামের চিন্তায় মন খারাপ করে আছেন।ব্রেকফাস্ট দিলে রেগে যেতে পারেন। তাই..
উনি দাঁত কটকট করে বলেন,
-আর একটা কথা বললে তোর মুখে গরম পানি ঢালবো এখন।কথা না বলে বেড়িয়ে যা এখান থেকে।
মেয়েটা ভয়ে ভয়ে উঠে দাড়িয়ে দৌড়ে পালায়।আর উনি আমার দিকে তাকায়। আমি আমতা আমতা করি।এমন সময় আমার ছোট বোন রুমে চলে আসে। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে।উনি ব্রেকফাস্ট করতে শুরু করে দেন। আর আমার বোন কাঁদতে কাঁদতে বলে,
-তুমি ঠিক আছো তো আপু? দুলাভাই তোমাকে মারে নি তো?
কথাটা উনার কানে গেলে উনার খাওয়া যেন বন্ধ হয়ে যায়। মুখ থেকে খাবার অক টেনে প্লেটে ঢেলে দেয়। আমার বোনের দিকে রাগি দৃস্টিতে তাকিয়ে আমার চুলের মুঠি টেনে ধরে প্লেটটা আমার মুখের সামনে ধরে বলে,
-আমার মুখের চিবানো খাবার। মাত্র ফেলেছি! এটা এখন খাবি না হলে….
ইশারায় উনি বাঁকা চোখে আমার বোনকে দেখায়।যার অর্থ বোঝায় আমার বোনের সাথে উনি খারাপ কিছু করবেন।
আমার চোখ বেয়ে পানি পরতে থাকে। প্লেটটা উনার হাত থেকে নিয়ে ওনার অক টেনে ফেলে দেওয়া মুখের খাবার নিজের মুখে দিচ্ছি।আমার বোন আমাকে ঝাকিয়ে বলছে,
-এটা কি করছিস আপু? আপু? উনাকে বলছে, দুলাভাই এটা কি করছেন আমার আপুর সাথে?
উনি পৈচাশিক ভাবে হাসছেন।
চলবে,,,,