শুধু তুই

শুধু তুই !! Part- 02

ইত্তেহাদ ঘরে ঢুকে ফারহাকে হেঁচকা টানে ফেলে দিল। তোকে বলেছিলাম না যে আজ থেকে নতুন এক দিন গুনবি। দিন গুনা শুরু সমস্ত অত্যাচার নির্যাতন হবে তোর উপর।

হাইস্যকর কথা আমাকে মারলে তোমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠবে না। তাহলে তো তুমি সেই পুরুষের পরিচয় দেবে।

চুপ নটাংকি বন্ধ করে খাবার ব্যবস্থা কর। যা খুব ক্ষুধা লেগেছে। তাড়াতাড়ি কর নাহলে পস্তাতে হবে।

ফারহা উঠে সোজা রান্নাঘরে ঢুকে গেল। কি করবে তার কপালে যা ছিল সব সহ্য করতে হবে।

নাস্তার টেবিলে বসে আছে ইত্তেহাদ। ফারহা নাস্তা উপস্থাপন করেছে। ইত্তেহাদ নাস্তা দেখে ভিরমি খেয়েছে। পাউরুটি আর জ্যাম সাথে রঙ চা।

ইত্তেহাদের ক্ষিদে পেয়েছে তাই চুপচাপ খেয়ে চলে গেল। ফারহা চুপচাপ খেয়ে নিল।

ফারহা ছাদের উপর দাঁড়িয়ে দুরে তাকিয়ে আছে। কি সুন্দর প্রকৃতি হয়ত জীবন এমন হবে নয়ত নয়।

ফারহা দেখল ইত্তেহাদ বাজার নিয়ে ঢুকছে। ফারহা তড়িৎ গতিতে নিচে নেমে গেল। চার চারটি ব্যাগ ভর্তি বাজার এনেছে।

ইত্তেহাদের মা বলল এত বাজার কেন। ইত্তেহাদ বলল বিয়ের ২য় দিন বাড়ির বৌ কে সব রান্না করতে হয়। এই নিয়ম কি ভুলে গেছ। বলে বাজার গুলো রেখে উপরে চলে গেল।

ফারহা শাশুড়ির ইশারা পেয়ে উপরের দিকে চলে গেল। ফারহা ইত্তেহাদের কিছু লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করতেই। ইত্তেহাদ ঘুরে ঠাস করে এক চড় মেরে দিল।

— তোকে আগ বাড়িয়ে কাজ করতে বলেছি। যা এখন এখান থেকে নয়ত আরো কয়েকটি পড়বে।

“” কয়টা দিতে পারবে দাও তবে সিগারেট খাওয়া চলবে না। “”

— ফারহা যা এখান থেকে নাহলে পস্তাতে হবে কিন্তু।

“” কি করতে পারবেন, মার দেওয়া ছাড়া দিন। আরো‌ বেশি মার সমস্যা নেই। “”

— ফারহা মাফ চাই যা এখন এখান থেকে। রান্না কর আজ বৌভাতের সমস্ত রান্না তুই করবি।

অগ্যতা ফারহা কিছু না বলে বের হয়ে আসল।

কিছুক্ষণ পর কফি নিয়ে চলে এল ইত্তেহাদের কাছে। নিন কফি খেয়ে নেন।

ফের এসেছিস তোকে তো আসতে বারণ করেছিলাম। নে তোর কফি তুই খা। বলে ফারহার হাতের উপর ঢেলে দিল।

“” মরে গেলাম গো, ও মা মরে গেলাম।””

— ঐ চুপ এই কথা যেন বাহিরে না যায়।

“‘ খালাম্মা শাশুড়ি গো আমায় মেরে ফেলেছে গো তোমার রাবণ ছেলে টা। “””

— দ্বারা তোকে চুপ করানোর পদ্ধতি আমার জানা আছে। বলেই ফারহার ওষ্ঠদ্বয় নিজের ওষ্ঠদ্বয়ে পুরে নিল।

ফারহা মনে মনে ভাবছে সময় যেন থমকে যায়। ফারহার মনে ঘন্টা বাজছে। টং টং টং টং টং টং টং টং টং টং।

বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না এই সময়। ফারহার ননদের ডাকে ঘোর কাটল।

ইশ ! আমি কিছু দেখিনি বলে চোখ বন্ধ করে দিল।

ফারহা বলে উঠল কলি দিলি তো রোমান্সের বারোটা বাজিয়ে।

ইত্তেহাদ বেচারা বোন কে দেখে লজ্জায় ওয়াশরুমে দৌড়ে চলে গেছে।

কলি : ভাবী ভাইয়া তো লেকচার দিতে দিতে শেষ। এই জীবনে আর বিয়ে করবে না। তবে এখন ☘তলে তলে টেম্পু চালায় আমরা দেখলে লজ্জায় মুখ লুকায় ওয়াশরুমে️☘️

ফারহা বলল তুমি তো দেখছি খুব বড় হয়ে গেছ। তাড়াতাড়ি বিদেয় করতে হবে। চল নিচে চল।

যথারীতি অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাচ্ছে, তবে সবার অনুরোধে ফারহাকে একটা গান করতে হবে। কারো অনুরোধে যখন রাজি হয় না। তখন ইত্তেহাদ গান করতে বলে।

ইত্তেহাদের বলা মাত্রই গান শুরু করে। ইত্তেহাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে গাওয়া শুরু করলো।

এসো এসো আমার ঘরে,
এসো আমার ঘরে।
বাহির হয়ে এসো তুমি যে আছ অন্তরে।
এসো আমার ঘরে।

স্বপন দুয়ার খুলে এসো অরুণ-আলোকে
এসো মুগ্ধ এ চোখে।
এসো আমার ঘরে।

ক্ষণকালের আভাস হতে
চিরকালের তরে এসো আমার ঘরে।
এসো আমার ঘরে।

দুঃখ সুখের দোলে এসো,
প্রাণের হিল্লোলে এসো।
এসো আমার ঘরে।

তুমি ছিলে আশার অরূপ বাণী ফাগুন বাতাসে
বনের আকুল নিশ্বাসে–
এবার ফুলের প্রফুল্ল রূপ এসো বুকের পরে।।

এসো এসো আমার ঘরে,
এসো আমার ঘরে।
বাহির হয়ে এসো তুমি যে আছ অন্তরে।
এসো আমার ঘরে।

পুরো গানটা ইত্তেহাদের দিকে তাকিয়ে বলল। ইত্তেহাদ এবার বিচলিত হয়ে গেছে ।

চলবে,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *