রোমান্টিক অত্যাচার

© রোমান্টিক অত্যাচার–>৯

Israt Jahan
ডাক্তারঃ আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। আর এই
অপারেশনে সব থেকে expert যিনি ডঃ দুপুর হাসান তিনি
আসছেন। আল্লাহ্ পাক সহায় থাকলে উনি পারবেন অপারেশন টা
successful করতে। আপনারা ভেঙ্গে পরবেননা এখনও কিছুটা
আশা রাখছি আমরা।
আশফিঃ আমি কাঁদতে কাঁদতে পাশে তাকালাম দেখলাম
মাহির আম্মু ও কষ্টে পাথরের মত হয়ে গেছে।
-আশফি? বাবা তুই নিজেকে সামলা। তোকে তো শক্ত হতেই
হবে। তুই মাহির মায়ের কাছে যা ওনাকে গিয়ে দেখ।(চাচ্চু)
আশফিঃ চাচ্চু। আমি জাস্ট 1 hour এর ভেতর তার লাশ চাই যে ওর
এই অবস্থা করেছে। (স্বাভাবিক কন্ঠে)
-হুম আমি এখনি খোঁজ নিচ্ছি। তুই ওনার কাছে যা।
আশফিঃ আমি ওনার পাশে গিয়ে বসলাম।
-মামনি?উনি আমার দিকে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকালো।কিন্তু
কোনো প্রশ্ন করলোনা। হয়তো করলে আমি এখনি বলে দিতাম
আমি তোমার সেই বাদ্ধ্য আশফি। মানুষ টা আঘাত পেতে পেতে
তার সব অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। আমি বলা শুরু করলাম।
-মাহি এর আগেও মাথার পেছনে আঘাত পেয়েছিল। কিন্তু সেটা
কিভাবে। এবার মামনি কেঁদেই দিল। তারপর চোখটা মুছে বলা
শুরু করলো।
– সেদিন রাতে আমি আর আশরাফ ভাই মাহি কে নিয়ে
পালাচ্ছিলাম পেছনের সিড়ি দিয়ে এয়ারপোর্ট যাবো বলে।
ঐদিন যারা আমাদের ওপর হামলা করেছিল ওরা আমাদের
আটকানোর জন্য সামনে আসলো। মাহিকে আমার কোল থেকে
কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। এদিকে আশরাফ ভাই ওদের
আটকানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু পারছিলনা। এক সময় একজন
মাহিকে আমার কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মাহিকে নিয়ে
চলে যাচ্ছিল আমি আটকাতে গেলে সে মাহিকে কোল থেকে
নিচে ফেলে দেয়। আমি দৌঁড়ে ওর কাছে গেলাম। আশরাফ ভাই
বললো ভাবি তুমি ওকে নিয়ে পালাও আমি সামলাচ্ছি ওদের।
আমি ওকে নিয়ে পালালাম। তখন মাহির মাথা থেকে রক্তে
ভেসে যাচ্ছিল। তাড়াতাড়ি hospital এ নিয়ে গেলাম। ওরা ওকে
O.T. তে নিয়ে গেলো। অনেক্ষণ পর আশরাফ ভাইকে ফোন
করলাম ওনার খোঁজ নেওয়ার জন্য। উনি ঠিক আছে আমি ওনাকে
Hospital এর ঠিকানা দিয়ে দিলাম। ঐদিন আর আমরা দেশে
ফিরতে পারিনি। তারপর ডঃ বেরিয়ে এলো, আজকের মত ঐদিন
ও ডঃ এসে বললো ওর বাঁচার আশ্ঙকা কম। আশরাফ ভাই এসে
আমাকে সামলাচ্ছিল। অনেক্ষন পর অপারেশন শেষ হলো।
সেদিন খোদা তা’য়ালা ওর সহায় ছিল। ডঃ এসে বললো ও বেঁচে
গেছে কিন্তু পুরোপুরি সুস্থ ভাবে না। ওর মস্তিষ্ক …… (বলতে
গিয়ে কেঁদে দিল)
ওকে স্বাভাবিক ভাবে পাইনি। ও পাগল হয়ে গেছিল। তার ১
মাস পর ওকে নিয়ে দেশে চলে আসি। অনেক সময় লেগেছিল
সুস্থ হতে। সুস্থ হলেও ওর আগের কোনো কিছুই মনে ছিলনা।
অনেক অল্প বয়সে এত বড় আঘাত ও নিতে পারিনি। তাই এই
অবস্থা হয়ে গেছিল। আমি ওর মা আমাকে ও চিনতে পারেনি।
সবসময় ওর কাছে থাকতাম বলে এইটুকু বুঝতে পেরেছিল আমি ওর
আপন কেউ। নতুন করে ওকে আমাকে চেনালাম আমি ওর মা।
আশফিঃ এতো কিছু বললো বাবা কিন্তু এই ঘটনাটা তো আমাকে
বলনি? অবশ্য বলার সময়টুকু ও যে সে পাইনি।(মনে মনে ভাবলো)।
ভাবতেই ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো। চাচ্চু ফোন করেছে। আমি
ফোন নিয়ে উঠে চলে আসলাম।
-হ্যা চাচ্চু বলো।
কি??………….এতদূর চলে এসেছে?
ওর আর বেচেঁ থাকার কোনো অধিকার নেই just shoot him.
ও তাই? আল্লাহ্ পাক ও বুঝতে পেরেছে ওর আর বাঁচার প্রয়োজন
নেই। তাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মরেছে।(পালাতে গিয়ে)
আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চলে এসো দরকার আছে। কথা বলা শেষ
করেই দেখলাম আমার বয়সি একজন ডঃ অপারেশন থিয়েটারে
ঢ়ুকলো।
-হায় খোদা তুমি ওর সহায় থেকো। এতো কষ্ট আর নিতে
পারছিনা। যাকে safe করার জন্য এখানে আসা আমি আর সেই
নিজেই তার এত বড় ক্ষতি করে দিলাম। আমি কোনোদিও চাইনি
এটা করতে পাগলের মত ভালোবাসি ওকে।
এখন অলরেডি ১২:৩০ টা বাজে এখনও ওর অপারেশন শেষ হয়নি।
চাচ্চু কে ফোন করে বললাম এত রাতে আসার প্রয়োজন নেই।
মামনি কাঁদতে কাঁদতে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই আমি জোর
করেই কেবিনে ভর্তি করে দিলাম রেস্ট নেওয়ার জন্য। আর
বললাম ডঃ বেরোলে আমি তাকে জানাবো। আমি এসে বসলাম।
মাথা নিচু করে বসে আছি।
-মাহি আপনার কি হয়।
-ডঃ বেরিয়েছে আমি উঠে দাড়ালাম। আমি বললাম মাহি
আমার বাগদত্তা।
উনি কেমন গম্ভীরভাবে তাকিয়ে থাকলো।
-ওহ্ আচ্ছা। অপারেশন successful. আর হ্যা এটা আমার কার্ড।
এখানে আমার নাম্বার আছে ও কেমন আছে সেটা আমাকে
জানাবেন। আসলে আমি কিছুক্ষণ পরই লন্ডন চলে যাবো। তাই……
-আমি প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালাম. উনি বুঝতে
পেরেছে সেটা।
-ও হ্যা আমার পরিচয়টা দেই। আমি দুপুর হাসান। আমরা একই
কলেজে পড়তাম।তবে আমি ওর সিনিয়র ছিলাম।যাই হোক মাহির
বিপদ টা এখনও কাটেনি। sense ফেরার পর বোঝা যাবে ও কতটুকু
সুস্থ। আমি যে ভয়টা পাচ্ছি সেটা যেনো আল্লাহ্ সত্য না করে।
-কি ভয় পাচ্ছেন আপনি? বলুন।
-কোমায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে সেটা 50%
সম্ভবনা। বাকি 50% পুরোপুরি সুস্থ। একমাত্রই উপরওয়ালাই
ভরসা। ওর খেয়াল রাখবেন আমি আসছি।
দুপুরঃ আমি কোনোদিও ভাবিনি মাহি তোমাকে এই অবস্থায়
দেখবো। আমি যখন তোমাকে দেখলাম তখন আমার দেহ থেকে
প্রাণটা বেরিয়ে আসতে চাইছিল। মাহি? আজকে তুমি অন্য
কারোর হয়ে গেলে। আমিও তো তোমাকে ভালোবেসেছিলাম।
কিন্তু সেদিন তুমি আমাকে গ্রহণ করোনি।তুমি বলেছিলে
তোমার জীবনে এগুলোর কোনো স্থান নেই। আমি সেদিনই
promise করেছিলাম তুমি যদি কাউকে কোনোদিন গ্রহণ করো
তাহলে আমিও সেদিনই অন্য কাউকে বিয়ে করবো। কিন্তু
তোমাকে দেখার পর যে আমি আমার প্রমিস রাখতে পারছিনা।
আমি পারবোনা অন্য কাউকে গ্রহণ করতে। তবে তোমার হবুবরটা
অনেক সুন্দর।আর তোমাকে খুব ভালোবাসে দেখেই বোঝা
যাচ্ছে। তোমার মঙ্গল কামনা করি ভালো থেকো।
আশফিঃ মামনির কাছে গেলাম।সবকিছু বললাম। মামনি মাহির
কাছে গেলো। তারপর নিজেকে সামলে তাহাজ্জুদের নামায
পড়া শুরু করলো। আমিও মামনির কেবিনে এসে নামায পড়তে
বসলাম। সারারাত জেগে পড়লাম। অনেক্ষন ধরে আল্লাহর কাছে
কান্নাকাটি করে মোনাজাত করছিলাম ওর জন্য। মোনাজাত
শেষ করে উঠে দাড়ালাম তখন দেখলাম মামনি পিছে দাড়িয়ে
আছে। আমার কাছে দাড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
– আমি জানিনা আমি জীবনে কি পাপ করেছি যার জন্য
আল্লাহ্ আমার থেকে সব কেড়ে নিতে চাইছে। তবে আমি এই
প্রথম নিজেকে ছাড়া অন্য কারোর ওপর ভরসা করছি। যেমনটা
আশরাফ ভাইয়ে ওপর করেছিলাম আর আজকে তারই ছেলের ওপর
করছি।
আশফিঃ আমি কিছুটা অবাক হয়েই গেলাম।
-তুমি তোমার পরিচয় না দিলেও আমি তোমাকে ঠিকই চিনেছি
যখন তুমি আমাকে মামনি বলে ডাকলে।
আশফিঃ আমি মামনিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলাম। মামনি,
তোমরা চলে আসার পর আমি তোমাদেরকে ভুলে থাকতে
পারিনি। মাহিকে ভুলতে পারিনি। ছোটোবেলাই বাবার কাছে
অনেক শুনেছি তোমরা কোথায়? কেনো এখান থেকে চলে
গেলে? তুমি জানো বাবা……???(বলতে গিয়েও থেমে গেলাম।
এই মূহুর্তে এসবকিছু বলা ঠিক হবেনা)
– আমি বুঝতে পেরেছি তোর ভালবাসা মিথ্যে হতে পারেনা। তুই
পারবি ওকে ওর ভুল ধারনা থেকে বের করতে। ও ওর বাবার আর
কিছু না পেলেও তার দুটো জিনিস পেয়েছে। রাগ আর জেদ। যে
ভাবেই হোক তুই ওকে বুঝিয়ে দিবি যে সব পুরুষেরাই এক না।
আশফিঃ মামনি আমিও যে জেদের বসে ওর সাথে একটা অনেক
বড় অন্যায় করে ফেলেছি শুধুমাত্র ও যাতে বিয়ে করতে বাধ্য
হয়।মামনিকে সব বললাম মাহিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা।
মামনি শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থাকলো কিছুক্ষণ।
তারপর বললো,
– যেটা নষ্ট হয়ে গেছে সেটা আর ফিরে আসার নয়। কিন্তু ওকে
বিয়ে করার এই পদ্ধতিটা ভুল ছিল তোর। যাইহোক এটা যেনো
কোনোদিও ও জানতে না পারে। জানলে ও আর তোর কাছে
থাকতে চাইবেনা। ওর যে ভুল ধারনা আছে তাহলে সেটাই ওর
কাছে সত্যি বলে মনে হবে।
আশফিঃ কথা বলতে বলতে ভোর হয়ে গেলো। ফজরের আযান
দিয়েছে। আমি আর মামনি নামায আদায় করলাম। খুব সকালে
চাচ্চু চলে এসেছে।
-চাচ্চু মামনি আমাকে চিনতে পেরেছে। আর মাহির কথাগুলোও
বললাম।
-যাক,আল্লাহ্ ভরসা। উনি সব কিছু ঠিক করে দেবে।
-হুম। তুমি এক কাজ করো মামনি কে আমার বাসায় নিয়ে যাও।
ওখানেই থাক মামনি।
আমি মামনিকে গিয়ে বললাম আমার বাসায় যেতে। মামনি
যেতে রাজি হচ্ছিলনা। তারপর অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে
পাঠিয়ে দিলাম। আর আমি এখানেই থেকে গেলাম। কারণ এখনও
মাহির life risk আছে। যেকোনো সময় আবার attack করতে পারে
ওরা।
(৩ দিন পর)
আশফিঃ মামনি তুমি ওর কাছে যাও। আমি এখন ওর সামনে
যাবোনা।
– ঠিক আছে।(মামনি)
আশফিঃ আজকে ভোরেই ও sense ফিরে পেয়েছে। ও একদম সুস্থ
আছে। আল্লাহ্ পাকের অশেষ ক্রিপা। তার পরেরদিন ওকে ওর
বাসায় নিয়ে গেলো। আমার বাসায় ওকে নিয়ে যেতে চাইলাম
ও আসতে চাইলোনা। ও সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমি ওর বাসায়
থাকা শুরু করলাম। যদিও ওর সেটা পছন্দ ছিলনা। আমি সেবা
করতে গেলেও ও আমাকে বাঁধা দেই।আমি জোর করেই করি।
একদিন ওকে ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছি,
ও তখন বললো,
মাহিঃ এগুলো করে আপনি কি প্রমাণ করতে চাইছেন। অনেক
বেশি ভালোবাসেন?? কিন্তু সেটা ঠিক কতদিনের জন্য???
আশফিঃ আমি ওর কোনো কথার উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে
আসতে গেলাম তখন দেখলাম মামনি দরজার কাছে দাড়িয়ে
আছে। আমি শুধু একবার তাকিয়ে চলে আসলাম।
মাঃ মাহি? এখন কেমন লাগছে মা?
মাহিঃ হুম। আগের থেকে বেটার ফিল করছি।
মাঃ মা, আজকে তোকে আমি কিছু কথা বলবো। তুই শুধু শুনবি।
ভালো খারাপ উভয়ের মিশ্রণে পৃথিবী তৈরি। সেখানে কিছু
ভালো মানুষ বাস করে আর কিছু খারাপ। তাই বলে সবাই খারাপ
না।এখানে কেউই একা বাস করতে পারেনা। আমাদের আদি
পিতা আদম(আঃ) এর জন্য ও আল্লাহ্ পাক একজন সঙ্গী সৃস্টি
করেছিল তার একাকিত্ব দূর করার জন্য। আমি কি বলতে চাইছি
তুই সেটা বুঝতে পারছিস?
মাহিঃ হুম। তার মানে আমাকে বিয়েটা করতেই হবে তাইতো?
ঠিক আছে।
মা আমার কপালে চুমু দিয়ে চলে গেলো। কিন্তু আমি যে নিজের
মনকে কোনোভাবেই তোমার মত করে বুঝ দিতে পারছিনা মা।
জানিনা কি হবে। কিন্তু আমি শুধু তোমার কথা রাখার জন্যই
বিয়েটা করবো।
( ২ মাস পর)
আশফিঃ আজকে মাহিকে বিয়ে করে নিজের ঘরে নিয়াসছি।
তবে আর সবার মত ও বৌ সাজেনি। যেভাবে ছিল সেভাবেই
বিয়ে করেছে। তাই নিজেকেও বরের মত করে উপাস্থাপন
করিনি। মামনি ওকে অনেক বকাবকি করছিল এভাবে থাকার
জন্য। তারপর আমি মামনি কে বলেছি ও যেভাবে থাকতে চাই
সেভাবেই থাকুক। মামনি আমাকে পরে ডেকে কিছু কথা বললো।
কথা গুলোর সারমর্ম এটাই ছিল আমি যেনো ওকে নিজের মত
করে চলতে না দিই। ভালোবাসা+শাসনের ওপর রাখি। শুনে
ভালোই লাগছিল। আর আমারও অলরেডি ভাবা হয়ে গেছে
বিয়ের পর আমি ওকে কিভাবে রাখবো। কিন্তু একটা জায়গায়ই
চিন্তা ওর কথা+কার্যকলাপে আমার মাথা গরম হয়ে গেলে ওর
সাথে কি করবো সেটা জানিনা। মাথা গরম হয়ে গেলে হাজার
চেষ্টা করলেও নিজেকে কনট্রোল করতে পারিনা। নেহাৎ
সেদিন ও অসুস্থ ছিল তাই ওর কথা মুখ বুজে সহ্য করে বেরিয়ে
গিয়েছিলাম। না হলে ঐ মূহুর্তে ওকে যে কি করতাম?????? যাই
হোক আমি এখন গাড়িতে বসে আছি। ওকে নিয়ে আমার
বাড়িতে যাচ্ছি
-সোনা তোমার খুব গরম লাগছে?
মাহিঃ গরম লাগবে কেনো। এসি চলছে আর আমি তো simple
পোশাকেই আছি।
আশফিঃ ওওও….. আসলে আমার কাছে মনে হলো পোশাকটা খুব
ভারী হয়ে গেছে। তুমি যদি বলো আমি এখনি সর্ট টপস্ কিনে
নিয়াসছি।
মাহিঃ মানে কি? ফাজলামি করছেন আমার সাথে?
আশফিঃ একদম না(মাথা নাড়িয়ে)
ওকে রাগানোর জন্যই বললাম। বিয়ের দিনেও কেউ এমন পোশাক
পরে সেটা বোঝালাম। আজকে কোনো আয়োজন করিনি
বাড়িতে। কাল করবো। আমি নিজেই আগে ঘরে গিয়ে ওকে বরণ
করলাম। ও তো চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
ওকে আমার ঘরে নিয়ে এলাম।ও আমাকে কিছু বলতে যাবে তার
আগেই আমি বললাম,
– দেখো তুমি তো এটাই বলবে আমি যেনো তোমার ঘরে না
থাকি, এক বিছানায় না শুই, তুমি আমাকে স্বামির অধিকার না
দেওয়া পর্যন্ত তোমার কাছে না আসি…..etc…..
আমি আগে থেকেই বলে রাখছি এর কিছুই আমি মানতে
পারবোনা। আর তুমি আমার কাছে এটা আশাও কোরোনা।
এতদিনে আমাকে নিশ্চই চিনে গেছো আমি কেমন? আর আমি
তোমাকে বিয়ের আগেই টাচ্ করেছি। তাই আমার যখনই মন
চাইবে তখনি আমি তোমার কাছে আসবো। কারণ তুমি আমার
স্ত্রী তোমার ওপর আমার পূর্ণ হক আছে। আর কিসব নিয়ম নীতি
যেনো আছে দেনমোহর কাবিন কি কি….যাইহোক সবকিছুই আমি
পরিশোধ করে দিয়েছি তাই তুমি যে কজ ই দেখাও আমাকে
আটকাতে পারবেনা।বুঝেছো বাচ্চা???
মাহিঃ কি বলবো আপনাকে ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। লুচু
কোথাকার
আশফিঃ কি বললে তুমি? ওর দিকে এগিয়ে গেলাম ও ভয়ে
পিছিয়ে গেলো?
-ও কাম অন ডিয়ার(শান্ত গলায় বললাম) ছেলে মানুষ লুচু হবে না
তো কি মেয়ে মানুষ হবে? আর ছেলে মানুষ লুচু না হলে তাকে
ছেলে মানুষ
বলেনা।
মাহিঃ তো কি বলে?
আশফিঃ থাক বললাম না। হয়েছে এখন চলো খেতে দাও
আমাকে।
মাহিঃ কি? বাড়িতে তো একশো কুড়ি কাজের লোক। এক একটা
কাজের জন্য আলাদা আলাদা মানুষ। তো আমি কেনো খেতে
দিব?
আশফিঃ হুম। কিন্তু রান্না করা আর খেতে দেওয়া এটা বাড়ির
বৌদের করতে হবে। এটাই আমাদের বাড়ির নিয়ম।
মাহিঃ তো এতদিন কিভাবে খেলেন?
আশফিঃ এবার আমার সত্যিই রাগ হয়ে গেলো। এতদিন বৌ
ছিলনা তাই খেতে বাদ্ধ্য হয়েছি। আর এত কথা আমি শুনবোনা
দিতে বলেছি দিবে।
মাহিঃ পারবোনা। একদিন আসতে না আসতেই অর্ডার করা শুরু
হয়ে গেছে। অসহ্য।
আশফিঃ তুমি sure তুমি দিবেনা? ভেবে দেখো।
মাহিঃ Damn sure. দে….বো…না।
আশফিঃ আমি এখন সেটাই করবো যেটা তুমি চাওনা। আমি
ওকে একটানে কাছে নিয়ে এসেই……………..
হ্যাঁ যেটা ভাবছেন সেটাই। অনেক্ষন ধরে ওর ঠোঁটে চুমু দিয়ে
ঠৌঁটটাকে একদম লাল করে দিলাম। এরপর ওকে ছেরে দিয়ে
বললাম
-কি মজা পেয়েছো??? নিশ্চই অনেক মিষ্টি!! ।এরপর ও যদি
খেতে না দাও তাহলে এরপরে যেটা বাকি আছে সেটাই করবো।
তারপর ও রেগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। বেচারি
বাহ্ কি সুন্দর পরিবেশন করছে। আমি গিয়ে খেতে বসলাম। আর
বললাম আমি যতক্ষণ খাবো ততক্ষণ আমার পাশে ওকে বসে
থাকবে।
মাহিঃ উনি কি মানুষ নাকি অন্যকিছু। আমি প্লেট টা এগিয়ে
দিয়ে বসে আছি। কি হলো প্লেট টা এরকম সামনে নিয়ে বসে
আছে কেনো?
আশফিঃ খাবার বাড়ো।
মাহিঃ ওহ এর জন্য বসে আছে?যাক এইটুক দয়া হলো আমার জন্য।
আমি একটা প্লেট নিয়ে খাবার বাড়লাম। ওনার দিকে চোখ
পড়লো আবার এভাবে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে কেনো?
-কি হয়েছে?
-আমি আমার প্লেটে খাবার বাড়তে বলেছি। তোমার প্লেটে
না।
মাহিঃও আচ্ছা। আমি তো ভাবলাম……
দিচ্ছি। আমি ওনাকে খাবার বেড়ে দিয়ে খাওয়া শুরু করলাম।
মনে হলো উনি আমার দিকে তাকিয়ে আছে না খেয়ে। oh god
এখন কি আবার খাইয়ে দিতে বলবে নাকি।
-আবার কি হলো?
-আমি কি খাওয়া শুরু করেছি?
-না ( মাথা নাড়িয়ে)
-তাহলে তুমি আগেই কি কারনে আগে খাওয়া শুরু করলে?
-তার মানে?
-তার মানে আমরা এক সাথে খাওয়া শুরু করবো কেউ আগেনা।
বুঝেছো? কথাটা মাথায় থাকে যেনো।
মাহিঃ ও মা এ আমি কোথায় পরলাম।
খাওয়া শেষ করে ঘরে গেলাম ওনার সাথে। এখন দেখছি উনি কি
করে। ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসলো। আমি ওনার পাশে গিয়ে
কিছুটা দূরে শুতে গেলে তখন উনি আমাকে থামিয়ে দিলেন।
আশফিঃ ওয়েট আগে এটা দেখো। (ল্যাপটপ টা এগিয়ে দিয়ে)
এখানে আমার সাথে আর আমার বাড়িতে থাকার জন্য কিছু রুলস
আছে এটা ফলো করবে কাল সকাল থেকে।
মাহিঃ এটা কি লিখেছে উনি। দেখেই আমার চোখ কপালে
উঠে গেলো।এ তো রুলসের কারখানা। আর কি সব রুলস। তার
ভেতর একটা রুলস হলো উনি যখনই বাইরে যাবে তার আগে আমি
যেনো ওনার সামনে থাকি উনি আমাকে আদর করে তারপর
বাইরে যাবে। এরকম আরও অনেক বিদঘুটে রুলস লিখে রেখেছে।
আশফিঃ থাক এখনই সব দেখতে হবেনা। কাল দোখো। এখন কিছুই
তোমার মাথায় ঢুকবেনা। শুয়ে পড়ো।
ও আমার দিকে কেমন ভয়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
-আরে কি হল এরকম ভয় পাচ্ছো কেনো?
হুম বুঝেছি। ভয় নেই এখন কিছুই করবোনা। তবে পুরোপুরি surity ও
দিতে পারছিনা।
মাহিঃ আমি ওনার কথা গুলো শুনে চুপ করে শুয়ে পরলাম।
আশফিঃ এই তুমি মাঝে এরকম ২ হাত ফাঁকা রেখে শুয়েছো
কেনো? আমার কাছে সরে এসো। এটাও কি রুলসে দিতে হবে?
এসো বলছি।
মাহিঃ কি মহা জালায় পরলাম। আমি ওনার কাছে সরে
গেলাম।
আশফিঃ এটাকে কাছে আসা বলে?? তুমি কি চাচ্ছো এখন আমি
তোমাকে…………..
মাহিঃ না না এইতো আসছি। আরও সরে আসলাম।
আশফিঃ আজব? আমাকেই সব শেখাতে হবে তোমাকে।
কথাটা বলেই ওকে একটানে আমার বুকের কাছে নিয়ে আসলাম।
-হুম এখন জড়িয়ে ধরো আমাকে। কি হলো? first.
মাহিঃ হুম ধরছি তো। তারপর ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম হলকা
করে। উনি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আশফিঃ রোমান্স কাকে বলে আজ থেকে শিখিয়ে দিব।
মাহিঃ সকালে উনি গোসল করে বাথরুম থেকে বের হলো।শুধু
টাওয়াল টা পরা ছিল। চুল হাত দিয়ে মুছতে মুছতে আয়নার
সামনে গিয়ে দাড়ালো। আমি বসে ফোন টিপছিলাম।বডিটার
দিকে নজর গেলো আমার। তাকিয়ে দেখছি কি ফিগার!!
একদম Jiang chao এর মতোই। তারপর তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে
নিলাম। তারপর বাইরে চলে যেতে যাবো তখন উনি আমার হাত
ধরে কাছে টেনে কোমোর জড়িয়ে ধরলো।
আশফিঃ কি লজ্জা পাচ্ছো?
মাহিঃ হুম।
আশফিঃ উহহ… আমি তো দেখলাম তুমি আমার দিকে তাকিয়ে
আমার body shape দেখছিলে।
মাহিঃ কোথায়? আমি তো ফোন টিপছিলাম।
আশফিঃ আমি কি দেখিনি? আয়নায় সব দেখা যাচ্ছিল। ওকে
আরও কাছে টেনে এনে ওকে আদর করা শুরু করলাম ওর গলা আর
ঘারে। ও আমাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে আমার খুব রাগ হয়ে
গেলো। তখন আমি ওকে….
চলবে……..