মিশে আছো আমার অস্তিত্বে

মিশে আছো আমার অস্তিত্বে !! Part-17

তৃষা নিজেকে বারবার ছাড়ানোর চেষ্টা করেছে আকাশের কাছ থেকে কিন্তু বারবার‌ই ব্যার্থ হচ্ছে সে।আকাশ তৃষাকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিল,,তৃষা এবার চিল্লিয়ে বলে উঠলো-;
-:আকাশ!!কি করছেন?নামান আমাকে,,যদি আমাকে না নামান তাহলে আপনাকে চরম মূল্য দিতে হবে এর জন্য।
আকাশ তৃষার দিকে তাকিয়ে ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:মূল্য তো দিতে চাই তৃষা বেবস কিন্তু সেটা ভালোবেসে।
তৃষা আকাশের দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:ফালতু কথা বলা বন্ধ করুন আর গাড়িটা থামান তাড়াতাড়ি ন‌য়তো আমার ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে।
-:আমিও দেখি তুমি কি করে কানাডা যাও?
এই বলে আকাশ গাড়ি স্টার্ট দিল।তৃষার শত চেষ্টাকে পানিতে ফেলে আকাশ তৃষাকে নিজের বাসায় নিয়ে এলো।তারপর তৃষাকে আবার কোলে নিয়ে ভিতরে চলে গেল।তৃষা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও এখন আর সেটা করছে না,,কারণ সে জানে তার সমস্ত প্রয়াস‌ই বৃথা যাবে।আকাশ তৃষাকে বেডে বসিয়ে উঠতে যাবে এমন সময় আকাশের ফোন বেজে উঠল,,আকাশ ফোনটা রিসিভ করে হাঁসি মুখে বলে উঠলো-;
-:বাবা আপনার মেয়ে এখন আমার হেফাজতে কিন্তু ক্ষমা করবেন তাকে কোনোমতেই এখন অন্যকোথাও নিয়ে যওয়া যাবে না,,কারণ সে এখন আমার রাজ্যে বন্দিনী হয়ে থাকবে।আর যেদিন সে পুরোপুরিভাবে আমার রাজ্যের রানী হয়ে যাবে সেদিন আপনার মেয়ে,,নাতি আর জামাই আপনার বাসায় উপস্থিত থাকবে।
-:ওরে বাবা নাতি নিয়ে হাজির হতে চাইলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে।
-:আরে চিন্তা করবেন না বাবা,,আশা করি খু্শির সংবাদটা খুব তাড়াতাড়িই আপনি পেয়ে যাবেন।
-:বাহ এতো খুব ভালো কথা।
-:হুম আচ্ছা রাখছি।আপনার মেয়ের মাথা এখন ঠান্ডা পানি দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে আমাকে,,ওকে বাই।
-:হাহাহাহা আচ্ছা রাখছি।
আকাশ ফোনটা কেটে তৃষার দিকে তাকাতেই একটা ঢোক গিলল,,কারণ তৃষা এই মুহূর্তে আকাশের দিকে যেভাবে তাকিয়ে আছে তাতে মনে হচ্ছে আকাশকে সে এক্ষুনি গিলে ফেলবে।আকাশ মুখে একটা শুকনো হাসির রেখা টেনে তৃষাকে জিজ্ঞাসা করল-;
-:ক..কি হয়েছে তুমি আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
তৃষা চিল্লিয়ে বলে উঠলো-;
-:ছিহ্ আপনার..আপনার..(রাগে কাঁপতে কাঁপতে)
-:আপনার কি?(ইনোসেন্ট মুখ করে)
-:আপনার মিনিমাম কমোনসেন্স নেই‌। বাবার সাথে কেউ এইভাবে কথা বলে ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ
-:এই এই এতো ছিঃ ছিঃ করো না তো আমার বাসাটা তোমার ছিঃ নামক শব্দতে ডুবে যাবে।
-:কিহহ!!!
-:জ্বি।
-:উফ্ আমি এক্ষুনি আমার বাসায় যাবো।
-:হ্যা তুমি তো তোমার বাসায় ই আছো।
-:উফ্ আমার বাবার বাসার কথা বলেছি।
-:ওওও কিন্তু সেখানে তো তোমার যাওয়া হচ্ছে না।
-:মানে আমি আমার বাবার বাসায় যাবো এতে আপনি বারণ করার কে?আর আমিই বা যাবো না কেন?
-:হুম।আমি তোমার ওনলি ওয়ান স্বামি,,সো তোমার উপর আমার অধিকার অন্যান্যদের তুলনায় একটু হলেও বেশি,,তাই তোমাকে বারণ আমি করতেই পারি,,এটা হলো তোমার প্রথম প্রশ্নের উত্তর‌।
আর তোমার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরের সাথে জড়িত আছে আমার প্রেস্টিজ।
-:মানে!!
-:মানে হলো আমি এইমাত্র বাবাকে মানে যে কিনা তোমার‌ও বাবা আবার আমার‌ও বাবা,,,তাকে তোমার সামনে দাঁড়িয়েই কথা দিলাম যে আমি তার মেয়ে আর নাতির সাথেই তার বাসায় হাজির হবো তার আগে নয়।কিন্তু তুমি যদি এখন তোমার বাসায় যাও তাহলে আমার প্রেস্টিজ একেবারেই ফেলুদা হয়ে যাবে তাও আবার নিজের শশুরের কাছে।তুমিই বলো তোমাকে আমি কিভাবে ওই বাসায় যেতে দিই?আর তাছাড়াও আমার এখনও অনেক প্লেনিং বাকি আছে আর…
আকাশ এতক্ষন যা যা বলছিল সব তৃষার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছিল,,এবার সে আকাশকে থামিয়ে নিজের মাথায় চাপর মারতে মারতে বলে উঠলো-;
-:উফফফফফফ আমি পাগল হয়ে যাবো।
-:নো জান আমি থাকতে তোমাকে কিছুতেই পাগল হতে দেব না।
-:এই একদম চুপ,,চুপ আপনার এই বকবক আমাকে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে।
-:কেন জান।(ইনসেন্ট ফেসে)আমি কি করলাম।
তৃষা এবার মাথা নিচু করে চার-পাঁচটা নিঃশ্বাস ফেলল,,তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-: আপনার মতোন পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্যের সাথে কথা বলার এনার্জি আপাতত আমার কাছে নেই।সো আমি এখন ফ্রেশ হতে যাচ্ছি আমার প্রচুর মাথাব্যাথা করছে।
-:ওও ওকে যাও।আমি কি তোমাকে ওয়াশরুম পর্যন্ত ছেড়ে আসবো??
এই বলে তৃষার দিকে আসতে নিলেই তৃষা ঝটপট আকাশের কাছ থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে বলে উঠলো-;
-:না না তার কোনো প্রয়োজন নেই আমি একাই যেতে পারবো।
এই বলে তৃষা তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমের ভিতর ঢুকে গেল।আকাশ তৃষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাহা হুহু করে হাসতে লাগলো,,তারপর হাসি থামিয়ে বলে উঠলো-;
-:ক্ষমা তো তোমাকে আমায় করতেই হবে তৃষু কারণ তুমি #মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
.