মিশে আছো আমার অস্তিত্বে

মিশে আছো আমার অস্তিত্বে !! Part-05

আজ‌ও আকাশ রাতে দেরি করে ফিরলো,,তৃষা আকাশের দেরি করে ফেরার কারণ জিজ্ঞেস করতেই,,সে তৃষার দিকে কটকট চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:শোনো তোমাকে আজ একটা কথা স্পষ্ট করে বলে রাখছি,,আমি কোথায় যাবো,,কখন ফিরব,, কি করব এই সমস্ত কিছু তোমার না জানলেও চলবে।আর এর কৈফিয়ত আমি তোমাকে দিতে বাধ্য নয়।তোমাকে যে কাজের জন্য এখানে আনা হয়েছে সেই কাজটা ভালোভাবে করলে আমি বেশি খুশি হবো।
আকাশের কথায় তৃষা কষ্ট পেলেও,নিজেকে সামলে বলে উঠলো-;
-:আচ্ছা আপনি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিন।আমি ডিনার রেডি করছি।
-:আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি।আর রোজ রোজ আমার জন্য না খেয়ে তোমাকে থাকতে হবেনা।রোজ রোজ এরকম ন্যাকামি আমার ভাল লাগে না।এবার থেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না এইসব বিষয়।
এই বলে আকাশ টাওয়াল নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেল।আকাশ চলে যাবার পর তৃষা নীচে গিয়ে সমস্ত কিছু গুছিয়ে রুমে চলে এলো।রুমে এসে দেখলো আকাশ বারান্দায় দাঁড়িয়ে কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে।ফোনে কথা বলার ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে সে এতরাতে কার সাথে কথা বলছে।
প্রায় কুড়ি মিনিট পর আকাশ রুমে এসে দেখলো তৃষা খাটের উপর বসে আছে।আকাশ কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলে উঠলো-;
-:উফ্ তোমার সমস্যা কী বলতো??কাল নিজে বললে যে তুমি সোফায় শুতে চাও আজ আবার বিছানায় বসে আছো।সারাদিন বাড়িতে বসে থেকে তোমার ঘুম নাই আসতে পারে কিন্তু আমি তো আর তোমার মতোন শুয়ে থাকি না সারাদিন কাজ করে আমি এখন যথেষ্ট টায়ার্ড।সো এখন আমি ঘুমাবো।
আকাশের কথা শুনে তৃষা চট করে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো-;
-:না না আমি বিছানার শোবো বলে এখানে বসে নেই।আ..আসলে আ..আমি বল..বলতে চাইছিলাম যে বাবাকে অনেক দিন দেখিনি তাই যদি কাল আপনি আমাকে নিয়ে ওবা..ওবাড়ি যেতেন তাহলে..
তৃষাকে থামিয়ে আকাশ প্রচন্ড বিরক্ত নিয়ে বলে উঠলো-;
-:এই শোনো প্রথমে তোমার বাবার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমি।কিন্তু তিনি নিজেই অ্যাটিচিউড দেখিয়ে চলে গিয়েছেন ওখান থেকে।আর কী বললা তোমাকে নিয়ে আমি ওনার বাড়ি যাব ইম্পসিবল!!সেটা তুমি স্বপ্নেও ভেব না।এমনিতেই তোমাকে আমি নিজের স্ত্রী বলেই মানিনা আর তুমি আসা করলেই বা কি করে যে আমি ওমন মানুষের বাড়ি মুখো হবো যে কিনা আমাকে অপমান করেছে।আরে নিজেই তো বেঁচে আসে আমার দয়ায়।
আকাশের এই কথাটা তৃষার মনে গিয়ে বিঁধলো,,কিছুটা জোরে বলে উঠলো-;
-:দেখুন মিস্টার আকাশ আপনি আমার বাবার ট্রিটমেন্ট ফ্রিতে করে দেননি,,তার বিনিময়ে আপনি ও আপনার মায়ের জন্য একজন টেম্পরারি কাজের লোক‌ পেয়েছেন যে কিনা আপনার মাকে ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দেবে।
তৃষার কথায় আকাশ রেগে তৃষার বাহু শক্ত করে চেপে ধরে নিজের অনেকটা কাছে নিয়ে এসে বলে উঠলো-;
-:হাউ ডেয়ার ইউ আমার অসুস্থ মাকে নিয়ে এইভাবে বলার সাহস তোমায় কে দিল??
-:ঠিক এক‌ই কথা যদি আমি আপনাকে বলি আমার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করার অধিকার আপনাকে কে দিল??
-:ইউ!!(প্রচন্ড রেগে)তোমার বাবার সাথে আমার মার কম্পেয়ার করো কীভাবে তুমি??
-:কেন??আপনার মা,,মা আর আমার বাবা,,বাবা নয়??শুনুন আমি মাকে এইভাবে বলতে চাই নি কিন্তু আপনার ব্যবহারই আমাকে বলতে বাধ্য করলো।কখনো অন্যর বাবা-মাকে হেয় করবেন না। ষকারণ সব বাবা-মা ই সমান।নিজের বাবা-মাকে সবাই ভালোবাসে।আপনি যেমন মায়ের জন্য আমার সাথে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ করেছেন ঠিক তেমনি আমি আমার বাবাকে বাঁচাতেই আপনার সাথে বিয়ে বিয়ে খেলা খেলছি।পাল্লায় হিসাবে দেখলে কিন্তু দুজনার পাল্লা এবং সার্থ এক‌ই।
আকাশ কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছেনা কারন তৃষা যা সব কথাই সত্য।আকাশ কিছু বলতে যাবে তার আগেই বলে উঠলো-;
-:আপনাকে যেতে হবে না আমি নিজেই যেতে পারবো।
এইবলে নিজেকে আকাশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে সোফায় শুয়ে পরলো।আকাশ কিছুক্ষণ তৃষার দিকে তাকিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।
.
.
পরেরদিন সকালে তৃষা নিজের শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজের বাবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। আকাশের মা অনেক করে বলাই তৃষা গাড়ি নিয়ে বের হয়েছে।কিছুটা দুর যেতেই তৃষা ভাবলো তার বাবা-মা আর ভাইয়ের জন্য কিছু শপিং করে নিয়ে যাবে সেইজন্য ড্রাইভারকে গাড়িটা শপিং সেন্টারের দিকে নিয়ে যেতে বলল।শপিং মলের সামনে গাড়িটা থামতেই,,,তৃষা ভিতরে চলে গেল।
শপিং শেষ শপিং ব্যাগ গুলো কাউন্টার থেকে চেকিং করিয়ে বাইরে বেরতে যাবে এমন সময় কিছুটা দূরে একজনকে দেখে তৃষা অবাক হয়ে গেল।সে ভাবতেই পারছে না এ ও কী সম্ভব!!
.
.
.
.