1. নতুন গল্পঃ3. রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃমায়াবিনীলেখাঃ নিলয় রসূল

মায়াবিনী !! লেখাঃ নিলয় রসূল

লেখাঃ নিলয় রসূল
প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও..দয়া করে এমন করোনা.. আ..আ..ওমাগো..আল্লাহ্‌ রে আ আ বাচাও.. রা,,রাজীব তোমার পায়ে পড়ি আমাকে ছেড়ে দাও…
: চোপ কুত্তি…হারামী তোর সাহস দিন দিন বেড়েই চলেছে..কি ভেবেছিস একের এক অন্যায় করে যাবি আর আমি বুঝতে পারবনা..কি মনে করেছিস তুই..
বলেই আবারও অয়নীকে বেধরক ভাবে মারতে লাগলো রাজীব।
একসময়কার চোখে হারানো অয়নীই আজ তার চোখের বালি…!
অয়নী আবারও রাজিবের পা চেপে ধরে আকুতি মিনুতি করে বলতে লাগলো
: রা,,রাজীব খুব লা,,লাগছে..প্লিজ….!
: কুত্তি তোকে আমি আদর করার জন্য মারছি নাকি…
: রাজীব তু,,তুমি কে,,কেনো…ওমাগো লাগছে রাজীব ছাড়ো আমাকে,, আ..আ..আল্লাহ্‌ গো বাচাও..(উচ্চস্বরে আর্তনাদ করছিলো)
: আজ তোকে…
: তোমার ভূল হচ্ছে রাজিব আমি কি..কি..কিছু করি….আস্তে আ..আ..মরে গেলামগো..আল্লাহ্ গো ও..ও…..
আর্তনাদটা বেড়েই চলছিলো চারপাশের পরিবেশটা আর্তনাদের শব্দে ভারী হয়ে উঠেছিলো।
রাজীব: আবার মুখে মুখে তর্ক করছিস। তোর তো সাহস বেড়ে গেছে রে..ডানাটা এবার ভাঙ্গতে হবে..!
অয়নী: আ ওমাগো..রাজীব তোমার ভূল হচ্ছে কোথাও,,এরকম করোনা..তোমাকে কেও ভূল বুঝিয়েছে…
রাজীব: কি বললি হারামজাদী আমার মা আমাকে ভূল বুঝিয়েছে..আজ তোকে জন্মের শিক্ষা দিয়ে দেবো..
অয়নী: রাজীব তুমি তো আগে এ,,এমন ছিলেনা..সেই প্রথম দিন থে…. আ রাজীব দোহায় তোমার আমাকে ছেড়ে দাও..প্লিজ..
রাজীব: চুপ করবি,নাকি জন্মের মতো চুপ করবার ব্যাবস্থা করবো..
অয়নী: রাজীব….!
রাজীব: আমার মা তোকে বলেছিলো তোর বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা আনতে আর তুই মা কে যা নয় তাই বলে অপমান করেছিস…!
অয়নী: কক্ষনো না,,আমি বলেছিলাম বাবা আমাকে ত্যাজ্য কণ্যা করেছিলো। সুপ্ত হবার পর তাকে মেনে নিয়েছেন যদিও আমাকে নিয়েছে কি না জানি না। তারপরও তোমাদের কথা শুনে বাবার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা এনেছিলাম ধার বলে আর তুমি কি করলে নেশা করে জুয়া খেলে মেয়েমানুষ নিয়ে ফুর্তি করে শেষ করেছো তবুও আমি কিছু বলিনি আমি যে হাত পা বাধা অবস্থায় জলে পড়ে আছি,,মরে গেলেও আমি আর এক টাকাও আনবোনা….
রাজীব: হা হা..তাহলে তোর কপালে সেইটায় আছে..
তখন প্রায় শেষ রাত..চারিদিকে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছিলো শুধু অয়নীর বুক ফাটা আর্তনাদ ছাড়া। আর তার সাথে যোগ দিয়েছিলো দূরে মাঠে থাকা শেয়াল গুলো তারাও তাদের মতো ডাকছিলো হয়তো এটাই বুঝাতে চাচ্ছিলো “ওরে..কাদিস না রে..তোদের মানুষ জাতটাই এরকম,,তোদের নীতি টা এরকম,, “”
দূর্বল রে করো নিপীড়ন
ধনীদের করো তোষামদ,
তবেই তো হবে তোমার জীবনটা রঞ্জন..””
রাতে ঝি ঝি পোকার ডাকে যেমন সবাই অভ্যস্ত তেমন মাঝ রাতে অয়নীর আর্তনাদেও পাড়ার সবাই এখন অভ্যস্ত..আর কেও কিছু বলেনা আর না করে কোনো প্রতিবাদ..
অনেকে আবার আড়ালে বলে ” ওই মিয়া মানুষেরই দোষ আছি,,নয়তো কেউ ওরাম করে কুনদিন,,”
আরেকজন আবার বলে “হ আপা ঠিকই কইছেন আমার তো মুনি হয় ওইডা নষ্ট মাইয়া..দেখেননা পাড়ার ছেইলেদের দিকে জানালা ধইরে তাকাইয়ে থাকে…!” ছিঃ কি মাইয়ারে বাবা
” হ আফা ইর একটা বিহিত হুয়া দরকার..!”
ভোর রাতে আজান হওয়ার এখনো দেরি আছে তবে মোয়াজ্জেন রোজ আগেই মসজিদে যায়। আর এই বাড়িটার দিকে একবার করুণ চোখে তাকায় শুনতে পায় ভয়াবাহ আর্তনাদধ্বনি,, তার চোখে কোন দিয়ে নোনা জল গড়িয়ে পরে আর বার বার বলতে থাকে
” আহারে..!”
এমন সময় সুপ্ত, অয়নীর বাচ্চা কেঁদে উঠলো।
অয়নী: রাজীব, আমাকে ছেড়ে দাও
সুপ্ত কাঁদছে,, ওর খিদে লেগেছে..আমাকে ছাড়ো…!
রাজীবের কানে কোনো কথায় যাচ্ছেনা। সে বেল্ট দিয়ে আঘাত করছে সর্বাঙ্গে,,আর কিছু জায়গায় চামড়া ফেটে বের হচ্ছে রক্ত…!
শেষে অয়নী আর সহ্য করলান একটা চড় মারলো রাজীবকে,
অয়নী: (চিল্লিয়ে) ওইটুকু বাচ্চা কি দোস করেছে,,তুমি ওকে কেনো শাস্তি দিচ্ছো..! ছিঃ..!
রাজীব এবার হিংস্র প্রাণির রূপ নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লো অয়নীর ওপরে হায়েনার মতো,,শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে অয়নীর লম্বা কেশগুলো মুঠোবন্দী করে বেল্ট দিয়ে অয়নীকে আঘাত করতে লাগলো সর্বাঙ্গে….
মার খেয়ে অয়নীর শরীরে অনুভূতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছে..,,শরীর অসার হয়ে গেছে তবুও অয়নী ভাবছে ” সেদিন যদি ওর কথাটা যদি একটি শুনতাম, ,,তাহলে আজ আমাকে এই দিন..!”
বাকী কথা ভাববার সুযোগ পেলনা..তার আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো অয়নী নামক মেয়েটির অনুভুতিহীন দেহ…!
মাটিতে অচেতন হয়ে পড়ে রইলো সে রাজীব ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তাকে লাথি দিয়ে চলে গেলো…!
আকস্মিক ভাবে তখন দূরে থাকা শেয়াল গুলো আবারও একসাথে ডেকে উঠলো হয়তো তারাও বললো
“সেদিন ওর কথাটা শুনলেই পারতিস রে….!”
অয়নী উপুড় হয়ে পড়ে রইলো মেঝেতে…
আর এদিকে বাচ্চার বুকফাটা ক্রন্দন ক্রমগত বেড়েই চলেছে….!
কিন্তু পরের দিন সকালটা যে তার জন্য কতো ভয়বাহ ছিলো তা হয়তো তার ধারনার বাইরে ছিলো…..
< <<চলবে>>>

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *