ভালোবেসে মরেছি

ভালোবেসে মরেছি – Part- 23 (Last-Part)

অর্নি পেছন ফিরে দেখে শাফিন পিস্তল হাতে দাড়িয়ে আছে।
ব্যাপারটা কষ্টের হলেও আজ গিয়ে শান্তি পেল অর্নি। নিজের বাবা ও বাগদত্তার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিল আজ।
আশরাফ আহমেদ সেই আদনানের মত গোঙরাতে গোঙরাতে মারা গেলেন।
পাশে বসেই ওনার স্ত্রী কান্নাকাটি করতে লাগলেন।
অর্নবের চোখ বেয়ে জল পড়লেও তা বলা যেতে পারে খুশির কান্না। নিজের বাবাকে এমন শাস্তি দেওয়া কোন সন্তানই চাইবে না তবে ওর বাবা যে “বাবা” ডাকটি শোনার যোগ্যতাও রাখেনা।
অর্নি যতটা সাহসী ততটাই ভয়ংকর। তবে আজ সে কেঁদে দিয়েছে।
কাদতে কাদতে সে ফ্লোরে বসে পড়ে।
অর্নব ওর কাছে এসে বসে গালোত রেখে বলে,
–কেদোনা অর্নি। আজকে তোমার কাজ পূর্ন হলো। আজ থেকে আর কখনো কারও রক্ত ঝড়াতে হবে না তোমায়। কাদছ কেন?
–আমার আপন বলতে কেউই রইল না। সবাই আমাকে ছেড়ে চলে গেল।বাবার চলে যাওয়ার পর একমাত্র ছোট আব্বুই ছিল যাকে আমি এতটা বিশ্বাস করতাম। আর সেই আমায় এত বড় ধোকা দিল?
–দেখ, তোমার ছোটআব্বু তার কর্মের শাস্তি পেয়েছে। এখন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আর কে বলেছে তোমার কাছের বলতে কেউ নেই?।আমি তো আছি। আমায় ভুলে গেলে?
অর্নি কাদতে কাদতে অর্নবকে জড়িয়ে ধরে।

…..
আশরাফ সাহেবের লাশ গুম করে দেওয়া হয়। এবং ওনার স্ত্রীকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এসবের পর চৈতি, তিথি ও বিপুলকে অর্নি সব বিষয় খুলে বলে৷
ওরাও খুবই অনুশোচনা করে। তবে তিথি আরেকটা বিষয়ে খুব দুঃখ পায়, অর্নব কে পাওয়া হলোনা। ওরা সবাই মিলে এসব নিয়ে খুবই হাসাহাসি করে।
…….
আজ আবারও অর্নির বাড়িটা জমকালো সাজে সাজানো হয়েছে। সবকিছু অবশ্য তিথি ও চৈতিই করেছে।
আসলে আজ অর্নব ও অর্নির বিয়ে। ধুমধাম করে হচ্ছে। অর্নির পক্ষ থেকে তিথি ও চৈতি এবং অর্নবের পক্ষ থেকে বিপুল ও শাফিন।
অর্নবের পাশে বাবা না থাকলে কি হবে নিজেই পড়শুনা করে অর্নির প্রায় সমানই ধনী বলা চলে।
আজ ওদের ধুমধাম করে বিয়ে হচ্ছে।

_____
একটা ডার্ক গ্রিন কালারের লেহেঙ্গা যার ওপর সোনালী পাথরের কাজ করা,এবং গর্জিয়াস মেকআপ এ অর্নিকে দেখতে দারুন লাগছে।
অর্নব সোনালি রংয়ের একটা শেরওয়ানি পড়েছে।
দেখতে দুজনকেই দারুন লাগছে।
বিয়ের কাজটা ভালোয় ভালোয় হয়ে গেলে অর্নি নিজের বাড়ি থেকে বিদায় নেয়। এবং গাড়ি করে অর্নবের নিজের বাংলোতে চলে আসে।
ওর বাংলোটাও ভীষন সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ঠিক যেমনটা অর্নি পছন্দ করে।
শাফিন ও বিপুল গাড়ি থেকে নেমে বাড়িতে ঢুকে আবার ওদের স্বাগতম জানাতে তৈরী হয়ে যায়।
বাড়িতে ঢুকে অর্নব অর্নিকে কোলে করে রুমে চলে যায়।
….
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে জামাকাপড় পাল্টে শুয়ে পড়লো অর্নব। অর্নবকে ঘুমোতে দেখে অর্নি বলল,
–না ঘুমিয়ে চল না ছাদে যাই। দেখো কি সুন্দর চাদ উঠেছে।
–আর না গো,খুব ঘুম পাচ্ছে সারাদিনে যা ধকল গেছে। আগে জানলে এভাবে বিয়েই করতাম না।
–কি বললে?(রাগীভাবে অর্নবের দিকে তাকিয়ে)
–আচ্ছা ওকে, রাগ করো না।চল ছাদে যাই কেমন?সেটাই বেটার হবে(মুচকি হেসে)
–হুম চল।
এই বলে দুজনে পা বাড়াবে ঘরের বাইরে সে সময়ই অর্নির ফোনে নতুন নম্বরটিতে টুং করে একটা মেসেজ আসে।
ফোন তুলে মেসেজটি পড়ে ওরা দুজনেই। এবং দুজনেই অনেকটা কনফিউজড।
কারন মেসেজে লেখা আছে,
“শেষ হয়েও হলোনা শেষ। কারন এখনো আমি আছি।”
ওরা দুজনে অতশত না ভেবে ছাদের উদ্দেশ্য পা বাড়ায়। নতুন জীবনের একটা সুন্দর সূচনার দিকে।

★আসসালামু আলাইকুম। বিদায় নিলাম গল্পটি থেকে।এই প্রতিটি ক্যারেক্টারকেই যতটা পেরেছি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।আপনাদের অনেক ভালোবাসাও পেয়েছি গল্পটা লিখে।মিস করবো গল্পের প্রতিটি ক্যারেক্টারকে।বিশেষ করে অর্নব এবং অর্নিকে।আপনাদের কাছে মনে হতে পারে গল্পের শেষে কিছু একটা মিস্ট্রি আছে। হ্যা আছে। এই ভালোবেসে মরে যাওয়ার খেলার এই পর্যায়ে না হয় কথাগুলো অব্যক্তই থাক।আবারো হয়ত আসবো এর সিজন টু নিয়ে।।ততদিন পাশেই থাকবেন।
ধন্যবাদ।
হ্যাপি রিডিং☺

 

 

বিঃ দ্রঃ “ লেখাঃ আশুরা আক্তার আনু ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন !!

এক পলকে দেখে নিন সহজে গল্প খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে দেওয়া হল