ভালোবেসে তারে

ভালোবেসে তারে !! Part- 13

রাফিতের সবকিছুতেই আমি কেমন যেনো একটা রহস্য রহস্য টাইপ গন্ধ পাচ্ছি।আমার সাথে তার এতো ভালো ব্যাবহার,সরি বলা,আমার কেয়ার করা,আবার আম্মাকে এখানে আনা।সব যেনো কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।কিছু একটাতো তার মাথায় চলছেই।কিন্তুু কি?

রাফিত একটু বাইরে গিয়েছে।আমি রুমের মধ্যে বেডে আধশোয়া হয়ে যখন এসব ভাবছিলাম তখনই কেউ দরজায় নক করে।তাকিয়ে দেখি আমার শ্বাশুরী আম্মা।আমি তারাতারি করে উঠে বসে মুচকি হেসে উনাকে বললাম,

“আরে আম্মা আপনি।আসুন না। নক করে আসার কি আছে।এ বাড়িটা যেমন আপনার তেমনি এ বাড়ির প্রতিটা রুমও আপনার।”

উনিও আমার কথায় হালকা হেসে ভেতরে ঢুকলেন।তারপর আমার পাশে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

“আমি জানি রাফিত এতোদিন তোকে ভুল বোঝেছে।তাকে কতোবার বলেছি আমি তোর মতো একটা মিষ্টি মেয়ে কখনো এই কাজ করতেই পারিসনা।কিন্তুু সেতো সেই।তবে গতকাল যখন আমাকে রাফিত ফোনে বলল তোকে নিয়ে তার সকল ধারনা ভুল তখন এতো ভালো লেগেছিলো যে বলে বোঝাতে পারবোনা তোকে।যাক ওসব কথা।বিয়ের পরতো তোকে কিছুই দিতে পারিনি তাই আমার পক্ষ থেকে তোদের জন্য ছোট্ট একটা উপহার।”

বলেই উনি আমার দিকে একটা গয়নার বক্স এগিয়ে দিলেন।আমি বললাম,

“এটার কোনো প্রয়োজন ছিলোনা আম্মা।তাও অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।আপনি যে আমাকে ভালোবেসে দিয়েছেন এটাই আমারা কাছে অনেক।”

উনি এবার আমার হাত ধরে বললেন,

“আমার একটা কথা রাখবি মা।”

“আপনি যা বলবেন তা আমার সাধ্যের মধ্যে হলে অবশ্যই রাখবো।”

“তোর সাধ্যের মধ্যেই।”

উনি আমার দিকে একটা খাম এগিয়ে দিলেন।আমি জিজ্ঞেস করলাম,

“এটাতে কি আছে আম্মা?”

“তোর আর রাফিতের জন্য জাপানে হানিমুনে যাওয়ার টিকেট।আমি করিনি।রাফিতই করেছে।কিন্তুু ও তোকে বললে নাকি তুই রাজি হবিনা।তাই আমাকে দিয়ে পাঠিয়েছে।তোরাতো বিয়ের পর কোথাও যাসনি তাই।প্লিজ তুই মানা করিসনা।”

আমি ওনার অনুরোধটা আর ফেলতে পারলামনা।তাই রাজি হয়ে গেলাম।

রাতে,,,,,,,,

রাফিতের ও আমার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাপড়চোপড় ভাজ করে লাগেজে রাখছি।রাফিত সোফায় বসে ল্যাপটপে কি যেনো করছে।কালই আমাদের ফ্লাইট।আম্মা আজই এলো আর কালই আমরা চলে যাচ্ছি ব্যাপারটা আমার কাছে একদম ভালো লাগছেনা।ভেবেছিলাম ওনার সাথে একটু সময় কাটাবো।কিন্তুু সেটাও খাটাসটার জন্য আমার কপালে জুটলোনা।তাই খানিকটা মন খারাপ আমার।কয়দিনের জন্য যাচ্ছি তাও আমি জানিনা।

আজকের রাতটাও তার সাথে কথা না বলেই কেটে গেলো।রাফিত খাটের ওপাশে আর আমি এপাশে।সেও আমার সাথে আর কথা বলার কোনো ট্রাই করেনি।
,
,
,
,
,
পরেরদিন সকালে,,,,

আমার শ্বাশুরী আম্মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি ও রাফিত বেরিয়ে পড়লাম জাপানের উদ্দেশ্যে।সবকিছু এতো তারাতারি হচ্ছে যে আমি কিছু বোঝে ওঠতে পারছিনা ঠিক কি হচ্ছে আমার সাথে।

গাড়ি তার আপন গতিতে চলছে।রাফিত একমনে ড্রাইভ করছে ও আমি হেলান দিয়ে বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে প্রকৃতি অনুভব করছি।অনেকক্ষন পর হঠাৎ খেয়াল করলাম এয়ারপোর্ট এসে পরেছে।কিন্তুু একি রাফিত এয়ারপোর্টে গাড়ি থামালোনা।আমাদেরতো এয়ারপোর্টে নামার কথা।তাহলে গাড়ি থামলোনা কেনো?আমি আর চুপ করে থাকতে পারলামনা।আমি উত্তজিত হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেই ফেললাম,

“একি রাফিত আমাদেরতো এয়ারপোর্টে নামার কথা।তাহলে আপনি গাড়ি থামালেন না কেনো?কোথায় যাচ্ছি আমারা?”

না সে কিছুই বলছেনা।আমার কথা শুনে সে শুধু একটা বাকা হাসি দেওয়া ছাড়া আর কোনো রিয়েকশান দিলোনা।কি করতে চাইছে সে?তবে গন্ডগোল একটা আছেই।আমি চেচিয়ে তাকে বললাম,

“রাফিত গাড়ি থামান আমি কোথাও যাবোনা আপনার সাথে।থামান বলছি।”

এবার সে ড্রাইভ করতে করতে বলল,

“ওহহো দিশা সোনা তুমিতো দেখছি বড্ড বেশি কথা বলো।আসল টুইস্টতো এখনও বাকি।সো ওয়েট না।আর এখনে নেমেই বা তুমি যাবে কোথায়?কাকে চেনো তুমি এখানে শুনি।তাই চুপচাপ বসে থাকো।কিপ সাইলেন্ট ওকে।”

তার কথা শুনে আমি ধপাস করে আমার সিটে হেলান দিয়ে বসে পড়লাম।তার মানে আবারও আমার সাথে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।আমি আগেই কিছুটা আন্দাজ করেছিলাম তার এইরকম ভালোমানুষির পিছনে কিছুতো লুকিয়ে আছে।এবার সিউর হলাম।তাহলে গতকাল থেকে যা যা করলো ওসবের মানে কি ছিলো।আর কেনোই বা করলো?(হেলান দেওয়া অবস্থায় মাথার চুলগুলো আকড়ে ধরে)ওফফ আমি জাস্ট আর ভাবতে পারছিনা।চোখ দিয়ে আমার দু এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।

সে আবারও বলল,

“নিজের ব্রেনের উপরে এতো জোর দেওয়ার দরকার নেই।একটুপর সব বোঝতে পারবে।তাছাড়াও আজ তোমার ব্রেনের উপর খুব ধকল যাবে।সো এখন বেচারাকে রেস্ট করতে দাও সোনা।”

মুখে তার আবারও সেই বিখ্যাত বাকা হাসি।যার পেছনে লুকিয়ে আছে হাজারও রহস্যে ঘেরা জাল।আবারও কি ভয়ংকর কিছু ঘটবে আমার সাথে।ভাবতেই আমার অন্তরাত্মা কেপে কেপে উঠছে।

এসব ভাবতে ভাবতেই গাড়ি চলাকালীন বাইরে রাস্তার ধারে লাগালো একটা বোর্ডের উপর নজর পরলো আমার।যেখানে বড় বড় করে লিখা “ওয়েলকাম টু ফেনী”।তারমানে আমরা এইমাত্র ফেনীতে প্রবেশ করলাম।কিন্তুু দেশে এতো জায়গা থাকতে এখানে কেনো?হোয়াই?আর জাপান যখন যাবেইনা তো এভাবে মিথ্যে বলে আনলো কেনো?রাফিত কি করতে চাইছে আমার সাথে?না আমার মাথা আর কাজ করছেনা।…………………

to bo continued………………

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *