1. নতুন গল্পঃ3. রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃভালোবেসে তারেলেখাঃ আরওয়া ফারিন

ভালোবেসে তারে !! লেখাঃ আরওয়া ফারিন

ভালোবেসে তারে

“বাহ!দরজা-জানালাতো বেশ ভালোই খোলে রেখেছো দেখছি।তা পুরোটাই খুলে ফেলোনা।লোকে ভালো করে দেখতে পাবে।”
কথাটা শুনে আমি কিছুক্ষন রাফিত এর দিকে তাকিয়ে রইলাম।উনার এই শান্ত গলায় বলা কথাটাও যেনো আমার বুকটা চিরে বের হলো।উনার কথাটা বোঝতে একটু সময় লাগলেও ঠিকই বোঝতে পারলাম কথাটা উনি আমাকেই বলেছেন।আর দরজা-জানালা বলতে যে উনি আমার কাপড়কেই বোঝিয়েছেন তা আর বোঝতে বাকি নেই আমার।আসলে আমি শাড়ির সাথে যেই ব্লাউজটা পড়েছি তার গলাটা পেছনের দিক দিয়ে অনেকটাই বড়।যার কারনে আমার পিঠের সাইডটা বেশ খানিকটা দেখা যাচ্ছিলো।আমার শাড়ির সাথে আর কোনো ম্যাচিং ব্লাউজ ছিলোনা।যার কারনে এইটাই পড়তে হয়েছে।অবশ্য চুলটাও ছেড়ে দিয়েছিলাম।কিন্তুু গরমের কারনে কিছুক্ষন আগে খোপা করি।

রাফিত আমাকে অপমান করে এটা নতুন কিছুনা।তবে এইরকম বাজে কথা সে আজ প্রথম বললো আমাকে।

আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে।

(আমি দিশারি রহমান ফারিন।ডাকনাম দিশা।আর রাফিত হলো আমার নামমাত্র হাসবেন্ড।পারিবারিক ভাবেই বিয়েটা হয়েছিলো আমাদের।তবে তার ব্যবহারে আমার কেনো যেনো মনে হয় সে আমাকে আরও আগে থেকেই চেনে।দুই মাসের বিয়েতে উনি আজ অবধি আমাকে স্ত্রীর অধিকার দেওয়াতো দূরে থাক আমাকে অপমান ছাড়া আর কিছুই দেয়নি।এর কারনটা পর্যন্ত আমার কাছে অজানা।উনি কেনো আমার সাথে এমন করছেন এর কিছুই আমি জানিনা।)

(বিঃ দ্রঃ “ ভালোবেসে তারে !! লেখাঃ আরওয়া ফারিন ” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)

কিছুক্ষন আগে,,,,,

আজ আমার বেস্টফ্রেন্ডের বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এসেছিলাম।অবশ্য রাফিতের সাথে নয়।আমার ফ্রেন্ডের ভাইয়ের বন্ধু উনি।সেই সুবাধেই উনিও ইনভাইটেড।আমি উনার সাথে আসতে চাওয়ায় উনি আমাকে সাফ মানা করে দিয়েছেন উনি আমাকে কারও সামনে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবেননা।তাই আমিও আর এ নিয়ে কিছু বলিনি।উনি আমার আগেই এখানে চলে এসেছেন।
,
,
,
গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলাকালীন এক কোণে দাড়িয়ে ছিলাম।একটা ছেলে বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে গায়ের উপর পরছিলো আমার।খুব রাগ হচ্ছিলো।কিন্তুু লোকজন থাকার কারনে কিছু বলতেও পারছিলামনা।রাফিতকেও কোথাও দেখতে পাচ্ছিনা।খেয়াল করলাম আমার শাড়িটাও কোমর এর সাইড দিয়ে একটু সরে গেছে।তাই এই পরিস্থিতি এড়াতে আমি ওয়াশরুমের দিকে চলে গেলাম।

আয়নার সামনে দাড়িয়ে শাড়ি ঠিক করছি।এমন সময় অনুভব করলাম আমার পিঠে কেউ খুব বাজেভাবে টাচ করলো।আমি পিছনে ফিরেই পুরোপুরিভাবে আতকে উঠলাম।কারন ওই ছেলেটা এখান অবধি চলে এসেছে।কাপা কাপা গলায় বললাম,

“আ..আ..আপনি ”

কিন্তুু ছেলেটা কিছু না বলে আমার দিকে এগুতে লাগলো।সে যখন হাত বাড়িয়ে আমার কোমর স্পর্শ করতে যাবে তখনই কেউ খপ করে তার হাতটা ধরে ফেললো।পাশে তাকিয়ে দেখি রাফিত।রাফিতকে দেখেই আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরতে লাগলো।একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম আমি।যেনো প্রাণটা আবার ফিরে পেলাম।

তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে চরম রেগে আছে।সে ওই ছেলেটার নাক বরাবর একটা ঘুষি মারলো।যার ফলে তার নাক দিয়ে রক্ত পরছে।সে ছেলেটাকে বেধরামভাবে মারছে আর বলছে,

তোর সাহস হলো কি করে ওকে টাচ করার?বল?তোর কলিজাটা আজ আমি বের করে দেখবো কত বড়।তুই কার জানে হাত দিয়েছিস তুই জানিসনা।(প্রচন্ড রেগে)

আমি রাফিতকে থামানোর প্রানপন চেষ্টা করছি।কিন্তুু কোনো কাজ হচ্ছেনা।অবশেষে আর না পেরে চিৎকার করে বললাম,

“রাফিইইইইত থামুওওওওওওন।”

আমার চিৎকারে যেনো কাজ হলো।রাফিত ছেলেটার কলার এক হাতে ধরা অবস্থাতেই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।ততোক্ষণে ছেলেটা তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়।ধাক্কায় রাফিত টাল সামলাতে না পেরে নিচে পরে যায়।আমি গিয়ে তাকে ওঠানোর জন্য ওনার হাত ধরতেই উনি ঝারি মেরে আমার হাত ছাড়িয়ে নিলেন।তারপর উঠেই তিনি শান্ত গলায় ওই কথাটা বললেন।
,
,
,
,
,
এখন,,,,

বাড়িতে ঢুকেই রাফিত আমাকে রুমে নিয়ে এসে আমার হাতটা ধরা অবস্থাতেই আমাকে সামনের দিকে ছুড়ে মারলো।তারপর ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।দরজার শব্দে আমি কেপে ওঠলাম।আমার কপালে যে আজকে দুঃখ আছে তা বেশ ভালো করেই বোঝতে পারছি।তার চেহারা দেখেই আমার হাত-পা কাপছে।আজ অবধি তাকে আমি এভাবে রাগতে দেখিনি।এখন কি করবে কে জানে?

সে আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার মুখটা তার উল্টো দিকে ফিরিয়ে তার হাতদুটো দিয়ে আমার হাতদুটো সামনের দিকে চেপে ধরে আমার পিঠটা বুকের সাথে ঠেকিয়ে তার সাথে মিশিয়ে নিলো।তারপর তার থুতনিটা আমার কাধে রেখে বেশ শান্ত গলায় বলল,

“তা কি যেনো বলছিলে তুমি তখন?ঠিক শুনতে পাইনি।কাইন্ডলি আবার রিপিড করতো।”

আমি এদিকে রীতিমতো কাপছি।আমি জানি তার এরকম শান্তভাবে কথা বলার মাঝেও লুকিয়ে আছে প্রচুর রাগ।কারন এই কয়দিনে তাকে এটুকুতো আমি চিনেছিই।

সে এবার আমাকে ওই অবস্থায়ই দেয়ালের সাথে জোড়ে চেপে ধরলো।তারপর সে তার মাথাটা আমার মাথার সাথে চেপে ধরে তার হাত দুটো এবার আমার কনুই এর উপরের অংশে খুব শক্ত করে ধরলো।এদিকে আমার গালটা দেয়ালের সাথে লেগে থাকায় খুব ব্যাথাও লাগছে।কিন্তুু সেদিকে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।সে এবার খুব রেগে চিৎকার করে বলল,

“কি হলো কথা বলছিসনা কেনো এখন হে?তখনতো খুব জোরে চিৎকার করে আমাকে থামতে বলছিলি।তা এখন বলনা থামতে।বল।কি হলো চিৎকার কর এখন।”

আমি এবার কেদে কেদে বললাম,

“রাফিত কি করছেন কি?ছাড়ুন আমাকে আমার খুব ব্যাথা লাগছে। প্লিজ ছাড়ুন আমাকে।”

“কেনো আমি ধরলেই তোর ব্যাথা লাগে?খুব ভালো লাগে না তোর পরপুরুষের সাথে ঢলাঢলি করতে।এখন আমি টাচ করছি বলেই তোর ভালো লাগছেনা তাইনা।পরপুরুষকে শরীর দেখানোর জন্যইতো এতো বড় গলার ব্লাউজ পড়েছিস।কি ঠিক বলিনি আমি?এখন দেখ তোর সাথে কি কি করি।”

একথা বলেই সে তার এক হাত আমার খোলা পিঠে রাখলেন এবং বললেন,

“এখানেইতো টাচ করেছিলো ওই ছেলেটা তাইনা?”

বলেই খুব জোড়ে সে আমার পিঠে তার নখ দিয়ে বড় একটা আচর কাটলো।আমি ব্যাথায় যেই চিৎকার দিতে যাবো তখনই রাফিত অন্য হাতে আমার মুখ চেপে ধরে শান্ত গলায় বলল,

“হাশশশশশশশশ চিৎকার করেনা সোনা।লোকে শুনতে পাবে যে।এখনও তো আরও অনেক কিছু করা বাকি।এটুকুতেই যদি চিৎকার করো তাহলে কিভাবে হবে বলোতো?(অনেকটা সাইকোদের মতো ভ্রু কুচকে)”

পিঠের ব্যাথায় আমার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পরছে।চিৎকার করে কাদতে মন চাইছে আমার।কিন্তুু রাফিত আমার মুখে তার হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখায় তাও পারছিনা।আর না পারছি তাকে কিছু বলতে। পিঠে কিছুটা ভেজাও অনুভব করতে পারছি।মনে হয় রক্ত বের হয়ে গেছে।

রাফি এবার এক হাত আমার মুখে ধরা অবস্থাতেই অন্য হাতে আমার পিঠের আচর দেওয়া জায়গাটা স্পর্শ করে হাত বুলাতে বুলাতে বলল,

“ইশশশ কতখানি কেটে গেছে দেখতো সোনা।ভীষন ঝালা করছে নিশ্চয়ই তাইনা।ওহহো এখনতো ঔষধ লাগাতে হবে।দাড়াও সোনা এক্ষুনি তোমাকে আমি ঔষধ লাগিয়ে দিচ্ছি।এরপর দেখো একটুও ব্যাথা করবেনা।”

একথা বলেই সে আমার পিঠের কাটা জায়গাটাতে খুব জোড়ে একটা কামড় বসিয়ে দিলো।এবার আর আমি নিজেকে শান্ত রাখতে পারছিলামনা।আমি ব্যাথায় চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে পিঠটা কুচকে ফেলি ও রাফিতকে সরানোর অপ্রাণ চেষ্টা করছি।কিন্তুু না এতেও কোনো কাজই হচ্ছেনা।

সে এবার আমাকে তার দিকে ফিরালো।ফিরিয়েই আমার মুখটা শক্ত করে তার এক হাত দিয়ে দুই গালে চেপে ধরে বলল,

“কি হলো খুব ব্যাথা লাগছে?আমার যে এর থেকেও বেশি লেগেছে ওটার কি হবে?বল?এটাতো মাত্র ট্রেইলার পিকচার তো এখনও বাকি।ওটা দেখবিনা?এখন এতো মুচরামুচরি করছিস কেনো?আগে মনে ছিলোনা?”

আমি এবার কোনোরকমে কেদে বললাম,

“প্লিজ রাফিত আমাকে আর কিছু করবেননা।আমার ভুল হয়ে গেছে।আর এমনটা হবেনা।আমার সত্যিই খুব ব্যাথা লাগছে।প্লিজ ছেড়ে………..আহহহ ”

আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে সে আরো জোড়ে আমার গালদুটো চেপে ধরলো।তারপর ধমক দিয়ে বলল,

“চুপ একদম চুপ। আর একটা কথাও না।এখনও তোকে অনেক শাস্তি দেওয়া বাকি আছে।তাই…………………

বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ আরওয়া ফারিন ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন…………

to be continued………………………

One thought on “ভালোবেসে তারে !! লেখাঃ আরওয়া ফারিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *