ভালোবাসা এমনও হয়

ভালোবাসা এমনও হয় Season 2 !! Part- 20

ডাক্তার প্রথমে চিকিৎসা করতে অমত করলো কারন এটা পুলিশ কেস ছিলো..
পুলিশ আসলো এটা নিয়ে প্রেস মিডিয়া হলো তারপর ডাক্তার বর্ষাকে নিয়ে ওটিতে ঢুকালো

বর্ষাকে সুস্থ করা হলেও মানসিক ভাবে খুব দুর্বল হয়ে পড়ে।।আর তারউপর সমাজের নিগ্রহ তো আছেই।।সব কিছু সহ্য করতে নাহ পেরে বর্ষা সুইসাইড করে।।

আদ্রর মুখে ঘটনা গুলো শুনে তরীর চোখেই পানি চলে এলো।

আদ্রঃ বলো তরী এতে আমার বোনটার কি দোষ ছিলো ও কেন এতো বড় একটা শাস্তি পেল

তরীঃ বাট এতে আমার আর মেঘেরই বা কি দোষ

আদ্রঃ দোষ তো অবশ্যই আছে।।যদি মেঘের সাথে সেইদিন আমার বোন না দেখা করতে যেত তাহলে এতো কিছু হতোই নাহ।।সো এর শাস্তি তো মেঘকে পেতে হবে।

(আদ্র রিদ কে ইশারা করলো।।রিদ গিয়ে তরীকে চেপে ধরে হাতে ড্রাগস পুশ করে দিলো।।যার এফেক্ট এ তরী ধফ করে মাটিতে বসে পড়লো।)

আদ্র ধীর পায়ে আবার গিয়ে মেঘের সামনে বসলো৷

আদ্রঃ আমার বোন ঠিক যতোটা নরকিয়ো পরিস্থিতির স্বীকার হয়েচগে তোর বৃষ্টিকে আজ ঠিক সেটা ফেস করতে হবে।।তারপর তোর বৃষ্টিকে আমি এই নদীতে ভাসিয়ে দিবো।।সারা জীবনের জন্য তাকে মুক্তি দিয়ে দিবো😊

মেঘ খুব কষ্টে কাপা গলায় বললো-

মেঘঃ দদদেখ আয়াদ্র এএতে ততরীর ককোন দোষ ননেই।। ওরর এএতো ববড় ক্ষতি টা ততুই ককরিস নাহ

আদ্রঃ তো আমার বোনটা কি দোষ করেছিলো।। তাহলে ও কেন শাস্তি পেল।আর তুই এতো কথা বলছিস কিভাবে।(আদ্র যে লোকগুলো এনেছিলো তাদের দিকে তাকিয়ে) বয়েস হিট হিম।।(বলেই আদ্র উঠে তরীর দিকে এগোতে শুরু করলো)

মেঘঃ আয়াদ্র ডোন্ট টটাচ হার ড…….

ছেলে গুলো আবার এসে মেঘকে মারতে লাগলো

একটুপর আদ্র আবার ইশারায় সবাইকে থামতে বললো।।কারন আদ্র মেঘকে মারতে চায় নাহ।

নিজের কাজ সেরে আবার গিয়ে মেঘের সামিনে বসলো।।মেঘ অজ্ঞান হয়ে গেছে।।আদ্র পানি এনে আবার মেঘের জ্ঞান ফিরালো।।

আদ্রঃ নিজের ভালোবাসাকে শেষবারের মতো টাটা বলবি নাহ মেঘ।।ওই যে দেখ তোর ভালোবাসার তরী পানিতে ভেসে যাবে

মেঘ কোন মতো মাথা টা ঘুরে তাকিয়ে দেখলো দুইটা লোক তরীকে টেনে নদীর গভীর নিয়ে যাচ্ছে।।
তরী ছোটা ছুটি করছে নাহ কারন ড্রাগসের এফেক্ট।।
লোকদুটো তরীকে পানির মাঝখানে নিয়ে ফেলে দিয়ে আবার ফিরে আসলো।

মেঘ সেদিকে তাকিয়ে চোখ থেকে পানি পরলো।।একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে ও চোখ বন্ধ করে ফেললো।


পরেরদিন সেখানের লোকেরা মেঘকে নদীর পাড়ে পরে থাকতে দেখে তাকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে।।সবাই তার খবর শুনে হসপিটালে ছুটে আসে।।তরীর কোন খোঁজ নাহ পেয়ে পুলিশে ইনফর্ম করে।।বাট তারা তো আর সত্যি টা জানে নাহ।।সত্যি তো জানে শুধু মেঘ।।বাট আনফরচুনেটলি এতো মার খাওয়ার ফলে মেঘের শরীর নার্ভগুলো ডেমেজ হয়ে গেছে।।যারফলে মেঘ কোমায় চলে যায়।।

পুলিশ রা তরীর সন্ধান নাহ পেয়ে তাকে মৃত বলে দেয়।

একবছর পর মেঘ কোমা থেকে ফেরে।।সবাই তাকে তরীর কথা জিজ্ঞাসা করলে মেঘ সত্যি ঘটনা এড়িয়ে যায়।।কারন সে চেয়ে ছিলো আদ্রকে নিজের হাতে শাস্তি দিতে।
তারপরের ঘটনা তো সবাই জানেনই।।আর তরী কিভাবে ফিরে এলো তা নাহয় আদ্রর থেকেই শুনবো।

বর্তমানে

মেঘঃ ববাট বৃষ্টি কিভাবে সেই দিন ও তুই…

আদ্রঃ সেইদিন তরী মরেনি।।ভাগ্য আছে বলতে হবে।।ভেসে ভেসে সেই তীরেই পৌছে গেছিলো।।আর মানুষজন তাকে নিয়ে হসপিটালে ভর্তি করে।।আর হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা আমার গাড়িতেই ওকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে।।কি এক কান্ড বলতো।।যাকে আমিই মারতে গেলাম তাকেই মানুষ আমার কাছে নিয়ে এসেছে বাঁচানোর জন্য।।তো কি আর করার নিয়ে গেলাম হসপিটালে।।চিকিৎসা হলো।।সুস্থ হলো।।তারপর প্লেন করলাম তাকে আমার সাথে নিয়ে গেলে কেমন হয়।।তোদের কাছে তো ও মরেই গেছে।।তো আমিই বরং ওকে আমার রক্ষিতা বানিয়ে রেখে দেই😉

কথাটা শুনে মেঘের কপালের রগ ফুলে গেল রাগে।বাট কিছু বললো নাহ।।কারন তাকে আগে তরীর খোঁজ নিতে হবে।

মেঘঃ আদ্র বৃষ্টি কোথায়

আদ্রঃ তুই কি ভাবছিস আমি তোকে বলে দিবো,😎

মেঘঃ আদ্র🤬।।দেখ প্লিজ তুই বল বৃষ্টি কোথায়।।অনেক তো প্রতিশোধ নিলি এই চার বছরে।।এই বার এট লাস্ট বৃষ্টিকে আমার কাছে ফিরিয়ে দে

আদ্রঃ দেবো তাহলে তুই ও আমার ফেমিলিকে আমার কাছে ফিরিয়ে দে

মেঘঃ আদ্র তুই জানিস এটা পসিবল নাহ তবুও কেন বার বার এক কথা বলছিস

আদ্রঃ তাহলে তরীকে ও পাওয়া পসিবল নাহ মেঘ।।

মেঘঃ ওকে তো আমি খুঁজে বের করবোই।। আর তুউ কি ভাবছিস তুই বৃষ্টি কে ঢাল করে বেঁচে যাবি।।তাহলে তুই ভুল।।সেটা কখনোই হবে নাহ।।

মেঘ সেখান থেকে চলে গেল।

আদ্রঃ আমি জানি তো তুই তরীকে খুঁজে পাবি।।বাট তারপর কি হবে তাই তো শুধু ভাবছি😎

৩ দিন পর মেঘ খুঁজে পেল সেই ঠিকানা যেখানে তরীকে রাখা হয়েছে।।
মেঘ সেখানে গেল।।তরীকে দেখে গিয়ে দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলো।।তরীকে জড়িয়ে ধরেই ফুফিয়ে কেঁদে দিলো।।এটা সুখের কান্না।।
কিছুক্ষণ কান্নাকাটি করে তরীকে ছেড়ে তার দুইহাত দিয়ে তরীর মুখটাকে ধরলো।

মেঘঃ ককমেন আছিস ততুই🥺

তরীঃ ভালো।।বাট আপনি এখানে????(গম্ভীর গলায়)

মেঘঃ কেন তুই খুশি হসনি আমার আসাতে!!!

তরীঃ খুশি হওয়া বা নাহ হওয়া টা কথা নাহ।।কথা হচ্ছে আপনি এখানে কেন এসেছেন

মেঘঃ কেন আমি কি তোর কাছে আসতে পারি নাহ।।এইভাবে কেন কথা বলছিস তুই বৃষ্টি

তরীঃ কিভাবে কথা বললাম।।হোয়াট এভার এখন কি আমায় আপনার সাথে দেশে ফিরতে হবে

মেঘঃ কেন তুই চাস নাহ দেশে ফিরতে। নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে???

(মেঘ তো অবাকের উপর অবাক হচ্ছে।।এই কোন তরীকে দেখছে সে।।আগের মতো ফেসে কোন উজ্জ্বলতা নেই কেমন মলিন হয়ে গেছে।।চুল গুলো ও উসকোখুসকো।। মেঘ তো আর জানে নাহ আদ্র তরীকে কি বানিয়ে ফেলেছে এই চার বছরে।)

মেঘঃ আচ্ছা সে সব পরে দেখা যাবে।।আগে আমার সাথে চল

তরীঃ কোথায়?

মেঘঃ আয় তো

মেঘ তরী কে নিয়ে বাইরে গেল।।তরী খেয়াল করলো আদ্রকে গাছের সাথে উল্টো ঝুলিয়ে রেখেছে মেঘ।।
তরী একবার আদ্রর দিকে তাকিয়ে আবার মেঘের দিকে তাকালো।

তরীঃ এইসব কি

মেঘঃ আমাদের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে এই আদ্র।।তো তাকে তার শাস্তি নাহ দিয়ে এই দেশ থেকে যাই কি করে

তরীঃ তো এখন কি আবার প্রতিশোধের ড্রাম চলবে নাকি

মেঘ আবার অবাক হয়ে তাকালো।।তরী এমন করে কেন কথা বলছে তার সাথে

মেঘের ভাবনায় ছেদ পরলো তরীর কাযকর্ম দেখে।।কারন তরী আদ্রকে ছেড়ে দিয়েছে।

মেঘঃ এইসব কি করছিস বৃয়।।ওকে ছাড়লি কেন

তরীঃ আদ্র আপনি যান

মেঘঃ আমি কিছু জিজ্ঞাসা করছি😠

তরীঃ আমি আপনাকে যেতে বললাম তো (আদ্রর দিকে তাকিয়ে)

মেঘঃ নাহ ও যাবে নাহ (বলেই আদ্রর দিকে আগাতে নিলো তরী মেঘের হাত চেপে ধরলো)

তরীঃ আদ্র আপনি যান

মেঘ গাল ফুলিয়ে তরীর দিকে তাকালো।। আদ্র চলে গেল।

আদ্র যেতেই মেঘ ঝাড়ি দিয়ে তরীর থেকে নিজের হাত ছুটিয়ে নিলো।

মেঘঃ কেন ছাড়লে ওকে।। এতো মায়া জন্মে গেল এই কয়বছরে।। নাকি ভালো ও বেসে ফেলেছিস😤

তরীঃ কি বলছেন ভেবে বলবেন।।আর যদি আমি ভালোবেসে ও ফেলি তাতে দোষের কি

মেঘ রেগে তরীকে গাছের সাথে চেপে ধরলো

মেঘঃ কি বললি তুই ওই আদ্রকে ভালোবাসবি।।খুন করে ফেলবো তোকে ও আর আদ্রকে ও।।তুই শুধু আমার বুঝলি

তরীঃ কথাটা তো আমি বলিনি।।আপনি নিজে বলেছেন

মেঘঃ তো বলবো নাহ ছাড়লি কেন তাকে।।তাকে যদি মেরে ও ফেলি তাও কম পরবে

তরীঃ ওহহ রিয়েলি তা কেন মারবেন শুনি

মেঘঃ তুই জানিস নাহ?

তরীঃ নাহ জানি নাহ বলেই তো জিজ্ঞাসা করছি

মেঘঃ 😡।।আজ যদি ও এই কাজ গুলো নাহ করতো তাহলে তুই আর আমি একসাথে থাকতাম।।ওর জন্য আমি চার বছর তোর থেকে দুরে থেকেছি।।এটা কি কম কারন ছিলো ওকে খুন করার জন্য

তরীঃ তাহলে সেই দিক বিবেচনা করলে তো আপনার পরিবার আর আমার পরিবারের মানুষকে ও মরতে হবে।।আর আপনাকে ও

মেঘঃ মানে!!!(তরীকে ছেড়ে দিয়ে)

তরীঃ আপনি অস্বীকার করতে পারবেন আজ ওর এই অবস্থার পিছিনে আপনারা কেউ দায়ী নন।
ও ওর মা বাবাকে হারিয়েছে আপনার আর আমার বাবা মায়ের কারনে।।তা কি আপনি অস্বীকার করতে পারবেন।উনার বোনের সাথে যা হয়েছে তার জন্য আপনি একটুও দায়ী নন তা কি বলতে পারবেন।।তাহলে উনি কেন নিজের প্রতিশোধ নিবে নাহ।।আপনার থেকে ৪ বছর দুরে থেকেছি বলে আপনি তাকে মারতে চাইছেন।।আর ও যে জন্ম থেকেই ওর পরিবারের একটা একটা করে মানুষকে হারাতে হয়েছে তার জন্য কি কোন প্রতিশোধ নেয়ার কথা ছিলো নাহ।

মেঘঃ কিন্তু সেইদিন তো তোমাকে ও 😞

তরী বুঝতে পারলো মেঘ কিসের কথা বলছে

তরীঃ উনি করেনি আমাকে সেইফিন স্পর্শ মেঘ।।উনি আমাকে ছুঁয়ে ও দেখেননি এই চার বছরে।। আর তা আমি জানি।।নিশ্চয়ই কিভাবে জানি তা বলতে হবে নাহ

মেঘঃ কিন্তু আদ্র নিজেই তো….

তরীঃ হ্যা বলেছিলো।।বাট যে অন্যায় টা নিজের বোনের সাথে হতে দেখেছে সেটা সে নিজে অন্যের সাথে কিভাবে করবে মেঘ।।উনার শুধু এতোটুকুই দোষ ছিলো উনি আমাকে মারতে চেয়েছেন।।বাট আমি তো মরিনি।।এই দেখুন আমি জীবিত দাড়িয়ে আছি আপনার সামনে।।

মেঘঃ ঠিকাছে তুমি যাহ বলো।।দিবো নাহ ওকে কোন শাস্তি। আজ থেকে প্রতিশোধের খেলা শেষ

তরী রিয়েক্ট করলো নাহ তেমন একটা।

পরেরদিন তারা দেশে ফিরে এলো।।তরীকে দেখে অনেক মেলোড্রামা ট্রামা হলো।।তারপর তরী রুমে চলে এলো।

সবার সাথে নরমাল থাকতে চাইলেও তরী নরমাল হতে পারছে নাহ।।কারন দুইদিন ধরে সে কোন ড্রাগস নেয়নি।।যারফলে তার মধ্যে এক অস্বস্তি কাজ করছে।।না চাইতেও সবার সাথে রুড বিহেভ করে ফেলছে।

চলবে