ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা !! Part- 07

তারা প্রভাতের সাথে একটু কথা বলতে চেয়েছিল কিন্তু প্রভাত কোথায় যেন তখন চলে গেল। তারাও আর কিছু না বলে ঘুমিয়ে পড়লো। রাতে যখন তারার ঘুম ভাঙ্গে তখন চোখ খুলো দেখে প্রভাত তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে। তারা কিছু বলতে যাবে প্রভাত উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল। প্রভাত ফ্রেশ হয়ে এসে তারাকে বলল ডিনার করে নিতে কিছুক্ষণ পর বের হবে। তারাও ডিনার করে নিল। ডিনারের পর ওরা দুজন নিচে গেল। তখন একটা ছেলে সেখানে আসে প্রভাত তাকে দেখে জড়িয়ে ধরে

—– কিরে ভাই এই কি আমাদের ভাবি?

—–হুম। তারা ওর নাম অনিক আমার বেষ্টফ্রেন্ড। বালিতে কাল আমাদের সাথে অনিকও যাবে।

—-ওহ। হেলো ভাইয়া।

—–হেলো।

তারপর ওরা সবাই গল্পগুজক করে যে যার রুমে চলে গেল। সকালে সবাই একসাথে রওনা হলো বালির উদ্দেশ্যে তখনও ফ্লাইটে কেউ একজন ছিল। যে একটা বড় ষড়যন্ত্র কষছে। বালিতে পৌঁছে একদিন থেকে পরেরদিন পিঙ্ক বীচে গেল। তারা তো খুব মজা করছে। অনেক আনন্দ হচ্ছে আর অনিক তো সারাক্ষণ সবাইকে হাঁসাচ্ছে। কিন্তু এই দুইদিনেও একবারো প্রভাত তারার সাথে কথা বলে নাই কারণ সে তারাকে টাইম দিতে চায়। আর আজ তো প্রভাত তারাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এনেছে। আজ সে তারাকে প্রোপোজ করবে। মনের কথা বলবে। আজ অনেক আশা নিয়েই প্রভাত তারার কাছে এসেছে। তারা প্রভাতকে ওর দিকে আসতে দেখে মনের অজান্তেই খুশি হয়ে গেল। চোখে পানি টলমল করছে কারণ প্রভাত হাসিমুখ করে ওর দিকে আসছে। প্রভাত এসে তারার সামনে দাঁড়ালো আর বলতে লাগলো

—–তারা আজ যদি তোমার থেকে কিছু চাই আমায় দিবে!

—–কি?

—–একটু ভালোবাসা!

—–(তারা কিছু বলছেনা সে কি বলবে কারণ আকাশকেই তো ও ভালোবাসে আর এখন প্রভাতকে দেখে ওর কেন জানি মনে হচ্ছে একটা সুজোগ দেওয়া দরকার।)

—- তারা আই লাভ ইউ (একটা গোলাপ এগিয়ে দিয়ে)

তারা তো অবাক প্রভাত ওকে ভালোবাসে! তারা কিছুটা পিঁছিয়ে গেল প্রভাত তখন তারার হাত ধরে বলল

—-প্লিজ তারা আমায় ফিরিয়ে দিয় না।

—–আপনি এসব কি বলছেন? আপনি আমাকে ভালোবাসেন !

—–হুম খুব। তোমাকে তখন থেকেই ভালোবাসি যখন তোমাকে প্রথম দেখি।

—–মানে!

—–মানে আমি তোমাকে দুই বছর আগে থেকেই ভালোবাসি। কিন্তু তুমি আকাশের ভালোবাসা ছিলে তাই আমি তোমাকে ওর থেকে ছিনিয়ে নেই নি। কিন্তু দেখ নিয়তি কতো ওদ্ভুত! তুমিই আমার বউ হলে। তারমানে উপরওয়ালা আমাদের জুটি অনেক আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে। একটা সুজোগ কি দেওয়া যায় না তারা!

তারা কিছু বলতে যাবে তখনিই কেউ একজন ওর হাত ধরে টান দিল। সে আর কেউ নয় আকাশ।

—ওয়াও গ্রেট ভাই। নিজের ভাইয়ের ভালোবাসার দিকে চোখ দিতে তোমার। একটুও বাধলো না।

—-আকাশ!(রেগে গিয়ে)

—-কি ? কি বলবে তুমি! তোমার বলার কোনো মুখ আছে?

——যার হাত ধরে আছিস সে তোর ভাবি আর আমার বউ। ছেড়ে দে ওর হাত।

—–ছাড়ার জন্য তো ধরিনি। আজ আমি আমার তারাকে নিয়ে যাবো।

—-মানে !

—–আজ আমি আমার তারাকে তোমার থেকে নিয়ে যাবো। অনেক দূরে আর সেখানে গিয়ে আমরা সংসার করবো।

—-এসব তুমি কি বলছো আকাশ?(তারা বলে উঠল)

—- যা বলেছি ঠিক বলেছি। তুই এখনি আমার সাথে এখান থেকে চলে যাবি।

—– আকাশ তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে! এসব কথা বলার মানে কি? আমি এখনো আইনত আর ধর্মীয় নীতিতে প্রভাতের স্ত্রী। আমার আগে ওর সাথে ডিভোর্স হবে তারপরে না বিয়ে। তুমি এসব কেন করছো আকাশ!

—– এইটা বল যে প্রভাত চৌধূরী এখন তোর সফ্ট কর্ণার। আর তুই সেই সফ্ট কর্ণারটাকে ভালোবেসে ফেলেছিস। তাই না!

—–আকাশ তুমি এসব কি বলছো! আমি তো যা সত্যি তাই বলছি।

—–আকাশ তুই তারাকে ছেড়ে দে।

—ছাড়বো না। কি করবে?

—‘আকাশ এর ফল কিন্তু ভালো হবেনা।

বলেই যেই না প্রভাত কিছু করতে যাবে ওমনি কিছু গুন্ডা এসে প্রভাতকে মারতে লাগলো কিন্তু বেশিক্ষণ পারলো না। প্রভাত একাই ওদের মেরে ভর্তা করছে। কিন্তু তখনিই ওদের মধ্যে কেউ একজন প্রভাতের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। আর গড় গড় করে রক্ত পড়তে থাকে। তারা এই অবস্থা দেখে চিৎকার করে ওঠে। দৌড়ে গিয়ে প্রভাতের মাথা নিজের কোলে রেখে বলে

—– প্রভাত আপনার কিছু হবে না। আমি আপনাকে হসপিটাল নিয়ে যাবো। অনিক ভাইয়া কোথায়? অনিক ভাইয়া অনিক ভাইয়া(তারা অনিককে ডাকতে লাগে আর পাগলের মতো করতে থাকে।)

এদিকে আকাশ গিয়ে ঐ গুন্ডাগুলোকে বলে

—–তোদের বলেছি ওকে আটকে রাখতে যতক্ষণ না আমি তারাকে নিয়ে যাচ্ছি আর তোরা কি করলি এটা? আমার ভাইকে এভাবে……

ওরা চারজন ছিল চারজনের মধ্যে তিনজনই বাঙ্গালি ছিল আর ওদের মধ্যে যে মেইন ছিল সে হলো বিদেশি।

—– sorry sir beacuse we have no another option he is very strong….

—–get lost……

এদিকে তারা কেঁদেই যাচ্ছে অনিক যে কোথায় গেল তাও আবার এই জায়গায় এখন কোন মানুষজন নেই কারণ ওরা মেইন পয়েন্ট থেকে কিছুটা দূরে যার ফলে তারা কারো থেকে হেল্প চাইতেও পারছেনা। তারা অনিককে ডাকার জন্য যেই না উঠে গেল ওমনি আকাশ ওর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেল প্রভাত রক্ত মাখা হাত নিয়ে তারাকে থামতে বলল কিন্তু আকাশ জোর করে তারাকে নিয়ে গেল প্রভাতের চোখ থেকে শুধু পানি গড়িয়ে পড়ছে একদৃষ্টিতে তারা আর আকাশের যাওয়ার দিকে তাঁকিয়ে আছে।

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *