ভালোবাসার প্রতারণা

ভালোবাসার প্রতারণা !! Part- 03

নিজেকে সামলাতে পারছেনা প্রভাত। সে যে এক নশায় ডুবে আছে। এদিকে তারার তো অবস্থা খারাপ। না পারছে নড়তে না পারছে প্রভাতকে সড়াতে। দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দে প্রভাতের হুস ফিরলো। তারার আঁচল ঠিক করে গিয়ে দরজা খুললো তখনি একজন মধ্যবয়সী মহিলা রুমে ঢুকলো আর প্রভাতও রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। মহিলাটি আকাশের মা।

—–তারা! আমি জানি যা হয়েছে তা তোমার মতের বিরুদ্ধে। কি করবো বলো আকাশটা যে এমন করবে ভাবতেই পারিনি। তোমার সম্মানের ব্যাপার ছিল তাই আমার বাবুই(প্রভাত) তোমাকে বিয়ে করলো। তোমাকে তখন বলার মতো সময় মনে করা হয়নি তাই তোমার বাবা তোমাকে জানাতে মানা করেছিল।

—– মা আকাশ কি সত্যিই!(চোখ টবমল করছে)

——হুম।

কথাটা শুনেই তারার চোখের পানি টপ করে পড়ে গেল। প্রভাতের মা ওকে জড়িয়ে ধরলো। দুজনেই কেঁদে দিল।

—- আমি কি এমন করেছিলাম? আমি তো কোন ভুল করিনি! কেন ও এমন করলো আমার সাথে! ও তো আমায় ভালোবাসতো। তাহলে সব কিছুই মিথ্যা ছিল? ছলনা ছিল?

—– জানি নারে মা। আকাশকে প্রভাত অনেকবার কল করেছিল কিন্তু ও রিসিভ করে নেই শেষে একটা মেসেজ আসলো যে ও এই বিয়েটা করতে পারবে না। তখন তো আর কিছুই করার ছিল না তাই বাবুই আর তোমার বাবা এই সিদ্ধান্ত নেয়। তুমি তোমার অতীত ভুলে যাও মা। আমার বাবুই এর সাথে নতুন জীবন শুরু করো। বাহির থেকে যতোটা কঠিন ভেতর থেকে তার চেয়ে বেশি নরম। ও কাউকে একবার ভালোবাসলে তার সঙ্গ কখনো ছাড়েনা। ওকে ভালোবাসলে তুই ঠকবি না। আমার আকাশও এমন না কিন্তু ও এমনটা করলো কেন তা আমি এখনো ভাবতে পারছিনা। সে যাই হোক তুই নিচে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।

—–হুম।

মিসেস রেবা চলে যাওয়ার পর তারা আবারো অতীতে ডুব দিল

—তারা জান আমার শুনো না!

—-‘-কি?

——হৃদয়ে লিখেছি তোমারি নাম।(একটু স্টাইল করে)

—— হুহ। মিথ্যুক।

—– আমার হৃদয়ে শুধু তুমিই আছো। তা হয়তো তোমাকে দেখাতে পারবোনা কিন্তু এইটা তো ঠিক পারবো
বলেই নিজের শার্ট এর বোতাম খুলে নিজের বুকের বা পাশে তারার নামের ট্যাটু টা দেখালো। তারা তো বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। তারা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো তার প্রিয়কে।

—— আই লাভ ইউ আকাশ।

——- আই লাভ ইউ দ্যা মোস্ট। কখনো তোমার হাত ছাড়বোনা জান। আগলে রাখবো সব সময় নিজের থেকে দূরে যেতেই দিব না।

—–এই ভাবে সব সময় আমায় ভালোবাসবে !

—–হুম। আই প্রমিজ ইউ।

—– ভালোবাসি প্রিয় খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।

ঢুকরে কেঁদে উঠলো তারা চাইলেও কি ভুলা যায় সব কিছু! যায়না। অতীত এমন একটা জিনিস তা মানব জাতি কে তাড়া করে বেড়ায় সব সময়।

—– প্রেয়সী তুমি কি খুব বেশি আপসেট !

প্রভাতের কথায় সামনে ফিরে তাকালো। খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে

—– মম সেই কখন ডেকে গেল আর তুমি তো গেলেই না তাই আমিই তোমার ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসলাম। নাও খেয়ে নাও।

—- আমার ক্ষিদে নেই। (মুখ ঘুরিয়ে)

—— রেগে আছো তাই না। তারা যা হয়েছে আমি তা রাগের মাথায় করে ফেলেছি। এই স্যরি আর কখনো তোমার অনুমতি ছাড়া তোমায় টাচ্ করবোনা। আই প্র,,,,,

—– আপনি আমায় বিয়ে করলেন কেন?

—–মানে!

—-আমাকে বিয়ে করলেন কেন? আমাকে ভালোবাসেন!

তারার কথার জবাব প্রভাতের কাছে থাকলেও তা দেয়া সম্ভব নয়। তাই চুপ করে গেল।

—– কি হলো বলুন ভালোবাসেন আমায়!

—–না।(গম্ভীর ভাবে)

চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *