বিনিময়ে তোমায় চাই

বিনিময়ে তোমায় চাই !! Part- 05

আনাফ গিয়ে একজন এর গিয়ে হাত মেলালো।
,
আনাফ- হ্যালো মি.নাহিদ।(হাত মিলিয়ে)
,
নাহিদ- নাইস টু মিট ইউ ব্রো।
,
আনাফ- মি টু।
,
নাহিদ- থ্যাংকস ফর কামিং।
,
আনাফ- ইটস মাই প্লেজার নাও নিউ ডিল সম্পর্কে আলোচনা করা যাক?
,
নাহিদ- ইয়াহ সিউর।
তখনই নাহিদের রিফার দিকে নজর গেলো। সে তো হা হয়ে দেখছে রিফাকে। নাহিদের এমন চাহনি রিফার অস্বস্তি লাগছে। রিফা বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। আনাফও বিষয়টা খেয়াল করলো আর ভেতরে ভেতরে রেগে শেষ।
,
নাহিদ- এই মেয়েটা কে?(আনমনে)
,
আনাফ- ওহ ও হলো আমার পিএ মিস রিফা।
,
নাহিদ- এত্তো সুন্দরি পিএ থাকলে আর কি লাগে?(রিফাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত বারবার দেখছে)
এই কথায় রিফা আনাফের পিছে চলে গেলো। আনাফ তো রেগে বোম।
,
আনাফ- মেয়েদের সম্মান দিয়ে কথা বলুন মি.নাহিদ।(রাগ চেপে)
,
নাহিদ- অসম্মান কোথায় করলাম?
,
আনাফ- আপনার এই বাজে দৃষ্টিই বলে দিচ্ছে একটা মেয়েকে আপনি কেমন সম্মান করেন।
,
নাহিদ- এটা কোন কথা? আমি জাস্ট ওকে নিয়ে একটু ইনজয় করতে চাচ্ছি যেমন টা আপনি করেন।
,
এবার আনাফ নাক বরাবর একটা ঘুসি দিলো নাহিদের।পাবলিক রা সবাই দেখছে অবাক হয়ে। কয়েকজন তো প্রথম থেকেই ভিডিও করা শুরু করে দিয়েছে।

 

আনাফ- আমার মাইন্ড তোদের মতো ভিখারি টাইপের না আমি যথেষ্ট সম্মান করি মেয়েদের। হোক সে আমার পিএ কখনো কুনজরে তাকাইনি। মেয়েদের সবার আগে তার সম্মান টাই বেশি আর তোদের মতো কিছু অমানুষের জন্য মেয়ে রা ভালো ছেলেদেরও কদর করে না। তোরও মা আছে বোন আছে মনে রাখিস। জীবনে ভালো চিন্তা করেছিস বলে তো মনে হয়না শুধু পারিস টাকা উড়াতে আর মেয়েদের দিকে কুনজরে তাকাতে। ফাজিল স্টুপিড।
আনাফের কথাতে রিফা আরও অনেকটা মুগ্ধ হয়ে যায়। আর চারপাশের মানুষ রা তো ভিডিও + বলাবলি শুরু করেছে যে আনাফ ওয়াহিদ একদম ঠিক করে ওই শয়তান টার সাথে, এটা ওটা অনেক কিছুই বলছে।
,
,
,
আনাফ এসবে তোয়াক্কা না করে রিফার হাত ধরে হনহন করে বেড়িয়ে গেলো। আনাফের এমন রূপ রিফা এই প্রথম দেখছে।
নাহিদ কিছুটা লজ্জিত হলো এবং পাবলিককে ইগনোর করে সেও গাড়ি করে ডিরেক্ট নিজের বাসায় চলে গেলো। নাহিদকে এতো তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে দেখে নারাদ সাহেব অবাক হয়ে গেলো।
নারাদ সাহেব-কিরে এতো তাড়াতাড়ি বাসায় আসলি যে তোর তো এখন আনাফ ওয়াহিদের সাথে থাকার কথা।
,
নাহিদ-এমনি বাবা আর আনাফ ওয়াহিদের সাথে কাল ডিল করবো।
,
নারাদ সাহেব-আচ্ছা তাহলে রুমে যা।
,
নাহিদ-ওকে।
,
বলেই নিজের রুমে চলে গেলো। এমন সময়ই নাদিয়া নারাদ সাহেবকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
,
নাদিয়া-ওহ বাবাই মিস ইউ সোওও মাচ।
,
নারাদ সাহেব-মিস ইউ টু ডিয়ার।তা আজ হঠাৎ কি মনে করে আমার সোনাপাখি আমার বাসায় আসলো হুম?
,
নাদিয়া-এমনি তোমাদের সাথে দেখা করার জন্য আসলাম হস্টেলে আমার একদমই ভালো লাগে না।
,
নারাদ সাহেব-তোমার সুবিধার জন্যই তো হোস্টেলে দিলাম।বাসায় থাকলে তো ঠিকমতো পড়াশোনা করো না এই জন্য।
,
নাদিয়া-আচ্ছা বাদ দাও এখন বলো মা কোথায়?
,
নারাদ সাহেব-ঘুমোচ্ছে।
,
নাদিয়া-আর ভাইয়া?
,
নারাদ সাহেব-উপরে রুমে আছে যাও দেখা কিরে আসো।
,
নাদিয়া-আচ্ছা বাবাই।(হেসে)
,
বলেই নাদিয়া উপরে চলে গেলো নাহিদের সাথে দেখা করতে।নাহিদ ফ্রেশ হয়ে বেডে বসে আনমনে ভাবছে,

 

 

নাহিদ-(আসলেও তো ঠিক আমারও মা বোন রয়েছে তাদের কেউ এভাবে বললে আমি কি করে সহ্য করবো?অথচ আমি কতো মেয়েদের এসব বলেছি।কি করে পারলাম আমি এতোগুলো অন্যায় করতে?না ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে আনাফ ওয়াহিদের কাছে।হ্যা হ্যা আমি কালই যাবো।)
,
নাদিয়া-নাহিদ ভায়ায়ইয়ায়ায়া।(চিল্লিয়ে)
,
নাহিদ-হ্যা হু কিছু বলছিস আর তুই কখন এলি?
নাদিয়া-হুম এসছি অনেক আগেই আর তোকে কখন থেকে ডাকছি আর তোর তো কোনো খবরই নেই।
,
নাহিদ-ওহহ তা কেমন আছিস?
,
নাদিয়া-হ্যা ভালো তা আজ না তোর আনাফ ওয়াহিদের সাথে মিটিং ছিলো?(উত্তেজিত হয়ে)
,
নাহিদ-হুম তা তো হয়েছেই কিন্তু তুই এতো উত্তেজিত কেন হচ্ছিস?
,
নাদিয়া-ক ক ই উত্তেজিত হলাম আমিতো এমনিই বললাম
,
নাহিদ-ওওহ আচ্ছা।
,
নাদিয়া- আচ্ছা ভাইয়া তোর নাক এমন লাল হয়ে আছে কেন?
,
নাহিদ- ও কিছুনা একটু ঠান্ডা লেগেছে তাই।
,
নাদিয়া- ওও আচ্ছা।
,
,
তারপর দুই ভাইবোন নিলে গল্প করতে লাগলো।

 

 

এইদিকে,
আনাফ নিজের কেবিনে বসে বসে রাগে ফুসছে।আর রিফা নিজের কেবিনে ফাইল চেক করছে।আনাফ সেই ব্যাপারটি নিয়ে এখনো ভাবছে।পরক্ষনে আনাফ ভাবতে লাগলো।
,
আনাফ-(আচ্ছা আমি রিফার জন্য নাহিদকে ঘুষি কেন দিলাম?না না ঘুষি দেওয়ার কারণ তো আমায় বাজে কথা বলা।)
,
এসবই ভাবছিলো এমন সময় আনাফের কল আসলো।নাম্বারটা বাংলাদেশি না সিংগাপুরের।আনাফ তাড়াতাড়ি কল রিসিভ করলো।
,
আনাফ-হ্যালো?
,
———————–
,
অপরপাশের কথা শুনে আনাফ অনেকটাই খুশি হলো এবং বললো,
,
আনাফ-ইয়াহ সিউর সো উইল অর ইউর টিম কাম টু বাংলাদেশ?
,,
———————-
,
আনাফ-ওহ ওকে আই হেভ নো প্রবলেম।
,
————————
,
আনাফ-ওকে বাই।
,
তারপর আনাফ ফোন রেখে দিলো এবং ম্যানেজারকে ডেকে পাঠালো।
,
ম্যানেজার-ইয়েস স্যার?
,
আনাফ-সকলকে মিটিংরুমে পাঠাও।
,
ম্যানেজার-ওকে স্যার।
,
,

তারপর ম্যানেজার সকলকে জানিয়ে দিলো একে একে।রিফা মিটিং রুম না চিনায় নিধি,মুক্তা আর জয়ের সাথে গেলো।সবাই একসাথে হলরুমে আছে কিন্তু আনাফ এখনো আসেনি।সবাই বলাবলি করছে স্যার কেনো আমাদের ডেকে পাঠালো।কি এমন বলব”etc.সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আনাফ চলে আসলো এবং স্টেজে গিয়ে মাইক নিয়ে বলতে লাগলো।
,
আনাফ-হ্যালো এভরিওয়ান।সরি ফর লেট আর এখানে আপনাদের সকলকে আনার কারণ কিছুক্ষণ আগেই সিংগাপুর থেকে ডিএক্স কোম্পানির এমডির সাথে কথা হয়।তাদের এই বছরের প্রোজেক্ট আমাদের দিচ্ছেন।
সাথে সাথেই সবাই হুররে বলে উঠলো এবং তালি দিতে লাগলো জোরে জোরে।
আনাফ মুচকি হেসে সবাইকে থামিয়ে আবার বলতে শুরু করলো,
,
আনাফ-ওনারা বাংলাদেশে আসবেন না এখন তাই ফোনেই জানিয়ে দিয়েছে।আর প্রোজেক্টের ফাইলস ফেক্সের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিবেন।সময় ১ মাস তা অল মাই এমপ্লোয়েস উই অল রেডি?
,
সবাই চিল্লিয়ে ইয়েস বললো।
,
আনাফ-ওকে এখন সবার ছুটি কাল আশা করছি সবাই টাইমলি চলে আসবেন।
,
সবাই-ইয়েস স্যার।
,
তারপর একে একে সবাই যে যার বাসায় চলে গেলো।রিফাও ইমনের সাথে দেখা করে বাসায় চলে যায়।গিয়ে দেখে তার বাবা টিভিতে নিউজ দেখছে।রিফাও গিয়ে তার বাবার পাশে বসে নিউজ দেখতে লাগলো।হঠাৎ রিফা এমন কিছু দেখলো যা দেখে রিফা অবাক সাথে রিফার বাবাও।
,
বাবা-কি রে রিফা টিভিতে আনাফ ওয়াহিদকে দেখাচ্ছে কেন?
,
রিফা-দাড়াও বাবা দেখতে দাও।
,
টিভিতে দেখাচ্ছে আনাফ নাহিদকে ঘুষি দিচ্ছে + তার আগে পরের কথাগুলোও। কিন্তু রিফার চেহারা কেও ওঠাতে পারেনি মুখে মাস্ক এবং আনাফের পেছনে থাকায়।
,
রিপোর্টার-আনাফ ওয়াহিদ সত্যিই একজন ভালো মানুষ সে সবসময়ই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে।এমনকি আজ মিষ্টার নারাদ উহানের ছেলে নাহিদ উহান তার পিএ কে কটুকথা বলায় তাকে সকলের সামনে ঘুষি দেয়।
,
রিফার বাবা-এটা কি সত্যি?
,
রিফা-হুম বাবা।
🍁
এইদিকে আনাফের মা বাবা আর আনিফাও খবর টা দেখলো।
,
আনাস সাহেব- আনাফকে ডাকো।
,
আনিফা- আচ্ছা বাবা।
,
তারপর আনিফা আনাফের রুমে গেলো।
,
আনাফ- কিছু বলবি?
,
আনিফা- বাবাই নিচে ডাকছে আয়।
,
আনাফ- ওকে চল।
,
তারপর আনাফ আনিফার সাথে নিচে নেমে গেলো এবং নিচে যেয়ে দেখলো তাকে নিউজে দেখাচ্ছে। পুরো নিউজ দেখে আনাফ অনেক অবাক + কিছুটা খুশি।
,
আনাফ- নাহিদ আমার পিএ কে খারাপ কথা বলছিলো এবং আমাকেও বাজে কথা বলেছে তাই ঘুসি মারতে বাধ্য হয়েছি।
,
আনাস সাহেব- একদম ঠিক কাজ করেছিস এদের এভাবেই শায়েস্তা করা উচিত নাহলে শোধরায় না।
,
আনাফ- হুম বাবাই।

,
আনাস সাহেব- আচ্ছা আসো ডিনার করে নেই।
,
আনাফ- হুম চলো।
,
তারপর ওরা সবাই মিলে ডিনার সেরে নিলো।
🍁
এইদিকে,
নারাদ সাহেব- নাহিইইদ,
,
নাহিদ দৌড়িয়ে এসে বললো,
,
নাহিদ- কি..কি..কি হয়েছে বাবা?
,
নারাদ সাহেব- টিভিতে এগুলা কি দেখাচ্ছে?(রেগে)
,
নাহিদ- যা দেখানোর তাই দেখাচ্ছে।
,
নারাদ সাহেব- ওই আনাফের সাহস কি করে হলো তোকে ঘুসি দেওয়ার?(রেগে)
,
নাহিদ- ওহ বাবা ভুল করেছি তাই দিয়েছে এতে এতো বলার কি আছে?
,
নারাদ সাহেব- আমি কখনোই তোর গায়ে হাত তুলিনি আর ওই আনাফ তোকে ডিরেক্ট ঘুসি? তুই ওর পিএ কে চাস তো দাড়া আমি এক্ষুণি ব্যবস্থা করছি আর ওই আনাফ কেও শায়েস্তা করছি।
,
নাহিদ- বাবা তুমি কিন্তু বেশি বেশি করছো। আমার কাউকে চাইনা আজ আমি অনেক বড় শিক্ষা পেয়েছি আনাফ ওয়াহিদ আমার ভুল শুধরিয়ে দিয়েছে। আর তোমরা তোমরা কি ডেড? একবারও চোখে আঙ্গুল দিয়ে আমার ভুলগুলো ধরিয়ে দাওনি। অন্যের মা বাবা রা ভুল গুলো শুধরিয়ে দেয় খারাপ পথ থেকে ভালো পথে আনে আর তুমি আমাকে শুধু খারাপ পথই দেখিয়েছো। আমি অনেক লজ্জিত যে আমি এমন পরিবারে জম্মেছি আর এমন বাবা পেয়েছি।
,
নারাদ সাহেব- নাহিইদদ এটা কি ধরণের কথা?
,
নাহিদ- ভুল কি বললাম সত্যি আর ঠিক টাই বললাম আই জাস্ট হেট ইউর মাইন্ড ডেড।
,
বলেই নারাদ সাহেবকে কিছু বলতে না দিয়ে চলে গেলো নিজের রুমে। আর নারাদ সাহেব সেখানেই হা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
🍁
পরেরদিন,
,
,
,
,
,
,
,
চলবে❤