প্রেমময় প্রদীপ

প্রেমময় প্রদীপ !! Part- 09

সামিনা রশিদ কিছু বুঝার আগেই মাথাটা সোজা করে বসলো সাফা ।
সে খুনী কে জানতে চায়লে সামিনা রশিদ বললেন-
ছেলেটার নাম রবিন । শেষে যে সিলেটের খুনটা হলোনা? ওটার মাধ্যমে ধরা পড়েছে ।
-এবার কি করে ধরা পড়ে গেল!
-আর কতদিন? অন্যায় কি বেশিদিন চাপা থাকে!
-হু ।
-এসব ছাড় । তোর কেমন লাগছে এখন?
-ভালো ।
-আচ্ছা আমি নাস্তা নিয়ে আসি ।
.
সামিনা রশিদ বেরিয়ে যেতেই প্রেম বলল-
ভালোই হলো খুনী কে জানতে চেয়ে একটি ইচ্ছে নষ্ট করেন নি আপনি ।
-নষ্ট! এটা মোটেও নষ্ট হত না । আমি জানতে পারলে প্রমাণসহ থানায় যেতাম ।
-তারপর? এসব কিভাবে জেনেছেন বললে কি বলতেন?
প্রেম বলেছে?
-কিছু একটা বলে দিতাম । তবে ভালোই হলো ৷ খুনী ধরা পড়েছে ।
-হুম ।
.
কিছুক্ষণ চুপ থেকে প্রেম বলল-
তাইফকে জানিয়েছেন কি, আপনি তাকে ভালোবাসেন না?
-পারলাম কই! তবে সেও আমায় ভালোবাসে বলে মনেহয় না । যদি বাসতো, ওভাবে আমায় একা রেখে চলে যেতে পারতো?
-পরিস্থিতি মানুষকে অসহায় করে তুলে ম্যাডাম ৷ তবে আপনার এসব নিয়ে ভাবার আর প্রয়োজন নেই ৷ আপনি তাকে ভালোবাসেন না, তাই কষ্ট পাওয়ার কথা নয় ।
-হুম ।
-নাকি পাচ্ছেন?
-মোটেও না!
-এবার তাকে সবটা জানিয়ে দিন ।
-হুম । আমি এখুনি ফোন করছি ।
.
তাইফকে ফোনে সাফা জানালো, সে তার সাথে দেখা করতে চায় । তাইফ যেন তার সাথে বাসায় এসে দেখা করে ।
তাইফ আসবে জানালো ।
প্রেমের দিকে তাকিয়ে সাফা বলল-
একটু পরেই আসবে ।
-ওকে ।
.
প্রেমের দিক থেকে নজর সরালো না সাফা । কাল সারারাত তার পাশেই বসে ছিল প্রেম । সাফার যতবার ঘুম ভেঙেছে, নিজের দিকে প্রেমকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছে ৷ দেখেছে প্রেমকে তার হাতের উপরে হাত রেখে বসে থাকতে ।
সাফার কেন যেন খুব বেশিই ভাল লাগছে প্রেমকে নিজের পাশে পেয়ে ।
একটা জ্বীন মানবের প্রতি এত ভালোলাগা কেন কাজ করছে তার!
দুজনে দুজনের চোখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর, চোখ সরিয়ে নিলো সাফা ।
লজ্জায় সে মুখ উপরে তুলতে পারছেনা । কেন লজ্জা পাচ্ছে এটাও তার অজানা ।
বালিশের পাশ থেকে প্রদীপটি নিয়ে ঘষলো সে ৷ প্রেম ভেতরে যেতেই নিজেরমনে বলল সাফা-
হচ্ছেটা কি আমার সাথে! আমি কি প্রেমের প্রেমে পড়েছি!
.
.
শফিকুলের সাথে সাফার বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে তাইফ । আজ তার খুশির সীমা নেই! সে জানে, আজ সাফাও নিজের মনের কথা তাকে জানাবে ।
তাইফকে হাসিখুশি দেখতে শফিকুলেরও ভাল লাগছে ।
কলেজের প্রথম দিন থেকেই ওদের বন্ধুত্ব শুরু । আর তখন থেকেই জানে, সে সাফাকে পছন্দ করে ৷ আজ তাইফের মনের আশা পূরণ হতে চলেছে ৷ অবশ্যই শফিকুলের চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবেনা ।
.
.
সাফার পাশে বসে আছে তাইফ ও শফিকুল ।
সবাই নিশ্চুপ ।
শফিকুল বলে উঠল-
সাফা তোমার শরীর ঠিক আছে তো?
-হ্যাঁ ।
.
আবারো চুপচাপ সকলে । শফিকুল হালকা কেশে দুষ্টুমির স্বরে বলল-
আমি বোধহয় কাবাবের মাঝে হাড্ডি হয়ে গেলাম! আমি বাইরে গিয়ে বসি ।
.
সাফা বলল-
না, তোমার যাওয়ার প্রয়োজন নেই ।
-তবে কেন ডেকেছ বলো?
-আসলে তাইফের ব্যাপারে আমার কিছু বলার ছিল ।
.
তাইফ উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালো সাফার দিকে ।
শফিকুল হেসে বলল-
শোনার জন্যই তো এসেছি । আর আমার বন্ধু বেচারাও ছটফট করছে শুনতে । বলেই দাও তুমি তাইফকে ভালোবাসো ।
.
লম্বা একটা দম ফেলে সাফা বলল-
আমি তাইফকে ভালোবাসি না ।
.
কথাটি শুনে শফিকুল ও তাইফ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল সাফার দিকে ।
সে বলল-
আমি দুঃখিত তাইফকে এতদিন সত্যিটা না জানানোর জন্য । এটা আমার অন্যায় হয়েছে । আমি চেয়েছি তাইফকে নিজের পেছনে ঘুরাতে । এতেই আমি মজা পেতাম! কিন্তু এটা ঠিক নয়, এসব আমাকে বোঝালো প্রেম । প্রেম আমার চোখ খুলে দিয়েছে ৷ মিথ্যে ভালোবাসার জালে আমি তাইফকে আর আঁটকে রাখতে চাইনা ।
.
তাইফকে এক দৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলো । শফিকুল নানাভাবে সাফাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে লাগলো, তাইফ তাকে অনেক ভালোবাসে ।
এমন সময় সামিনা রশিদ এসে বললেন-
সাফা তোকে কখন বলেছিলাম একটা ভালো পোশাক পরে নিতে! তোর খালারা চলে এলো বলে! জলদি তৈরী হয়ে নে ।
-আচ্ছা ।
.
তাইফদের দিকে তাকিয়ে সামিনা রশিদ বললেন-
সাফা অসুস্থ বলে ওর খালা দেখতে আসছে । ও তৈরী হয়ে নিক । বাট তোমরাও থাকো ৷ যেওনা কিন্তু ।
.
তাইফ ও শফিকুলের উদ্দেশ্যে সাফা বলল-
তোমরা প্লিজ ভুল বুঝোনা আমাকে ।
.
ওয়ারড্রব থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে গেল সাফা ।
শফিকুল তাইফের কাঁধে হাত রেখে বলল-
মন খারাপ করিস না তাইফ । সাফা হয়তো তোর কপালে ছিল ।
-ওর এটা করা উচিত হয়নি । শাস্তি তো পেতেই হবে ওকে ।
-মানে?
.
বালিশের পাশ থেকে প্রদীপটা নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে, দ্রুত সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ল তাইফ । তার পিছু নিলো শফিকুল ।
সে বলল-
তুই সাফার প্রদীপ কেন নিলি তাইফ?
.
তাইফ হাঁটতে হাঁটতেই বলল-
আমি কি কিছু বুঝিনা! এর ভেতরে থাকা প্রেমের জন্যই সাফা আমাকে আজ প্রত্যাখ্যান করলো ।
-তুই ভুল ভাবছিস তাইফ! প্রেম আমাদের মতো স্বাভাবিক মানুষ না ।
-সে মানুষ হোক, জ্বীন বা ভুত আমার কিছু এসে যায়না ।
-তুই কি করতে চাচ্ছিস?
.
শফিকুলের কথার জবাব না দিয়ে হনহনিয়ে হাঁটতে লাগলো তাইফ ।
তাইফের মতো শান্তশিষ্ট ছেলের এমন রূপ দেখে ঘাবড়ে গেল শফিকুল ।
তাইফ বলল-
তুই যদি আমার বন্ধু হয়ে থাকিস, আমাকে ভালোবেসে থাকিস তবে এ ব্যাপারে সাফাকে কিছু জানাবি না । আর এখুনি আমার পিছু নেওয়া বন্ধ করবি ।
.
থেমে গেল শফিকুল । তাইফ নিজের বাড়ির দিকে এগিয়ে গেল আর কোনো কথা না বলে ।
.
.
সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলে নিজের রুমে এলো সাফা । এতক্ষণ খালা ও খালাতো বোনদের সাথে আড্ডায় মেতে ছিল সে ।
সেই সকাল থেকে প্রেমকে আর দেখা হয়নি তার । বুকের মাঝে কেমন যেন করছে । এখুনি দেখতে না পারলে যেন অস্থিরতা কমবে না তার!
বালিশের পাশে প্রদীপ না পেয়ে ওয়ারড্রবের সব ড্রয়ার খুলে দেখলো সাফা । সেখানেও না পেয়ে খাটের নিচেসহ আশেপাশে তন্নতন্ন করে খুঁজতে থাকলো সে ।
সারা রুমে খুঁজেও কোথাও না পেয়ে চেঁচিয়ে মাকে ডাকলো সাফা ।
-কিরে চেঁচাচ্ছিস কেন?
-আমার প্রদীপ তুমি নিয়েছ?
-না তো!
.
এবার হতাশ হয়ে পড়লো সাফা । প্রেম কি তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে!
ধপাস করে বিছানার উপরে বসে পড়লো সে ।
সামিনা রশিদ বললেন-
শরীর খারাপ করছে?
-নাহ মা। আমি একটু একা থাকতে চাই । প্লিজ এখন কাউকে আসতে দিওনা ।
.
তিনি চলে যেতেই সাফার চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো ।
প্রেম এটা কিভাবে পারলো!
কিন্তু তার একটি ইচ্ছে এখনো বাকি রয়েছে । তা পূরণ না করে প্রেম যেতে পারেনা ।
তবে কি প্রদীপ চুরি হয়েছে?
সাফার মনে পড়ে গেল, তাইফ ও শফিকুল তাকে না জানিয়েই চলে গিয়েছিল । তবে কি তারাই…
আর না ভেবে তাইফের নাম্বারে ডায়াল করলো সাফা ।
নাম্বার বন্ধ পেয়ে শফিকুলের নাম্বারে করলো । শফিকুল ফোন রিসিভ করছেনা দেখে এবার নিশ্চিত হলো সাফা, এটা তাদেরই কাজ!
এখুনি তার প্রদীপ উদ্ধার করতে হবে । প্রেমকে সে এভাবে হারাতে দিতে পারেনা!
ঘরের সবাইকে ফাঁকি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসলো সাফা ।
ছুটতে ছুটতে সে চলে আসলো তাইফের বাসায় ।
কলেজের পাশেই তাইফের বাসা । তার বাসায় এসে জানলো, সে একটু আগেই বেরিয়েছে ।
সাফা চিন্তায় পড়ে গেল । এই সন্ধ্যে বেলায় সে কোথায় যেতে পারে?
সাফা জানে, তাইফ ভীষণ শান্ত একটা ছেলে । তার বাসায় না জানিয়ে দূরে কোথাও নিশ্চয় সে যাবেনা । এমন অভ্যেস তার নেই । তবে কি সে কলেজের পেছনের ছোট মাঠে গিয়েছে?
মনে আশা নিয়ে সেদিকে ছুটতে লাগলো সাফা ।
.
.
কলেজের পেছনের এদিকটায় মানুষের আনাগোনা একেবারেই নেই বললেই চলে । বেশ গহীনও এটি!
তাইফ প্রদীপটি মাটিতে পুতে ফেলবে এমনটিই সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছে ।
সাফাকে একটা শাস্তি দিতে পারলেই যেন শান্তি পাবে সে ।
ছোটখাটো একটা গর্ত করলো সে, প্রদীপটি পুতে রাখার জন্য । হঠাৎ তার মাথায় দুষ্টু একটা বুদ্ধি আসলো ।
সেও প্রদীপের মাধ্যমে নিজের তিনটি ইচ্ছে পূরণ করতে পারবে । তবে কেন সে এই সুযোগটি হাত ছাড়া করতে চলেছিল!
লোভে তাইফের চোখ চিকচিক করে উঠল ৷ প্যান্টে হাত মুছে প্রদীপের গায়ে তিনবার ঘষলো সে । চারদিকে ধোঁয়া দেখে মুখে হাসি ফুটলো তার । এই বুঝি প্রেমের দেখা পাবে!
একটু পরেই প্রেম বেরিয়ে এসে বলল-
হ্যালো স্যার । আমি আপনার তিনটি ইচ্ছে পূরণ করতে প্রস্তুত ।
.
প্রেমের মতো সুদর্শন ছেলে দেখে তাইফের চোখও মুগ্ধতায় ছেয়ে গেল ৷ আর সাফা তো মেয়ে!
তাইফ সময় নষ্ট না করে বলল-
আমি চাই সাফা যেন আমায় ভালোবাসে ।
-কারো মনের উপরে জোর খাটানোর শক্তি আমার নেই ।
-তবে তোর কেমন শক্তি আছে! ফালতু । প্রথম ইচ্ছেটায় পূরণ করতে পারলিনা ।
.
কিছুক্ষণ পায়চারি করে তাইফ বলল-
সাফাকে একরাতের জন্য নিজের করে চাই ৷ এতে করে আমার প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে যাবে । সেও আমাকে ছেড়ে যেতে পারবেনা । এটা তো সম্ভব নাকি?
.
প্রেম কিছু না বলে হাসতে থাকলো । তাইফ অবাক হয়ে বলল-
হাসছিস কেন?
.
মুহূর্তের মাঝেই প্রেমের দেহের গঠন পাল্টে গেল । একজন সুন্দর ছেলে হয়ে গেল, সবুজ রঙের বড় আকৃতির দৈত্য!
.
প্রেমের এরূপ রূপ দেখে তাইফের হাত থেকে প্রদীপটা পড়ে গেল ।
প্রেম বলল-
হ্যাঁ এটাই আমার আসল রূপ । আর এমন একটি ইচ্ছের কথা বলে তুই পার পাবি ভেবেছিস? আজ আমার হাতেই তোর মৃত্যু হবে । ঠিক ওভাবেই তোর দেহটাও পড়ে থাকবে, যেভাবে নাফাখুমের লাশটি দেখেছিস ।
.
তাইফ কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে বলল-
তার মানে খুন গুলো তুমি করতে?
-হ্যাঁ খুন গুলো আমিই করেছি । এখন করব তোকে ।
.
হঠাৎ সাফার গলার শব্দ শুনতে পেলো তারা ৷
সাফা ধীরেধীরে তাদের দিকে এগিয়ে এসে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল-
এসব আমি কি দেখছি! প্রেম এটা তুমি!
.
এই সুযোগে নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য দৌঁড়ে চলে যেতে থাকলো তাইফ ।
প্রেম তার পিছু নিতে চায়লে সাফা বলল-
তুমি মানুষ খুন করো?
.
নিশ্চুপ প্রেমকে দেখে সাফা আবার বলল-
এই তোমার আসল রূপ!
.
এবার আগের রূপে ফিরে আসলো প্রেম ।
তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সাফা বলল-
আমি ভেবেছি তুমি ভালো মনের একজন! কিন্তু তুমি একটা ধোকাবাজ । সুন্দর ছেলের রূপ ধরে আমার সাথে ছিলে । ভালো মানুষ সেজে থাকতে আমার সামনে । আর আমি কিনা এসব বুঝতেই পারিনি!
.
সাফা মাথায় হাত দিয়ে বলল-
নাফাখুমের লাশটির পাশে প্রদীপটা পাই আমি । এরপরেও আমি এর রহস্য কিভাবে বুঝলাম না!
.
প্রেম বলল-
ম্যাডাম আপনি শান্ত হোন প্লিজ ।
-আরো কিছু বলার আছে তোমার? আরো?
.
মৃদু হেসে প্রেম বলল-
আপনি আজ প্রথম আমায় তুমি করে বললেন ।
.
সাফার দিকে হাসিমুখে তাকিয়ে রইল প্রেম ।
কিন্তু সাফা আর তার পাতানো ফাঁদে পা দিতে চায়না । সে দ্রুত প্রদীপটা হাতে নিয়ে বলল-
তুমি আর কারো জীবন নষ্ট করো, এটা আমি হতে দিবনা । কিছুতেই না ।
.
দ্রুত প্রদীপ ঘষে প্রেমকে ভেতরে ঢুকালো সাফা ।
তার চোখ জোড়া ছলছলে । আশেপাশের সবকিছু ঝাপসা মনেহচ্ছে । ওড়না দিয়ে চোখটা মুছে নিলো সে । তাইফের করা গর্তে প্রদীপটা পুতে, মাটি চাপা দিয়ে বিড়বিড়িয়ে বলল-
এই জীবন ধ্বংসের প্রদীপ, আর কোনো মানুষের হাতে পড়বেনা।
.
.
এদিকে বাড়ির সামনে এসে উঠোনে বসে পড়লো তাইফ। ঘেমে ভিজে তার শরীর একাকার হয়ে গিয়েছে।
এটা কি দেখলো সে! প্রেম একটা দৈত্য! এতদিন রূপ ধরে ছিল সে। আবার সে মানুষও খুন করে। যদি তাই হয়ে থাকে, তবে সাফাকে কেন সে খুন করলো না? আর সাফার কাছেই সুদর্শন ছেলের রূপ ধরে ছিল? এর পেছনে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে!
.
চলবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *