প্রাক্তন

প্রাক্তন 2 !! Part- 11

হঠাৎ করে সমুদ্র পিছন থেকে কানের কাছে এসে বললো আমাদের অপেক্ষাও এত বড়ই হতো তাই না?

অপেক্ষার নাম টা শুনতেই কেমন জানি সব ধমকে গেলো!

আমাদের না আমার অপেক্ষা!(আমি)
__আমাদের অপেক্ষা।
না অপেক্ষা শুধু আমার।
__এত দিনে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে এই পিচ্চির মত একটা বাবু থাকতো।আর ও ই তো অপেক্ষা হত।নাম তো তোমার ঠিক করাই ছিলো!(অনুশ্রী কে কোলে দিতে দিতে বললো)
আমার বাবু নাম অপেক্ষা হবেই তা যার সাথেই বিয়ে হোক না কেনো!
__হুহুহুহুহ যাষ্ট খুন করে ফেলবো!(অনুশ্রীর সাথে খেলতে খেলতে বললো)
কিহ?
__শুনতে পাও নি? যাষ্ট খুন করে ফেলবো!এই শ্রীজা তোমার মেয়ে টা এত কিউট হইছে কেনো?(বলেই অনুশ্রী কে নিয়ে চলে গেলো)

আমি সালা থো মেরে আছি!ইনার কি মাথা গেলো?

নীরু?(অনুশ্রী)
__হুম।বল
চল আজ কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
__কোথায় যাবা তোমরা?(অনির্বাণ)
কোথায় যাই যাই তোমাকে নিয়ে যাবো না।শুধু নীরু আর আমি।আবার আগের মত।

আগে শ্রী অনি কে তুই করে বলতো এখন তুমি করে বলছে।
“হয়তো সম্পর্ক সাথে সম্বোধন এর ও পরিবর্তন হয়েছে”

কি রে শ্রী তুই তো আগে অনি কে তুই করে বলতি!(আমি)
__সে তো অনেক আগের কথা।(বেশ লজ্জা পেয়ে)

মেয়েটাকে লজকা পেয়ে এক সুন্দর লাগে আগে জানতাম না তো।
অহহ আচ্ছা।আগে তো বন্ধু ছিলো এখন তো বর তাই না?(এক ধাক্কা মেরে বললাম)
__নীরু তুই জানিস ওকে এই তুই থেকে তুমি তে আসতে আমার পুরো ৬ মাস লেগেছে (অনি)
তাই নাকি?তা শ্রী যাবি কোথায়?(আমি)
__আমদের ওই জায়গায়।
আচ্ছা দারা আমি রেডি হয়ে আসি।
__এই সত্যি তোরা আমাকে নিবি না?(অনি)
নাহ(দুজনে এক সাথে)

আমি রুমে এসে ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে বাহির হয়ে দেখি সমুদ্র দাঁড়িয়ে।

আপনি?(আমি)
__হুম আমি।
তা তো আমিও দেখছি। কিন্তু এখানে কেনো?
__আচ্ছা বলো তো ছেলে টা কে ছিলো?
কোন ছেলে?(আয়নার দিকে সাজতে সাজতে)
__তোমার প্রতি ক্রাশ যে ছিলো?!
মনে নেই।(কাজল ঠিক করতে করতে)

সে এসে আমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে কোমর জরিয়ে আমাকে চেপে ধরে বললো,

একদম বাজে কথা বলবে না নীরা!
__আমি আবার কি বাজে বললাম?ছাড়ুন লাগছে তো আমার!
লাগুক।শোনো একটা মেয়ে তার কোনো ভালোবাসার মানুষ কে ভুলে যেতে পারে তবে যাকে সে একবার প্রত্তাক্ষান করেছে তাকে কখনোই ভোলে না নীরা!তাই তুমি ও ভুলো নি এখন বলো ছেলে টা কে!
__হয়তো ভুলে গেছি।
নীরা ধর‍্যের পরীক্ষা নিয়ো না।ভালো মত জিজ্ঞাস করছি বলে দাও না হলে কিন্তু!(চোখে চোখ রেখে)
__না হলে?(তার চোখে আমিও চোখ রাখলাম)
নাহ হলে!(অশান্ত মানুষ টা শান্ত হয়ে গেলো)
__না হলে কি?

সে আমার কোমর ছেড়ে পিঠে হাত দিয়ে আমাকে উচিয়ে নিয়ে আমার ঠোট তার ঠোঁটের আয়ত্তে করে নিলো!আমি ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পেরে উঠছি না। আমার চোখ বেয়ে জল পরছে।কেনো পরছে বুঝতে পারছি না।কিছুক্ষন পর সে ই আমাকে ছেড়ে দিলো।আমি চোখ খুলে তার দিকে তাকালাম দেখছি তার চোখ ও ভেজা।মানে সেও নোনা আবেগে ভেসেছে।

আমি এক ধাক্কা মেরে বললাম,

কি হচ্ছে কি সমুদ্র এই গুলো?
__জানি না।(সমুদ্র)
তুমি চলে যাও।আমার সামনে এসো না আর।
__পারবো না।
কেনো করছো এরকম?
__তুমি না মস্তিষ্কে প্রবেশের ক্ষমতা রাখো বুঝে নাও।কাজল টা ঠিক কর চোখের পানি তে লেপ্টে গেছে!
হুম করছি!তুমি চলে যাও প্লিজ।
__হুম। এই শুনো?(যেতে যেতে)
কিহ?
__ধন্যবাদ।
কেনো?
__কাজল চোখ আরেকবার দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

আমি আর কিছু বললাম না আয়নার দিকে তাকিয়ে কাজল ঠিক করছি।সে বেরিয়ে গেলো!

নীরা এই মানুষ টা তোকে পাগল করার ক্ষমতা রাখে। যত কাছে আসতে দিবি নিজে দূর্বল হয়ে যাবি।দূরত্ব বজায় রাখ এই মানুষ টার কাছে থেকে হয়তো তুই সত্যি ই পাগল হয়ে যাবি।

কি রে হলো?(শ্রী)
__হুম। চল(আমি)

আমি আর শ্রী বেরিয়ে পরলাম।সারা রাস্তায় সে প্রায় অনি কে বুঝিয়ে দিয়েছে কি করে কি করতে হবে কখন অনুর খাবার কখন ঘুম কোথায় কি আছে সব।মানে সে আমার সাথে থেকেও অনু অনির কাছে পরে আছে।

আমাদের পছন্দের জায়গাটাতে গিয়ে বসলাম।এই কয়েক বছর এ অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়েছে। শুধু হয় নি কাঠ গোলাপের গাছ টার। ওই গাছ এর নিচে গিয়ে বসলাম দুজনে।অনির ফোন এলো।শ্রী বুঝিয়ে দিচ্ছে।আমি মাথা উচু করে গাছে তাকালাম এই গাছ টার নিচে তার আর আমার কত শত স্মৃতি জরিয়ে আছে।আসলে শুধু এই জায়গা গুলো নয় “পুরো শহর টা জুড়ে তার স্মৃতি রয়েছে আমার স্মৃতির শহর”। তাই তো পালিয়ে গেছিলাম।

সমুদ্র?
_হুম (সে গেম খেলছে)
এই শোনো না?
__হুম
ধুরু তুমি গেম ই খেলো আমি গেলাম।(উঠে চলে যাচ্ছিলাম)
__আরেহ আচ্ছা বলো। কি হয়েছে?(গেলা বন্ধ করে)
আমাকে ফুল পেরে দিবে?
__কি ফুল?
হাদারাম আমরা কাঠ গোলাপের গাছের নিচে বসেছি।
__এত্ত বড় গাছ।পেরে দিবো কি করে।পাগল নাকি?
(উপরে মাথা তুলে)
প্রেমিকার জন্য যদি একটু পাগলামো ই না করলেন তাহলে কি করলেন জনাব?
__এই শোনো আমাকে না পাগলা কুকুর এ কামড় দেয় নি। (বলেই আবার মোবাইল নিয়ে পরে গেলো)
অহহ।তাই তো।আচ্ছা শোনা আমাকে না যেতে হবে।আসছি?
__কই যাবা?আচ্ছা যাও।
আচ্ছা আসছি।

আমি চলে এলাম বাসায় সেদিন খুব খারাপ লেগেছিলো। আমি সচরাচর খুব একটা আবদার করি না।আর সে আজ বললো পাগলা কুকুর এর কামর!

এসেই না খেয়ে ঘুমিয়ে গেছি।

মনে হলো কেউ একজন আমার হাত ধরে আছে।চোখ খুলে দেখি সমুদ্র!আমি চমকে উঠে বসলাম,

তুমি?(আমি)
__আমি!(সমুদ্র)
এখানে এই রাতে? কি হয়েছে? সমুদ্র বলছো না কেনো?
__উঠো?
কিহ?
__উঠো?
কেনো?
__উঠো না বাবা।
আচ্ছা আমি উঠে দারালাম সে আমায় আয়নার সামনে নিয়ে গেলো! সে মাথায় একটা কাঠ গোপালের ক্রাউন পরিয়ে দিয়েছে।হাতে ফুলের মালা।পরে বুঝতে পারলাম পায়েও দিয়েছে।

আমি ক্রাউন টা হাত দিয়ে ছুয়ে দেখছি।সে আমার পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো। আমি উল্টো দিয়ে ঘুরে তার বুকে আশ্রয় নিলাম।

কিরে কই হারালি?(শ্রী)
__না তো এখানেই আছি(চমকে উঠে)
আর বলিস না মেয়েটা এখন কেবল ঘুমোলো?
__হুম বুঝলাম

চলবে???

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *