না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 29

সাগর ভাবতেও পারেনি যে মোহনাকে এভাবে দেখবে ।
সাগর : oh my ALLAH… আমার মনে হচ্ছে আমি অজ্ঞান হয়ে যাবো… আমার বউ এতো সুন্দর কেন?
নিশান : শালাবাবু ভেতরে ঢোকো… 😁…
সাগর : এ্যা… হ্যা …
অর্থি দৌড়ে গিয়ে সাগরের কোলে উঠলো।
অর্থি : জল্লাদ মামা তুমি কেমন আছো?
সাগর : ভালো। তুমি কেমন আছো আমার princess …?
অর্থি : আমিও ভালো আছি… দেকো… আমলা আদকে বউ সেজেছি।
সাগর : মাশাল্লাহ লাগছে….
.
নিশান : বাবাই মামাকে বসতে দাও।
সাগর : its ok দুলাভাইয়া …
মোহনা : oh my প্রিয় আল্লাহ আপনি এখন এমন করে কিভাবে পৌছালেন…!!!
সাগর : plane দিয়ে। by air…
মোহনা : এমন ভাবে বলছেন যেন লন্ডন থেকে হেটে আসার সুযোগ আছে। আর আপনি একাই plane দিয়ে এসেছেন…
সাগর : আমিই একমাত্র ব্যাক্তি যে plane এ উরেছি। 😎। সমস্যা?
রেদোয়ান : শুরু হয়ে গেছে… বলি ২জনই থামেন এখন।
সাগর সবাইকে সবার gift দিতে লাগলো।।
সাগর : আপাদত এতোটুকুই । বাকী গুলো ship এ আসবে।
শ্রাবনী: এখন fresh হয়ে নে যা …
সাগর : হামম। যাচ্ছি । একটু কথা টথা বলেনি।
কথা টথা বলে সাগর fresh হতে গেলো।
.
একটুপর …
শ্রাবনী : মিষ্টু …
মোহনা : হ্যা ননাস আপু …
শ্রাবনী : পাগলি … সাগরের জন্য এই ফালুদা আর orange জুসটা নিয়ে যাও।
মোহনা : আপুই জল্লাদ হাত মুখ ধুয়ে নিজেই চলে আসবে।
শ্রাবনী : না এখন তো ও একটু rest করবে। তাই না? long journey করে এসেছে । তাইনা?😅।
মোহনা : তো। জল্লাদের তো ভার্টিগো নেই।
শ্রাবনী মনে মনে : আরে এই পাগলরে কিভাবে বুঝাই।
মোহনা অর্থির সাথে gift দেখতে ব্যাস্ত । শ্রাবনী ইশারা দিলো নিশানকে ।
নিশান ওর মা কে ফোন দিলো।
নিশান : অর্থি আসো আসো দীদা ফোন করেছে। চাইছে তোমাকে।
অর্থি কথা বলতে গেলো।
শ্রাবনী : মিষ্টি অর্থি কথা বলতে বলতে বলতে তুমি সাগরকে এগুলো দিয়ে আসোনা ।
মোহনা : হামম।
মোহনা ওগুলো নিয়ে রুমে গেলো ।
.
মোহনা : আরে জল্লাদ দেখি এখনও washroomএ। মেয়েদের চেয়ে বেশি ঢিলা।
মোহনা ট্রেটা টেবিলে রাখলো। দরজা লাগানোর শব্দ পেলো। পিছে ঘুরলো । দেখলো দরজার কাছে সাগর দারিয়ে আছে । মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে।
মোহনা : এ এমন ৩৬০° হাসি দিয়ে আছে কেন ? ভূতে ধরলো নাকি ? কিন্তু ভূত বলতে তো কিছু নেই। হয়তো লন্ডনে থাকলেও থাকতে পারে… যাই হোক আমার জামাইর কি? কিন্তু জল্লাদ এভাবে তাকিয়ে আছে কেন?
.
সাগর ২পকেটে ২হাত দিয়ে মোহনার দিকে এগিয়ে এলো। মোহনার দিকে হাত বারালে মোহনা ওখানে দারিয়েই শরীরটা পিছনে নিয়ে নিলো। সাগর মোহনাকে সোজা করে দার করালো। এরপর আচল টেনে ঘোমটা দিয়ে দিলো। মোহনা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে । সাগর মোহনাকে টেনে আয়নার সামনে নিলো।
মোহনা : আয়নায় মানুষ নিজের চেহারা দেখে … অন্যরটা না … 🙄 ।
সাগর : আমি তো দেখি। আমার বউয়েরটা।
মোহনা : 🥱 ।
সাগর : বউ সাজলে তো আমার awwe ki cute… মোহোপাখিকে ১টা লাল পুতুলের মতো লাগে।
মোহনা : huh… আমি অর্থির সাথে খেলবো।
সাগর : উহু… এখন তো অর্থির সাথে খেলতে যেতে দেয়া যাবেনা ।
মোহনা : কেন?
মোহনার হাত-পা ঘামছে। মোহনা confused + nervous হলেই ওর হাত-পা ঘামে। মোহনা যথেষ্ট confused … ও সাগরের কাহিনি বুঝতে পারছেনা ।
সাগর : জানো তোমার হাত পা বেশি নরম কেন? কারন তোমার হাত পা ঘামে ….
মোহনা : 😒।
সাগর মোহনাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কপালে কিস করলো । এরপর শক্ত করে জরিয়ে ধরলো ।
মোহনা : আমি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছিনা….
সাগর : i missed u….
মোহনা মনে মনে : মনে হয় i also একটু একটু miss u…
সাগর : i love you…
মোহনা মনে মনে : এর উত্তর কি হতে পারে!!!
সাগর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো যে ১২টা বাজলো।
সাগর : happy anniversary my মোহোপাখি…
মোহনা : কিসের মধ্যে ক…. কি?
মোহনা সোজা হয়ে দারিয়ে
বলল : এ্যা ১বছর হয়েও গেলো!!! যাই হোক happy anniversary my awwwe ki cute জল্লাদ জামাই…
সাগর মুচকি হেসে মোহনার নাক টেনে ওকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জরিয়ে ধরলো । মোহনার কাধে মাথা রাখলো ।
সাগর : thank you my মোহোপাখি … হামমম ১বছর হয়ে গেলো । ভাবতেই অবাক লাগে। তাইনা?
বলেই মোহনার ঘাড়ে ১টা কিস করলো। আর কি লাগে মোহনার। heart attack করার অবস্থা।
সাগর : হাহাহাহাহা … বউ পেয়েছি কপাল গুনে … romance আর কপালে নাই …. হাহাহা।
মোহনা : huh….
সাগর : থাক বইন রাগ করিসনা । পুরাই চেরী লাগছে । কি লাগবে বল ….
মোহনা : এই আপনি আমাকে তুই করে ডাকছেন? কতো সাহস ??? 😤।
সাগর : ওরে আল্লাহ। আচ্ছা ভুলা হয়ে গেছে আমাকে ক্ষমা করে দেন angry minister ….
মোহনা : huh….
সাগর : কি gift লাগবে বলো ….
তখন দরজায় অর্থি হামলা পরলো।
অর্থি : জল্লাদ মামা …. ও জল্লাদ মামা …
মোহনা দরজা খুলল । দেখলো যে ওর আপু, ভাবি ,ভাইয়া, দুলাভাইয়া , ভাবির কোলে ২ মাসের ভাতিজা রোদ্র , বাবা আর cute শশুড়বাড়ির মানুষ , কেক টেক আর অন্যান্য জিনিস নিয়ে দারিয়ে আছে।
সবাই : happppy anniversary “সাহোনা” ….
সবাই cute করে celebration করলো ।
.
পরদিন ….
রেদোয়ান : কেনো না করলে পার্টি দিতে? তোমাদের রিসিপশনও হয়নি। এই সুযোগে হয়ে যেতো । অনেকে জানেনা। even আমাক অফিসেও হাতে গোনা কয়েকজনই জানে। সবাইকে জানাতে হবেনা যে মোহনা সাগরের awwwe ki cute বউ…
সাগর : 😆 ।
নিশান : হামম। সকলের জানা দরকার মোহনা সাগরের। they are together now…
সাগর : ভাইয়া … এটা নতুন কি? মোহনা সাগর কি নতুন করে এরসাথে? আল্লাহ নিজেই সাগর মোহনাকে এক করেছে। অনন্তকালের জন্য….
সৌরভ : সায়রানা মেজাজ সারুভাই…. কেয়া বাত হ্যা …
শিখা : আচ্ছা তোদের তো এখনও কবুল বলা হয়নি … সিরিয়ালের মতো করেও তোরাও আবার বিয়ে করনা। কবুল বলে …
সাগর : না মামনি… কবুল বলার সময় আসেনি….
.
৭দিনপর…
অহনার ডেলিভারী….
সবাই হসপিটালে …
অহনার মেয়ে বাবু হলো। দিপ্তীর মতো অহনাও নিজের সন্তানকে মোহনার কোলে দিলো ।
অহনা : তোর ইচ্ছা পূরন হয়েছে .. prince charming এর পর snow white এসেছে …
মোহনা বাবুর চোখে মুখে অনেক আদর দিলো।
.
রাতে ….
মোহনা : জানেন জল্লাদ জামাই …. আমি ওর নাম রাখবো মেঘলা। রোদ্র আর মেঘলা। কি দারুন জুটি হবেনা। জানেন আমিনা আল্লাহর কাছে চেয়েছিলাম যেন ভাবির ছেলে বাবু হয় আর আপুর মেয়ে বাবু। কারন ভাবির ডেলিভারী ডেট আগে ছিলো। এখনে আরামসে রোদের সাথে মেঘের বিয়ে দিতে পারবো ভবিষৎে … awwwe ki cute.. আমার ভাগনিটাকে আর কাদতে কাদতে শশুড়বাড়ি যেতে হবেনা …. মামার বাড়িই শশুড় বাড়ি হবে।
মোহনার কথার ফুলঝুড়ির আড়ালে থাকা কষ্টটা বেশ ভালোভাবেই অনুভব করছে। রোদ্র হওয়ার সময় লন্ডনে বসেও অবুভব করেছিলো। কিন্তু শ্বান্তনা দেয়ার সাহস পায়নি। কারন জানতো যে শ্বান্তনা দিতে গেলে মোহনা ভেঙে পরবে। আর ও ছিলোনা যে মোহনাকে সামলাবে। কিন্তু আজকে ও আছে। যদি মোহনা মনের ভাবটা প্রকাশ না করে তবে ভেতরে ভেতরে গুমরে মরবে। সাগর মোহনাকে বুকের মাঝে শক্ত করে চেপে ধরলো। মোহনাও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না । হাউমাউ করে কাদতে লাগলো ।
মোহনা : আমিও আম্মু হতে চাই সাগর … আম্মু হতে চাই …
মোহনার কান্নাতে সাগরের ভীষন কষ্ট হচ্ছে । কিন্তু তবুও ও চাইছে যে মোহনা কান্না করুক। যতো কষ্ট আছে আজকে মোহনা কান্না করে বের করে ফেলুক । কান্না করতে করতে মোহনা ঘুমিয়ে পরলো । সারারাত সাগর মোহনাকে শক্ত করে ধরে বুকের মধ্যে রাখলো ।
.
২দিনপর …
পিংকু ( ২তলার ভারাটের বাচ্চা ) : ভাবি আপু ভাবি আপু ….
মোহনা : আরে পিংকু … মামা বাড়ি থেকে চলে এসেছো? কেমন আছো ?
পিংকু :ভালো ভাবি আপু। জানো ভাবি আপু আমি না মামাবাড়ি থেকে ১টা নতুন খেলা শিখে এসেছি ?
মোহনা : সত্যি ? বলোনা কি খেলা?
পিংকু : এলন্টি লনটন ঘন্টা বাজে টনটন ১২৩…
মোহনা : এ্যা ? এটা আবার কি?
পিংকু :অননেক মজার খেলো। awwwwe ki cute… তবে একটু মানুষ বেশি লাগবে ….
মোহনা : ওহ… কালকে ক্লাস করে এসে বিকালে খেলবো।
পিংকু : তুমি কি করছো ভাবি আপু?
মোহনা : কফি বানাচ্ছি । খাবে?
পিংকু : না তিতকুনি…
.
একটুপর …
সাগর : মোহো… মোহো… মোহো…
মোহনা : present sir… 😁..
সাগর দেখে মোহনা ear to ear হাসি দিয়ে ২কাপ কফি হাতে নিয়ে দারিয়ে আছে ।
সাগর মনে মনে : আবার কোনো না গন্ডগোল আছে । আল্লাহই জানে মাথায় আবার কি চলছে? কিছু না কিছু তো আছেই … চল ভাই সাগর….
মোহনা : এই নিন কফি। আমার হাতে বানানো। ☺।
সাগর : thank u…
মোহনা : চলুন ২জন মিলে কফি খাই।
সাগর :sure ….
মনে মনে : আজকে ভুলেও জিজ্ঞেস করবোনা … জিজ্ঞেস করলেই নিজের পায়ে কুড়াল মারা হবে । তবে হাসতে দেখে ভালো লাগছে ।
মোহনা : সাগর… সাগর… সাগর…
সাগর ভীষম খেলো ।
মোহনা : কি হলো?
সাগর : কককিছুনা।
মোহনা : oh… ok… আমার কাছে ১টা awwwe ki cute idea আছে?
সাগর : কিসের idea ?
মোহনা : আম্মু হওয়ার। ☺।
সাগর : …
মোহনা : আমি আরেকটা বিয়ে করুন… 🙈…
কথাটা শুনতেই সাগরের মেজাজ গরম হয়ে গেলো। ঠাস করে কাপ টা আছার মারলো।
সাগর : কি বললা সাহস থাকলে আরেকবার বলো…
মোহনা : নননা মমমাানে ররররাগ কককরছেন কককেন? কককথাটা তো শুনুন… আমি তো আপনাকে divorce দিতে বলিনি… তাইনা? বববলেছি বিয়ে করতে। আমিও এএএই বাসায়ই থথথাকবো… pppromise… সৎ আম্মু মানেও তো আম্মু। তততাইনা… বাবু আপনাকে আম্মু থুরি ববববাবা বলে ডাকবে। please বববিয়ে কর….
আর বলতে পারলোনা। সাগর ঠাস করে ১টা থাপ্পর মেরে চলে গেলো।
.
মোহনা : যাহ বাবা … এমন কি বললাম ? বাবাগো গাল ফাটিয়ে দিলো। উ কি ব্যাথা … আজকে বাসায় এলে এর এমন অবস্থা করবো যে … কি করবো? কিছুতো করবোই। শালা জল্লাদ।
তখন শিখা রুমে এলো। শিখা :কি হলো ? সাগর যে রেগে বেরিয়ে গেলো? কাপ ভাঙা … সাগর ভেঙেছে?
মোহনা : শুধু কাপই ভাঙেনি …. আমাকে থাপ্পরও মেরেছে। এই দেখো … লাল করে ফেলেছে ।
শিখা : এতো বড় সাহস … ? আজকে আসুক বাসায়। ওকে এমন শিক্ষা দেবো আজকে।বউকে মেরে বীরপুরুষ ভাবছে। আবার নিজেই রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে গেলো রাত করে। তুই গিয়ে বস যা ।
মোহনা : হামমম।
.
৪ঘন্টাপর…
সাগর বাসায় ফিরলো। মনটা ভীষন খারাপ । মোহনাকে থাপ্পর মেরে ওর নিজেরই খারাপ লাগছে ।
রেদোয়ান : সাগর …
সাগর : বাবা ঘুমাওনি?
রেদোয়ান : কয়টা বাজে?
সাগর : দদুইটা।
রেদোয়ান : এমন কোনো লাট সাহেবের ছেলে হয়ে যাওনি যে রাত ২টা বাজে বাসায় ফিরবে…
সাগর : sorry বাবা ।
রেদোয়ান : আর তুমি কোনো রিকশাচালক না যে বউয়ের গায়ে হাত তুলবে।
সাগর : sorry বাবা।
রেদোয়ান : last warning to u…যদি ২য় বার এমন করো তো কেবল তোমাকে আমি বাসা থেকে বের করে দিবো।
সাগর : …
রেদোয়ান : যাও রুমে যাও ।
সাগর রুমে গেলো।
.
চলবে…