না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 27

সাগর : মোহো … water bus দিয়ে যাও… ২ঘন্টায় চলে যাবে…
মোহনা : না আমি লঞ্চে যাবো।
সাগর : ১টাও কথা শোনো না তুমি।
মোহনা : দেখুন চিল্লাবেন না। আপনি না করেছেন আমি কি আর request করেছি? করিনি তাইনা? ২য় বার আপনাকে requestও করিনি… তাহলে। যেতে দিবেন না fine… bye…
সাগর : তোমার কথা না বলাই সবথেকে বলা মোহো…
মোহনা : আমি যাবোনা। happy ?
সাগর : হইসে আর রাগ করতে হবেনা। পরশুদিনই তো যেতে হবে তো আজকেই shopping করতে যাও । রাগ তো পরেও করতে পারবা …
মোহনা : আমি মোটেও রাগ করিনি ।
সাগর : যেই লঞ্চে যাবে সেটা কতো বড় জানো?
মোহনা : আমি যাবোনা। গেলে by road যাবো । আর shopping এও যাবোনা। bye…
মোহনা রেখে দিলো।
.
সাগর : কাহিনি কি হলো? খুশি তো হওয়ার কথা… এমন করে রাগ তো মোহো করেনা। তাহলে? কি হতে পারে… oh no… আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে সেদিন ওকে ঝাড়ি মেরেছি … ভুলেই গিয়েছি…
সাগর আবার ফোন করলো।
মোহনা : হ্যাললো.. 😒..
সাগর : what a hello.. !!!… আচ্ছা শোনো sorry… আসলে সেদিন ঝাড়ি মারতে চাইনি… মারা উচিত হয়নি… অনেকগুলা sorry …
মোহনা : 😒।
সাগর : কানে ধরে যদি উঠবস করি চলবে? 😅।
মোহনা : হামম হামম।
সাগর : কতোবার?
মোহনা : ২৫কেজির বেশি।
সাগর : ওক… কি? ২৫কেজির বেশি কানে ধরে উঠবস মানে কি?
মোহনা : ২৫ বারের বেশি।
সাগর : কতোবার সেটা তো বলবা?
মোহনা : ৭৫ বার..
সাগর : আচ্ছা।
সাগর কানে ধরে উঠবস করলো।
সাগর :happy ?
মোহনা : হামম হামম।
সাগর : আচ্ছা শোনো।
মোহনা : সময় নেই যেতে হবেনা। awwwe ki cute… 😘..
সাগর : 😒।। যেদিন তোমাকে ঠিক মতো বুঝতে পারবো সেদিন মনে হয় আমি নোবেল পাবো।
মোহনা : সত্যি? 😃।
সাগর : হামম। যাইহোক শোনো। ভালোভাবে… বরিশাল যাবে, লঞ্চে যাবে ভালো কথা। আমার যতোদূর মনে হয় তুমি পুরো লঞ্চ ঘুরবে। আর বাকী সময় নদী দেখতে দেখতেই কাটিয়ে দেবে। ভালো কথা। কিন্তু গ্রিল ধরে লাফালাফি করবেনা। ১হাত দুরে তো বসবেনা but হাফ হাত দূরে থাকবে। আর জামান uncle দের বাসায় পুকুর আছে। বরিশালে 70% বাড়িতে পুকুর আছে । তো পুকুরে গিয়ে লাফালাফি দাপাদাপি করবেনা। একা একা পানিতে নামবেই না । মামনি অথবা আপুর সাথে যাবে। infact পুুকুরে নামার দরকার নেই। চোখ কান খোলা রাখবে। চতুর্দিকে নজর রাখবে।
মোহনা : চোখ দিয়ে পিছে কি করে দেখবো!!!
সাগর : পারিপার্শিক দিকে নজর রাখবে। কোনো ছেলে যদি চোখ মেলে বাজে ভাবে তাকায় তো আগে তাকে ঠাস ঠাস ২টা থাপ্পর মারবে তারপর কাউকে বিচার দেবে। বাবা আর দুলাভাইয়া ছারা কারো সাথে বাইরে যাবেনা।
মোহনা : অতো কিছু মনে থাকবনা। আপনি message দিয়ে রাখবেন।
সাগর : stupid … আর শোনো লঞ্চে আমার ফোন কাটবেনা। যতোক্ষন লঞ্চে থাকবে ততোক্ষনই ফোন রিসিভ করাই থাকবে।
মোহনা : কানের কাছে ফোন নিয়ে কথা বলতে পারবোনা এতোঘন্টা।
সাগর : কথা বলতে হবেনা। just receive করে রেখে দিবে। ok?
মোহনা : okkk… 😒…
.
২দিনপর…
লঞ্চে উঠে মোহনা ইইই বলে অর্থির হাত ধরে লাফাতে লাগলো। আর আশেপাশের লোক ৮ম আশ্চর্য দেখতে লাগলো । তাতে মোহনার জামাইর কিছুনা…
মোহনা : অর্থি চলো পুরো লঞ্চ ঘুরে দেখি। শুরু হোক আমাদের কেবিন থেকে।
মোহনা যেই কেবিনে গেলো বমি করার উপক্রম।
মোহনা : এতো দেখি morgue… yuck… আমি আর এর ভেতরে যাবোনা শশুড়বাবা… একারনেই মনে হয় জল্লাদ বলছিলো। যাই হোক আমার জামাইর কি? আপু দুলাভাইয়া চলোনা।
নিশান : চলো….
ওরা সারা লঞ্চ ঘুরলো। সময় মতো বরিশাল পৌছালো । আর গিয়ে মোহনা লম্বা চরা ঘুম দিলো । পরদিন থেকে বিয়ের উৎসব শুরু হলো।
সব কিছু ভালোভাবেই পালিত হলো । তবে ঝামেলা বাধলো বৌভাতের পরদিন রাতে…
.
সাগর : এখও ঘুমাওনি কেন?
মোহনা : আপনি তো জানেনই যে চকোলেট না খেলে রাতে ঘুম আসে না।
সাগর : তো সব দিতে গেলে কেন?
মোহনা : আমি কি জানতাম যে সব গুলা শেষ হয়ে যাবে? আমি তো just ১টা বাবুর কান্না থামাতে দিয়েছিলাম। পরে যে সব বাচ্চারা attack করবে?
সাগর : কিনিয়ে আনতে।
মোহনা : দুলাভাইয়া গিয়েছিলো। but snickers পেয়েছিলো। yuck…
সাগর : ঘুমানোর চেষ্টা করো। চেষ্টা করো চলে আসবে।
মোহনা : কখন থেকেই তো চেষ্টা করছি ।
সাগর : আরেকবার করো ….
.
রাত ১২…
মোহনা এখনো ঘুমায়নি । ৬-৭দিন বিয়ের উৎসব শেষে আজকে সবাই ভীষন ক্লান্ত । তাই সবাই ঘুমিয়ে অস্থির । কিন্তু রাতে চকোলেট না খাওয়ায় মোহনার sugar down হচ্ছে । খারাপ লাগতে শুরু করলো।
মোহনা : এমন লাগছে কেন? কি করি? একটু চিনির পানি খেতে পারলে মনে হয় ভালো হতো । রান্নাঘরে গিয়ে দেখবো? রান্নাঘর কোথায়
খুজতে বের হলো। পেয়েও গেলো ।
ওই বাড়িতে অনেক ইদুর তাই ratom নামের ১টা ইদুর মারার ঔষধ ব্যাবহার করা হয়। দেখতে চিনির মতো । কাজের মেয়ে প্রায়ই ভুল করে ratom এর বয়মটা সেল্ফের নিচে না রেখে ওপরে রেখে দেয় । আজও রেখেছে । মোহনা দেখলো ১টাতে salt লেখা। তো ও ভাবলো যে অন্যটাকে ভাবলো চিনি। কিন্তু ওটা ছিলো ratom…. মোহনা সুন্দর করে ওটা দিয়ে শরবত বানিয়ে মুখে দিলো ।
মোহনা : এমন কেন এটার test? মিষ্টি তো লাগছেনা। তাহলে? expired নাকি? চিনিও কি expired হয় নাকি? আরেকটু দিবো ? ধুর খেয়ে ফেলি।
খেয়ে কেমন যেন লাগতে লাগলো।
খেয়ে মোহনা বের হতে নিলো। তখন জামান সাহেবের স্ত্রী রাবেয়ার সাথে দেখা হলো ।
রাবেয়া : আরে বউমা তুমি এখানে? কিছু লাগবে?
মোহনা : নননা নননা আন্টি কককিছু লাগবেনা। আসলে আন্টি একটু চিনির পানি খেতে এসেছিলাম।
রাবেয়া : খেয়েছো?
মোহনা : জী আন্টি।
রাবেয়া : হঠাৎ যে চিনির পানি ? খারাপ লাগছে?
মোহনা : নননা আন্টি ।
রাবেয়া : চিনি পেয়েছিলে?
মোহনা : জা আন্টি। আন্টি আপনি এখানে?
রাবেয়া : হ্যা একটু পানি নিতে এসেছিলাম।
মোহনা : ওহ।
রাবেয়া : তাহলে গিয়ে ঘুমিয়ে পরো বৌমা ।
মোহনা : জী ।
মোহনা টলমল পায়ে রুমে যেতে লাগলো।
.
রাবেয়া পানি নিতে গিয়ে দেখলো যে ratom এর বয়মটা ওপরে।
রাবেয়া : ফুলির মা আবার এটা ওপরে রেখেছে । কেউ যদি ভুল করে এটা …. ১মিনিট মোহনা বলল চিনির পানি খেয়েছে। আর চিনিও সহজে পেয়েছে… কিন্তু চিনি কোথায়? ও এটা খায়নি তো … মনে তো হয়।
রাবেয়া দৌড়ে গেলো । কিন্তু যা হবার তা তো হয়েই গেছে । রাবেয়া কিছুটা যেতেই দেখে মোহনা পরে আছে ।
রাবেয়া : মোহনা … মোহনা …. 📢📢📢…
এতো জোরে চিল্লানোতে প্রায় সবারই ঘুম ভেঙে গেলো । মোহনার নাম শুনে শিখা রেদোয়ান নিশান শ্রাবনী সবার আগে ছুটে এলো । মোহনা কে হসপিটালে নেয়া হলো ।
.
হসপিটালে …
রাবেয়া : ভাবি ভাবি কান্না বন্ধ করুন। ঠিক হয়ে যাবে মোহনা ।
শিখা তো সমানে কেদেই যাচ্ছে ।
রেদোয়ান : আমার ছেলেকে আমি কি জবাব দিবো ? …
নিশান : বাবা ১টা কথা বলি আপাদত সাগরকে কিছু বলার দরকার নেই ।
রেদোয়ান : এতো বড় ১টা কথা …. লুকিয়ে রাখা যাবে?
নিশান : রাখতে হবে বাবা। সাগর ওখানে একা থাকে । আর এমনিতেও সাগর over possessive…
একটুপর ডক্টর বের হলো। সবাই মিলে ডক্টরের ওপর হামলা করলো ।
ডক্টর : relax relax … she is out of danger now… poison বের করে দিয়েছি । excuse me….
ডক্টর চলে গেলো ।
রেদোয়ান মনে মনে : সাগর না আসা পর্যন্ত মামনি কে নিয়ে আর কোথাও বের হবোনা…
.
পরদিন…
সকালে …
মোহনার মোবাইলে সাগরের ফোন এলো । মোহনার মোবাইল শ্রাবনীর হাতে।
শ্রাবনী : oh no… সাগর… কি বলবো?নিশান…. নিশান ….
নিশান : কি হয়েছে?
শ্রাবনী : সাগরের ফোন …
নিশান : ওহ … ১কাজ করো ধরোনা। মনে করবে মোহনা ঘুম।
শ্রাবনী : আচ্ছা ।
সাগর ৩-৪বার ফোন দিলো শ্রাবনী ধরলোনা ।
সাগর : ফোন ধরছেনা কেন মিসেস নাগিন? ঘুম? মনে হয়। মামনিকে ফোন করি।
সাগর শিখাকে ফোন করলো ।
শিখা : হহহ্যালো ….
সাগর : হেলো মামনি। তোমার কন্ঠ এমন লাগছে কেনো ? কি হয়েছে ?
শিখা : ককিছুনা। ওই এইকদিনের ব্যাস্ততায় একটু tired আর কি ….
সাগর : ওহ। তো back করছো কখন?
শিখা : ২-৩দিনের মধ্যে।
সাগর : ২-৩দিনের মধ্যে? আজকে না যাওয়ার কথা ছিলো?
শিখা : ছিলো তো। কিন্তু জামান ভাই রেখে দিলো ।
সাগর : হামম। মোহো এখনও ঘুম?
শিখা : হামমম।
সাগর : আচ্ছা শোনো । মোহোর চকোলেন আনিয়ে দিও কোনো super shop থেকে।
শিখা : হামম।
সাগর : রাখছি । class আছে।
শিখা : হামমম।
.
সাগর ফোন তো রেখে দিলো। কিন্তু কেমন যেন ১টা feel হচ্ছে । কিছুতেই ক্লাসে মন বসাতে পারছেনা । কোনো রকমে ক্লাস করেই আবার ফোন করলো। এবারও মোহনা ধরলোনা।
সাগর : এই মেয়েটার সমস্যাটা কোথায় কে জানে? ২টা ক্লাস বেকার গেলো। এখন তো practical … calm down সাগর। chill…
সাগর ক্লাস করলো। দুপুরেক দিকেই মোহনাকে রিলিজ দেয়া হলো।
.
বিকালে …
রাবেয়া : sorry বউমা … আমাদের জন্য….
মোহনা : এমা আন্টি আপনি sorry কেন বলছেন ?
রাবেয়া : তো কি করবো বউমা? কি লজ্জাজনক।
মোহনা : its ok aunty…
নিশান : মিষ্টু… এইযে তোমার chocolates…
মোহনা : thank you দুলাভাইয়া ।
নিশান : মিষ্টু সাগরকে বলোনা । কেমন?
মোহনা : হামম।
মোহনা চকোলেট খেতে লাগলো। তখন সাগর ফোন করলো।
মোহনা : হ্যালো হ্যালো হ্যালো…
সাগর : ১টা থাপ্পর দিবো। সকাল থেকে কতোবার ফোন করেছি? ধরোনি কেন?
মোহনা : আমার ইচ্ছা …
সাগর : ওই … বকা না খেলে তোমার ভালো লাগেনা?
মোহনা : না।
সাগর : তোমার কন্ঠ এমন লাগছে কেন? কি হয়েছে?
মোহনা : ওই তো r….
আমার আবার কি হবে?
সাগর : কি বলতে চেয়েছিলে?
মোহনা : কি বলতে চাইবো? আজব। আপনি ডক্টর না হয়ে গোয়েন্দা হলে ভালো হতো ।
সাগর : এখন বলো …
মোহনা : আরে ভাই শোনেন চকোলেট ছারা কি আর মোহনা বাচে। এখন পেয়েছি । তাই জানে জান এলো।
সাগর : 😒। video call করছি ধরো।
মোহনা : ok…
সাগর রেখে দিলো ।
মোহনা : হায় হায়… হাতে তো ক্যানোলা বের করার পর তো one time bandage করে দিয়েছে। ধুর খুলে ফেলি ১টানে । কিন্তু টেনে খুলতে গেলে তো লোমে ব্যাথা পাবো।
.
ভাবতে ভাবতে সাগর video call করেও দিলো। মোহনা ভাবনা চিনতা বন্ধ করে ১টা নে ব্যান্ডেজটা খুলে ফেলল ।
মোহনা : হ্যালললো… 😒..
সাগর : হাত পা দেখাও দেখি …
মোহনা হাত দেখাতে লোগলো।
মোহনা : happy ?
সাগর : not so… মনে হচ্ছে something is very very fishy…
মোহনা : huh…
সাগর : আচ্ছা বাদ দাও । তো এখন তো চলে যাবে ২-৩দিনের মধ্যে। যা যা দেখার দেখেছো ?
মোহনা : হ্যা ….
সাগর : আমি একটু অবাক।
মোহনা : কিনো কিনো…
সাগর : তুমি এখনও কারো নামে চুগলি করলেনা?
মোহনা : কি চুগলি করবো? চুগলি করবো? কিছুই নেই চুগলি করার মতো।
সাগর : all are good & perfect ?
মোহনা : all are good … একটু আজিরা বেশি ভালো। আর আপনি তো জানেনই আজিরা ভালোগিরি দেখলে আমার মাথা ঘুরিয়ে বমি আসে।
সাগর : হাহাহাহাহা। মিসেস নাগিন।
২দিনপর মোহনারা ঢাকায় গেলো।
.
৯দিনপর…
২-৩ দিন ধরে মোহনার হাত পায়ে পানি এসেছে। হঠাৎ এমন হওয়াতে সবাই চিন্তায় পরে গেলো। video call এ সাগরও দেখেছে । তারাতারি মোহনাকে ডক্টরের কাছে নেয়া হলো। ডক্টর বলল admit করাতে। নানাধরনের টেস্ট করালো । রিপোর্টে মোহনার কিডনিতে একটু problem দেখা দিলো। যেটা ratom এর side effect ….তবে মেডিসিনেই ঠিক হয়ে যাবে ৭দিনের মধ্যে । ২-৩দিন মোহনাকে admit রাখা হবে । রেদোয়ান ডক্টরের সাথে কথা বলে দেখে সাগর দারিয়ে আছে।
রেদোয়ান: সাগর ???
সাগর কিছু না বলে রিপোর্টগুলো দেখলো ।এরপর ডক্টরের সাথে কথা বলল।
সাগর : বাবা… poison এর কথা আমাকে বলোনি কেন? বরিশালে এটা হয়েছিলোনা?
.
মোহনা লম্বা চরা ঘুম দিয়ে উঠে দেখে পাশে সাগর বসে আছে।
মোহনা : ভাবা যায় আনি জল্লাদকে কল্পনা দেখছি? আজব তো।
সাগর : its actually me…
মোহনা : কল্পনা দেখি কথা বলে। পরীক্ষা করে দেখি…
মোহনা সাগরের হাতে সব শক্তি দিয়ে চিমটি কাটলো। রক্ত বের হবার উপক্রম ।
মোহনা : সসসাগর …. আআআ…📢📢📢