না বললেও ভালোকিন্তুবাসি

না বললেও ভালোকিন্তুবাসি !! Part- 11

সাগর : i am really very sorry…. আর কখনো যেন এমন না হয় সেই চেষ্টাই থাকবে সাগরের। ব্যাস তুমি ১টা বার সুস্থ হয়ে ওঠো। please … তুমি যা মন চায় তাই করবে। কেউ তোমাকে কোনো বাধা দেবে না। nothing means to accept you & your happiness …. মোহোপাখি সুস্থ থাকলেই সব ঠিক… মারামারি ঝগড়িঝাটি যা মন চায় তাই করবে।
.
পরদিন…
সকালে…
মোহনার ঘুম ভাঙলো।
মোহনা : বাবা… সারা শরীর এমন ব্যাথা করছে কেন? মাথা এতো extra ভারী লাগছে ? মনে হচ্ছে কেউ ১০কিলোর বস্তা রেখেছে।
মোহনা চোখ ঘুরিয়ে দেখলো যে ওর মাথার ওপর সাগরের মাথা।
মোহনা : তাইজন্যেই তো বলি যে মাথা এমন ভারী লাগছে কেন? huh… এতো ভারী বস্তা যদি কেউ মাথার ওপর রাখে তাহলে তো আমার মতো বাচ্চার হাল তো খারাপ হবেই… দেখাচ্ছি মজা…
মোহনা সাগরের মাথায় বেশ জোরেসোরেই ঠোকা মারলো। সাগরের ঘুম ভেঙে গেলো। মোহনা আবার চোখ বন্ধ করে ফেলল।
.
সাগর দেখলো মোহনার চোখ পিটপিট করছে।
সাগর : মোহোপাখি… কেমন লাগছে এখন?
মোহনা : …
সাগর : পাগলি … দারাও ডক্টরকে ডেকে আনছি।
মোহনা মনে মনে : লও ঠ্যালা… আমি দারাবো কি করে ? 😕। common sense বলতে নেই এই লোকটার মধ্যে… admission test এ allow কিভাবে হলো কে জানে?
ডক্টর এলো।
ডক্টর: কি খবর আমার regular customer এর হামম?
মোহনা : ভালো।
ডক্টর : মাথা ঠান্ডা হয়েছে?
মোহনা : আমার মাথা তো সবসময়ই ঠান্ডা থাকে।
ডক্টর : তাই বুঝি?
মোহনা : কারন আমি মোহনা। কি শীতল কী শীতল… awwe ki cute…
ডক্টর : let me check you…
মোহনা : আচ্ছা তোমার বারবার আমার চেহারা দেখতে বিরক্ত লাগেনা? কখনো পা ভাঙা, কখনো হাত ভাঙা, কখনো মাথা ব্যাথা, কখনো মাথা ফাটা। বোর লাগেনা একই চেহারা বারবার হাজার বার দেখতে ???!!
ডক্টর : মোটেও না my cute doll… এমন ১টা situation তবুও তোমার bp normal হলোনা। low… এতো চকোলেট খাও bp normal হয়না কেন?
মোহনা: মনে হয় চকোলেট গুলো bp free…
ডক্টর : 😂। পাগলিটা। আসছি। keep rest…
ডক্টর চলে গেলো।
মোহনা : এমন কি বললাম?
সাগর : থাক ছোট মাথায় আর এতো জোর দিতে হবেনা।
মোহনা : huh…. দে…
তখন ভেতরে পুরো পল্টন ঢুকলো। সবার আগে শুভ্র। শুভ্রকে দেখেই মোহনার মাথা যেন volcano হয়ে গেলো। কোনো কথা না বলে চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে পরলো।
শুভ্র : মামনি… ও মামনি… দেখো বাবা এসেছি…
শিখা : মামন পাখি… ও মামনি পাখি…. দেখ ছোটআম্মু বড়কাকীমা, ছোটকাকীমা সবাই এসেছি। ও মামন পাখি।
মোহনা তবুও চোখ মেলল না । আর কোনো কথাও বলল না। সবাই কতো কতো কথা বলল মোহনা কোনো উত্তর দিলোনা । সবাই ব্যার্থ হয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
৪দিনপর…
আজকে মোহনাকে রিলিজ দেয়া হলো। এই ৪দিনে মোহনা কারো সাথে নুন্যতম কোনো কথাই বলেনি। ডর্টর-নার্স ছারা। সবাই অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু মোহনা ১টা কথাও বলেনি। even এই কয়দিন কারো হাতে খায়ওনি। সাগর জোর করে ২-৩বার খাইয়ে দিয়েছে। মোহনাকে বাসায় নেয়া হলো । সাগর কোলে তুলে গাড়ি থেকে ওকে ওর রুমে নিয়ে গেলো। আগে washroom এ নিয়ে গেলো। হাত মুখ ধুইয়ে আবার কোলে তুলে নিয়ে বেডে বসিয়ে দিলো ।
মোহনা অনেক অবাক হলো রুমটা দেখে। কারন ওর রুমে দোলনা। ও অনেক দিন ধরেই বলছিলো । শুভ্র বলছিলো যে দিবে। দিবে দিবে করতে করতে ২মাস হয়ে গেছে। দোলনা দেখে মোহনা লাফ দিয়ে গিয়ে দোলনায় বসলো।
সাগর : আস্তে এটা তোমারই। its yours…
মোহনা তো নিজের মতো করেই দোলনা দুলতে লাগলো।
সাগর : তুমি chill করো । আমি fresh হয়ে আসছি।
.
একটুপর…
সাগর খাবার নিয়ে এলো। মোহনা তখনও দোলনায়।
সাগর : দেখি হা করো।
মোহনা : ….
সাগর : হা করো…. please … একটু খেয়ে নিলে i will give you flake chocolate …. কতোদিন পর…
দোলনায় বসে মোহনার মনটা ভালো হয়ে গেছে।
তাই খাবার মুখে দিলো।
সাগর : you happy we happy…
মোহনা : ….
সাগর : মন ভালো?
মোহনা : ….
সাগর : ১টা কথা বলি….
মোহনা : …
সাগর : মোহো…. please forgive বাবা…. দেখো আমরা সন্তানরা যখন কোনো ভুল করি তখন আমাদের মা-বাবার ক্ষমা করে দেয়। তো সেই বাবা-মায়েরা যখন ভুল করে কোনো ভুল করে তখন আমাদেরও তো উচিত না সেটা মনে না রেখে ভুলে যাওয়া….
মোহনা : ….
সাগর : ছোটআব্বু তোমাকে ভীষন ভালোবাসে। তোমার জন্য নিজে এই রুম সাজিয়েছে। দোলনা সাজিয়েছে। সব। দোলনাও ছোটআব্বুই এনেছে।
শুভ্র দোলনা এনেছে শুনেই মোহনা দোলনা থেকে নেমে গেলো।
.
মোহনা : ছোটআম্মু…. ছোটআম্মু…
শিখা খুশিতে দৌড়ে এলো।
শিখা : ডাকছিলি মা….
মোহনা : হামম।
শিখা : কিছু লাগবে?
মোহনা : না। উনাকে একটু বাইরে যেতে বলো।
সাগর বেরিয়ে গেলো।
শিখা : বল আমার মামন পাখি…
মোহনা : আমি কি সত্যিই এই খান বাড়ির মেয়ে?
শিখা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।
শিখা : মানে?
মোহনা : মানে আমাকে কি রাস্তায় কুরিয়ে টুরিয়ে পেয়েছিলো না কি?
শিখা : ধুর বোকা। মোটেও না।
মোহনা : সত্যি বলতে পারো আমি যে কোনো উত্তর শুনতে প্রস্তুত।
শিখা : তুই শুভ্র আর সোহানারই সন্তান। মানে এই খান বাড়ির মেয়ে।☺।
মোহনা : তোমরা কি actually আমাকে সাগরের সাথে বিয়ে দিবে?
শিখা আরেকদফা ধাক্কা খেলো।
মোহনা : বলো…
শিখা : হামমম।
মোহনা : কিন্তু আমি যে পাগল…
শিখা : কে বলেছে তুই পাগল? তুই তো আমার সোনাবাচ্চা। তুই আমার permanently মেয়ে হবি।
মোহনা : তারমানে বিয়ে হবেই?
শিখা : হামম।
মোহনা : তাহলে আজ কাল পরশুর মধ্যেই বিয়েটা কমপ্লিট করো।
শিখা : হাম… what?
মোহনা : এতো অবাক হওয়ার কি আছে? তোমরা যখন বিয়ে দিচ্ছেলে তখন তো সব ok ছিলো। তাহলে?
শিখা : মামন পাখি… আসলে সাগর একটু মজা করেছিলো। সেদিন তোদের বিয়ে না পানচিনি ছিলো।
মোহনা : মিথ্যা কথা।
শিখা :সত্যি কথা। ছোটআম্মু কখনো তোকে মিথ্যা কথা বলি?
মোহনা : বেশ। তাতে কিছুনা। এখন বিয়ের ব্যাবস্থা করো।
শিখা : মামনি… ১৮ এর আগে বিয়ে যায়না ।
মোহনা : তাতে কি? জল্লাদই তো বলে money is money তো?
শিখা : মামনি… সাগর বললে কি হবে বলো তো? সাগর যেগুলো বলে সেগুলো তে তো আর তোমার ছোটআব্বুর কোনো ঝামেলা থাকে না… কিন্তু তোমার আর সাগরের বিয়ে তে তো… ছোটআব্বুরও লাগবে। আর ছোটআব্বু… কৃষি ব্যাংকের জিএম। সরকারী কর্মকর্তা। যদি illegal কাজে জরিত থাকে তাহলে ছোটআব্বুর চাকরি চলে যাবে। jailও হবে…
মোহনা : ….
শিখা : তাই বলছিলাম কি… তোমার বয়স ১৮ হোক একটুও দেরি করবোনা বিয়েতে। হামম?
মোহনা : হামমম।
শিখা : আমার সোনাবাচ্চা।
মনে মনে : বাচলাম। পাগল যেভাবে ক্ষেপেছিলো তা সত্যিই ভয়ংকর…
.
রাতে….
মোহনা : তুমি আমার রুমে কেন আপু?
অহনা : তো কি করবো? তুই কি একা একা থাকবি? ছোটআম্মুর sugar down হয়ে গেলো বলেই তো জোর করে বাড়ি পাঠালাম… বারবার বলে গেছে যেন তোকে একা না ছারি…
মোহনা : কেন একা ছারলে কি মরে যাবো নাকি?
অহনা :কি যে বলিস না….
মোহনা : তোমাকে infact তোমাদের কারোই আমার কথা ভাবতে হবে না। তুমি তোমার রুমে যাও। এমনিতেই তোমরা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছো। পৃথিবীর সবথেকে ছোট মা হয়েছো…. আর কষ্ট করতে হবেনা। মাও হতে হবেনা। তুমি তোমার রুমে যাও।
অহনা : মা হয়ে সন্তানকে ছেরে যাই কি করে….? তুই শুয়ে পর… তোকে গল্প শোনাচ্ছি। তোর ভূতের গল্পই শোনাবো।
মোহনা : তুমি বের হবে রুম থেকে না আমি….
অহনা : আচ্ছা…. ভাবি থাকুক তবে…
মোহনা : না না না… কাউকে লাগবেনা। আমার কৈ মাছের জান। আমি মরবোনা। যাও আমার ঘুম পাচ্ছে।
অহনা মোহনার কপালে চুমু দিয়ে
বলল : হ্যা আমি পৃথিবীর সবথেরে কনিষ্ঠ মা। আর এটা আমার গর্ব। তুই আমার কলিজারে কলিজা…. আমি promise আমি চলে যাবো… কিন্তু তুই ঘুম আসার আগ পর্যন্ত তোর মাথায় হাত বুলাতে দে….
মোহনা : তোমার বাবা আবার কথা শোনাবে।
অহনা : শোনাবেনা। আয়।
.
২দিনপর….
মোহনা : আচ্ছা আমি তো ssc দিলাম। ২-৪-৫টা student পড়ালে কেমন হয়? তাহলে এই খান বাড়ির টাকায় আর খেতে হবেনা। আর কারো খোটাও শুনতে হবেনা। হামমম কালই রিংকুদের বলবো।ওরা ঠিকই আমার help করবে। ২-৩টা বছরই তো…. mbbs admission test এ allow হলে তো টাকা পাবোই। তখন সবার ধার শোধ করে দিবো। good idea…. হামম। এই না হলে মোহনা… go for it….
.
পাপ্পু : আপি তুমি ডাকছিলে?
মোহনা : হামম। শোন তোদের ১টা কাজ করতে হবে।
রিংকু : কি কাজ আপু?
মোহনা : আমার জন্য student খুজে দিতে হবে?
সবাই : কি? কিন্তু কেন ?
মোহনা: বলেছি যেটৈ সোটার উত্তর আগে দে।
পাপ্পু : তুমি বললে try করতে পারি।
মোহনা : ok… then কাল থেকেই শুরু কর।
রিংকু : আজকে থেকেই করবো।
মোহনা : তাহলে তো দেখি আরো ভালো।
পাপ্পু: তুমি বলবে আর আমরা করবো সেটা কি হয়? তুমি মনে করো কাজ হয়ে গেছে।
মোহনা : ok…
সাগর বাইরে দারিয়ে সবটা শুনলো।
সাগর : এই মেয়ের মাথায় এগুলো আসে কোথায় থেকে? এই self respect এর ভূত কোথায় থেকে ধরলো…. এখন এর ঔষধ কোথায় পাবো? এর সেনাগুলোকে তাদের কাজ করতে দেয়া যাবেনা…..
.
পরদিন….
মোহনা বসে বসে তেলাপোকেদের disturb করছে।
মোহনা : জানিস আজকে তোদেরকে জ্বালাচ্ছি কেন? শোন তবে বলছি…. আমি খোজার মধ্যে কি আছে যে তোদের বাঘের সাথে তুলনা করা হয়? অন্যমেয়েদের মতো আপু আর ভাবিও ভয় পায়। এমন কি মমতা খানও ভয় পায়…. নাসার কাছে গেলেও এর জবাব পাওয়া যাবেনা।
শুভ্র : মামনি….
মোহনা : একি আপনি এ ঘরে কেন এসেছেন? জানেন না এটা অলক্ষীর ঘর.. অপয়ার ঘর.. এ ঘরে এলে আপনিও মরে যাবেন আপনার বাবা আর বউয়ের মতো। এই বয়সে কি মরা যায়?কিইই বা বয়স আপনার ? বায়ো কি তেয়ো…. 😒… যান…
শুভ্র এসে মোহনার সাথেই মেঝেতে বসলো।
শুভ্র : মা রে…
মোহনা : না না না না না …. আমার মতো কেউ কি আপনার মা হতে পারে? অসম্ভব। তাইনা। আর আপনি এখনও যাচ্ছেন না কেন বলুন তো…. পাপ লাগবে…
শুভ্র : তুমিই আমার মা… তুফানি মা… কিন্তু আমার তুফানি মা শান্ত কেন হয়ে আছে? বাবার অভিমান করে?
মোহনা : বাবা ? মোহনার মাও নেই বাবাও নেই। কেউ নেই কিছু নেই…. মোহনা এতিম শিশু…
শুভ্র : অনেক রেগে আছো জানি… আরো রাগ করো । কেউ কিছু বলবেনা…. কারন সবাই মোহনার হাসির প্রতিধ্বনি শুনতে চায়… মোহনার কথার ফুলঝুড়ি শুনতে চায়.. দুষ্টুমি দেখতে চায়…. না মামনি আমি তোমাকে ক্ষমা করতে বলিনি মামনি…. তুমি বাবাকে শাস্তি দাও মা….
মোহনা : ছাগলের মতো ম্যা ম্যা না করে বের হন। ও না .. আপনি কেন বের হবেন? তাইনা….
শুভ্র : না মামনি তোমাকে কোথাও যেতে হবেনা। আমিই যাচ্ছি। শুভ্র বেরিয়ে গেলো। কাদতে কাদতে….
বাবারা যেমন মেয়েদের কান্না…কষ্ট সহ্য করতে পারেনা তেমন মেয়েরাও বাবাদের কান্না আর কষ্ট সহ্য করতে পারেনা …. মেনে নিতে পারেনা…..
.
বিকালে…
সাগর : কি দরকার ছিলো বাবাকে বাকা কথা বলে নিজে কষ্ট পাওয়ার?
সাগরের কথায় মোহনা চমকে উঠলো। সাগর এগিয়ে এলো।
সাগর: নাও চকোলেট দুধ। খেয়ে নাও…
মোহনা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো।
সাগর : you are a girl…. ধরো তুমি যখন যে কোনো জায়গায় যাও…. মানে বাইরে বের হও…. তখন যদি হঠাৎ কেউ তোমার ওরনাটা টেনে নেয়… বা একাই উরে যায় তখন তোমার কেমন লাগবে বলো তো….
.
চলবে…