তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা

তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা !! Part- 09

শফিং মলে দিয়ে আমাকে কিছু জুয়েলারি কিনে দিলো,, কিছু শাড়ি কিনে দিলো শফিং করে বের হওয়ার সময় ফারহান বলে উঠলো

ফারহান : কিরে তুই এখানে?
ফারহান কাকে এই কথা বলছে দেখার জন্য পাশ ফিরতেই দেখি……
দিপ্তি দাঁড়িয়ে আছে…..সাথে একটা ছেলে মনে হয় দিপ্তির হাজবেন্ড আমি তাকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে গেলাম কিছু না বলে চলে যেতে নিলেই ফারহান আমার হাত ধরে ফেলে…

ফারহান : আরে দাঁড়াও কোথায় যাচ্ছো
আমি : না মানে স্যার..
ফারহান : থাক কিছু বলতে হবে না…আর দিপ্তি তাসিন তোমরাও কি শপিং করতে এসেছো…(দিপ্তি আমার দিকে তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না তাই তার হাজবেন্ড তাসিন বলে উঠে..
তাসিন : হুম ভাইয়া দিপ্তিকে নিয়ে একটু শপিং করতে বের হলাম…আর মেয়েটি কে?(আমার দিকে তাকিয়ে কথাটি বললো তাসিন,,, ফারহান কিছু বলার আগে আমি বলে উঠি..

আমি : আমি উনার…(বাকিটা বলার আগেই ফারহান বলে..
ফারহান : ও আমার ওয়াইফ তাসিন(আমাকে ফারহানের পাশে দাঁড় করিয়ে বললো)
দিপ্তি : মানে কি বলছো এইসব ভাইয়া ওকে তুমি বিয়ে করেছো?
ফারহান : কেন আমি ওকে বিয়ে করতে পারি না নাকি ও মেয়ে নয়
দিপ্তি : ভাইয়া তুমি..(আর কিছু বললো না)
তাসিন : আরে তুমি এমন করছো কেন ভাইয়া হয়তো মজা করছেন তাইনা(হেসে)
ফারহান : আমাকে কি তোমাদের মজার পাত্র মনে হয় তাসিন(গম্ভীর ভাবে)
তাসিন : কিন্তু কখন বিয়ে করলেন কই আমরা তো শুনিনি
ফারহান : সবাইকে সারপ্রাইজ দিবো ভেবেছি তাই বলিনি
তাসিন : wow congratulations
ফারহান : thank you tasin☺☺…চলো আমার বাসায়… আর দিপ্তি তোরা কখন এলি মা কেমন আছে?
দিপ্তি : কাল এসেছি ভালো আছে মা,,, চলো তাসিন(বলেই তাসিনের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো…আমি কিচ্ছু বলিনি ওদের কথার মাঝে..

ফারহান : আচ্ছা চলো আমরা বাসায় যাই…বলেই আমাকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দিলো সারা পথ আমি একটা কথাও বলিনি চুপ করে ছিলাম,,, বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে নিলাম,,,,সারা বাড়ি সাজানো হচ্ছে সন্ধ্যায় পার্টি এরেঞ্জ করেছে ফারহান,,,,পার্টিতে অফিসের সবাইকে ইনভাইট করেছে,,,, খুব সুন্দর করে সারা বাড়ি সাজানো হয়েছে সন্ধ্যায় একে একে সকল গেস্ট আসা শুরু করে…..
আমি রুমে একা বসে আছি তখন ফারহান এসে বলে
ফারহান : কি ব্যাপার রেডি হচ্ছো না কেন?
আমি : আমি কেন রেডি হবো
ফারহান : অনেক গেস্ট আসবে তুমি কি এখানে বসে থাকবে নাকি,,,, যাও রেডি হয়ে আসো(রেগে)
আমি কিছু না বলে রেডি হতে গেলাম রেড কালার একটা লং ড্রেস পরেছি চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া,,…রেড কালার লিপস্টিক দিয়েছি..

আমি রেডি হয়ে বসে আছি কিছুক্ষন পর ফারহান আসলো রুমে…

ফারহান : কি ব্যাপার তুমি এখনো রেডি হওনি (বলেই রুমে ডুকে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে আমিও তাকে দেখে তাকিয়ে আছি,,,, পুরো প্রিন্স লাগছে দেখতে বাহ,,,প্রেমে পড়ে গেলাম আবার নতুন করে..

ফারহান : বাহ ভাগ্য করে এমন বউ পেলাম,, লাল পরি লাগছে একেবারে,,, ইচ্ছে করছে কোলে তুলে নিতে…মনে মনে(এমন সময় তিশা আসলো..

তিশা : এহেম… এহেম…আপনাদের শুভ দৃষ্টি শেষ হলো নাকি😁(তিশার কথা শুনে আমি আর ফারহান দুজনেই লজ্জা পেলাম)
আমি : ইয়ে মানে…
ফারহান : তিশু তুমি আর ফারিয়া নিচে আসো আমি গেলাম (বলেই ফারহান চলে গেলো,,,,তিশা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলে কি মহারানী শুভ দৃষ্টি হচ্ছিলো বুঝি দুজনার😁,
তবে যাই বলো আজকে কিন্তু তোমাকে একদম লাল পরি লাগছে আমি ছেলে হলে তো তোমাকে তুলে নিয়ে যেতাম,,,দুজনে কথা বলতে বলতে নিচে এসেছি…
নিচে এসে দেখি নিশু ফারহানের সাথে পিক তুলছে ক্লোজ হয়ে তা দেখে আমার প্রচণ্ড রাগ উঠে,,,, আমি আর তিশা অন্য পাশে গিয়ে কথা বলতেছি,,,,
আমি : এই তুমি ওই দিন কার সাথে ফোনে কথা বললা আমাকে বলোনি তো?
তিশা : কফিলের সাথে কথা বলেছিলাম,,,আসলে কফিল আমাকে ভালোবাসে,,, তাই তার সাথে রিলেশন করার জন্য রিকুয়েস্ট করছে
আমি : আরে এটা তো ভালো কথা তুমি নিষেধ করে দিলে কেন কফিল তো খুব ভালো ছেলে
তিশা : আসলে আমার ভালো লাগে না এইসব… এর মধ্যে কফিল এসে বার বার তিশার আশেপাশে ঘুরা ঘুরি করছে,,,
আমি : কফিল ভাইয়া এদিকে এসো
কফিল : হুম মিস ফারিয়া বলুন,,
আমি : আপনার কাউকে দরকার নাকি (চোখ টিপে)
কফিল : ইয়ে মানে..
আমি : আমি সব জানি যাও তিশু তুমি কফিলের সাথে কথা বলো,,, (তিশা যেতে চাচ্ছিলো না আমি জোর করে পাঠিয়ে দিলাম)
আমি এক পাশে দাঁড়িয়ে ফোন টিপছি হঠাৎ করে মিরাজ শেখ এসে বলে…

মিরাজ : hi sweety
আমি : hlw (গম্ভীর ভাবে)
মিরাজ : তোমাকে অনেক হট লাগছে….আমার সাথে যাবে আজকে আর যা চাও তাই দিবো..
আমি : mind your language mr miraj sheikh😡(রেগে)
মিরাজ : আরে এত উত্তেজিত হওয়া শরীরের জন্য ভালো না মিস ফারিয়া চলো তো,,,, (বলেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে থাকে,,,আর আমি হাত ছাড়ার জন্য চেষ্টা করছি,, এমন সময় ফারহান এসে মিরাজের থেকে আমাকে ছাড়িয়ে নেয় আর আমি ফারহানের পিছনে লুকিয়ে যাই

ফারহান : কি হচ্ছে এইসব মিরাজ শেখ ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন
মিরাজ : আরে ফারহান তুমি কেন এর মধ্যে আসতে গেলে,,,,ওকে আজকে রাতের জন্য নয়ে যাচ্ছিলাম,,,,বলেছি যা চাইবে তাই পাবে কিন্তু রাজি হচ্ছিলো না তাই নিয়ে যাচ্ছি(মিরাজের কথা শুনে ফারহান তাকে একটা থাপ্পড় মারে,,
ফারহান : আপনার মন মানসিকতা এত নিচু কেন..
মিরাজ : এইসব বাজারের মেয়ের জন্য আজকে তুমি আমাকে থাপ্পড় মারলে,,, ওকে তো আমি নিয়ে যাবই( বলেই আমার দিকে আসতে নিলে ফারহান মিরাজকে এলোপাথাড়ি থাপ্পড়,,, ঘুষি,,,মারতে থাকে আর বলে..

ফারহান : ওর নামে আর একটা বাজে কথা বলবি তো তোকে আমি এখানেই শেষ করে দিবো,,,,, তোর সাহস মি করে হয়,,,, ওর দিকে বাজে নজরে তাকানোর,,,, ও আমার জান হয় বুঝলি,,,এইসব বলছে আর মারছে,, সবাই চেষ্টা করেও ফারহানকে থামাতে পারছে না,,, অনেক কষ্টে ফারহানকে থামালো সবাই
মিরাজ : এটা তুমি ঠিক করলে না ফারহান এর ফল ভালো হবে না কিন্তু দেখে নিও
ফারহান : তোকে যেন আমার চোখের সামনে না দেখি আর,, একে এখান থেকে বের করে দাও কফিল😠(রেগে)
মিরাজ শেখ চলে গেলো,,, সবাই ভয়ে চুপ করে রইলো,,,কেউ কিছু বলছে না আমি একপাশে দাঁড়িয়ে আছি এতক্ষন যা হলো সব আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো কি হয়ে গেলো…ফারহান আমাকে নিয়ে গেলো সবার সামনে আর সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো

ফারহান : আমি প্রথমেই দুঃখিত আপনাদের সবার আনন্দ নষ্ট করার জন্য,,,মেয়ে জাতিকে নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য আমার অপছন্দ,,, তাছাড়া আপনারা সকলেই জানেন আজকের এই পার্টি আমাদের অফিসে যে ডিলটা সম্পন্ন হয়েছে তাকে ঘিরে,,,কিন্তু আমি আপনাদের সবাইকে আজকে আরো একটা কথা জানাতে চাই,,, মিস ফারিয়া আমার ওয়াইফ,,,, জানি কথাটা শুনে অনেকেই হয়তো বিশ্বাস করবেন না কিন্তু এটাই সত্যি ফারিয়া আমার বউ

(এই কথা শুনে নিশু রাগে গজগজ করে চলে গেলো আর অন্যরা সবাই এই কথা শুনে সবাই করতালি দিতে লাগলো,,,,একে একে সবাই congratulations জানালো,,, আমাদের বিবাহিত জীবনে সুখি হওয়ার জন্য দোয়া করলো,,,রাতে সবাই ডিনার করে চলে গেলো আমি ফ্রেশ হয়ে শাড়ি চেঞ্জ করে একগা প্লাজু আর টপ পরে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছি আকাশের দিকে তাকিয়ে এমন সময় ফারহান এসে আমার চুলে হাত বুলাতে লাগলো,,,

আমি : খুব বেশি দরকার ছিলো কি মিরাজ শেখ কে এমন করে মারার?
ফারহান : মিরাজ শেখের জন্য কি তোমার খুব খারাপ লাগছে নাকি
আমি : আমি তো সেকথা বলিনি,,,, যদি আপনার কোন ক্ষতি করে তো?
ফারহান : আমার কিসের ক্ষতি করবে,,,আর আমার কিছু হলে তো তোমার জন্য ভালো তোমাকে মুক্তি দিয়ে দিবো,,, বলেই ফারহান এসে শুয়ে পড়ে,,,, কিচ্ছুক্ষন পর ফারিয়া এসে কিছু না বলেই ফারহানের বুকে মুখ লুকিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লো ,,তা দেখে ফারহান মুচকি হেসে পরম আদরে ফারিয়াকে বুকের সাথে মিশিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো,,,

অন্য দিকে দিপ্তি তার মাকে যা ইচ্ছে তা বললো ফারিয়া আর ফারহানকে নিয়ে..

চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *