তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা

তুমি প্রাক্তন নও আমার ভালোবাসা !! Part- 07

আমি : স্যার আমি হোস্টেলে যাবো আমি এখানে থাকবো না প্লিজ আমাকে হোস্টেলে দিয়ে আসুন আমি নামবো না গাড়ি থেকে(কান্না কণ্ঠে)
ফারহান : তুমি এখানেই থাকবে আমার আমার সাথে,,আমার কথার উপরে কোন কথা বলবে না আমি পছন্দ করি না,,, বলেই ফারহান আমাকে কোলে করে ভিতরে নিয়ে গেল…..
আর বাসায় ডুকে.. রহিমা খালা রহিমা খালা বলে কাকে যেন ডাকলো,,তখন একটা মহিলা আসলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে কাজ করে তার বাসায় তাকে,,

রহিমা খালা : জ্বে স্যার,,
ফারহান : আমাদের জন্য খাবারে ব্যবস্থা করো
রহিমা খালা : আইচ্ছা স্যার,,(বলেই কি ভেবে মুচকি হেসে চলে গেলো)
আর আমি বলে উঠলাম..

আমি : স্যার আমাকে নামান প্লিজ,, আমি এই বাসায় থাকবো না (হাত পা নেড়ে)
ফারহান : চুপ একদম চুপ তুমি শরিয়ত মোতাবেক এবং আইন অনুযায়ী আমার বউ তোমাকে আমার কাছেই থাকতে হবে মাইন্ড ইট
আমি : আপনি জোর করে আমাকে বিয়ে করেছেন,, আমি মানি না এই বিয়ে,,, আমি ডিভোর্স দিবো আপনাকে,,, চলে যাবো এই বাসা থেকে😭(কান্না করে)
ফারহান : কি বললে তুমি আমাকে ডিভোর্স দিবে আরেক বার এই কথা মুখেও যাদি এনেছো তাহলে জীহ্বা কেটে দিবো আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে পা কেটে ঘরে রেখে দিবো😠😠(বলেই আমাকে একটা রুমে নিয়ে খাটে বসিয়ে দিলো)

আমি : আমি এই বাসায় থাকবো না (বলে দরজার দিকে পা বাড়ালেই,,,, ফারহান আমার হাত চেপে ধরে দেওয়ালের সাথে আর বলে

ফারহান : আমি চাইনা তোমার সাথে খারাপ কিছু করতে,, এটা আমার বাসা এখানে আমার কথাই শেষ কথা,,,এক পা ও নড়বে না এখানেই বসে থাকো আমি আসা পর্যন্ত ( বলেই বেড়িয়ে গেলো বাহিরে দরজা লক করে,,,আর আমি ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেছি,,, ঘুম ভাঙে ফারহানের ডাকে…

ফারহান : ফারিয়া ফারিয়া উঠো পরে ঘুমাইও ফ্রেশ হয়ে আসো (আমি কিছু না বলে বসে আছি কারণ এখানে আমার কোন জামা কাপড় নেই)
ফারহান : কি হলো যাও..
আমি : আমার জামা নেই এখানে (নিচের দিকে তাকিয়ে)
ফারহান : তোমার পাশে দেখো অনেক শাড়ি,, জামা,,আছে তোমার যেটা মন চায় পরে নাও
(পাশে তাকিয়ে দেখি অনেক গুলো শফিং ব্যাগ,, মনে হচ্ছে একটা দোকান তুলে নিয়ে এসেছে বাসায়….আমি একটা জামা নিলাম হাতে তখনি ফারহান বলে..

ফারহান : আজকে আমাদের বিয়ের প্রথম দিন শাড়ি পরো (বলেই আমার হাতে একটা নীল রঙের শাড়ি দিয়ে বলে

ফারহান : যাও এটা পরে এসো…ডানে ওয়াশরুম আছে (আমি কিছু না বলে হাত থেকে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম,,,ফ্রেশ হয়ে শাড়ি পরে বের হলাম চুল থেকে পানি পড়ছে ,, দেখি ফারহান বসে বসে ফোন টিপছে,,, আমাকে দেখে তাকিয়ে আছে,,,

ফারহান : এ আমি কাকে দেখিছি😱 আমার নীল পরি 😍একদম বউ বউ লাগছে 😘ইচ্ছে করছে জড়িয়ে ধরে ভেজা চুলের স্মেল,,ইসসস পাগল হয়ে যাবো 😘😘(মনে মনে)

ফারহানের এমন ভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে আমি মনে মনে গালি দিতে লাগলাম শালা লুচু মেয়ে মনে হয় জীবনেও দেখেনি চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে,,,আমি কিছু না বলে আয়নার সামনে গিয়ে চুল মুচতে লাগলাম,,,তখনি কেউ পিছন থেকে আমার কোমরে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ গুঁজে ভেজা চুলের স্মেল নিচ্ছে….বুঝতে বাকি নেই এটা ফারহান,,আমি সাথে সাথে তাকে সরিয়ে দিয়ে বলি..

আমি : আপনি আমায় স্পর্শ করেন কোন অধিকার নিয়ে (রেগে)
ফারহান : তুমি মনে হয় ভুলে গেছো,, তুমি আমার বউ আর বউকে স্পর্শ করার অধিকার আমার আছে(ডেবিল স্মাইল দিয়ে)
আমি : আমি আপনাকে বর হিসেবে মানি না
ফারহান : তুমি না মানলে কি হবে দুনিয়ার সবাই মানবে তুমি আমার বউ,, 😁😁বাই দ্যা ওয়ে ভেজা চুলে কিন্তু তোমাকে দারুন লাগে 😘
আমি : শালা লুচু😡
ফারহান : ছিঃ ছিঃ নিজের বরকে শালা বললে পাপ হবে বউ😅
আমি : আমার বয়েই গেছে আপনাকে বর ডাকতে হুহ😏😏

ফারহান : তোমার ক্ষুধা লাগেনি লাঞ্চ করবে না চলো,,
আমি : আমি খাবো না আমার ক্ষুধা নেই😒
ফারহান : তুমি বললে তো হবে না ক্ষুধা নেই,,ওকে আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি…ওয়েট রহিমা খালা ও রহিমা খালা এদিকে এসো (বলে কাজের লোককে ডাকতে লাগলো,, একটু পর রহিমা খালা আসলো..

রহিমা খালা : জ্বী স্যার কিছু দরকার আছেনি…
ফারহান : আমাদের জন্য খাবার গুলো আমার রুমে পাঠিয়ে দাও
রহিমা খালা : আইচ্ছা স্যার এখনি দিতাছি (বলেই চলে গেলো,,, কিছুক্ষন পর খাবার নিয়ে রুমে আসলো রহিমা খালা..খাবার রেখে চলে গেলো,আর ফারহান প্লেটে খাবার নিয়ে আমার কাছে এসে বলে..

ফারহান : হা করো বউ
আমি : আমি খাবো না 😑
ফারহান : হা করতে বলছি হা করো কথা বলো কেন😡(রেগে বলল…আমি ওর রাগ দেখে ভয়ে হা করি আর ফারহান আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে কিন্তু সে খাচ্ছে না,,,তাই জিজ্ঞেস করলাম,,

আমি : আপনি খাবনে না😑
ফারহান : বাহ আমার জন্য মায়া হচ্ছে দেখি,,, এক বছর যে আমার কোন খবর ছিলো না তখন তো আমি খাচ্ছি কিনা তার খবর রাখোনি এখন আর মায়া দেখাতে হবে না (ফারহানের কথায় খুব কষ্ট পেলাম,,
আমি : আমার খেতে ইচ্ছে করছে না আপনি খেয়ে নিন
ফারহান : বেশি কথা বলো তুমি,,তোমাকে খাইয়ে দিয়ে তারপর আমি খাবো,..
ফারহান আমাকে খাইয়ে নিজে খেয়ে নেয়,,

রাতে অফিসের কাজ শেষ করে,,, আবার আমাকে খাইয়ে দেয় সাথে নিজেও খায়,,,আমি খাটে বসে বসে ভাবছি,,, ফারহানের মা কোথায় আর তার বোন দিপ্তি কোথায় জিজ্ঞেস করতেও ভয় লাগছে,, যদি এখানে থাকে তো দেখার কথা কিন্তু এখন পর্যন্ত তো দেখতে পেলাম না,,,আচ্ছা আমি জবাব দিবো দিপ্তি কে আর ফারহানের মা কে আমাকে মেনে নিবে তো..ফারহান যদি জানে আমার মা হওয়ার ক্ষমতা নেই তাহলে আমাকে কি আবার ডিভোর্স দিয়ে দিবে…না যে ভাবেই হোক ফারহানের থেকে দূরে যেতে হবে.. এইসব ভাবছি অন্য দিকে ফারহান বসে বসে ফোন টিপছে আমাকে চিন্তিত দেখে বলে…

ফারহান : কি ভাবছো ফারিয়া? (ফারহানের কথায় ভয় পেয়ে বলি..
আমি : ই..য়ে মানে ক…কো…ই কি..ছু না..
ফারহান : তোমাকে দেখে চিন্তিত মনে হচ্ছে?
আমি : আপনাত মা.. বাবা.. আর বোন কোথায় দেখছি না যে..
ফারহান : বাবা দেশের বাইরে গিয়েছে অফিসের কাজে,, আর মা দিপ্তি ঘুরতে গেছে কয়দিনের জন্য
আমি : ও… আসবে কবে
ফারহান : আসবে কয়েক দিন পর… অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবে না..

আমি : হুম ( বলেই বালিশ সোফায় দিকে যাচ্ছি তখনি ফারহান বলে উঠে..

ফারহান : দাঁড়াও কি ব্যাপার কোথায় যাচ্ছো?
আমি : কেন ঘুমাতে😊
ফারহান : ঘুমাবে ভালো কথা,, বালিশ নিয়ে কোথায় যাচ্ছো?(দাঁত চেপে)
আমি : আমি সোফায় ঘুমাবো 😒
ফারহান : কেন খাটে কি সমস্যা নাকি জায়গা হবে না খাটে(রেগে)
আমি : আমি আপনার সাথে থাকবো না😒
ফারহান : আমার সাথে থাকবে না তো কার সাথে থাকবে,, তুমি ভুলে গেছো নাকি তুমি আমার বিয়ে করা বউ..
আমি : আমি আপনাকে বর মানি না আমাকে জোর করে বিয়ে করেছেন
ফারহান : আমি আমার ভালোবাসাকে বিয়ে করেছি,,,তুমি আমার বউ এখন
আমি : আমি আপনার ভালোবাসা এক বছর আগে ছিলাম..এখন আমি আপনাকে ভালোবাসি না আমি প্রাক্তন আপনার আপনি জোর করে বিয়ে করেছেন আমাকে😠
ফারহান : তোমার কাছে আমি প্রাক্তন ছিলাম কিন্তু আমার কাছে তুমি আমার ভালোবাসা ছিলে কখনোই তোমাকে প্রাক্তন ভাবিনি,,, আর আজ থেকে তুমি আমার বউ এটা মাথায় রাখবে,,কিছু দরকার হলে রহিমা খালাকে বলবে এনে দিতে,, ঘরের বাইরে যাবে না,, এখন খাটে এসে ঘুমাও

আমি : আমি থাকবো না আপনার সাথে,, আমি সোফায় ঘুমাবো আর আমাদের ডিভোর্স পেপার তৈরি করুন আমি চলে যাব (ডিভোর্স এর কথা শুনে ফারহান আমাকে টেনে তার সাথে মিশিয়ে আমার ঠোঁটে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আর জোরে একটা বাইট কামড় বসিয়ে দেয়,,, আমি ব্যাথায় কাকিয়ে উঠি আমার চোখের কোনে পানি জমে যায়,,, ফারহান আমাকে ছেড়ে দেয়..
ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখি রক্ত বেরিয়ে গেছে..

ফারহান : আর কখনো ডিভোর্স এর কথা মুখে আনলে এর চেয়েও খারাপ হবে ( বলেই আমাকে বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে আর আমি কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ি আর সকালে উঠে দেখি…

চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *