তারে আমি চোখে দেখিনি

তারে আমি চোখে দেখিনি !! Part- 18

মায়া ধরফরিয়ে রুমের মধ্যে ঢুকে যায়। অন্ধকার থাকায় রুমটার ভেতরের কিচ্ছু ঠিকমতো দেখতে পায় না।আর মাহির এসে মায়ার পিছনে দাড়ায়।মায়া মাহিরকে পিছনে অনুভব করতে পেয়ে হাতের কনুই দিয়ে মাহিরের পেটে দেয় এক-ঘাঁ।

মাহিরঃ আহ্ মায়া!

মায়াঃ কি মায়া? রুমটা অন্ধকার করে রেখেছেন কেন? ব্যস্ত গিয়ে লাইট জ্বালান।

মায়া থেমে গেলে মাহির মায়াকে পেছনের থেকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।আর মায়ার হাতদুটি শক্ত করে চেপে ধরে বলে,

মাহিরঃ তুমি কি কখনো শুধারাবেনা?

মায়া নিজের হাতদুটো মাহিরের থেকে ছাড়িয়ে নিতে চায়। মাহির মায়াকে আরও শক্ত করে চেপে ধরে।তারপর মুচকি হেসে মায়াকে আবার বলে,

মাহিরঃ থাক তোমার আর শুধরাতে হবে না।

মায়াঃ মানে?

মাহিরঃ মানে হচ্ছে,,এলোমেলো স্বভাবের এই তুমিটাকেই আর খুব প্রয়োজন।আর তোমার সাথেই আমি আমার সারাটা জীবন কাটাতে চায়!

মায়াঃ আর স্নিগ্ধা?

মাহিরঃ ওকে আমি পরে বুঝিয়ে বলবো।

মায়াঃ কি বুঝাবেন?

মাহিরঃ সেটা তোমার না জানলেও চলবে।

কথাটা শুনে মায়া একদম চুপ হয়ে যায়।আর মাহির একটু মুচকি হেসে মায়াকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় গিয়ে বসায়।

মাহিরঃ এখানে বসো।

মাহির উঠে যাবে মায়া মাহিরের হাতটা টেনে ধরে।

মায়াঃ চলে যাচ্ছেন?

মাহিরঃ লাইট জ্বালাতে যাচ্ছি।তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।

কথাটা বলে মাহির লাইটটা জ্বালাতে যায়। আর মায়া মনে মনে ভাবতে থাকে মাহির এখন ওকে কিসের সারপ্রাইজ দিবে।এমন সময় লাইটটা অন হলেই মায়া চোখ তুল সামনে তাকিয়ে দেখে হা হয়ে আছে।

ফুলে ফুলে খুব সুন্দর করে সাজানো রুমটা।ঠিক যেমনটা বাসররাতে সাজানো হয়েছিলো।

মাহিরঃ কেমন লাগলো আমার সারপ্রাইজ?

মায়া কোনো কথা বলে না।লজ্জায় চোখদুটো নিচু করে নেয়।

মাহিরঃ কি হলো বললে না যে?

মায়াঃ কি বলবো?

মাহিরঃ সাজানোটা কেমন হয়েছে?

মায়ার পাশে এসে বসে মাহির।

মায়াঃ জানি না!

বলেই মায়া বিছানা ছেড়ে উঠে যেতে যায়।আর তখনই মায়ার হাতটা মাহির ধরে বসে।মায়াকে টেনে মাহির নিজের কোলের উপরে বসিয়ে ঘাড়ের উপরে চলে আসা এলোমেলো চুলগুলো এক পাশে সরিয়ে রাখে।তারপর নিজের থুতনিটা মায়ার ঘাড়ের উপরে রেখে মায়ার কানের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,

মাহিরঃ নিরাবতা, নির্জলতা, সবকিছুই আজকে তোমায় দেবো।সময়টাকেও থামিয়ে দেবো।শুধু তোমার আর আমার। অনুভুতি বিলাশ।

মায়া ঘুরে মাহিরকে জড়িয়ে ধরে।
তারপর মাহিরের গালদুটো আকড়ে ধরে মাহিরের কপালে, গালে আর ঠোঁটে আলতো স্পর্শ ছুঁইয়ে দেয়।
,
,
,
হসপিটালে,,,
,
স্নিগ্ধা বারবার মাহিরকে ফোন করে যাচ্ছে কিন্তু মাহিরের ফোনটা সুইচড অফ।
সকালে যতোবার ফোন করেছে মাহির কেটে দিয়েছে।স্নিগ্ধার সাথে এমনটা মাহির আগে কখনো করে নি।বরংচ স্নিগ্ধা রাগ করলে কিভাবে তার রাগ ভাঙাবে সেটাই ভেবেছে সবসময়।
তাহলে আজ মাহিরের কি হলো?

হসপিটালে ঘুড়ে ঘুড়ে বেডের রোগী দেখছে আর কথাগুলো মনে মনে ভেবে চলেছে স্নিগ্ধা।

ওদিকে মায়ার বাবার জ্ঞান ফিরেছে।এখন সে মায়াকে দেখতে চাইছে।মায়ার মাও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে।রাগের মাথায় মায়াকে বলে ফেলা কথাগুলোর জন্য অনুশোচনা বোধ হচ্ছে মুফতির।ভাবছে মায়াকে ওভাবে কথা না শুনালে ভালো হতো।
,
,
,
,
চলবে,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *