1. নতুন গল্পঃ3. রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প গুলোঃতারে আমি চোখে দেখিনিলেখাঃ মস্ত লিজা

তারে আমি চোখে দেখিনি !! লেখাঃ মস্ত লিজা

তারে আমি চোখে দেখিনি !!
লেখাঃ মস্ত লিজা

ধর্ষণ করে লাশ ফেলে দিও ডাস্টবিনে। কুকুরে খেয়ে যাক। পরের দিন নিউজ বানিয়ে টিভিতে দেখিয়ে দিও।

কথাটি বলেই মাহির নিজের মুখটা ঘুরিয়ে নেয় মায়ার থেকে।

এক বান্ডিল টাকা ছেলেগুলোর দিকে ছুড়ে মেরে
মনের সুখে গুন গুন করে গানের সুর তুলতে থাকে।তারপর নব বিবাহিত স্ত্রী মায়ার মুখের দিকে চেয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে চলে যায়।

(বিঃ দ্রঃ “ তারে আমি চোখে দেখিনি ! সিজনঃ-1, 2 !! লেখাঃ মস্ত লিজা ” গল্পের সবগুলো পর্ব একসাথে পেতে এখানে ক্লিক করুন)

আর এদিকে ছেলেগুলো মধ্যে টাকার বান্ডিল নিয়ে কাড়াকাড়ি চলে। এই সুযোগে মায়া কোনো মতে সেখান থেকে পালাতে চায়।

মায়া সুযোগ বুঝেই ছুটতে শুরু করে।ছুটতে ছুটতে মেইন রোডে এসেই একটা গাড়ির সামনে দাড়ায়।সামনে তাকিয়ে দেখে গাড়ীর ভেতরের মানুষটাকে।যাকে দেখে মায়ার চোখদুটি রক্তবর্ণ ধারণ করেছে।রাগের বসে রাস্তার সাইড থেকে বড়সড় একটা ইট উঠিয়ে গাড়ীর সামনের গ্লাসে ছুড়ে মারে।

মুহূর্তেই মানুষের ভীর জমতে থাকে।গাড়ীর গ্লাস ভাঙার শব্দে রাস্তার সব লোকজন ছুটে আসে। ততোক্ষণে গাড়ীর ভেতরের মানুষটাও নেমে মায়ার সামনে এসে দাড়ায়।
মায়াঃ ওই,, আপনি না আমায় বিয়ে করেছেন? নিজের বউকে কেউ পাচার করে দেয়?
মাহিরের শেরওয়ানীর কলারটা টেনে ধরে বলে মায়া।
মাহির এদিকে ওদিকে তাকিয়ে আসেপাশের মানুষগুলোকে দেখে।
মাহিরঃ মায়া আসলে আমি..মানে..
লোকজনের মাঝে কিছু বলতে পারে না।শুধুই আমতা আমতা করে যায় মাহির।
মায়াঃ ফাটট্..যদি আর একটা কথাও বলেছেন তো এই হাত দেখেছেন? ঘুসি দিয়ে আপনার নাক ফাটিয়ে দেবো!
মাহিরঃ মায়া কি সব বলছো?
মায়াঃ ওই খারাপ কি বলেছি আপনাকে আমি?
মাহিরঃ সবাই দেখছে কিন্তু মায়া।এই রকম করলে কিন্তু আমি তোমার সাথে সংসার করতে পারবো না।
মায়াঃ আরে আপনি কি সংসার করবেন আমার সাথে? আমিই আপনাকে ডিভোর্স দিতাম।আজ যখন আপনার আসল রূপটা দেখিয়েই দিলেন তখন আর কোনো বাঁধা নেই!
মাহিরঃ মানে?
মায়াঃ মানে বুঝেন নাই? আমার স্বপ্নের নায়ক আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যতো তারাতাড়ি সম্ভব আমাকে আপনি মুক্তি দেন।
মাহিরঃ তুমি কি অন্য কাউকে…
মায়াঃ ঠিক ধরেছেন! আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।
মাহিরঃ কাকে?
মায়াঃ যানি না! তারে আমি চোখে দেখিনি!
মাহিরঃ সে কেমন কথা?
মায়া কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাহিরের ফোনটা বেজে ওঠে।মাহির হাত উঁচু করে মায়াকে থামিয়ে দিয়ে ফোনটা রিসিভ করে

 

মাহিরঃ হ্যালো মিরা মা বলো?
ওপাশ থেকেঃ,,,,,,
মাহিরঃ হ্যাঁ, আসছি তোমাদের বউমাকে নিয়ে।রাস্তায় খুব জ্যাম বেঁধেছে তাই একটু দেরি হচ্ছে।
মায়া ফোনটা মাহিরের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে নিজের কানের কাছে ধরে।
মায়াঃ ওই কে আপনি? এই লোকটা আপনাকে মিথ্যা বলছে! কোনো জ্যাম-ট্যাম বাঁধেনি রাস্তায়।
ওপাশ থেকেঃ,,,,
মায়াঃ আমি ওনার বউ।
সাথে সাথে মাহির ফোনটা মায়ার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সুইচড অফ করে গাড়ীর মধ্যে ফেলে দেয়।
মাহিরঃ তোমার মাথায় কি কোনো বুদ্ধি নেই? কখন কি বলতে হয় সেটাও যানো না?
মাহির আসেপাশের মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে বলে,
মাহিরঃ এখানে সবকিছু ঠিক আছে আপনারা যেতে পারেন।আসলে এই মেয়েটা একটা পাগলি।
মায়াঃ ওই,, আপনি আমাকে পাগলি বললেন?
মাহিরের কথায় মায়ার এই প্রতি উত্তর শুনে রাস্তার সব মানুষজন অট্ট হাসিতে মেতে উঠেছে।কেমন যেন ফ্রীতে বিনোদন নিচ্ছে সবাই।
সকলের এমন হাসি দেখে মায়াও নিশ্চুপ হয়ে যায়। চুপচাপ গোমড়া মুখ করে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে হাতের আঙুলের নখগুলো কামড়াতে থাকে।

মাহির মায়ার হাতটা টেনে ধরে,
মাহিরঃ কি বাচ্চাদের মতো নখ খাচ্ছো?
মায়াঃ খাচ্ছি না কাটছি!
মাহিরঃ ওই হলো একটা।যাও গিয়ে গাড়ীতে ওঠো।অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।

মির্জা মহলে,,,
মাহিরের গাড়ীটা মির্জা মহলের সামনে এসে দাড়াতেই সকলে চিৎকার, চ্যাচামেচি শুরু করে দেয়।
বউ এসেছে! বউ এসেছে!
মিরাঃ রাইসা কোথায়?
রাইসা কিচেন থেকে বেড়িয়ে শাড়ির আঁচলে হাত মুছতে মুছতে এসে দাড়ায়।মিরা বরণ ডালাটা রাইসার দিকে এগিয়ে দেয়।
মিরাঃ নে তোর ছেলে আর ছেলের বউকে বরণ কর।
রাইসাঃ তুমিই করো ভাবি। মাহিরতো তোমারও ছেলে।
মিরাঃ ওভাবে বলতে নেই তুই মা তুই কর!

এমন সময়ে মায়া মাথা থেকে ঘোমটা’টা ফেলে দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়।
মায়াঃ কোনো বরণ-তরণ করতে হবে না।আমার এসব ভালো লাগে না।

নতুন বউয়ের এমন ব্যবহারে সবাই হা করে আছে।মায়া এগিয়ে রাইশার সামনে গিয়ে দাড়ায়।
মায়াঃ আপনাদের কথা শুনে মনে হলো আপনি আমার শ্বাশুড়ি।কিছু মনে করবেন না মা।এসব বরণ-তরণ ইসলামে স্বীকৃতি দেয় না।তাই আমি এটা করতে দিতে পারি না।যদি আপনাদের কস্ট লেগে থাকে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

মায়ার কথা শুনে রাইশা আর মিরা দুজন দুজনের মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
রাইশাঃ দেখেছো ভাবি সোহাগ ভাই ঠিক মেয়েকেই আমাদের মাহিরের জন্য বেছে নিয়েছে।
মিরাঃ হুমম।তাইতো দেখছি।এতোদিনে উনি একটা কাজের কাজ করেছে।
মাহিরের বোন রুসা ফিসফিস করে মিরার কানের কাছে বলে।
রুসাঃ মামি এই মেয়ে আর কোনও আচার অনুষ্ঠান মানবে বলে আমার মনে হয় না।একে কি তাহলে আমি উপরে নিয়ে যাবো, ভাইয়ের রুমে?
মিরাঃ হুমম। তাই করো!

রুসা মায়াকে মাহিরের রুমে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিয়ে চলে যায়।রুমটা খুব সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে।ফুলে সাজানো এই রুমটাতে বসে মায়া তার অতীতের কথা ভাবে! কতোটা স্বপ্ন ছিলো মায়ার বিয়ের পরের এই প্রথম রাতটাকে নিয়ে। অজানা সেই মানুষটাকে নিয়ে।যাকে একবার দেখার জন্য মায়া অনেক চেস্টা করেছে কিন্তু পারে নি।

হঠাৎ দরজার আওয়াজে মায়া কেঁপে ওঠে।
মায়াঃ কে…?
মাহিরঃ ভূত….
মায়াঃ ফাজলামো করেন?
মায়া বালিশটা মাহিরের দিকে ছুড়ে মেরে বলে যান বেলকনিতে গিয়ে ঘুমান।
মাহিরঃ ভালো জোকস?
মায়াঃ এটা জোকস না সত্যি।
কথাটা বলে মায়া উঠে এসে মাহিরকে ঠেলতে ঠেলতে বেলকনিতে নিয়ে দরজাটা রুমের মধ্যে থেকে বন্ধ করে দেয়।

কিছুক্ষণ পর,,,
মাহিরঃ খুব বারাবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু মায়া! আমার ঠান্ডা লাগছে তারাতাড়ি দরজাটা খোলো।

মায়া মাহিরের কথা কানেই নিচ্ছে না।বালিশে মুখ গুজে শুয়ে আছে।
মাহিরঃ ভালোই তো ইসলামের আচার শিখাচ্ছিলে সবাইকে। স্বামীকে কস্টে রাখা তোমার কোন ইসলাম অনুমতি দেয় একটু বোঝাবে?

মায়া কানের উপর নিজের হাতটা চেপে ধরে রাখে।
মায়াঃ উফফ্ আপনার বকবকানি বন্ধ করবেন? আমাকে ঘুমাতে দিন।
মাহিরঃ আমাকে এই ঠান্ডায় বাইরে রেখে তুমি ঘুমাবে? আমি কিন্তু এবার চিৎকার করবো।
মায়া উঠে গিয়ে দরজার কাছে দাড়িয়ে দরজাতে দুটো টোকা দেয়।
মায়াঃ চিৎকার করবেন? করেন চিৎকার! আমিও বলবো আপনি আমাকে পাচার করতে চেয়েছিলেন।
মাহিরঃ এটা কিন্তু ব্লাকমেইল হচ্ছে।
মায়াঃ হোক।যতো দিন না আমাদের ডিভোর্স হয় আপনি বেলকনিতেই ঘুমাবেন।আর এটাই আপনার শাস্তি।
মায়া ঘুরে গিয়ে আবার বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে।কানে হেডফোন আর সেই মানুষটার অপেক্ষা কখন সে আসবে আর তাকে শুনবে।নাহ আজ সে আসেনি!

চলবে,,,,  তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি , তারে আমি চোখে দেখিনি 

বিঃ দ্রঃ ” লেখাঃ মস্ত লিজা ” লেখকের লেখা অন্য গল্প গুলো পড়তে এখানে ক্লিক করুন…………

👉আমাদের ফেসবুক পেজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *