জীবনের গল্প

জীবনের গল্প !! Part- 08

কিছু ক্ষণ পর লাইন কেটে দিয়ে মোবাইল টাই অফ করে ফেলি।
যাতে নিব্রাস আর ফোন না দিতে পারে।
কিন্তু কিছু ক্ষণ পর যা দেখি তা দেখে আমিতো অবাক।
নিব্রাস আমার বাড়ীতে এসে হাজির।
-আসসালামু আলাইকুম।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।কিরে কেমন আছিস?হঠাৎ কি মনে করে?
-এইতো ভাবীকে দেখতে মন চাইলো তাই আসলাম।
ভাবী কই?
-তোর ভাবীতো ওর রুমে।
-ওহ আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
নিব্রাস ওর ভাবীকে দেখতে আসছে?

সত্যি এটা?
নাকি…
-তিয়াসা,এই তিয়াসা।
-ও তিয়ারা বলতে গিয়ে তিয়াসা ডাকছে নাকি?
আমি আর যাচ্ছিনা ওর সামনে।
গিয়ে কি বলবো,
যদি বলে ফোন রিসিভ করিনা কেন।
-কিরে তিয়াসাকে ডাকছিস কেন?
-ওর সাথেও দেখা করি।
-ও ওর রুমে রেস্ট নিচ্ছে।ওকে ডাকিস না।ওর নাকি মাথা ব্যথা করছে।
বাহ,আম্মু কি সুন্দর ভাবে আমার মাথা ব্যথা বানিয়ে দিলো।
-সমস্যা নেই আমি ডেকে দেখি।
-আম্মু আর না করতে পারেনি।
-নিব্রাস আমার রুমের দরজায় এসে নক করছে।
কিরে তোর নাকি মাথা ব্যথা?
দরজা খোল।

-তুই তিয়ারার সাথে দেখা করে নাস্তা করে চলে যা।
আমার ভালো লাগছেনা আমি শুয়ে আছি।
-আমার সামনে আয় তুই,দেখি তোর কেমন মাথা ব্যথা।
-না আসবোনা,চলে যা তুই।
এবার নিব্রাস দরজার অনেক টা কাছে মুখ টা এনে আস্তে করে বলে,
-তুই কি বের হবি?নাকি আমি দরজাটায় কিক মারবো?
-কিই?
আমি দরজা খুলে দেই।
এবার হনহন করে নিব্রাস রুমে ঢুকে যায়।
আমার কাধ ধরেই আমাকে দেয়ালে নিয়ে ঠেকিয়ে ফেলে।
কি পেয়েছিস কি তুই?
আমার ফোন কেন ধরছিস না?
মাথা ব্যথা তোর, না?
কই দেখি দেখি কেমন ব্যথা?
আমার কলিজা ব্যথা করছে কলিজা।
তোর ফোন ধরতে দেরি হওয়ায়।
আর তোর কিনা মাথা ব্যথা।
-দেখ,ছাড় আমাকে।কেউ চলে আসবে।
-আসতে দে।
আমি কাউকে ভয় পাইনা।
শুধু মাত্র ভদ্রভাবে বাসায় প্রবেশ করেছি যাতে তোর মুখ থেকে শুনতে পারি যে আমাকে এভয়েড করার কারণ কি।
নইলে এত ক্ষণে কি যে করে ফেলতাম।
-কি হয়েছে?বল আমাকে।
কেন লাইন কেটে দিচ্ছিলি?কেন মোবাইল অফ করে রেখেছিস?
-ছাড় আমাকে,
-না,
আগে বল কেন করতেছিস এমন?
-তোর মা আম্মুকে ফোন করে বলেছে এই সম্পর্কে তারা রাজি না।
আর তাই আম্মুও আমাকে ডেকে নিয়ে বল্লো তারাও রাজি না।
কেউ যেখানে রাজি না,সেখানে তুই একা আগিয়ে কি করবি?
ভুলে যা আমায়।
-হা হা হা,ভুলে যাবো?
মা ফোন দিয়েছিলো না?
না করার জন্য?
ওকে দেখ তুই শুধু এবার আমি কি করি।
চল আমার সাথে।
কোথায়?
-যাবি কি না?নাকি টেনে নিয়ে যাবো আমি?
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকায় নিব্রাস আমার হাত ধরে টেনে আম্মুর কাছে নিয়ে যায়।
-শুনেন খালামণি,
আমি সোজাসাপ্টা মানুষ,সোজাসুজি কথা বলতেই পছন্দ করি।
আমি তিয়াসাকে ভালবাসি,আর তিয়াসাকে বিয়ে করতে চাই।
এইযে তিয়ারা ভাবী শোনো,
আমি তিয়াসাকে তোমার জা বানানোর উদ্দ্যোগ নিয়েছি।
এতে কি তোমার কোন প্রবলেম আছে?
তিয়ারা চুপ করে আছে।
-আপনারা বিয়ের প্রস্তুতি নিন।
আংকেলকে ফোন করে আমিই জানাচ্ছি।আপনাদের কিছু বলতে হবেনা।
তুই কান্না কাটি বাদ দিয়ে রেডি থাক।
বিয়ের প্রস্তুতি নে।
নিব্রাস কথা গুলো এক গড়া বলে ওদের বাসায় চলে যায়।
বাসায় গিয়েই ওদের টিভি টাকে প্রথমে ভাঙে।
তারপর শোকেসের কাচ।
একে একে সব আছড়ে ভাঙতে থাকে।
ওর মা এসে বাধা দেয়ায় চিল্লায় বলে ও,
আমি তিয়াসাকে বিয়ে করতে চাই।
এটাই আমার শেষ কথা।
আমাকে বিয়ে করাবে কিনা বলো,
নয়তো আমি এ বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে দিবো।
নিব্রাস যে এতটা জেদি সেটা আমার সত্যিই জানা ছিলোনা।
আশেপাশের কয়েক জন এসে ওদের বাসায় এসে হাজির।
সবাই নিব্রাসকে বাবা,ধন,সোনা মানিক ছেলে বলে থামাচ্ছে।
এদিকে নিব্রাসের বাবা এসে নিব্রাসকে ধমকাচ্ছে।
-তোকে বলিনি আমি রাজি?
তাহলে এসব কেন করলি?
-মা কেন খালাকে ফোন দিয়ে না করলো?
তুমি মাকে বুঝাও নয়তো আমি তিয়াসাকে বিয়ে করে এ বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো।
নিব্রাসের মা কোন কথা না বলেই নীলাদ্রীসকে ফোন দেয় কাঁদতে কাঁদতে।
আর ওকে বলে,
-তুই এখনো বাসায় চলে যায়।
আর দেখ বাড়ীর কি অবস্থা করেছে নিব্রাস।
নীলাদ্রীস সাথে সাথে আমাকে ফোন দেয়।
আর ফোন দিয়ে বলে,
তুই আমার পরিবারে অশান্তি করতে চাস তো?

এবার দেখবি,অশান্তি কাকে বলে।
আর বউ হয়ে আসবি আমার বাসায় তাইতো?
আমিও দেখি কি করে তুই এ বাড়ীর বউ হস।
-আমিও চ্যালেঞ্জ করলাম,
তিন দিনের মধ্যে আমি নিব্রাসকে বিয়ে করে তোদের বাসায় পা রাখবো।
তুই দুইটা ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষা কর,
ভাই আর ভাইয়ের বউ এর গলায় পরিয়ে তাদের বরণ করার জন্য।
চলবে…