ঘর জামাই——-পর্ব-০৬
হাই হাই আমার দাঁড় করা পান্জাবির এই অবস্থা করলো
কে? এখন আমি এত টাকা জরিমানা দিবো কি করে?
আরে জরিমানা না হয় পরে দিবো। কিন্তু
জুয়েলকে এখন আমি কি বলবো? আমার কান্নার
শব্দ শোনে জুই রুমে আসছে।
জুই:- কি হলো তোমার কি কেও মারা গেছে নাকি?
আমি:- আমার যদি কেও মারা যেত তাহলে বেছে
যেতাম। কিন্তু তার চাইতে বেশি কিছু হইছে। বলে
এএএ করে কান্না করতেছি।
জুই:- বলবে তো কি হইছে?
আমি:- দেখোনা আমার পান্জাবিটাকে কে
জেনো। কেচি দিয়ে কেটে ফেলছে।
জুই:- তুমি নিশ্চয় নতুন কোন নাটক করতেছো।
আমি:- চোখের পানি গুলো মুছে। জুই তুমি তো
বলছিলে যদি তোমাকে আমি মিসকল দেই তাহলে
তুমি আমার পান্জাবির বারোটা বাজাবে। আমি তো
তোমাকে মিসকল দিয়েছিলাম। আমার তো মনে
হচ্ছে তুমি এই কাজটা করছো।
জুই:- না না আমি করিনি। আমি কেনো তোমার
পান্জাবিটা কেচি দিয়ে কাটতে যাবো? আর তখন
তো আমি রাগের মাথায় বলে ফেলছি।
আমি:- মিথ্যাকথা বলবেনা একদম বলে দিলাম। আমি
ভালো করে বুঝতে পারছি এই কাজটা এক মাত্র তুমি
ছারা আর কেও করবেনা। ভালোই ভালোই বলো
বলছি তানা হলে কিন্তু আমি এখুনি ঘর জামাই হিসাবে আর
এই বাড়ীতে থাকবোনা।
জুই:- দরজাটা খোলা আছে যেতে পারো।
আমি:- যদি আমি চলে যাই তাহলে তোমার একটু কষ্ট
হবেনা?
জুই:- তুমি গেলে আমি শাওনকে তারা তারি বিয়ে
করতে পারবো। আর আব্বু খোব সহজে রাজি
হয়ে যাবে। আর একটা কথা এই ভাড়া করা পান্জাবিটা আমি
কেচি দিয়ে কেটে দিয়েছি। তুমি একটু বেশি জামাই
গিরি দেখাচ্ছিলে তাই একটু খানি আমি বউ গিরি দেখালাম।
এবার তোমার বুন্ধকে কি বলবে?
আমি:- ঠিক আছে তাহলে আমিও দেখে নেবো।
বলে পান্জাবিটা নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম। চিনতা
করতেছি কি করে জুয়েলকে এই পান্জাবিটা বুঝিয়ে
দিতে পারবো। আগে জুয়েলকে একটা ফোন
করে বলে দেই। যে আজ পান্জাবিটা দিতে
পারবোনা। মোবাইলটা বের করে ফোন দিলাম,
দুইবার রিং হতে রিসিব করছে।
জুয়েল:- সৌরভ পান্জাবিটা নিয়ে আয়। ফোন করছিস
কেন?
আমি:- দুস্ত একটা সমস্যা হয়ে গেছে।
জুয়েল:- দুস্ত তোর আল্লাহ খোদার দুহায় তুই
আমার পান্জাবিটা দিয়ে দে। এইটা আমার আব্বার এক
মাত্র শেষ স্মৃতি।
আমি:- আগে তুই আমার কথাটা একটু শোন, তোর
ভাবি।
জুয়েল:- ভাবি কি করছে?
আমি:- আগে শোন, তোর ভাবি পান্জাবিটা দুইতে
দিয়েছে কাজের মেয়েকে। তাই আজ পরিস্কার
করে আগামিকাল লন্ড্রি ঘরে পাঠাবে, তারপর দুইদিন
পরে লন্ড্রি ঘর থেকে আসলে আমি তোর
পান্জাবিটা তুকে দিয়ে দেবো। যা তুই (১০) দশ টাকা
বেশি নিছ। বলে ফোনটা কেটে দিলাম। যাক
আজকের মত বাচা গেলো। যাই এখন একটা
টেইলার্স ঘরে যাই। একটু বায়ে মুর করে চিপা একটা
গল্লির মধ্য দিয়ে বের হয়ে একটা টেইলার্স
দোকানে এলাম।
আরে ঘর জামাই যে কেমন আছেন দুলা ভাই। একটা
ছেলে।
আমি:- আপনাকে তো আমি চিনবার পারলাম না?
আরে দুলা ভাই আমি হামিদ। জুই আপার বাসার পাশে
আমার বাসা।
আমি:- এই সন্ধা বেলা চোখে কালা চশমা কেন? ভাব
সাব তো ঠিক মনে হচ্ছেনা? যাও গিয়ে পড়তে
বসো। একটা দমক দিয়ে টেইলার্সের ঘরে
ডোকে পান্জাবিটা দেখিয়ে বলছি এইটা তালি তুলি
দিয়ে ঠিক করে দিতে। তারপর আমি বেড়িয়ে এলাম।
একটু খানি গুড়া গুড়ি করে বাসায় এলাম। তখনি,,
শ্বশুড়:- বাবা সৌরভ তুমি কোথায় গেছিলে? অফিস
থেকে এত তারা তারি চলে আইছো কেন?
আমি:- আব্বাজান আসলে প্রথম দিন তাই একটু খারাপ
লাগছিলো তাই চলে আসছি। আগামি কাল থেকে নিয়ম
করে অফিস করবো।
জুই:- আব্বু এখনো সময় আছে ওকে লাথি
মেরে ঘর থেকে বের করে দাও। একটা পান্জা,,,
তখনি জুইকে থামিয়ে,,
আমি:- জুইয়ের মুখের কথা থামিয়ে দিয়ে। আব্বাজান
আপনি আমাকে কয়টা দিন সময় দিন আমি আপনার সব
কাজ সুন্দর ভাবে করবো।
শ্বশুড়:- তা আমি জানি। আচ্ছা তাহলে কাল থেকে
নিয়ম করে অফিস করবে। বলে শ্বশুড় মানে আমার
আব্বাজান চলে গেলো।
জুই:- এখনো সময় আছে ফকিরের বাচ্ছা। ভালোই
ভালোই আমার জীবন থেকে চলে যা? তানা হলে
কিন্তু ভালো হবেনা।
আমি:- বুজবার পারছি তুমি এতো রাগ করছো কেন?
ঠিক আছে আজ রাতে একটু বেশি করে আদর
করে দিবো। আর আসো এখন একটু কোলা
কোলি করি। বলে গিয়ে জুইকে জড়িয়ে ধরে
দুইটা কিস করে দিয়ে সোজা দৌঁড়। আর জুই দাড়িয়ে
আমার গুস্টি ওদ্দার করছে। তখনি জুই নিছে নেমে
এসে আমার শ্বশুড় মসাইকে ডাকছে।
জুই:- আব্বু আব্বু,
শ্বশুড়:- কিরে মা এত জোরে চিৎকার চেচামি করছিস
কেন?
জুই:- আব্বু তুমি কি ঘর জামাই আনলে খালি জড়িয়ে
ধরতে চাই আর কিস করে, ওর মতি গতি আমার কাছে
সুবিধা লাগছেনা। এই ঘর জামাইকে এখনি তুমি বাড়ী
থেকে বেড় করে দাও।
শ্বশুড়:- তোর মাথা কি গেছে নাকি? তোর জামাই
তোকে জড়িয়ে ধরবেনা, তো কি অন্য কাওকে
জড়িয়ে ধরে মাইর খাইবো? আর শোন সৌরভ ঘর
জামাই হিসাবে আমার একদম পসন্দ হইছে। এমন ঘর
জামাই পেলে আর কি লাগে?
জুই:- আমার মাথা ঠিক আছে, তবে তোমার ঘর
জামাইয়ের মতি গতি ঠিক লাগছেনা আমার কাছে।
আমি:- আব্বাজান আপনি এক মাত্র আমার কষ্টটা
বুজলেন।
জুই:- আব্বু আমি আবারও বলছি ও যদি আমাকে আবার
জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে তাহলে আমি কিন্তু ওকে
খুন করে জেলে যাবো।
শ্বশুড়:- কি যে বলিস না মা, স্বামি তার বউকে জড়িয়ে
ধরবে এতে দুষের কিছু নেই, যা রুমে যা।
জুই:- এভাবে টর্চার করলে আমি বাড়ি ছেরে চলে
যাবো। আর তোমরা ঘর জামাই নিয়ে থাকতে হবে।
শ্বশুড়:- সৌরভ তুমি শোন?
আমি:- হ্যা বলেন?
শ্বশুড়:- দেখ বাবা আমি তোমাকে আগে বলছি জুই
এখনো সব কিছু মেনে নিতে পারেনি, এখনো
বলছি একটু ধৈরয ধরো সব ঠিক হয়ে যাবে। আর
জুইয়ের সামনে আমি তোমাকে কিছু বলিনি কারন জুই
তোমাকে এখনো ওর স্বামি হিসাবে মেনে
নিতে পারেনি আর আমি যদি জুইয়ের সামনে কিছু
বলতাম তাহলে জুই তোমাকে আরো অবহেলা
করবে। আমি কি বলছি তুমি বুঝতে পারছো তো
বাবা?
আমি:- হ্যা, ঠিক আছে আর কোন দিন ধরবোনা।
বলে রুমে দিকে চলে এলাম, কিছুক্ষন পর জুই
রুমে এসেছে। আমি রুমে বসে আছি যখনি জুই
রুমে ডোকছে তখনি, আমি মোবাইলটা কানে
নিয়ে খালি খালি, কথা বলতেছি, হায় জান তুমি কেমন
আছো? জান আগামিকাল আমরা দুজনে দেখা
করবো তোমার কলেজের সামনে। তুমি পিংক
কালার জামাটা পড়ে আসো ঐটা তোমাকে অনেক
সুন্দর লাগে। এই কথা গুলো জোরে জোরে
জুইকে শুনিয়ে বলছি।
জুই:- তুমি কার সাথে কথা বলছো এত জোরে
জোরে?
আমি:- আমার পুরানা প্রেমিকার সাথে। কাল দেখা
করবো আমরা।
জুই:- আগের প্রেমিকা থাকতে আমাকে কেনো
বিয়ে করলে?
আমি:- সব কিছু ফ্রিতে পাবো বলে।
জুই:- তোমার কষ্ট হইনি?
আমি:- না হইনি। কিন্তু কেনো?
জুই:- না কিছুনা। তবে আজকে তোমার এই
বাড়ীতে শেষ ঘর জামাই গিরি, এখনি আব্বুকে গিয়ে
সব রেকটিং শোনাচ্ছি তুমি কেনো আমাকে বিয়ে
করেছো? আর এখন যা যা বলছ সব কিছু আমি
মোবাইলে রেকটিং করে নিয়েছি। বলে জুই রুম
থেকে তারা তারি করে বেড়িয়ে গেলো।
চলবে,,,