গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি

গিরগিটি বর তাও আবার চুক্তি —পর্ব-০৭

আরে কি করছেন? এখন পর্যন্ত আমি আমার স্বামির
ভালবাসা পাইনি? আর আপনি কিনা এত জোরে গাড়ি
চালাচ্ছেন? যদি আমি মারা যায় তাহলে আমার স্বামি
অনেক কষ্ট পাবে। কথা গুলো ইচ্ছে করে
বলছি, যাতে করে সৌরভ রেগে গিয়ে গারিটা
আসতে চালাই।(আমি)
সৌরভ:- কি বললে তুমি? তোমার স্বামির আদর পাওনি?
পাওয়াচ্ছি তোমার স্বামির আদর। বলে সৌরভ গারিটার
স্পীর্ড আরো বারিয়ে দিয়েছে।
আমি:- আপনার মনে একটু দয়া মায়া বলতে কিছু নেই
নাকি?
সৌরভ:- দয়া মায়া সবই আছে? তবে তোমার জন্য
নেই।
আমি:- কিন্তু আমি কি করছি আপনাকে? আমার জানা
মতে আমিত আপনার কোন ক্ষতি করিনি। তাহলে
আমাকে কেন এত কষ্ট দিতেছেন?
সৌরভ:- তুমি কোন ক্ষতি করনি? তুমি এত তারা তারি সব
কিছু ভূলে যাও কি করে? তোমার উদ্দেশ্য আমি
ভালো করে বুঝতে পারছিলাম তাই তোমাকে
জোর করে বিয়ে করেছি।
আমি:- আমার উদ্দেশ্য মানে? আপনি কি বলতে চান
সোজা সুজি বলেন? আমি আপনার কি ক্ষতি করতে
চাইছি? তখনি গাড়িটা থামিয়ে দিয়ে বলে।
সৌরভ:- গাড়ি থেকে নামো।
আমি:- এখানে নামলে আমি বাসায় যাবো কি করে?
সৌরভ:- আগে নামো তারপর বলছি কি করে যাবে।
বলে আমার হাত ধরে গাড়ি থেকে টেনে বেড়
করছে। এর পর আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে
যাচ্ছে।
আমি:- আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? কোন
কথা না বলে সৌরভ আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
একটু যাওয়ার পর আমাকে জোরে টান মেরে
মাটিতে ফেলে দেই।
সৌরভ:- ঐশি একটু খেয়াল করে দেখ।
আমি:- হ্যা দেখছি, কিন্তু এখানে আমাকে নিয়ে
আসলেন কেন?
সৌরভ:- তোমাকে মনে করিয়ে দেবার জন্য।
তোমার মনে আছে তাহলে এই জায়গাটা? আমিত
ভাবছি তুমি ভূলে গেছ।
আমি:- এই জায়গাটা আমি এত সহজে ভূলে যাব, তা কি
করে হয়? তবে আপনি এই জায়গাটা চিনেন কি করে?
আর আপনি,,,
সৌরভ:- ঐশি, তুমি নিজেকে অনেক চালাক মনে কর,
তাইনা। তেমার জন্য আমি আমার সবচেয়ে কাছের
মানুষ গুলোকে হারিয়েছি। আর তুমি আমাকে বলছ?
আমি এই জায়গাটা চিনলাম কি করে।
আমি:- মানে, আপনি তাহলে রাজুর বুন্ধ?
সৌরভ:- হ্যা, শুধু বুন্ধ নয়। রাজু আমার বুন্ধর চেয়ে
বেশি। তুমি আর তোমার বুন্ধরা মিলে রাজুর সাথে
যে অবিনয় করেছ। তার জন্য আমি তোমাকে
কোন দিন ক্ষমা করবনা। ঐশি তোমার মনে আছে?
প্রথম যেইদিন তুমি অফিসে চাকরির জন্য গেছিলে।
আমি:- হ্যা মনে আছে।
সৌরভ:- তোমাকে আমি প্রথম দিন কোন প্রশ্ন না
করে, চাকরিটা দিয়ে দেই। তারপর তোমার সাথে
সবসময় ভাল ব্যবহার করি, যখন তোমার আব্বু অসুস্থ
তখনি আমি টাকা দিয়ে সাহায্য করি। এর পরে
তোমাকে চাপে ফেলে বিয়ে নামেন খেলাটা
শুরু করি। যেইদিন তোমরা সবাই মিলে রাজুর সাতে
এই অন্যায় করেছ। সেইদিন থেকে আমি প্রতিজ্ঞা
নিয়েছি, তোমাদের কাওকে ছারবোনা। ভাগ্য ভাল
বাকিদের, কারন ওদের এখনো পাইনি।
আমি:- কিন্তু আপনি আমার কথাটা একবার শুনেন প্লিজ।
তারপর আপনি আমাকে যা খুশি তা করিয়েন।
সৌরভ:- আমি তোমার আর কোন কথা শুনতে রাঝি
নয়। তবে তোমাকে আমি কি কষ্ট দেই তুমি
দেখবে। রাজুকে তুমি আর তোমার বান্দবীরা
মিলে যতটুকু কষ্ট দিয়েছ। তার চাইতে দ্বীগুন
কষ্ট আমি তোমাকে দেব।
আমি:- প্লিজ একবার আমার কথাটা আপনি শুনেন? তারপর
যা করার আপনি করিয়েন। প্লিজ আমার কথাটা একটু
শুনেন। কে শুনে কার কথা সৌরভ এসে আমাকে
আবার হাত ধরে টেনে এনে গাড়ীতে বসিয়ে
গারিটার সব স্পীর্ড দিয়ে চালাতে শুরু করছে।
সৌরভ:- বাকিদের কথা বাদ দিলাম, তুমি এমনটা করতে
পারলে ঐশি? আমি রাজুর কাছথেকে তোমার কথা
অনেক শুনেছি, রাজু তোমার অনেক প্রশংসা করত।
আর তুমি এমনটা করলে? ছিঃ ছিঃ ঐশি। তোমাদের মত
মেয়েদের জন্য আজ ভাল মেয়েদের ভালবাসার
কোন মূল্য থাকেনা।
আমি:- আপনার কাছে অনুরুদ গাড়ীটা একটু আসতে
চালান। আমার অনেক ভয় করে গাড়ী জোরে
চললে। আর আপনি রাজুর ভাল বুন্ধ হতে পারেন
কিন্তু সবটা না জেনে না বুঝে আমাকে দুসারুপ না
করলে আমি খুশি হবো। আগে আমার কথাটা একটু
শুনেন, তখনি গাড়ীটা থামিয়ে বলে,,
সৌরভ:- বাসায় চলে এসেছি তুমি গাড়ি থেকে নামো।
আর আম্মু যদি জিগ্যাসা করে এত দেরি হল কেন?
তাহলে বলবে আমার সাতে গেছিলে। আর শুন
বাসায় কাওকে রাজুর ব্যাপারে কিছু বলবেনা। কথাটা
একটু মাথায় রেখ। আমি অফিস থেকে গুড়ে আসছি।
আমি:- হ্যা মনে থাকবে, তবে আমার কথাটা একটু
শুনেন। তখনি সৌরভ গাড়িটা নিয়ে চলে গেল, আমি
বাসারর ভিতরে ডোকতেই,,
তাহমি:- ঐশি তুমি কোথায় ছিলে?
আমি:- আপু আমি আর সৌরভ দুজনে একটু বাহিরে
গেছিলাম।
তাহমি:- ভাই তোমাকে নিয়ে গুড়তে গেছে?
শুনে অনেক খুশি হইছি। তুমি রুমে গিয়ে
ফ্রেসহয়ে নাও।
আমি:- ঠিক আছে, ( তাহমি আপুকে জিগ্যাসা করব রাজুর
ব্যাপারে? যদি আবার ওল্টা পাল্টা কিছু মনে করে। না
থাক এখন না) আমি রুমে চলে এলাম, তারপর
ফ্রেসহয়ে ধরজাটা লাগিয়ে এক ঘুম দিলাম। কারো
ধরজায় জোরে জোরে দাক্কায় ঘুম ভাঙলো।
তারপর গিয়ে ধরজাটা খুলে দেখি সৌরভ।
সৌরভ:- কখন ধরে ডাকছি তুমি কি করছ রুমে?
আমি:- আমিত ঘুমিয়ে ছিলাম।
সৌরভ:- সরো, বলে আমাকে দাক্কা দিয়ে রুমে
ডোকল।
আমি:- দেন আমি আপনার জুতা গুলো খুলে দেই।
বলে আমি সৌরভের জুতা গুলো খুলে দিলাম, এতে
সৌরভ আমাকে কিছু বলেনি। আমি ওর জুতা গুলে
খুলে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলাম। একটু পর
রুমে এসে দেখি সৌরভ খাঠের উপড় বসে
মোবালে ভিডিও কলে কথা বলছে, আমি কিছু
বলেনি। সোজা নিছে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
সৌরভ:- ঐশি তুমি খাবেনা?
আমি:- না, আমার খিদে নেই। আর আমার জন্য
আপনাকে না ভাবলে চলবে।
সৌরভ:- হ্যা জানি তোমাকে নিয়ে ভাবার মত অনেক
ছেলে আছে। বাকি কইটা মাস তোমাকে কি করে
সহ্য করব। এইটা ভাবতে ভাবতে আমার মাথা ঠিক
থাকেনা। তোমার চেহেরাটা দেখলে আমার ঘৃনা
হয়।
আমি:- আমাকে আপনি যতটা ঘৃনা করেননা কেন? এই
চুক্তি গুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে সহ্য
করতে হবে। তবে আপনি আমাকে একদিন ঠিক
খুঝবেন। তবে সেইদিনটা না অনেক দেরি হয়ে
যায়।
সৌরভ:- তোমাকে আমি খুঝবো? হাসালে ঐশি।
তোমাকে আমি কোন দিন খুঝবোনা। তবে তুমি
যে ভাল অবিনেত্রী তার কোন সন্ধেহ নেই।
আমি:- এখন আমি আপনাকে যা বলিনা কেন, আপনি
আমার কোন কথা বিশ্বাষ করবেননা। তবে এমন
একদিন আসবে আপনি সব কিছু নিজে বুঝবেন তবে
আমাকে খুঝে পাবেননা। বলে আমি শুয়ে পড়লাম।
আর কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই। সকালে
ঘুম থেকে ওঠে দেখি সৌরভ রুমে নেই। আমি
ফ্রেসহয়ে বের হব তখনি ঠাসসস করে একটা
দাক্কা খেলাম।
সৌরভ:- তুমি কি দেখে হাটতে পারোনা। তোমার
চোখ গুলো কোথায় থাকে?
আমি:- কোথায় আবার যেখানে থাকার সেখানে
অাছে। তবে আপনার গুলো মনে হয় সাথে
থাকেনা।
সৌরভ:- তোমার সাথে এখন আমি তর্ক করতে রাঝি
নয়। যাও তুমি বলে সৌরভ চলে গেল।
আমি:- তর্ক করতে রাঝি নয় গিরগিটি আজ তোমাকে
আমি এমন মজা দেখাব। তারপর তুমি বুঝবে গিরগিটি বর
কোথাকার। বলে আমি নিছে গেলাম, সবাই আছে
নিছে আমি নিছে নামতে, দেখে সৌরভ নিজে
গিয়ে ধরজাটা খুলে দিল। আর তখনি ৫–৬ বছরের
একটা মেয়ে সৌরভকে জড়িয়ে ধরে বলছে আব্বু
তুমি আমাকে এতদিন দেখতে যাওনি কেন? আমি কি
মজা দেখাব তার আগে আমাকে মজা দেখিয়ে দিল।
এর মানে সৌরভের একটা মেয়ে আছে। এত বড়
চিটিং করছে আমার সাথে?
চলবে,,,