উপন্যাস- রাত

উপন্যাস- রাত ! পর্ব- ১৬

রাত্রি- ( মন ত আমার ভেংগে ছে। )

কাব্য – আংকেল এখন আসি তাহলে।

কাকু- প্রহর আমার রুমে আসো।

প্রহর – কিছু বলবেন। ?

কাকু- আমি জানি তুমি কেনো এইখানে এসেছ? আর
আমি জানি রাত্রির কি হয়েছে?? আর ওর পিছে কারা
লেগেছে??

প্রহর – মানে?

কাকু- রাত্রির বাবা আমার খুব ভাল বন্ধু ছিল।কখনও কিছু
লুকায়নি।
রাত্রির মা যে কি আর তুমিও যে কি আমি সব জানি!

প্রহর – ……..

কাকু- নাইট কিং যে ওর খবর এইখানেও বের করতে
পারে সেটা আমি জানি।তাই আমি চাই তুমি এইখানে
থাকো।
আর হ্যা তোমার কথা কিং আমাকে আগেই
বলেছে।
মানে আমি শুরু থেকেই জানি তুমি কি??
এই কথা তোমার আর আমার মধ্যেই থাকবে।
আমি চাই তুমি রাত্রির খেয়াল রাখো।
তুমি ছাড়া সেটা আর কেউ পারবেনা আমি জানি।

প্রহর – জি।

ইমা- এই যে হিরো!?

প্রহর – আমি!?

ইমা- তুমি নয় ত আর কে।
এটা তোমার রুম।
রেস্ট নেও।
বাই।

প্রহর- দরজা লাগাতে যাবো তখনি রাত্রি হাজির।

রাত্রি- কলার চেপে ধরলাম ওর।
এইখানে কি করতে এসেছ?? কি চাই?? আর তোমার
রোজ কই? ? সাথে আনোনি???

প্রহর – এইখানে তোমার কাকুই আমাকে থাকতে
বলেছে।আর কথায় কথায় রোজ এর কথা
আনবেনা।

রাত্রি- আমি কাকুকে এখনি বলছি তোমাকে আমার
দরকার নেই।জাস্ট ওয়েট।

প্রহর – হাত টেনে ধরলাম। যদি তোমার কাকু রাজি হয়
তাহলে চলে যাব।আগে রাজি ত হোক।

রাত্রি- হুম।আমিও দেখছি রাজি কি করে না হয়।

প্রহর – ওকে।
হাত ছেড়ে দিলাম।
( তোমাকে এই কয়দিন না দেখে আমার কি অবস্থা
হয়েছিল তুমি যদি জানতে।)

রাত্রি- এর থেকে দুরে আসলাম একে ভুলার জন্য।
আর এ ও পিছে পিছে এসে হাজির।
আর কাকু ও রাজি হল না। এখন প্রতি দিন আবার ওকে
দেখতে হবে??
ওকে দেখলেও জ্বালা। না দেখলেও জ্বালা।
কই যাবো আমি।?

প্রহর – না তোমার থেকে দুরে যেতে পারি না
কাছে আসতে পারছি।
আর এই কাব্য টাকে আমার সুবিধার মনে হচ্ছেনা।
তোমাকে কিভাবে গাড়ি তে ধরছিল।মোটেও ভাল
লাগছিল না আমার।
তুমি ত জানোনা।
তোমাকে অন্য কেউ ধরলে আমার বুকের
মধ্যে কি হয়।

রাত্রি-
আমি বুঝেছি আমাকে কি করতে হবে।তোমাকে
আমিও দেখাবো আমি তোমাকে ছাড়া কত ভালো
আছি।

প্রহর- সকালে রুম থেকে বের হয়ে দেখি কাব্য
এসেছে।
( এই ছেলে র কি আর কাজ নেই নাকি? ?)

রাত্রি- আমার লাগছে বিরক্ত। এই কাব্য টা খুব কথা
বলে।কিন্তু কিছু বলতেও পারছিনা।

ইমা- আরে হিরো দাড়িয়ে আছো কেন? ?
এইখানে বসো

প্রহর – হুম।
কাব্য আর রাত্রি গল্প করছে।
আর আমি জ্বলে পুরে শেষ হচ্ছি।

রাত্রি- ( এর কি হয়েছে? ?? এমন লাল হয়ে আছে
কেন? ? কি জানি।)
আমি একটু পানি খেয়ে আসি।

উঠে রান্না ঘরে গেলাম।পানি খেয়ে পিছনে
ঘুড়তে ই দেখি প্রহর।

প্রহর – হাত ধরে ওর পিঠে লাগালাম। হাত টা একটু
মোচোড় দিলাম।

রাত্রি- কি করছ? ব্যথা লাগছে।

প্রহর – খুব মজা তাইনা।
আরেক জন গায়ের উপর এসে পরছে তোমার
খুব ভাল লাগছে তাইনা?

রাত্রি- তাতে তোমার কি হ্যা?? তোমাকে কেন
উত্তর দিতে যাবো??
ছাড়ো।

প্রহর – তোমাকে বলেছিনা তোমার উপর শুধু
আমার ই অধিকার।

রাত্রি- কিসের অধিকার? ?? হ্যা?? কোন অধিকার এর
কথা বলছ? ? তুমি অন্য কাউকে ভালবাসো।
আর রোজ এর উপর তোমার অধিকার। আমার উপর
নয়।

প্রহর – আরে সেটা ত মিথ্যা ছিল।( কথাটা বলে
নিজের জিভ কাটলাম। )
রাত্রি- কি বললে মিথ্যা??

প্রহর – না মানে।

রাত্রি- তুমি নিজের মুখে বলেছ তুমি ওকে
ভালবাসো।

প্রহর – কিছু না বলে চলে এলাম।

রাত্রি- এর কথার আগা মাথা কিছুই বুঝিনা।
(মিথ্যা ছিল? ? ) কথাটার মানে কি দাড়ালো? ?
উফফ যাই হোক।আমি এত কিছু ভাবছি কেন?

ইমা- আপি এত ক্ষনে তোর পানি খাওয়া হল।
কাব্য – আমরা ঘুড়তে যাওয়ার প্লান করেছি বিকালে।

রাত্রি- যাক ভালই করেছ।

প্রহর – কি ব্যাপার রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছ?

ইমা- বেড়াতে যাচ্ছি।
তুমি কিন্তু যাবে।

রাত্রি- ওর যাওয়ার দরকার নেই।আমি ফোন টা নিয়ে
আসি।

গাড়ি তে উঠে দেখি প্রহর বসে আছে।

ইমা- আপি বেশি ভেজাল করিস না।হিরো যাচ্ছে।
রাত্রি- তুই ওকে হিরো হিরো করিস কেন?

ইমা- উফফ আপি তুই ও না।

প্রহর- কাব্য আর রাত্রি একসাথে বসে আছে।

ইমা- ( হিরো লুকিং গ্লাস এ বার বার আপি কে
দেখছে। বুঝাই যাচ্ছে ব্যপার ত কিছু একটা আছে।
কিন্তু আপি যে বলল ওর গার্ল ফ্রেন্ড আছে??
কিন্তু ……. ব্যপার টা
কি? )

রাত্রি- খুব সুন্দর ত জায়গা টা। চারিদিকে পাহাড় । একটা
ঝড়না এর বুক চিরে পরছে।

মনে হচ্ছে তুষার পড়েছিল।কিছু কিছু জায়গায় বরফ
জমে আছে।

ইমা- আপি দেখ কি সুন্দর ঝড়না।
চল না ওই টার কাছে যাই।
প্লিজ প্লিজ।

কাব্য – হুম চল যাওয়া যাক।
কিন্তু দেখে শুনে পা রাখবে।এই রাস্তা টা কিন্তু খুব
উচু নিচু।
পা পিছলে গেলে কিন্তু খবর আছে।

রাত্রি- হুম।দেখে শুনেই চলব।

প্রহর – ইমা রাত্রি আগে আগে আমি আর কাব্য পিছে
পিছে হাটছি।
হঠাত ই রাত্রির পা পিছলে গেলো।আমি ওর হাত টা
ধরলাম।

রাত্রি- হাত টা ঝাকি দিয়ে ছাড়িয়ে নিলাম।

প্রহর – মেয়ে টা খুব রেগে আছে।
একে যদি এখন আমি বলিও “আমি তোমাকে ভালবাসি,
রোজ কে না” তাও মনে হয়না আমাকে মানবে।
উল্টা আমার মাথা ফাটাবে।তাহলে ত আরেক ভেজাল
হবে।
মাথার ত কিছু হবেনা উল্টা ও জেনে যাবে আমি মানুষ
ই না।
হায় রে।
কেন যে বলতে গিয়েছিলাম রোজ কে ভালবাসি।
এখন বসে বসে নিজের মাথা চাপড়াই।

কাব্য – কিছু ভাবছ!?
প্রহর – না। কিছুনা।

ইমা- উফফ এই পাথুরে পথ চলা খুব কস্ট।
দুরর।
হাটতেই ত পারছিনা।

রাত্রি- তুই ই ত আসতে চাইলি।

ইমা- তা তুই ও ত মানা করিস নি।

রাত্রি- আচ্ছা তুই ঝগড়া থামা।

ইমা- এই প্রহর আমার হাত টা ধর না।আমি হাটতে পারছিনা।

প্রহর – আমি এই কথা শুনে তাকালাম রাত্রির দিকে ও ত
আমার দিকে রেগে লাল হয়ে তাকিয়ে আছে।

ইমা- কি হল!?

রাত্রি – তোমাকে ধরতে হবেনা।আমিই ধরছি।
ইমার হাত ধরে হাটতে লাগলাম।

ইমা- ( হুম ব্যপার টা কিছু কিছু ক্লিয়ার হচ্ছে তাহলে। )
আমি মিট মিট করে হাসছি।

রাত্রি- হাসছিস কেন? ? অন্য মনষ্ক হয়ে হাটতে
যেয়ে পাথরের সাথে বারি খেয়ে পড়েই
যেতে নিচ্ছিলাম।
কেউ আমাকে ধরল।
চোখ খুলে দেখি কাব্য।
কাব্য – ঠিক আছো।

রাত্রি- হ্যা। ও মা!!!!

কাব্য – কি হল।কি হয়েছে! ???

রাত্রি- মনে হচ্ছে পা এ মোচকে গেছে।আরে
আরে কি করছ? কোলে নিচ্ছ কেন?

কাব্য -ম্যাম আপনি হাটতে পারছেন না। তাই নিতে হল।

ইমা- ( মিটমিট করে হাসছি আমি
প্রহর কে দেখে।
ওর ফেস টা দেখার মত হয়েছে। কাহিনি ত আগেই
বুঝতে পেরেছিলাম এখন শিউর হয়ে গেলাম।
কিন্তু এই গার্ল ফ্রেন্ড এর চক্কর টা বুঝলাম না।
মেবি আপু রেগে বলেছে কথাটা। )

কাব্য – এইখানে বসো আমি পা টা একটু দেখি।
প্রহর – আমি দেখছি।
কাব্য কে সরিয়ে দিয়ে রাত্রির পা এর কাছে বসলাম।
পায়ে ত কোনো মতই মেয়ে হাত দিতে দিবেনা।
তাও জোর করে পা ধরে দিলাম একটা মোচোড়।

রাত্রি- প্রহরের হাত খামচে ধরে দিলাম চিতকার।
চলবে
 


বিঃ দ্রঃ নিচে Next >> ক্লিক করলে পরবর্তী পর্ব পাবেন..!

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *