আমার বউ

আমার বউ- পর্ব–০২

বাথরুম থেকে চেঞ্জ করে ঘাড়ে টাওয়েলটা
নিয়ে আমি বের হলাম।
ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে লাগেজটার দিকে
তাকিয়ে মনের মধ্যে জমা হওয়া রহস্য ভেদ করার
বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছি।
পুষ্পিতা এইখানে? কিন্তু কেন??
আমি যখন আব্দুল চাচার মেসে থাকতাম মেসের
সামনের বাসাটাতে পুষ্পিতার মামার বাসা ছিলো।পুস্পিতার
বাবা নেই।বছর দুয়েক হলো মামার বাসায় এসে
উঠেছে।বাবার পেনশন দিয়ে কোনরকমে দিন
পার হয়ে গেলেও মামা নিজে থেকেই মা আর
মেয়ের দায়িত্ব নেয়।
আব্দুল চাচার মেসে উঠেছি আজ চারদিন হলো।
একদিন সকালে কালাম চাচার দোকানে গিয়ে
বসেছিলাম।কালাম চাচার মুদির দোকান কিন্তু দুধ চা টা যা
বানাই পুরাই অস্থির।এই সময়টাতে তেমন কেউ ঘুম
থেকেই ওঠেনা।দোকান একেবারেই ফাঁকা।
মাঝে মাঝে কেউ আসছে তাদের
প্রয়োজনীয় যা লাগবে নিয়েই চলে যাচ্ছে।
আমি চাচাকে এক কাপ চা দিতে আর সাথে একটা
বিস্কিট দিতে বললাম।নিউজপেপারটা হাতে নিয়ে একটু
উল্টে পাল্টে দেখছিলাম।তখনি একটা মেয়ের
কন্ঠে শুনে নিউজপেপারটা মুখের সামনে
থেকে একটু নিচু করে মেয়েটার দিকে তাকালাম।
মেয়েটা আমার দিকে একবার তাকালো তারপর
দোকানের বেঞ্চটাতে বসতে বসতে কালাম
চাচাকে বললো আমাকে এককাপ চা দিয়েন তো।
ফুল কাপ দিবেন। চাচা একটু হাসলো। তারপর আমাকে
আমার চা আর বিস্কিটটা দিয়ে মেয়েটার জন্য চা
বানাতে লাগলো।
আমি নিউজপেপারটা আমার বাম পাশে রেখে চায়ের
মধ্যে বিস্কিট ডুবিয়ে খাচ্ছিলাম।
মেয়েটা বলে উঠলো
– এই যে মি. নিউজপেপারটা পাস করুন।
-জ্বীইই..
-বললাম নিউজ পেপারটা পাস করুন।কানে শুনেন না
নাকি।
আমি নিউজ পেপারটা মেয়েটার দিকে বাড়িয়ে দিলাম
নিউজ পেপারটা নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখতে
লাগলো।
তারপর কালাম চাচা কে দেখলাম চায়ের কাপের
মধ্যে একটা চামচ দিয়ে ওর পাশে চায়ের কাপটা
রাখতে।চায়ের কাপের মধ্যে চামচ দেয়া দেখে
আমার বেশ কৌতূহল হলো।আমি নিজের চা খাওয়া বাদ
দিয়ে মেয়েটার চায়ের কাপের দিকে তাকিয়ে
রইলাম।
মেয়েটা চামচে একটু করে চা নিয়ে ফুঁ দিচ্ছে আর
খাচ্ছে।ব্যাপারটা আমার খুব ইন্টারেস্টিং লাগলো।
নিজের চা খাওয়া বাদ দিয়ে আমি বেশ মজা নিয়ে
ব্যাপারটা আড় চোখে দেখছিলাম।ইতিমধ্যে
মেয়েটার চা খাওয়া শেষ।কালাম চাচা কে চায়ের টাকাটা
দেয়া শেষ করে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে
বললো এভাবে আড় চোখে তাকিয়ে দেখাটা
কিন্ত খুব অন্যায়।এইসব বদ অভ্যাস বাদ দেয়াই
শ্রেয়।কথাটা শুনে আমি খুব লজ্জা পেয়েছিলাম।
কথাটা বলার পরে মেয়েটা আর এক মুহূর্ত দেরি না
করে চলে গেলো..
আমি মেয়েটার গমন পথের দিকে খানিকক্ষণ
চেয়ে থেকে চায়ের বিলটা দিয়ে মেসে ফিরে
গেলাম।।
…………..অনিচ্ছা সত্ত্বেও সুপ্তিকে নিয়ে রিক্সায়
উঠলাম।
এই পড়ে যাবে তো কথাটি শুনেই সুপ্তির দিকে
তাকালাম।
দেখি ফাজিল মেয়েটা হাসতেছে।
এমন ভাবে আমার দিকে চেপে বসেছে যে
আমি যদি আর একটু সরে বসি তাহলে পড়ে যাবো।
হঠাৎ করেই সুপ্তি আমার হাত ধরে ফেলনো।আমি
কিছু বলতে জাবো তার আগেই সুপ্তি বললো
একটু ধরে রাখি প্লিজ না কোরো না।
সুপ্তির মলিন মুখ দেখে আমি আর না করতে পারলাম
না।ধরতেই তো চেয়েছে সমস্যা কি।
দেখ তো এইটা কেমন।
সুপ্তির কথায় পেছনে ঘুরে দেখি হাতে একটা
কালো শাড়ি নিয়ে দারিয়ে আছে।
সুপ্তি আবারও বললো তোমার কালো রঙ পছন্দ
তাই আমি এটাই নেব।
আমি ভ্রু কুচকিয়ে সুপ্তির দিকে তাকালাম।
আমার যে কালো রঙ পছন্দ এইটা এই মেয়ে
কিভাবে জানে।
সুপ্তি মিষ্টি হাসি দিয়ে শাড়িটা প্যাক করে দিতে
বললো।
বিল মিটিয়ে যখনি বের হব তখনি দেখি লাবন্য আমার
সামনে এসে দাঁড়ালো।
লাবন্য আমার প্রাক্তন গার্লফ্রেন্ড। খুব তুচ্ছ
কারনে ও আমার সাথে ব্রেকয়াপ করে চলে
গিয়েছিলো।
সেদিন যখন ক্লাস শেষে তিথির সাথে বাসায়
আসছিলাম তখন লাবন্য আমাদের একসাথে দেখে
ফেলেছিল।
আমি সেদিন লাবন্যকে অনেক বুঝিয়েছিলাম যে
তিথি আমার ফ্রেন্ড ছিল।কিন্তু সেদিন সে আমার কথা
না শুনে আমার দুই গাল লাল করে দিয়ে চলে
গিয়েছিল।
আজ যখন আবার লাবন্যর সাথে দেখা হলো তখনি
লাবন্য উপরের কথাটি বললো।
চলবে,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *