আমার ক্রাশ বর

আমার ক্রাশ বর সিজন- 2 !! Part- 06

উঁচু সবুজ পাহারের বুকে সবাই এক সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
আরিয়ানের বুকের মাঝে মাথা গুঁজে একটা মেয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
অনু তা দেখে লুচির মতো ফুলতে থাকে।
অনুর চেহারা দেখে এখন রিমার খুব মায়া কাজ করছিলো।তাই দেখে রিমা রিদি আপুকে বলে,”আরিয়ান ভাইয়ার বুকে আঠার মতো যে মেয়েটা লেগে আছে সে কে? ”
রিদি বলে,”ওটা আরিয়ান ভাইয়ের গায়ে পড়া জিএফ।”
অনু এবার বলে,”মানে কি? ”

রিদি বলে,”মেয়েটা খুব গায়ে পড়া স্বভাবের যেখানে সুযোগ পায় আরিয়ান ভাইকে শুধু স্পর্শ করতে চায়।”
অনু বলে,”তো আরিয়ান মেয়েটাকে কিছু বলে না কেনো? ”
রিদি বলে,”মেয়েটার ভাই এখানকার নাম করা গুণ্ডা তাই আরিয়ান ভাইয়েরা জলে থেকে কুমিরের সাথে ঝগড়া করতে চায় না বেপার টা এমন তাই।”
অনু বলে,”মেয়ের ভাই গুণ্ডি তাই বলে কি মেয়েটা যখন তখন যেখানে সেখানে আরিয়ানের সাথে এমন বেহায়াপনা করবে? ”
রিদি বলে, “জানি না! এইসব নিয়ে আমাদের বেশী চিন্তা করে কাজ নাই।অনু তুই ও একদম চুপচাপ থাকবি।”
তারপর রাজদের সামনে গিয়ে সোজা অনু আরিয়ানের থেকে মেয়েটাকে জোড়ে একটানে আলাদা করে দেয়।
আরিয়ান তো অনুর এমন কান্ড দেখে হতভম্ব হয়ে যায়।
মেয়েটা বলে,”হেই ইডিয়ট মেয়ে আমাকে এভাবে টান দেওয়ার মানে কি?”
অনু :বেয়াদব বেহায়া মেয়ে পাবলিক প্লেসে একটা পরপুরুষ কে সবার সামনে জড়িয়ে ধরতে তোমার লজ্জা করে না? আরে তোমার মতো মেয়ের লজ্জা থাকলে তো করবে?

মেয়েটা বলে,”এই বেয়াদব মেয়ে আমার সাথে লাগতে আসবে না।আমি যাকে জড়িয়ে ধরেছি তার যখস সমস্যা হচ্ছে না তখন তোমার এতো সমস্যা হচ্ছে কেনো? ”
অনু এবার আরিয়ানের শার্টের কলার্র ধরে বলে,”ঐ মেয়েটা আপনার এই বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরাতে বুঝি খুব আরাম লাগছিলো?”
আরিয়ান বলে,”কোনো মেয়ে যদি আমাকে জড়িয়ে ধরে শান্তি পায় তাতে আমার কেনো সমস্যা হবে? আমি তো তাকে জড়িয়ে ধরতে যায় নি!”
অনু :বেয়াদব লুচ্চা বেডা।সুন্দরি মাইয়া পাইছে আর বুকের সাথে লেপটে রেখে দিছে।
মেয়েটা এবার অনুকে তার দিকে সোজা করে নিয়ে বলে, “দেখেছো আমি তাকে জড়িয়ে ধরাতে তার কোন সমস্যা নেই? তাহলে তোমার এতো জ্বলে কেনো? ”
অনু আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,”আমার জ্বলতে যাবে কেনো? জানতাম না তো এই ভদ্র মুখের আড়ালে একটা লুচ্চামির স্বভাবী মানুষ লুকিয়ে আছে!”
এবার সিয়াম উঠে বলে,”আরিয়ান, মেয়েটা না জেনে শুনে তোর উপর একগাছা মিথ্যা অপবাদ লাগিয়ে দিচ্ছে আর তুই চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনে যাচ্ছিস কেনো? ”
অনু বলে,”থাক আপনাদের আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে হবে না।এখানে সবটা পানির মতো ক্লিয়ার। ”
আরিয়ান এবার অনুর একহাত শক্ত করে ধরে বলে,”আমি বাঁচিনা ঐ রুবির অত্যাচারে তার মাঝে তুমি ঘি ঢালতে আসছো? ”
অনুর হাত এতো জোড়ে শক্ত করে ধরেছে যে অনুর খুব ব্যাথা লাগছিল।
অনু আরিয়ানের চোখে চোখ রেখে বলে,”প্লিজ আমার হাতে ব্যাথা লাগছে হাতটা ছেড়ে দিন। আমি আপনার আদালতের আসামী নয় যে আমাকে এইভাবে শাস্তি দিবেন। ”

আরিয়ান অনুকে ছেড়ে দিয়ে বলে,”আমার ব্যক্তিগত লাইফ থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করবা তাহলে সুখে থাকবে।”
রিদি অনুর কাছে গিয়ে বলে,”অনু তোকে তখন কতো বার বুঝিয়ে বলেছি এখানে কারো সাথে কোনো রকম তর্কে জড়াবি না তবুও তুই সে কথা কানে নিলি না।”
রিমা বলে,”রিদি আপু এখনে অনু কোনো ভুল কথা বলে নাই যে ওকে চুপচাপ থাকতে হবে।তাছাড়া আমাদের অনু সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জানে।
অনু অন্যায়ের সাথে আপোষ করতে শেখে নাই।যেখানে অন্যায় দেখবে সেখানে প্রতিবাদ করবে।আর আমি সব সময় অনুর পাশে থাকবো।”
আরিয়ান এবার খুব রেগে সিয়াম আর নিরবের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,”আমার এখন কি করা উচিৎ? ”
নিরব বলে,”তোর মন যা বলে তাই করা উচিৎ! ”
আরিয়ান রুবির সামনে গিয়ে বলে,”তুমি কতোটা নিলজ্জ বেহায়া নাককাটা মেয়ে তা কি জানো? ”
রুবি বলে,”কই না তো? ”
অারিয়ার জোড়ে একটা ধমক দিয়ে বলে,”বেয়াদব মেয়ে আমাকে যেখানে একলা পাও সেখানে চলে আসো বাঁশ দিতে? কেনো আমি তোমার কোন পাকা ধানে মই দিয়েছে বলবে একটু?”

রুবি বলে,”আমার তোমাকে ভালোলাগে তাই।”
অারিয়ান :আমি তোমাকে পছন্দ করি না তা তুমি জানো না? না কি বুঝতে চেষ্টা করো না? প্লিজ তোমার এই গায়ে পড়া স্বভাবটা বদলাও।আর আমি তোমাকে পছন্দ করি না এটা একটু বুঝতে চেষ্টা করো।”
রুবি বলে,”আরে এসব কোনো বেপার না।আজ পছন্দ করো না কাল বিয়ের পর ঠিকি পছন্দ করবে।”
বিয়ের কথা শুনে অনু মনে মনে বলে,”শাঁকচুন্নি তোকে আজ ছেড়ে দিচ্ছি ঠিক আছে নেক্সট টাইম ও যে ছেড়ে দিবো এমন কোনো মানে নেই।আমার ক্রাশের দিকে খালি নজর দেয়নি ডাইনি বুড়ি স্পর্শ পর্যন্ত করে।”
রুবি আরিয়ান কে বলে,”বেবি তুমি এখন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দাও আমি আর ডিস্টার্ব করবো না।আমি এখন এখানে থেকে চলে যাচ্ছি।”
রুবি যাবার সময় অনুর সামনে এসে বলে,”এই মেয়ে তোমার নাকটা খুব বেশী অন্যের বেপারে ঢোকাও।নেক্সট টাইম আমাদের বেপারে নাক গলাতে আসবে না। তাহলে সেটা তোমার জন্য খুব ভালো হবে না বলে দিলাম।”
অনু কিছু বলতে যাবে তার আগে আরিয়ান এসে বলে,”ঐ সব ছ্যাঁচড়া মেয়ের সাথে লাগতে যেওনা বাদ দাও রুবির কথা।”
অনু বলে,”আপনি কি মেয়েটাকে পছন্দ করেন?”
রাজ বলে,”আরে অনু তুমি যে কি বলো না! আরিয়ার করবে ঐ ছ্যাঁচড়া মেয়েকে পছন্দ? ”
অনু বলে,”কেনো মেয়েটা তো দেখতে শুনতে খারাপ না।সুন্দরি স্মার্ট দেখেতো ভালোই মনে হলো।”
রাজ বলে,”তাও গায়ে পড়া স্বাভাবের কোনো মেয়েকে কেউ পছন্দ করে না তা কি জানো না তুমি? ”
আরিয়ান বলে,”আমি যাদের পছন্দ করি তাদের দিকে শকুনের নজর পড়ে।আর যাদের আমি পছন্দ করি না তারা আমার দিকে শকুনি নজরে তাকাই!”
অনু বলে,”তাই না কি তা আপনার কোন পছন্দের দিকে শকুনের নজর পরেছে জানতে পারি? ”
রাজ বলে,”আরিয়ান তুই এভাবে আমাকে শকুন বানিয়ে দিতে পারলি ভাই? ”
আরিয়ান বলে,”আমার তো রিদিকে মোটামুটি ভালো লাগছিলো কিন্তু রাজ তাকে পটিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে নিজের জিএফ বানিয়ে নিয়েছে।”
অনু রিদিকে বলে,”আপু ঘটনা কি সত্যি? ”
রিদি বলে,”হুম কাহিনী সত্যি। ”

আরিয়ান বলে,”তবে তুমি আমার দেখে সব মেয়েদের থেকে আলাদা I like your attitude!
সত্যি তুমি সবার থেকে আলাদা।তোমার প্রতি যে কোনে ছেলে আকৃষ্ট হতেই পারে।”
অনু বলে,”তা আপনার Good book এ কি আমি আছি? ”
আরিয়ান বলে,”মিথ্যা বলবো না।আছো তবে পুরোটা জুড়ে না কিছুটা ছিটেফোঁটা আছো।”
অনু বলে,”ঐ ছিটেফোঁটা দেখেন কবে একসাথে হয়ে পুরোটা জুড়ে থাকবে।”
রাজ বলে,”যেদিন পুরোটা জুড়ে থাকবে সেদিন না হয় তুমি আমার হবে? ”
অনু রিদি কে বলে,”আপু তোর বি এফটা লুচ্চা টাইপের। একটা সুন্দরি জি এফ থাকতেও অন্যদের দিকে নজর দেয়।”
রিদি রাজকে বলে,”অনু হইতে সাবধান,সে রিদি নয় যে তাকে পটিয়ে পেয়ে যাবেন।”
অনু রাজকে বলে,”আমার বোনের বিএফ যখন হয়েছেন তখন সময় মতো তার বর হবার জন্য রেডি থাকবেন। আমার বোনকে চিট অথবা ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করলে তার ফল খুব খারাপ হবে এটা মাথায় রাখবেন। ”
আরিয়ান বলে,”যাক এতোদিনে মনের মতো মেয়ে পেয়েছি যে রাজের মতো শয়তান কে থ্রেড দেওয়ার সাহস রাখে।”
রিমা বলে,”আমাদের অনু কিন্তু ছোট খাটো একটা গুণ্ডি বলা যায়।”
আরিয়ান বলে,”তাই অনু তোমার বর যে হবে সে কিন্তু খুব সৌভাগ্যবান হবে।”
অনু মনে মনে বলে,”হুম আপনি তো খুব সেই সৌভাগ্যবান। তাই জন্য তো আমি আপনাকে আমার ক্রাশ বর বানাবো।তার জন্য আমি আমার বেস্ট দিয়ে চেষ্টা করবো বাকীটা আল্লাহ ভরসা।”
এরপর হঠাৎ করে আরিয়ান…



চলবে..