অপ্রিয় হলেও সত্যি

অপ্রিয় হলেও সত্যি !! Part- 13 (Last-Part)

Megh La
চোখের সামনে সব ঝাপসা হয়ে আসছে আসফির সামনে তার জ্ঞান হারানো মেঘ রক্তাক্ত অবস্থায় পরে আছে। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে ওর কাছে যাবার শক্তি টুকু যেন হারিয়ে ফেলেছে৷ নিজের সব থেকে ভালেবাসার মানুষ টাকে এভাবে দেখে সব গুলিয়ে যাচ্ছে। মনের মাঝে হারাবার ভয়৷ চোখের সামনে মাটিতে পরে থাকা রক্তাক্ত মেঘ৷ আদওকি শেষ টা ভালে হবে।
-স্যার এখানে বসে থাকবেন না ম্যাম কে নিয়ে হসপিটালে যেতে হবে স্যার উঠুন।(আসফির গার্ড)
আসফির একটু একটু বোদ আসছে,
-স্যার উঠুন আপনি ছাড়া ম্যামকে আমরা টাচ করতে পারিনা৷
আসফি উঠে,
-সাহাজান খান।
-স্যার পুলিশ নিয়ে গেছে তাকে, এসব পরে ভেবেন।
আসফি এবার নিজের বোধ টাকে ফেরত পায়। মেঘকে কোলে তুলে পাগলের মতো ড্রাইভ করে হসপিটালে নিয়ে আসলো হসপিটালে আসতে ২ ঘন্টা সময় লেগেছে কারন জাগটা অনেকটা দুরে ছিলো।
আসফিকে এভাবে আসতে দেখে ডক্টর এগিয়ে আসে,
-ডক্টর ওকে বাঁচান । (আসফির মুখে কোন কথা আসছে না শুধু কাপছে)
-নার্স ট্রেচার নিয়ে আসুন। ওনাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে চলুন জলদি। মি.আসফি আপনি বসুন।
ডক্টর চলে গেল সেখান থেকে।
আসফি দেয়ালের সাথে ঠেকে বসে পরলো। কি হলে এগুলো মেঘের হাসি মুখটা মনে পরছে। বেশি মনে পরছে সেই সব দিনের কথা যখন সে তার মেঘকে না যেনে অনেক কষ্ট দিয়েছিল,
-(আমাকে এখানে রেখে যাবেন না। এই মাখরোশার মধ্যে আমি মরে যাবো বার করুন প্লিজ আমি সব কথা শুনবো আপনার)
-(আমি কিছু করি নি মারবেন না প্লিজ)
-(ভুল হয়ে গেছে এবারের মতে মাফ করে দিন)
-(আর এরকম হবে না ক্ষমা করুন প্লিজ)
কতেটা কঠিন থেকে এভাবে আমি ওকে কষ্ট দিয়েছি। কি করে পারলাম। সেই দিন গুলো ওকে কতটা কষ্ট দিয়েছে। কতোটা একা ছিলো আমার মেঘ৷ আমি তাকে সে ভুলের শাস্তি দিয়েচি যে ভুল সে করেই নি।
মেঘ আমার ওই ভুলের শাস্তি এভাবে দিস না আমি মরে যাবো তোকে ছাড়া বাঁচবো না। (বাচ্চাদের মতো কাঁদতে থাকে আসফি)
এরি মধ্যে আরাবি এসে পরে,
-ভাইয়া এভাবে কাদিস না ঠিক হয়ে যাবে সব।
-দেখনা আরাবি ও আমাকে আমার দেওয়া কষ্ট গুলো ফেরত দিতে চায় । ওকে বারন দে না আরাবি ওকে যে বড্ড বেশি ভালোবাসি। আরাবি ওকে আমার কাছে আসতে বল।
-ভাইয়া ঠিক হয়ে যাবে সব।
কি বলে সান্ত্বনা দিবে ভাইকে নিজে যেখানে বুঝতে পারছে না কিছু। নিজেও কাঁদছে ভাইকে কি করে সামলাবে৷
এভাবে ২ ঘন্টা কেটে গেল। অপারেশন থিয়েটারের লাইট অফ হলো। বাইরে আসলো ডক্টর।
দেখে বুঝা যাচ্ছে কিছু একটা খারাপ ঘটেছে।
-ডক্টর আমার মেঘ৷
-মি.আসফি সান্ত হোন। আপনার স্ত্রী এর তিনটা গুলি লেগেছে আমরা অনেক চেষ্টা করে তিনটাই বার করেছি।কিন্তু প্রচুর ব্লাডিং হইছে। আসতে দেরি করেছেন আপনারা। ব্লাড দেওয়া হচ্ছে কিন্তু তাও তিনি সাভাবিক হতে পারছেন না। আমাদের কাছে ৭২ ঘন্টা সময় আছে এর মধ্যে তার সেন্স না আসলে। কিছু বলতে পারছি না। হয়তো তিনি মারাও জেতে পারেন৷ আল্লাহ তায়ালা কে স্বরন করুন৷ আমাদের যা করনিয় ছিলো করেছি বাকিটা তার বান্দা তার ইচ্ছে ।
ডক্টর চলে গেল ।
আসফি পাথারের মতে দাড়িয়ে আছে। কি হয়ে গেল তখন জখন মা বাবাকে মরতে দেখেছিলো বোনকে বাচিয়ে একটা মানুষের মুখ মনে পরছিলো সেটা ছিলো মেঘ। মায়াবি মুখটাতে এমন কি ছিলো তাতে জানা নেই কিন্তু আমার তার প্রতি ভালোবাসা ছিলো শুধু ছিলো না আছে থাকবে।
-ভাইয়া তোর জামার রক্ত লেগে আছে চল তোর ক্ষত তে ড্রেসিং করায় দি।
আসফি নিশ্চুপ।
-ভাইয়া চল। তুই পাক হয়ে নামাজ পর আল্লাহ তোর কথা শুনবে তোর ডাক কবুল করবে।
আসফি আরাবির কথা শুনে উঠে,
-আমি বাসায় যাচ্ছি ৩০ মিনিটে ফিরে আসছি কোন কিছু লাগলে আমাকে ফোন দিস।
আসফি আর কিছু না বলে বেরিয়ে পরে,
বাসায় এসে ভালো করে গোসল করে নামাজের পাটিতে বসে, তার সব আবদার পুরোনের আজ একটাই পথ সেটা হলেন আল্লাহ তায়ালা,
মনে পরে যায় সব কিছু হারাবার কথা কিছু ছিলো না জীবনে, বোনকে নিয়ে বেচেছ ৩ টা বছর তার পর যখন মেঘকে পায় তখন না যেনে কতোনা কষ্ট দিসে তাকে। সবটা সহ্য করেছে কখনো কিছু বলতে গেলে শুনা হয় নি। জীবনে এত কিছু হারিয়ে এই তিনটা মানুষকে নিয়ে বেঁচে আছে, মেঘ, আরাবি, কাকিমা। তাদের মধ্যে থেকেও আমার কাছথেকে তুমি কাউকে নিয়ে নিবে খোদা আমার। ওকে ছাড়া বেঁচে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। অনেক সময় ধরে দুয়া করে কেঁদে সে আবার হসপিটালে চলে আসে৷
ততক্ষণে ডক্টর এসে সুখব দেয়,
-ডক্টর.আরবি আপনার পেশেন্ট এর জ্ঞান ফিরেছে।
-ডক্টর দেখা করতে পারবো।
-হ্যা সি ইজ আউট ওফ ডেঞ্জার । কিন্তু এটা একটা মিরাক্কেল আমরা ভাবতে পারিনি এত জলদি এই পেশেন্ট এর সেন্স আসবে। আপনাদের দুয়ার কারনে সে বেঁচে আছে।
ডক্টর চলে যায়।
ডক্টর চলে জেতে আসফি উপস্থিত হয়,
-আরাবি মেঘ
-ভাইয়া সেন্স আসছে ওর তোকেই ফোন দিতে যাচ্ছিলাম।
চোখে মুখে হাসি ফুটে ওঠে আসফির।
-দেখা করতে পারবো।
-হুম।
আসফি মেঘের কাছে যায়।
চোখ বন্ধ করে আছে মেঘ, মায়াবি মুখটা মলিন হয়ে আছে , হাতে সেলাইন চলছে সাথে রক্ত।
আসফি মেঘের হতটা ধরে বসে আছে পাশে। কিছুক্ষন পরে পিট পিট করে চোখ দুটো খোলে, পাশে আসফিকে দেখতে পায়।
মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
আসফি মেঘের হাতে চুমু দেয়।
-কতো ভায় দিসিলা জানো, জান পাখি আমার এত সময় আাকাশে ছিলো এখন দেহতে ফিরলো।
মেঘের কথা বলার শক্তি নাই তাও বলার চেষ্টা করতে
-থাক কিছু বলতে হবে না খালি সুস্থ হয়ে ওঠো জলদি।
এভাবে কেটে যায় ১০ টা দিন খুব আদর যত্ন করে মেঘকে সুস্থ করে তোলে আরাবি আর আসফি মিলে।
আজ মেঘকে বাসায় আনা হয়েছে।
এখন সে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও অনেকটা সুস্থ।
-তুমি এখানে রেস্ট নেও আমি খবার নিয়ে আসছি।।
-আমি খবোনা।
-কেন।
-আপনি কেমন কেমন হয়ে গেছেন।
-কেমন কেমন। 🙄
-জানি না আগের মতো ভালোবাসেন না। 😣
-তাহলে কে ভালোবাসে শুনি। 🙄
-আমি কিছু জানি না। আমি চোখ বন্ধ করছি আমাকে একটা কিস দেও।। 🤗
-🤨 এই বানিটিকি আদও সত্যি।
-😏 যাহ দেওয়া লাগবে না।
-ওরে বৌ দেখি রাগ করে। 😁
আসফি খাবর নিতে না গিয়ে মেঘের পুর মুখে ভালেবাসা একে দেয়।
-তুমি একটা বলেছিলে আমি কতোগুলো দিয়ে দিসি দেখো। 😍
মেঘ এবার লজ্জা পেয়েছে।৷
-থাক আর লজ্জা পইও না।একটু পর তো এমনিও সব হবে বিয়ে করতে চলেছি না। 😁
আসফি ফিস ফিস করে বলে চলে আসে।
তার পর ফোন করে শুনতে পায় সাহাজান খান আত্মহত্যা কেরছে। ভালোই হলো নাহলে তাকে আমি নিজেই মেরে দিতাম।
তার পর তাদের বিয়েটা ছোট ভবে হয়। আর কোন অনুষ্ঠান করা হয় না।
রাতে,
-আজকে তোমার আমার আসল বাসর রাত বৌ।
-হুম জামি তো।
-তো কি আমি তোমার কাছে কিছু চাইতে পারি।
মেঘ বুঝতে পারে আসফি কি বলতে চলেছে। আসফির বুকে মুখ লুকায়।
-এতো লজ্জা বাবা।
আসফির আর নিজেকে কন্ট্রোল করার শকৃতি নাই এমনি তে এতোগুলা বছর অনেক কন্ট্রোল করেছে।
(বাকিটুকু ইতিহাসের পাতায় পাতায় পেয়ে লেখা আাছে মুই আর কমুনা 😁)
পূর্ণতা পায় ভালোবাসা। ভালোবাসলে ভালোবাসার জন্য লড়াই করতে হয়।
সমাপ্ত
(গল্পটা পরার জন্য ধন্যবাদ।
বেঁচে থাকলে আবারো নতুন কোন গল্প নিয়ে আসবো ততোক্ষণ ভালো থাকবে।
Eid mubarak 💕)

One thought on “অপ্রিয় হলেও সত্যি !! Part- 13 (Last-Part)

  • সানজিদা রহমান রোজ

    শুভকামনা

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *