অপেক্ষা

অপেক্ষা !! Part- 04

ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে আমি একদম সারপ্রাইজড হয়ে গেলাম।দেখি আমার বেডের উরে একগাদা গোলাপ, কমপক্ষে ৪০০/৫০০ হবে।পুরো রুমটা গোলাপের গন্ধে ভরে আছে।আমি গোলাপ গুলো সরিয়ে দেখি গোলাপের নিচে একটা রেপিং করা বক্স।ওটা খুলে কিছুটা অবাক হলাম,বক্সের ভেতরে ছিলো ১টা শাড়ি সাথে ম্যাচিং ব্লাইজ,গহনা,একটা কালো টিপের পাতা, আর কিছু রেশমি চুরি।সাথে একটা ছোট্ট চিরকুট তাতে লেখা ছিলো”মহারানী সাত সমুদ্র তোরো নদী পার করে এগুলো আপনার জন্য খুজে এনেছি দয়া করে পরবেন।আমার ভালো লাগবে ভীষন।”
ইতি
আপনার হবু হাসবেন্ড।

আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না এগুলো শুভোর কাজ।ছেলেটা পারেও বটে।এত
পাগলামি করে ও। কিন্ত শাড়ি তো আমি পরতে পারি না,কি। করবো এখন।হ্যাঁ আমি শাড়ি পরতে ভালোবাসি কিন্ত পারিনা আগে আপু পরিয়ে দিতো।কি করবো এখন।আপুও শাড়ি পরছে।এখন আমি যদি শাড়ি না পরি, শুভ হয়তো ভাববে আমি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওকে বিয়ে করছি।ও তখন কষ্ট পাবে।তখন হয়তো ও বিয়েটা আর করবে না। তখন বাবা মা আপু সবাই আমার জন্য কষ্ট পাবে।দরকার কি এতকিছুর।নিচে গেলাম কাউকে পাই কি না শাড়ি তো আমি একা পরতে পারবো না।কিন্ত দেখলাম সবাই বিজি।কি করি এখন।অনেক কষ্ট করে নিজে নিজে শাড়ি পরলাম।কিন্ত একি শাড়ি পরে হাটতেই পারছি না পায়ের সাথে পেঁচিয়ে যাচ্ছে।
আমি নিচে যাবার জন্য হাটতে লাগলাম কিছুটা যাবার পর শাড়ি খুলতে শুরু করলো আমি আবার রুমে আসার জন্য যেইনা পেছনে ফিরেছি ওমনি শাড়ি পায়ের সাথে পেঁচিয়ে পড়ে গেলাম। পড়তে গিয়েও পড়লাম না, হ্যাঁ কেউ আমাকে ধরেছে। শাড়ি আমার প্রায় খুলে গেছে।চোখ মেলে দেখি শুভ ধরেছে আমাকে।ও আমার কোমরটা পেঁচিয়ে ধরে আছে। এই প্রথম কোনো ছেলে আমাকে এইভাবে স্পর্শ করলো।আমার পুরো শরীর যেনো হিম শিতল হয়ে গেছে।আমি আগে কখনো এমন কিছু ফিল করিনি।আমরা দুজনেই যেনো একটা ঘোরের ভেতরে চলে গেলাম।আমার রুমটা গোলাপের সুগন্ধে ভরপুর।দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছি এক পলকে।
হঠাৎ করে জানিনা আমার কি হলে,আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দুরে সরে গিয়ে শাড়িটা নিজের শরীরে পেচিয়ে নিলাম ভালো ভাবে।

শুভ-হা হা হা হা।
আমি-হাসছেন কেনো?
শুভ -তুমি শাড়ি পরতে পারো না।এটা তো আমি জানতামি না।

আমি-পারিনা বলিনি, তবে পারি সেটাও বা কখন বলেছি?(আমি এতদিন কখনো শুভকে ঠিক করে দেখিনি,ও আসলেই অনেক সুন্দর,সাদা ধবধবে গায়ের রং, ৬ফুট মত লম্বা হবে একদম সিনেমার হিরোদের মত।রাফিনের চাইতে বেশি ছাড়া কম সুন্দর না ও।আজকে ও একটা নিল রঙের পাঞ্জাবি পরেছে,আমার শাড়িটাও নিল।অনেক সুন্দর লাগছে ওকে।প্রতিটি মেয়ে তার জীবনে ঠিক এমন একজন পুরুষকে কল্পনা করে।আমি হয়তো লাকি,হয়তো।জানিনা আমি কখনো শুভ কে ভালোবাসতে পারবো কিনা।
শুভ-সেজুতি কি ভাবছো এত?
এই সেজুতি?
আমি – না না কিছু না।
শুভ -সেজুতি একটা পারমিশন চাইবো দিবে?
আমি-কি?
শুভ তোমার শাড়িটা যদি আমি পরিয়ে,,,,
আমি-আপনি?সেটা হয় না।
শুভ-ওকে ঠিকআছে আমি দেখবো না তুমি বরং আমার চোখে কাপড় বেধে দাও।
আমি-সত্যি দেখবেন নাতো?
শুভ – না।
আমি বললাম না থাক। আমি একা পারবো।শুভ সাথে সাথে আমার কাছে এসে আমাকে হালকা ভাবে জড়িয়ে ধরে বললো আমার কি এতটুকু অধীকার নেই?তাই বলে ও আমাকে শাড়ি পরানো শুরু করলো চোখ বন্ধ করে।আমি আর বাধা দিলান না।জানি বাধা দিলেও ও শুনবে না।শাড়ি পরানো শেষ হলে।ও আমাকে একটা টিপ পরিয়ে দিলো।তারপর মাথাই ফুল দিয়ে দিলো।
শুভ- নাও এবার তুমি একদম রেডি।দেখি তোমাকে কেমন লাগছে একটু দুরে গিয়ে দাড়াও তো।
আমি ওর কথা মত দুরে গিয়ে দাড়াম ও দেখে বললো সেজুতি আমি তোমাকে একটু hug করতে পারি?
আমি-না।একদম না।তাই বলে আমি বাইরে চলে যাচ্ছি ঠিক তখনি শুভ আমার হাতটা টেনে ধরলো পেছন থেকে, আর বললো ‘কেনো এত কষ্ট দাও আমাকে বলোতো’?আমি হাতটা ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছি ও আবার আমার হাত টেনে ধরলো।এবার আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো,বললাম আপনি কি সত্যি আমাকে ভালোবাসেন নাকি আমার শরীরটাকে ভালোবাসেন?
বলা মাত্র শুভ আমার কাছে এসে সপাটে একটা চড় বসিয়ে দিলো আমার গালে।তরপর আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো আমাকে তুমি কখনো বুঝতে চেষ্টা করোনা সেজুতি।আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি।তারপর সে আমার এতটায় কাছে চলে আসলো যেনো ও নিঃশ্বাস আমার মুখের উপরে পড়ছে। আমার খুব অসস্তি লাগছে।
শুভ-আমি যাদি তোমার শরীরি চাইতাম তাহলে ঐ দিন রাতেই আমি ইচ্ছা করলে তোমাকে ভোগ করতে পারতাম,কিন্ত একটা কথা মনে রেখো সেজুতি আমি ভালোবাসি তোমাকে।
আমি-আমি আসছি। নিচে ওয়েট করছে সবাই
শুভ-তুমি ভালোবাসো না আমাকে সেজুতি?
আমি-(চুপ করে রইলাম)।
শুভ-তুমি কি অন্য কাউকে ভালোবাসো সেজুতি?,(আমার হাত দুটো চেপে ধরে)
আমি-ছাড়ুন আমাকে, আমার লাগছে।
শুভ-অন্য কাউকে যদি ভালো মা বাসেন তাহলে আমি কাছে আসলে তোমার আপত্তি কিসের বলো?
আমি শুভর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে চলে যেতে লাগলাম ঠিক তখনি শুভ একটা ছুরি দিয়ে নিজের হাত কেটে ফেললো।
আমি-(দৌড়ে এসে) কি করছেন কি, এতটা অবুঝের মত কাজ করেন কেনো আপনি?ইসসসস কতটা হাত কেটে গেলো,রক্ত বের হচ্ছে।দাড়ান আমি ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসি।
শুভ-রক্ত পড়ুক তাতে তোমার কি? তুমি তো ভালোবাসো না আমাকে।
এই কথা বলে শুভ আমার নিজের হাত কাটলো ছুরি দিয়ে। তুমি যতক্ষন না বলবে ভালোবাসি ততক্ষন আমি হাত কাটতেই থাকবো।
আমি-পাগল হয়ে গেছেন নাকি আপনি?
শুভ-হ্যাঁ পাগল,তুমি জানো আমি তোমাকে কত ছোটবেলা থেকে ভালোবাসি?জানোনা তুমি।আমি শুধুমাত্র তোমার জন্য এতটা বছর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছি।বাবা মা আমাকে কত মেয়ে দেখিয়েছে আমি শুধু মাত্র তোমার জন্য ওয়েট করেছি এতটা বছর।তোমার বড় আপু পুরো বিষয়টা জানতো।এখন তুমি যদি ভালো না বাসো তবে আমার বেঁচে থাকার আর কোনো মানেই হয় না।এটা বলে শুভ ছুরি নিজের পেটে ঢুকিয়ে দিলো।
রক্ত দেখে সেন্সলেস হওয়ার মত অবস্থা।
আমি দৌড়ে গিয়ে শুভোর মাথাটা কোলের উপরে তুলে কাঁদতে লাগলাম।
বাইরে গিয়ে সবাই ডেকে আনলাম।সবাই মিলে ধরাধরি করে শুভ কে হসপিটালে নিয়ে গেলো।শাড়িটা মনে হয় আমার শরীরে নেই,জানিনা কিছু মাথাই কাজ করছে না আমার, এদিকে সবাই আমাকে দোষারোপ করছে যে আমার জন্য আর শুভোর এই অবস্থা, আমার জন্য আজ এই শুভ অনুষ্ঠানে বাধা পড়লো,চারিদিকে সবাই এসব বলছে,উফফফ মাথাটা ফেটে যাচ্ছে।চারিদিকের এত চাপ সইহে না পেরে আমি সেন্সলেস হয়ে পড়লাম হসপিটালের ভেতরেই।
জানিনা তারপর কি হলো
সেন্স ফেরার পর দেখলাম আমি নিজের রুমে সুয়ে আছি।রুমটা একদম ফাকা।
নিচে গিয়ে দেখি শুভোর বাবা মা আর আমার বাবা মা এক বাসে আছেন।আমি নিচে যাবার সাথে সাথে শুভর বাবা মা আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার সামনে হাত জোর করে বললো”সেজুতি মা তোর কাছে আমরা হাত জোর কোরে আমাদের ছেলের প্রান ভিক্ষা চাচ্ছি,তুই ফিরিয়ে দিস না আমার ছেলেটাকে।ও ভীষন ভালোবাসে তোকে। তোকে না পেলে হয়তো শুভ নিজেকে শেষ করে ফেলবে তুই ওকে ফিরিয়ে দিস না মা”।
আমিঃ ছিঃ ছিঃ মামি আপনি কোনো হাত জোর করছেন।আপনি আমার গুরুজন। ক্ষমা তো আমার চাওয়া উচিৎ আপনাদের কাছে।আমি আসলে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।শুভ যে আমাকে এত ভালোবাসে আমি বুঝতে পারিনি।শুভ এখন কেমন আছে মামা?

আসাদ মামা- অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে, ডক্টর বলেছে ভয়ের কিছুই নেই।
আমি-ঠিক আছে মামা আপনারা চিন্তা করবেন না।শুভর সব দায়িত্ব আমার।আপনারা শুধু বিয়ের আয়োজন করুন।

আমি উপরে এসে রেডি হয়ে রওনা দিলাম হসপিটালের উদ্দেশ্য। হসপিটালে গিয়ে শুভোর পাশে বসে ওর হাতে হাত রেখে শপথ নিলাম আর যাই হোক আমি আর এই মানুষটার হাত কখনো ছাড়বো না।আমি আর আমার ভালোবাসা হারাতে চাই না।যে আমাকে ভালোবাসে না তার জন্য আর কষ্ট পাবো না আমি,আর চোখের পানি ফেলবো না আমি রাফিনের জন্য।এবার থেকে আমি শুধু শুভ কে ভালোবাসবো।আমি বুঝে গেছি এই মানুষটা আমার এক কথাই আমাকে পৃথীবির সব সুখ এনে দিতে পারে।
শুভো চোখ খুলছে হালকা ভাবে, ও চোখ খুলে আমাকে দেখেই বললো, “এবার তুমি আমাকে ভালোবাসবে তো?
আমি-আপনি কি পাগল বলুন তো? এমন কাজ কেউ করে?আপনার যদি কিছু একটা হয়ে যেতো?
শুভ-আমার কিছু হলে তোমার কি?
তুমি তো আর ভালোবাসো না আমাকে।
আমি শুভোর হাতটা আমার মুখে বোলাতে বোলাতে বললাম “কে বললো ভালোবাসি না?আমি ভীষন ভালোবাসি আপনাকে”।
শুভ -তাহলে আপনি করে কেনো বলছো?
আমি- ঠিকআছে আর বলবো না।এবার তোমাকে খুব জলদি সুস্থ হয়ে উঠতে হবে কিন্ত।
শুভ-কেনো?
আমি-কেনো আবার সামনে তো আমাদের বিয়ে।
শুভ-সত্যি বলছো সেজুতি?
আমি-হ্যাঁ সত্যি।
শুভ -৩সত্যি বলো।
আমি-হ্যাঁ ৩সত্যি।(আমি শুভোর কপালে একটা ভালোবাসার ছোয়া দিয়ে দিলাম)।
এভাবে দিন যেতে লাগলো,প্রায় ২ মাস হয়ে গেলো।শুভ এখন পুরোপুরি সুস্থ।৩ দিন পর আপুর বিয়ে।আমাদের জন্য ওর বিয়েটাও আটকে ছিলো।শুভ বিয়েতে হয়তো থাকতে পারবে না।ডক্টর ওকে ফুল বেডরেষ্টে থাকতে বলেছে।বাড়িতে বিশাল আয়োজন চলছে।আমি বাড়ির কাজের ফাকে ফাকে শুভকে দেখতে যাই।ওর খুব মন খারাপ বিয়েতে থাকতে পারছে না বলে।কাল আপুর গায়ে হলুদ।শুভ থাকছে না তাই ওর কাজগুলে এখন আমাকেই করতে হবে। আপু এসে বললো-সেজুতি আমার ২/৩ জন বন্ধু বান্ধবী আসবে,বাইরে থেকে ৩টার সময় তুই একটু নিয়ে আসতে পারবি?
আমি-হ্যাঁ আপু অবশ্যই পাবরো।ঠিকআছে তুই যা আমি ওদেরকে তোর ফোন নাম্বার দিয়ে দিচ্ছি।ওরা পৌছে তোকে কল দিয়ে খুজে নেবে
আমি-ওকে আপু।আমি একটা জিন্স আর একটা টপস পরে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলাম।হ্যাঁ এগুলোই পরি এখন আমি।সার্ট ও পরি মাঝে মাঝে।তবে আগুলো পরা বাদ দিয়ে দেবো,শুভ পছন্দ করে না।
আপুর অনেক ফ্রেন্ড বাইরে লেখাপড়া করে।রাফিনো তো করে।এতোদিনে ও হয়তো ওর গফ কে বিয়ে করে সুখে সংসার করছে।তাতে আমার কি।এখন আর আমি ওসব নিয়ে ভাবিনা।আমি আমার লাইফপার্টনার পেয়ে গেছি।এসব ভাবতে ভাবতে আমি এয়ারপোর্ট পৌছে গেলাম। গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছি। হঠাৎ করে ঝাপসা চোখে একজন কে হেটে আসতে দেখলাম।ভাবলাম হয়তো দেখার ভুল।কিন্ত না।ভালো তাকিয়ে দেখলাম ওটা রাফিন।নিজের চোখকে বিলিভ করতে পারছি না।ওর সাথে আরো দুইটাছেলে আর একটা মেয়ে বাকিদেরো আমি চিনি ওরা সব আপুর ফ্রেন্ড। রাফিন কে দেখে আমি মোটেও খুশি হয় নি।
ওরা চলে এসেছে।
রাফিন -হ্যালো আমি রাফিন।
আমি-হ্যাঁ জানি।
রাফিন আপনি?
আমি-সেজুতি।
রাফিন-Whst?
আমি-জ্বি ভাইয়া।
রাফিন-কখনো হতে পারে না আমি যে সেজুতি কে চিনতাম সে তো,,,,,,
এটা বলে রাফিন হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।আমি জানতাম এমটাই হবে।
রাফিন ভাই গাড়িতে উঠবেন নাকি এভাবে দাড়িয়ে থাকবেন।
রাফিনঃ অনেক সুন্দরী হয়ে গেছো তুমি।কেমন আছো? কথাটি বলে রাফিন আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমার বুকের ফেতরটা যেনো কেঁপে উঠলো।আমি যেনো পাথর হয়ে গেলাম।সাথে সাথে রাফিন কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বললাম”এই যে মিষ্টার রাফিন চৌধুরি, এটা বিদেশ নয় এটা বাংলাদেশ।তাই বলে গাড়িতে উঠে বসলাম।রাফিন আমার পাশে বসতে গেলো,সাথে সাথে আমি বললাম ‘আপু আপনি সমনে আমার কাছে এসে বসুন আর ভাইয়ারা আপনারা পেছনে বসুন।
রাফিনঃড্রাইভ কে করবে শুনি মেডাম?
আমি-আমি করবো।
রাফিন শুনে হা করে তাকিয়ে আছে।
যাই হোক বাড়িতে পৌছে গেলাম।সারাটা পথ রাফিন আরনার ভেতর দিয়ে হা করে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে।
আজ বিকালে আপুর গায়ে হলুদ।আমি শাড়ি পরছি।শাড়িটা পরতে খুব ভালো লাগছে কারন এটা শুভ কিনে দিয়েছে।শাড়ি পরতে পরতে মনে হলো কেউ আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে।পেছন ফিরে দেখি রাফিন।
‘আপনি এখানে কি করছেন?এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে একটা মেয়ের শাড়ি পরা দেখতে লজ্জা করে না ছিঃ।
রাফিন-খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে সেজুতি।
রাফিন রুমের ভেতরে ঢুকে আমার খোপাই একটা ফুল গুজে দিলো,দিয়ে বললো ‘বিয়ে করবে আমাকে?
কথাটা শুনে আমি ওর গালে সপাটে একটয় চড় বসিয়ে দিলাম দিয়ে বললাম, আমার মত মেয়ের সাথে মানাবে না আপনাকে।আমাকে বিয়ে করলে কি বলবে আপনার। সোসাইটির লোকজন?আপনি বরং অন্য জায়গায় ট্রাই করুন।বলে আমি রুম থেকে বের হয়ে চলে এলাম।শুভোর কাছে যাবো একটু,ওর দেওয়া শাড়িতে আমাকে কেমন লাগে সেটা ও দেখতে চেয়েছে।
আমি-শুভ কেমন আছো?
শুভ-ভা,,,,
আমি-কি হলে চুপ করে আছো যে?
শুভ-আমার বৌটাকে যে এত সুন্দর লাগছে আজকে সে কি জানে?
এটা বলে শুভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো, যদি আমি যেতে পারতাম।তোমাকে একা ছাড়তে ইচ্ছা করছে না সেজুতি।
-আমিও ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বললাম, তোমার বৌ পালিয়ে যাবে না তোমাকে ছেড়ে বুঝলে।
-যদি কেউ কেড়ে নিয়ে যাই তোমাকে আমার কাছ থেকে তোমাকে।
-আমি শুভোকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম আমি তো যাবো না।বলে বাসায় চলে আসলাম।সবাই নিচে ভীষন মজা করছে কিন্ত আমার ভালো লাগছে না।শুভ থাকলে খুব ভালো লাগতো।
ছাদে গিয়ে দাড়িয়ে আছি কেউ একজন আমার মুখ টা চেপে ধরে চিলেকোঠার রুমে নিয়ে গেলো।দেখি ওটা রাফিন।
রাফিন আমার হাতদুটো দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে বললো’সুন্দরী হয়ে দেমাক বেড়ে গেছে নাকি,তোমার সাহস কি করে হয় আমার গায়ে হাত তোলার।
আমি-ছাড়ুন আমাকে লাগছে আমার, ছাড়ুন না হলে চিৎকার করবো, ছাড়ুন বলছি।
রাফিনঃচিৎকার করবে?করো।(একটা পৈশাচিক হাসি দিয়ে বললো ও)।
আমি জোরে চিৎকার করা শুরু করলাম সাথে সাথে রাফিন আমার ঠোট জোড়া দখল করে নিলো,অমানুষের মত কিস করা শুরু করলো।
আমার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।
কিছুক্ষন পর ও আমাকে ছেড়ে দিলো।
-ছিঃ আমার ভাবতেও ঘৃনা করছে আপনার মত একটা মানুষকে আমি একটা সময় ভালোবাসতাম ছিঃ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *